Breaking News

কালো বউ । পর্ব -১৯



রবিনঃ(রুপের সাথে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে সব বললাম,,,, রুপকও আগ্রহ নিয়ে সব শুনলো,,,) সেদিন যদি তোর মা আমার কথা শুনতো তাহলে আজ আমাদের জীবনটা হয়তো অন্যরকম হতো,,,,। বিশ্বাস কর রুপক তোর মাকে আমি অনেক ভালোবাসি,,, সেই প্রথমদিনের মতো,,, সবসময় ভালোবাসতাম,,,,আর এখনো বাসি। রাগ আর হিংসা সেই ভালোবাসাটাকে বিষিয়ে তুলেছিলো,,,,।
রুপকঃ(টপটপ করে চোখ থেকে পানি পড়ছে,,,, এতোদিন একটা মিথ্যা ধারণাকে মনে রেখে বাবাকে কষ্ট দিয়ে এসেছি,,, মা না থাকায় আমি যতটা কষ্ট পেয়েছি বাবা কী তার থেকে কম পেয়েছে,,,? মাকে এতোটা ভালোবাসে বলেই হয়তো নিজের জীবনে আর অন্যকারো জায়গা দেননি,,,) আ,,,আমাকে মাফ করে দাও বাবা,,,, আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি,,,,
রবিনঃ যেদিন বাবা বলে ডেকেছিস,,,, সেদিনই তোকে মাফ করে দিয়েছি,,, তবে হ্যাঁ তোর মুখে বাবা ডাক শোনার জন্য অনেক তড়পেছি,,,, অনেক বেশি,,,। তোমার মা আমার পাশে নেই আর তুই থেকেও ছিলি না,,, নিজেকে বড্ড একা লাগতো,,,।
রুপকঃ I am sorry baba,,,, i am really sorry,,,
রবিনঃ It’s ok,,,, অনেক রাত হয়েছে,,,, ঘুমিয়ে পড় গিয়ে,,,।
রুপকঃ হুম,,,, তুমি আগে ঘুমাও,,, তারপর আমি চলে যাবো,,,,
রবিনঃ ঠিক আছে,,,(বাবা ঘুমিয়ে গেলে আমি নিজের রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম,,,, বৃষ্টির রুমের সামনে গিয়ে দেখি রুমে লাইট জ্বালছে এখনো,,, কয়েকবার ডাকার পরও উত্তর না পেয়ে দরজা নক করলে দরজা খোলে গেলো,,, লাইট অন করেই ঘুমিয়ে আছে পাগলি,,, কানে ইয়ারফোন গুঁজে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,, গায়ে চাদর টেনে দিয়ে কপালে একটা কিস করলাম,,,, আমি কখনো বোনের অভাব মনে করিনি ওর জন্য,,,, ও আমার কাছে নিজের বোনের থেকেও বেশি,,, কান থেকে ইয়ারফোন খুলে দিলাম,,, ফোনে আলো জ্বলে উঠলে সেদিকে চোখ গেলো,,,,। একটা ছেলের পিক ভেসে ওঠলো,,,, মুচকি হেসে চোখ সরিয়ে নিতে গিয়ে আবার তাকালাম ততক্ষণে ফোনের আলো অফ হয়ে গেছে,,,, ফোনটা হাতে নিয়ে আবার অন করলাম,,,, এতো চেনাচেনা কেনো লাগছে,,,, যেনো কোথায় দেখেছি,,, অনেক ভালো করে চিনি,,, আবার আলো অফ হয়ে গেলে আবার অন করলাম,,,, নিজের ফোন দিয়ে একটা পিক তোলে লাইট অফ করে চলে এলাম,,,,, বারবার দেখতে লাগলাম কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছি না,,,, কোথায় দেখেছি একে,,,,)
***
আরাফাতঃ তুমি আমাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা কেনো করছো তমসা,,,,?
তমসাঃ আমি কোথায় তোকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি,,,?
আরাফাতঃ please year,,,,,(দাঁতে দাঁত চেপে) আমি এই সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছি,,, কিন্তু তুই বারবার মনে করিয়ে দিতে চাস আমি শুধুমাত্র তোর বন্ধু,,,।
তমসাঃ সব সম্পর্কে বন্ধুত্বই আগে প্রয়োজন,,, আর সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার জন্য এখনো অনেক সময় আছে আরাফাত,,,,। এতো তাড়ার কী আছে,,,?
আরাফাতঃ যা ইচ্ছে তাই কর,,,
তমসাঃ(আরাফাত আমার কোনো কথা না শুনে ফোন কেটে দিলো,,, এখন আমার নিজের ওপর রাগ হচ্ছে,,, কেনো পারছি না আরাফাতের সাথে সহজ হতে,,, ওর চাওয়া পূরণ করতে,,,)
আরাফাতঃ তবে কী বোনের কথাই সত্যি,,,? না না সেটা কী করে হয়,,,? আমি তমসাকে ছোটবেলা থেকে চিনি,,। ও এমন কীভাবে হতে পারে,,,। তাহলে আমার সাথে এমন কেনো করছে,,? আমি কী ওকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছি,,,? আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না,,,,,,
***
সিনহাঃ কে এই ইশান,,,? আমার সম্পর্কে সব জানে কী করে,,,? আর এই রোদ চৌধুরী কোথায় হাওয়া হয়ে গেলো,,,,? তখন তো দেখে মনে হয়েছিলো,,,, ধূর কী ভাবছি এসব,,, আমার ঘুমানো উচিত,,,, তাহলে এইসব বাজে চিন্তা মাথায় আসবে না,,,ঘুমা সিনহা,,, ঘুমা তাড়াতাড়ি,,,,
ইশানঃ এবার চিন্তা করতে থাকো কে আমি,,,? খুঁজতে থাকো,,,
অনেক দাম দেখিয়েছো,,, এবার সব শোধ তুলবো,,,,।
কিন্তু সুন্দরী কাকে নিয়ে ভাবছে,,? রোদ নাকি ইশান,,,, আমি কী চাইছি,,,? কাকে চিন্তা করা উচিত,,,? ইশানকে,,, না না রোদকে,,,। ধূর বাবা একজনকে করলেই হলো,,, দুজনই তো আমি,,, হাহাহাহা,,,,
সকালে মাকে কল দিতে হবে,,, রবিন আঙ্কেলের কী অবস্থা জানতে হবে,,,,?
কক্সবাজারে সাতদিন থেকে সেখান থেকেই কনাডা চলে এসেছি আর্জেন্ট কাজে,,,
সেটা নিয়ে মা আর বৃষ্টি দুজনেই রেগে আছে,,, ভালো করে কথাও বলছে না,,,
কী যে করি,,,? না ভার্সিটি যেতে হবে রেডি হয়ে নেই,,, মহারানী এখন ঘুমাতে গেছে আর আমি ভার্সিটি যাই,,,,।
তানভীরঃ পাগলি একটা,,, কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,, কীভাবে রাজি করিয়েছে এখনো মনে হলে ভয় পেয়ে যাই,,,,? এখন সবাই জানতে পারলে কী হবে ভাবতেই ভয় লাগে,,,,? বিশেষ করে বৃষ্টির বাবাকে কী বলবো,,,? খুব তো তার অফিসে দাঁড়িয়ে বলে এসেছিলাম আপনার মেয়েকে সামলান,,,, এখনতো আমি নিজেই,,, ওফ ভাবতে পারছি না,,,,সেদিন ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি কারো সাথে কথা বলছিলো,,,, না চাইতেও আমার কানে আসে,,)
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ রকি বলো,,,,,,,, বৃষ্টি বিলাস ক্যাফের স্পেশাল টেবিল বুক করেছো আমার জন্য,,,,
ওয়াও,,,, আরে কী বলছো,,,?
তুমি আমার জন্য এসব করেছো আর আমি আসবো না এমনটা হতে পারে নাকি,,,?
আমি আসছি,,, তুমি একটু ওয়েট করো,,,,(স্যারকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললাম,,,
কল কেটে দিয়ে স্যারের দিকে একবার আড়চোখে তাকিয়ে চলে যেতে লাগলাম,,,)
তানভীরঃ ব,,বৃষ্টি,,,,,?
বৃষ্টিঃ জী স্যার কিছু বলবেন,,,?
তানভীরঃ হ্যাঁ,,,, ঐ সিনহা কোথায়,,, প্রতিদিন তো একসাথেই যাও,,,
বৃষ্টিঃ আসলে স্যার আমি একটা অন্যকাজে যাবো তো,,, তাই সিনহা একাই চলে গেছে,,,
তানভীরঃ ত,,, তুমি কোথায় যাচ্ছো,,,,? ক্লাস শেষ বাসায় চলে যাও,,,,
বৃষ্টিঃ আমার একটা পারসোনাল কাজ আছে,,, সেখানে যাবো,,,,।
তানভীরঃ কিন্তু,,,,,
বৃষ্টিঃ আমি আসছি স্যার,,, আমার লেট হচ্ছে,,,,
ও কতক্ষণ ওয়েট করবে আমার জন্য ,,,?(স্যারকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে এলাম,,,
দেখবে আর জ্বলবে লুচির মতো ফুলবে,,,এবার দেখো কেমন মজা লাগে,,,)
তানভীরঃ(ফাজিল মেয়ে একটা,,,, ও বলা হচ্ছে না,,,? বের করছি তোমার ও,,,
কতোবড় সাহস ঐ ফাজিল ছেলের সাথে এমন নির্জন জায়গায় যাচ্ছে,,,
যদি কোনো ক্ষতি করে দেয় সে চিন্তা নেই,,,,,
না না আমার ওপর রাগ করে নিজের কোনো ক্ষতি করে বসলে নিজেকে কখনো মাফ করতে পারবো না,,,
আমিও বাইক নিয়ে বৃষ্টির বলা ক্যাফেতে চলে গেলাম,,,,
কিন্তু বৃষ্টি বা রকি কাউকে দেখতে পাচ্ছি না,,, স্পেশাল টেবিলগুলো তো দুতলায়,,,
সেখানে চলে গেলাম,,,, বৃষ্টি কর্নারের একটা টেবিলে বসেছে,,,,
খুব সুন্দর করে টেবিলটা সাজানো,,,, কিন্তু দুতলায় আর কেউ নেই,,,,
রকিকেও দেখতে পাচ্ছি না,,, আমি এসব ভাবার সময়ই বৃষ্টি আমাকে দেখে ফেললো,,,)
বৃষ্টিঃ স্যার আপনি এখানে কী করছেন,,,?
তানভীরঃ আ,,,,আমি,,,, মানে,,,, ক্যাফেতে মানুষ কেনো আসে,,,,
আমিও তাই এসেছি,,, এখানকার কফি অনেক ফেমাস,,,, তাই খেতে এসেছি,,,,।
বৃষ্টিঃ ওহ্ ,,,,, কিন্তু আপনি দুতলায় কেনো এসেছেন,,,,?
তানভীরঃ আমি কেনো এসেছি মানে,,,,,,?
এখানে কী শুধু তুমি একাই আসতে পারো,,,,?
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ,,,, আজকের জন্য আমি একাই আসতে পারি এখানে,,,,
কারণ ক্যাফেটা আমার,,,, আর আজকের জন্য দুতলাটা আমার জন্য ফাঁকা রেখেছি,,,,
তানভীরঃ ম,,,মানে,,,,?
বৃষ্টিঃ মানে ক্যাফেটা বাবা আামকে গিফট করেছিলো,,,,
জায়গাটা নিরিবিলি,,,,ভালো লাগে বলেছিলাম,,,,
তাই বাবা এটা আমার জন্মদিনে গিফট করেছে,,,
আর মাঝে মাঝেই আমি এখানে আসি বাবা-মার সাথে আবার একা,,,,
আর আজ একাই এসেছি,,, তাই দুতলাটা আজ শুধু আমার জন্য,,,,
বুঝতে পেরেছেন,,,,?
তানভীরঃ তাহলে রকি,,,,?
বৃষ্টিঃ আপনি ভাবলেন কীভাবে,,,,? এমন একটা ফাজিল ছেলের সাথে আমি ঘুরবো,,,,
তানভীরঃ তাহলে তখন বললে কেনো,,,?
বৃষ্টিঃ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই বলেছি,,,, ফোনের ওপাশে আপনার বোন সিনহা ছিলো,,,,
আর সে আমার কথার আগামাথা কিছুই বুঝেনি,,,,।
তানভীরঃ তুমি মজা করছো আর আমার টেনশনে মাথা খারাপ হচ্ছে,,,,, (রেগে)
বৃষ্টিঃ কীসের টেনশনে,,,,,
তানভীরঃ ঐ বাজে ছেলে যদি তোমার কোনো ক্ষতি করে দেয়,,,,(রেগে ধমক দিয়ে)
বৃষ্টিঃ আমার ক্ষতি করলে আপনার কী,,,,? যা হবার আমার হবে,,,,
আমার পরিবারের হবে,,,,,,, আর রকি কী করবে আমার,,,,?
বড়জোর রেপ করতে পারবে,,,
তানভীরঃ বৃষ্টি,,,,,,,,,,,,,,,, (চোখ রক্তলাল হয়ে গেছে,,,,
এতটা রাগ কখনো তানভীর করে না,,,)
বৃষ্টিঃ(উনার চোখমুখ দেখে ভয়ে হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসছে,,,
বেশি বলে ফেললাম নাকি,,,,,?)
তানভীরঃ(কতবড় সাহস,,,, মুখে যা আসছে তাই বলে যাচ্ছে,,,
নিজেও কী বুঝতে পারছে কী বলছে,,,?)
বৃষ্টিঃ(স্যার রাগে উল্টো ঘুরে গেছে,,, হয়তো রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে,,,,
টেবিলের ওপর থেকে একটা লাল গোলাপ নিয়ে স্যারের পিছনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লাম,,,) স্যার,,,,,,,
তানভীরঃ,,,,,,,,
বৃষ্টিঃ স্যার,,,,,,,
তানভীরঃ (পেছনে ঘুরে দেখি বৃষ্টি গোলাপ হাতে হাঁটু গেড়ে বসে আছে,,,,
এটা দেখে রাগ আরো বেড়ে গেলো,,,,
কী যে করতে ইচ্ছে করছে,,,,,,)
দাঁড়াও,,,,,(রাগি গলায়,,,)
বৃষ্টিঃ I love you Tanvir,,,,,
তানভীরঃ দাঁড়াও বলছি,,,,(ধমক দিয়ে)
চলবে,,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com