Breaking News

মুখে ব্রণ । পর্ব- ০২

বন্যাঃ এই শোন কে কি বললো আর না বললো তাতে কিছু যায় না। তুই আমার সাথে কলেজে যাবি এটাই কথা। আর তোর মানকি টুপি খুলে যাবি এখন ( দরজার কাছে দাড়িয়ে)
মাঃ তুই মা ওকে একটু বোঝা। ( মন খারাপ করে)
তানজিলঃ তুই কখন আসলি
বন্যাঃ কোচিং-এ র টাইম হইছে খেয়াল আছে তোর।
জিমঃ মাথার তার কি সবগুলো কেটে গেছে আপনার ( অবাক হয়ে)
ইমরানঃ না সত্যি বলছি আমি তোমাকে ভালবাসি।
জিমঃ আমি দেখতে একটু ও ভালো না।
ইমরানঃ তুমি যেমনই হও না কেন আমি তোমার মনকে ভালবাসি তোমার রুপকে নয় ????
জিমঃ আপনি মোহে আছেন
ইমরানঃ আমি কোনো মোহে নেই। আমি আমার মন থেকে সত্যি কথাগুলো বলছি।
জিমঃ তাই ওকে আমাকে তবে দেখে নিন একবার। ( মুখের মুখোশটা সরাতে গেলো)
ইমরানঃ আমি তোমাকে এখন দেখবো না। একবারে বিয়ের দিন দেখবো।
জিমঃ তখন যদি পছন্দ না হয়।
ইমরানঃ ভালবাসলে কখনো অপছন্দের কিছু নেই।
জিমঃ ওকে আমি কাল ভেবে জানাবো।
ইমরানঃ ওকে।
তানজিলঃ তুই যা আমি যাবো না। দেখিস না আমাকে নিয়ে কত হাসাহাসি করে। আমার কাছে বসলে নাকি ওদের বমি পায় তাই তো দূরে দূরে বসে।
বন্যাঃ তো কি হয়েছে তুই আমার পাশে বসবি।
মাঃ তুই এমন করবি বাবা।
বন্যাঃ আন্টি আপনি যান আমি দেখছি।
তানজিলের আম্মু বেরিয়ে গেলো।
বন্যাঃ যাবি না তাই তো।
তানজিলঃ না
বন্যাঃ ঠিক আছে আমি আন্টিকে আর সবাইকে বলবো তুই আমাকে রুম ডেট করার কথা বলছিস।☺☺☺
তানজিলঃ কি বললি কুত্তা কখন বলছি আমি হ্যা৷ লজ্জা লাগে না তোর।
বন্যাঃ আমাকে বলে এখন আমাকেই কথা শোনাস। আন্টিকে আমি এখনো বলবো। ( ???)
তানজিলঃ তোকে কিছু বলতে হবে না ওয়েট কর একটু রেডি হচ্ছে। যা বাহিরে। (রাগে)
বন্যাঃ কেন? (????)
তানজিলঃ তোর সামনে চেঞ্জ করবো নাকি।
বন্যাঃ করতেই পারিস। কিছুদিন পর তো তুই আমার হবি ??????
তানজিলঃ ফাজলামি করছিস। তোকে ?????
বন্যা এক দৌড়ে বের হয়ে গেলো। তানজিল হাসছে। তোকে তো সারা জীবনের জন্য নিজের করে নিতে চায়। কিন্তু বলতে পারি না যদি বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। আমার মুখে এতটা বেশি ব্রণ যা সবাই ঘৃণা করে। আমি তোকে হারাতে চায় না বন্যা। এমনিতে কেউ মিশতে চায় না। তোকে হারালে কে করবে ছোট ছোট ব্লাক মাইল। কে জুগাবে আমাকে সাহস। আমি তো তবে ঘরে বন্ধী হয় যাবো। মনে মনে ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বের হলো।
বন্যাঃ কি হয়েছে তোর মুখটা ফ্যাকাশে করে রাখছিস কেন? ( মানকি টুপি টা খুলে ফেলে দিয়ে)
তানজিলঃ তুই বেশি দেখিস চোখে।
বন্যাঃ একদমি নয়। তোকে কত কিউট লাগে জানিস। ( তানজিলের মুখে হাত দিয়ে)
তানজিলের চোখ বেয়ে পানি ঝড়ে পড়লো
বন্যাঃ কি হলো কাদছিস কেন?
তানজিলঃ তোর মতো করে আমাকে কেউ বুঝে না। ????
বন্যাঃ আচ্ছা চল। কখনো ব্রণের জন্য মন খারাপ করবি না। এটা একদিন ঠিক হয়ে যাবে। রাত কম কম জাগবি আজ থেকে। টেনশন করবি না একদম।
তানজিলঃ হুম ঠিক আছে।
তানজিল বন্যা বেরিয়ে গেলো। পাশের আড়াল থেকে মায়ের চোখে পানি ঝরছে। বন্যা মা তুই না থাকলে আমার ছেলেটাকে সাহস কেউ জুগাতে পারতো না। সবাই যে ওর মুখের ব্রণ নিয়ে পরিহাস করতো।
?ঢাকা?
– ভাই আপনি কিন্তু এখনো একটা প্রেম করলেন না
– কি জন্য করবো ঐসব আটা ময়দা সুন্দরী মেয়েদের সাথে।মাফ চায় ভাই
– কেন?( অবাক হয়ে আগ্রহ নিয়ে)
– আমার পকেটের সব টাকা ঐ আটা ময়দা কিনতে কিনতে শেষ হবে। দেখিস না ভার্সিটিতে সব মেয়েরা কেমন সাজে আসে
-ভাই আপনাকে দিয়ে হবে না এসব। একটা কাজ করেন?
-কি?
– আপনি সিঙ্গেলদের একটা কমিটি করুন
– করে ???
– আপনি সিঙ্গেল কমিটির সভাপতি হয়ে যান। আমরা সবাই সদস্য হয়ে যাব। আপনি নিজে তো প্রেম করবেন না আমাদেরকে ও তো করতে দেন না। ভালো কোনো পরামর্শ দেন না৷
-তবে রে।
চলুন এখানে পরিচয়টা দেওয়া যাক। যে বললো আটা ময়দা সুন্দরী সে হচ্ছে কাব্য। বাবার এক মাত্র ছেলে। বাবা ছেলে যেনো বন্ধু বোঝার উপায় নাই যে বাপ ছেলে। যে কমিটি করতে বললো সে হচ্ছে ইমন। খুব দুষ্টু সারাদিন কাব্যের পিছে পড়ে থাকে।
পরেরদিন
লিমনঃ কি মামা এত খুশি কেন আজ ???
ইমরানঃ আজ আমার প্রিয় মানুষটা তার ডিসিশন জানাবে☺☺☺☺
লিমনঃ হুম জানি আজ রাজি ও হয়ে যাবে।
ইমরানঃ তুই কিভাবে জালনি
লিমনঃ বলবো যদি হয় আমাদের ট্রিট দিতে হবে ???
ইমরানঃ আমাদের মানে ????
লিমনঃ আছে এখন। যা বকুল গাছ তলায় বসে আছে জিম ।
ইমরানঃ তুই কিভাবে জানলি( অবাক হয়ে)
লিমনঃ আমার পিছে সময় নষ্ট না করে শুভ কাজে যা।
ইমরান কথা বাড়িয়ে বকুল গাছ তলায় গেলো৷ জিম দাড়িয়ে আছে।
তানজিলঃ আমি রেডি চল।
বন্যাঃ বাব্বা আজ আসতে না আসতেই রেডি সূর্য কোন দিকে উঠলো রে ( অবাক হয়ে)
তানজিলঃ প্রতিদিন যেখান থেকে উঠে সেখান থেকেই।
বন্যাঃ আজ অন্য দিকে। তোর মানকি টুপি কই।)(????)
তানজিলঃ ওয়েট আনছি এখনি। ( ঘরের দিকে পা বাড়ালো)
বন্যাঃ এক পা বাড়াবি তো ট্যাং ভেঙ্গে দিবো। তোকে কত কিউট লাগছে জানিস।
তানজিলঃ হ্যা আমার মুখের দিকে কাক তাকালে ও ভয়তে পালিয়ে যাবে। তুই যে কিভাবে আমার সাথে ( ভ্রু কুচকে)
বন্যাঃ শুরু করলি তো ??????
ইমরান জিমের সামনে যেয়ে দাঁড়ালো
ইমরানঃ বকুল গাছের ফুলের গন্ধটা খুব প্রিয়।
জিমঃ আচ্ছা??। এটা বলতে কি এখানে আসছেন। (????)
ইমরানঃ আরে না মানে ( মাথা চুলকিয়ে)
জিমঃ আপনি যে লজ্জা পাচ্ছেন তাহলে আমি কই যাব। একটা মেয়ে হয়ে। (মাথা নিচু করে)
ইমরানঃ আসলে ফাস্ট তো তাই এমন লাগছে ঠিক হয়ে যাবে। আমার উত্তর টা।
জিমঃ আপনি আমার চোখের ভাষা বুঝেন না। বলে দিতে হবে নাকি ( লজ্জা পেয়ে)
ইমরানঃ সত্যি
জিমঃ হুম।
ইমরানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো নিজেকে খুব হ্যাপি মনে হচ্ছে।
সুইটিঃ কাব্য তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।
কাব্যঃ তাই বুঝি। এত লজ্জা পাচ্ছেন কেন?( ভ্রু কুচকে)
সুইটিঃ না মানে আসলে আমি তোমাকে
কাব্যঃ ওয়েট ওয়েট আগে মুখটা পানি দিয়ে ধুয়েমুছে আসুন তারপর শুনবো আপনার কথা ( সুইটির পুরো কথা বলার আগে থামিয়ে দিলো)
সুইটিঃউহু??????( রাগে সরে গেলো)
ইমনঃ ভাই তুমি এগুলো কেমনে পারো। (অবাক হয়ে)
কাব্যঃ কেন রে দেখিস না মুখে কেমন আটা ময়দা মেখে এসে হাজির। পুরোই পেত্নি। আমার তো মনে হয় জামা কাপড়ের থেকে মুখের মেকাপের ওয়েট বেশি ?????
ইমনঃ আহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা ( ভাই তুমি খুব ফানি)
কাব্যঃ রাতে একটা মিশন আছে রেডি থাকিস।
ইমনঃ গণ ধোলাই খাওয়ার জন্য আমি পারবো না! ????
কাব্যঃ এই তো বুঝে গেছিস। যদি না পারিস তবে তো জানিস।
লিমনঃ এখানে দেখি প্রেম জমে গেছে।
ইমরানঃ লিমন ডিস্টাব করিস না যা।
অবন্তিঃ ও বাব্বা এখন আমাদেরই চেনে না।
ইমরান জিম দুজনেই লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।
শুরু হলো দুজনের ভালবাসা। তানজিল বন্যার ভেতর শুধুই ঝগড়া। বন্যা তানজিলকে ব্ল্যাক মেইল করা থেকে বিরত নিলো না।
ভালোবাসার ভেতর রাগ অভিমান সব কিছুই থাকে। কলেজ ফাকি দিয়ে ঘুরতে যাওয়া ইদানীং লিমন ইমরান অবন্তি জিমের অভ্যাস হয়ে গেলো। জিম কখনো মুখ খোলেনি যতবারি ঘুরতে গেছে কেন না।
কেটে গেলো ৩ মাস এভাবে
জিমঃ কি দেখছো এভাবে।
ইমরানঃ তোমার চোখ দুটো কতো সুন্দর।
জিমঃ আমার চোখ দুটো সুন্দর নাকি পিছনের মেয়েটা সুন্দর ( ভ্রু নাচিয়ে)
ইমরানঃ আরে না আমি তা কখন বললাম।
জিমঃ তাহলে ঐ দিকে তাকিয়ে আছো কেন আমার চোখের দিকে না তাকিয়ে। ( রাগে)
ইমরানঃ আরে তা না।
জিমঃ তোমার সাথে ব্রেকআপ। আমার থেকে সুন্দরী মেয়ে তোমার আজকাল পছন্দ । (????)
উঠে হাটা দিলো রাগে জিম।
এই নিয়ে ২০০ বার ব্রেকআপ হলো দুজনের কিন্তু ব্রেকআপটা ঠিক দশ মিনিটের বেশি যায় না। আবার এক হয়ে যায়।
বন্যাঃ তুই অন্য মেয়ের দিকে তাকালি কেন?
তানজিলঃ কই তাকাইছি আমি
বন্যাঃ শোন অন্য মেয়ের দিকে তাকালে তোর চোখ তুলে নিবো।
?রাত ১০টা
– কে রে ওখানে
– কাকি দরজা খোলা আছে তো
– না বাবা খোলা নেই।
– আমার তো ওটা পছন্দ হইছিলো।
– বাসায় যাও পছন্দের জিনিজ নিতে হয় না।
মুরগির খোপের ভেতর মুরগির আওয়াজ হচ্ছে
– ধরেছি। কাকা পছন্দের জিনিস পেলাম না কিন্তু মুরগি তো পেলাম। ভূণা করে খাবো।
কাকিঃ এই আমাদের মুরগি নিয়ে গেলো
কাকাঃ চুপ থাকো দরজা খুললে আমাদের হাসটায় নিয়ে যাবে।
কাকিঃ কাব্যকে ধরে যদি পিটানো যেতো।
কাকাঃ কে পেটাবে। ওর বাবা তো আমাদের কম দেয় না।
কাকিঃ ঘুমায়।
ইমনঃ ভাই মুরগি দিয়ে
কাব্যঃ আজকের পিকনিক।
ইমনঃ মজা করে খাওয়া যাবে।
কাব্যঃ তোকে কে দিবে। তুই হাড্ডিগুলো পরিষ্কার করবি।
দেখতে দেখতে ৬ মাস কেটে গেলো
একদিন
বন্যাঃ তানজিল তুই আমার চোখের দিকে আমার চোখের ভাষা বুঝিস না।
তানজিলঃ কি বুঝবো।
বন্যাঃ কিছুই বুঝিস না।
তানজিলঃ না তো। তুই তো আমাকে ব্ল্যাক মেইল করিস ।
বন্যাঃ ও আচ্ছা। আমি এতদিন ভূল ছিলাম। আচ্ছা আর কখনো করবো না।
বন্যা চোখের পানি মুছে বেরিয়ে গেলো। তানজিল কিছুই বুঝলো না।
ইমরানঃ এই তোমার মুখটা দেখাও তো
জিমঃ কেন (অবাক হয়ে)
ইমরানঃ দেখাও
জিমঃ তুমি না বলছো বিয়ের পর দেখবা তাহলে আজ
ইমরানঃ দেখতে ইচ্ছে হইছে তাই। দেখাও (রাগি মুডে)
জিমঃ আচ্ছা দেখাচ্ছি এত রাগছো কেন?
জিম মুখটা খুলে দিলো ইমরান জিমের মুখটা দেখে সাথে সাথে
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com