Breaking News

তাঁহার অপেক্ষায় | পর্ব-২

কাব্য গাছপালার ডাল পাতা ও লতা দিয়ে সুন্দর করে নৌকার মাঝখানে লিখে রাখছে “আমি তোমাকে ভালবাসি “
নীলাদ্রি অবাক হয়ে লেখাটার দিকে চেয়ে ছিলো মুগ্ধ হয়ে। কাব্য নীলাদ্রির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। নীলাদ্রির মুখ থেকে কিছুর শোনার জন্য। চাতক পাখির মতো চেয়ে রয়েছে কাব্য৷ ” নীলাদ্রি দৌড়ে নদীর পাড় থেকে চলে গেলো৷ ঘনকুয়াশায় নীলাদ্রি আড়াল হয়ে গেলো।” কাব্য মনটা খারাপ করে চলে গেলো। মুখটা কালো করে কাব্য বলতে লাগলো
” পথ চেয়ে ছিলাম বসে তোমার অপেক্ষায়,
আসলে তুমি দিলে দেখা
জুরিয়ে গেলো মনটা।
রেখেছিলাম সাজিয়ে তোমায় ভালবাসি কথাটা, ভেবেছি তুমি দিবে সাড়া আমার ভালবাসায় “আশা ছিলো স্বপ্ন ছিলো তোমায় ঘিরে।”
একি করলে তুমি মুখ ফিরিয়ে আমার থেকে,হৃদয়ের কোণে উঠলো ব্যথা নাহি পারি কমাতে,এই কষ্ট ছাড়বে নাকো আমাকে কখনো।
নীলাদ্রি বাসায় যেয়ে ঢকঢক করে পানি খাচ্ছে। আর কাব্যের লেখা নৌকার উপরের কথাটা ভাবছে। রমেলা বেগম পিছন থেকে এসে নীলাদ্রিকে ডাক দিলো নীলাদ্রি চমকে উঠে, রমেলা বেগমের দিকে ফিরে দাঁড়ায়। রমেলা বেগম নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে
– কি হয়েছে মা তোর এত তাড়াতাড়ি বাসায়
নীলাদ্রি থ ম খেয়ে
-ক ক কই কিছু না। আজ ভালো লাগছে না তাই চলে আসছি।
রমেলা বেগম নীলাদ্রির গলায় কপালে হাত দিয়ে
-জ্বর এসেছে নাকি। “
-না আম্মা এমনি ভালো লাগছে না। “
-ঠিক আছে এখন ঘুমিয়ে নে। ” ঘুমের জন্য হয়তো তোর ভাললাগছে না। “
-ঠিক আছে। “
নীলাদ্রি ঘরে যেয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ বুঝতেই সকালের ঘটনা ভাসছে চোখে।
কাব্য বাসায় গেলো। রেহানা বেগম কাব্যকে নাস্তা দিলো কিন্তু খেলো না। না খেয়েই আবার বেরিয়ে পড়লো। রেহানা বেগম আয়শাকে ডাক দিলো। আয়শা এসে
-কি হয়েছে আম্মা
-কাব্যের কি কেন কিছু হয়েছে
-তা তো কইতে পারি না। কেন? আম্মা
-পোলাটার মুখটা কেমন শুকনা। নাস্তা করলো না। কেউ কি কিছু বলছে।
-আম্মা ভাইয়া কই আমি শুনে আসি।
-যা মা শুনে আয়।
নীলাদ্রি সাদা কালারের থ্রী পিছ স্যালোয়ার উড়না পড়ে নদীর তীরের দিকে যাচ্ছে৷ নীলাদ্রিকে যেনো সাদা ডানাকাটা পরী লাগছে। নদীর তীরে আসতেই কাব্যকে নৌকা নিয়ে বসে আছে দেখলো। নীলাদ্রি কিছুটা লজ্জা পেলো৷ কাব্য নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আকাশ থেকে কোনো পরী নেমে এসেছে। সাদায় আলোকিত হয়ে গেলো চারপাশ। নীলাদ্রি নৌকার মাথায় এসে হাঁটু ভাজ করে কাব্যের দিকে তাকালো। কাব্যের মাথায় গামছা বাধা পড়নে লুঙ্গি আর সাদা রংয়ের স্যান্ড গেঞ্জি। হাতে বৈঠে । বেশ মানিয়েছে। কাব্য নীলাদ্রিকে বলতে লাগলো
-তুমি কোন রাজ্যের পরী গো
এসে কেনো দিলে দেখা
এই হৃদয়ে যে শুধুই
তোমার স্পন্দন।
নীলাদ্রি হেসে দিয়ে
-ওহে মাঝি আমি যে
তোমার নাওয়ের মাঝে
হারিয়ে গেছি, পারিনা যে
ভূলিতে তোমায়, ছুটে আছসি
বারবার তোমার পানে।
আমার যে বড্ড মিস করি
তোমায় এক পলক না দেখিলে। “
কাব্য বৈঠে রেখে ধীরে ধীরে নীলাদ্রির কাছে আসলো৷ নীলাদ্রির হাত দুটো ধরে নীলাদ্রির চোখের উপর চোখ রাখলো। কারো মুখে কোনো কথা নেই৷ চোখে চোখে কথা হচ্ছে দুজনের। ধীরে ধীরে নীলাদ্রি কাব্যে দিকে মুখটা এগিয়ে দিলো সাথে সাথে নৌকায় পানি উঠে নৌকাটা ডুবে গেলো৷ নীলাদ্রি ও মা বাঁচাও জোড়ে চিল্লিয়ে উঠলো। রমেলা বেগম বাইর থেকে ঘরে ঢুকে
-কি হয়েছেরে ছেরি। এত জোড়ে চিৎকুর মারোস কেন?
নীলাদ্রি মাথায় টুকা দিয়ে
-কই চিৎকুর মারছি। আম্মা তুমি যাও তো। “
রমেলা বেগম চলে গেলো। নীলাদ্রি একটা আঙ্গুলে নক দাত দিয়ে কামড়াছে আর বলছে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম৷ “
আয়শা কাব্যের রুমে যেয়ে দেখলো কাব্য ব্যাগপত্র সব গুছিয়ে নিছে। আয়শা কাব্যেকে বললো
-ভাইয়া কি হয়েছে তোমার। ব্যাগপত্র নিয়ে কই যাইতাছো।
কাব্য কিছু না বলে ব্যাগ নিয়ে চলে গেলো
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com