Breaking News

অর্ধমানব | পর্ব-০৩

ও খুব শক্তি শালী। ওকে আটকানোর ক্ষমতা কারো নেই।
এই কথাটা শুনে আমি খুবই অবাক হয়ে যায়।
নীলা তো ভয়ের চুটে আমাকে জড়িয়েই ধরেছে।
আর বলছে তুমি আমাকে এ কোথায় নিয়ে এলে?
আমি নীলাকে বললাম তুমি ভয় পেও না। কিছুই হবে না।
নীলা আমাকে আরো জিজ্ঞেস করলো এই লোকটি কী সব বলছে?
কে আমাদের বাঁচতে দেবে না। কে মেরে ফেলবে আমাদের?
আসলে আমি এমন একটা পরিস্থিতিতে পরে গেছি যে নীলাকে সত্যি কথাটা বলতে ও পারছি না।
আমি নীলাকে বললাম চলো আমরা এখান থেকে চলে যায়।
আমি নীলাকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম।
বাড়ি আসতেই নীলা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে কাঁদতে ছিলো।
আসলে মেয়েটা খুবই ভয় পেয়ে গেছে।
ওই সাপুড়ে যে ভাবে মেরা ফেলার কথা গুলো বলেছে যে কেউ ভয় পাওয়ার ই কথা।
এখন আমার কী করা উচিত আমি বুঝতে পারছি না।
আমি কী সত্যি কথাটা নীলাকে বলে দেবো?
কিন্তু সত্যি কথাটা যদি নীলা জানতে পারে তাহলে তো সহ্য করতে পারবে না।
আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না।
কিন্তু একটা বিষয় ভেবে আমার খুব অবাক লাগছে
যে এই সাপটা কেন আমাদের পিছনে পরলো?
আর কী বা তার পরিচয়?
ওর যদি কোন ক্ষতি করার থাকতো তাহলে তো এতো দিনে করে ফেলতে পারতো।
কিন্তু আজব ব্যাপার আজ পর্যন্ত আমার পরিবারে কেউ এই সাপ দ্বারা ক্ষতি গ্রস্থ হয়নি।
তাহলে এই সাপটা কী চাচ্ছে?
আমি আমার কথা গুলো আমার পরিবারের সাথে শেয়ার করতে পারছি না শুধু নীলার জন্য।
মা যদি জানতে পারে এসব ঘটনা তাহলে নীলাকে ওর বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেবে।
বিষয় গুলো নিজের মধ্যে চেপে রাখতে রাখতে আমার নিশ্বাস নিতেই কষ্ট হচ্ছে।
আমি বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাইরের আলো বাতাস নিতে।
আমি সরা সরি আমার বন্ধুর বাসায় চলে গেলাম।
গিয়েই সব কিছু খুলে বললাম যা যা ওই সাপুড়ের ওখানে হয়েছে।
বন্ধু সব শুনে বললো যখন সাপুড়ে বলেছে তাহলে নিশ্চয়ই এটা শক্তিশালী কিছু একটা হবেই।
আমি বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম তাহলে কী করবো এখন তুই বলে দে?
বন্ধু বললো চিন্তা করিস না।
উপর ওয়ালা একটা না একটা রাস্তা ঠিকই বের করে দেবে।
আমার বন্ধু আমাকে বললো আমাদের গ্রামে নাকি একজন কবিরাজ আছে
যিনি সব ধরনের সমস্যার সমাধান এর জন্য কাজ করেন।
ওনার সাথে একবার দেখা করলে কেমন হয়?
যদি ওনি তোকে কোন সাহায্য করতে পারেন।
আমি বললাম চল তাহলে এক্ষুনি কবিরাজ সাহেবের সাথে গিয়ে দেখা করে আসি।
আমি আমার বন্ধুকে সাথে নিয়ে কবিরাজ এর বাড়ি চলে গেলাম।
আমরা গিয়ে দেখি ওনি বাড়িতেই আছে।
আমি সম্পূর্ন ঘটনা খুলে বললাম।
ওনি আমার কথা শুনে আমাকে বললো নিশ্চয়ই তুমার ঘরে ভয়ংকর শক্তি শালী সাপ প্রবেশ করে।
আমি বললাম এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া কী কোন উপায় নেই?
কবিরাজ বললো তুমার বাড়ির চারপাশ টা তাবিজ দিয়ে বন্ধ করতে হবে।
কবিরাজ সাহেব আমাকে একটা তাবিজ দিলো আর বললো এটা তুমার স্ত্রীর হাতে পরিয়ে দিয়ো।
আর খেয়াল রেখো এটা যেন তার হাত থেকে কখনো খুলা না হয়।
কবিরাজ সাহেব আরো বললো ওনি কাল আমাদের বাড়িতে এসে চার পাশ বন্ধ করে দিয়ে যাবেন।
আমি ওখান থেকে চলে আসলাম।
আর এসেই নীলাকে ওই তাবিজটা পরিয়ে দিলাম।
আর বললাম আমার হুকুম ছাড়া এই তাবিজ খুলবে না।
পরের দিন সকাল বেলা কবিরাজ সাহেব আমাদের বাড়িতে আসলো
আর বাড়ির চারপাশে তার তাবিজ গুলো পুতে দিলো আর আমাকে বললো আর কোন সমস্যা নেই।
আমি বাড়ির চারপাশ বন্ধ করে দিয়েছি ওই সাপ আর ভিতরে ঢুকতে পারবে না।
কবিরাজ সাহেব আমার সাথে কথা বলা শেষ করে চলে আসলো।
আসলে আমি তখন বুঝতে পারিনি ওনার সাথে এটাই আমার শেষ কথা।
পরে দিন সকাল বেলার কথা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম।
হঠাৎ আমার বন্ধুর ফোন এলো।
আর ও আমাকে জানালো কবিরাজ সাহেব আর বেঁচে নেই।
ওনি মারা গেছেন। কথাটা শুনে আমার গলা শুকিয়ে গেলো।
আমি জিজ্ঞেস করলাম কী ভাবে মারা গেলো ওনি?
আমার বন্ধু বললো ওনাকে সাপে কেটেছে। তুই তারা তারি ওনার বাড়িতে চলে আয়।
আমি ঘুম থেকে উঠেই দৌড়াতে লাগলাম। আর কবিরাজ সাহেবের বাড়িতে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি তাকে মাটিতে শুয়িয়ে রাখা হয়েছে।
আমার বন্ধু আমাকে বললো বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নামি দামি ওঝারা এসেছে।
কিন্তু কেউ বিষ নামাতে পারছে না। সবাই একি কথা বলছে।
এ কোন সাধারন সাপের বিষ না। এটা হলো এক ভয়ংকর সাপের বিষ ।
এর বিষ নামানোর ক্ষমতা নাকি কারো নেই।
আমার আর বুঝতে বাকী রইলো না যে এটা ওর ই কাজ।
আমাদের সাহায্য করার জন্য কবিরাজ সাহেবকে মেরে ফেলা হয়েছে।
আর কিছু করার নেই। কবিরাজ সাহেবকে পাশের কবরাস্হানেই দাফন করা হয়।
সারা দিন কবিরাজ সাহেবের বাড়িতেই ছিলাম।
ওনাকে দাফন করার আগ পর্যন্ত আমি আর আমার বন্ধু ওই বাড়িতেই কাটালাম।
তাই বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়।
বন্ধু কে ওর বাড়িতে পৌছে দিয়ে আমি বাড়ি ফিরে আসি।
বাড়ি ফিরেই আমি আমাদের রুমের দিকে যেতে থাকি।
আমি আমাদের রুমে ঢুকেই একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম।
আমি দেখতে পেলাম মস্ত বড় একটা সাপ আমার স্ত্রী নীলাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে।।
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com