Breaking News

ডাব বিক্রেতা । পর্ব -০২

পরের দিন কাব্য কলেজে যায়। কলেজে যেয়ে জান্নাতকে লুকিয়ে দেখে। জান্নাতের ও তার বান্ধবীদের চোখ এড়াতে পারে না। কাব্যের সাথে মজা নেওয়া শুরু করে দেয়।
এভাবে কেটে গেলো ৩ টা মাস। কাব্য মজার পাত্র হলে ও কাব্যের কাছে বেশ ভালই লাগতো কারণ জান্নাত। এই ৩ মাসে বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলে কাব্য কিন্তু বলতে পারে না।
জান্নাতঃ এই আজ তো কাব্য কলেজে আসলো না।
মারিয়াঃ তাতে কি ও আসলে মুরগি সাজবে না আসলে ভালো থাকবে।
জান্নাতঃ তবু ও রে ওর সাথে রোজ কিছু না কিছু করছি। এমনটা তো কারো সাথে করা হয়নি।
তিশাঃ তোর এত লাগছে কেন। তুই যা নিজেই খোজ নে।
জেরিনঃ এই তোরা কেউ কাব্যকে দেখছিস আজ ( এসেই)
মারিয়াঃ না। আমরা ও তো খুজছি।

জেরিনঃ নাহ ছেলেটাকে অনেক অপমান করছি যা ইচ্ছা সেই ব্যবহার করছি। ।
জান্নাতঃ আমি ও তাই বলছি ও তো কোন প্রতিবাদ করেনি।
রাফসানঃ প্রতিবাদ করবে কেন? যদি ভালোবাসার মানুষটা মজা নেওয়ার সময় যুক্ত থাকে।
জেরিনঃ মানে
রাফসানঃ মানে কি। কাব্য জান্নাতকে ভালোবাসে আর তাই তো ইচ্ছা করে কাব্য মুরগি সাঝে জান্নাতপর হাসি দেখার জন্য।
সবাই হা করে পড়লো। নিরবতা পালন করলো ২ মিনিট।।
জেরিনঃ তুই জানলি কি করে

রাফসানঃ এই কলেজে ওর সাথেই শুধুই আমার বন্ধুত্ব। আমি জিঙ্গেস করলেই বলতো শুধু জান্নাতের জন্যই সবকিছু করি। আমাকে বলতে মানা করছে তবু ও বললাম।
জান্নাত উঠে হাটা দিলো। ভাবতে শুরু করে দিলো কাব্য ওর দিকে কেমন করে তাকিয়ে থাকতো৷ কেন ফলো করতো। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন দেখতো৷ কেন এত অত্যাচার সহ্য করলো। তাহলে কি আমাকেই ভালোবাসে।

যা আর ভালো লাগে না। আব্বুর জন্যই আজ কলেজে যাওয়া হলো না। জান্নাতকে দেখতে পেলাম না৷ আজ তো কেউ মজা নিতে পারবে না। ভালো লাগছে না। অনেক কিছুই ভাবতে লাগলো কাব্য।।।।
জেরিনঃ রাফসান তুই এটা আগে আমাকে বলবি না।
মারিয়াঃ ও কি বলবে কলেজের প্রথম দিন থেকেই তো দেখে আসছি কাব্য জান্নাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। জান্নাত হাসলে কেমন মুগ্ধ হয়ে দেখতো। সারাদিন শুধুই ফলো করতো৷
তিশাঃ হ্যা রে কিন্তু আমরা কাব্যের ভালবাসা দেখতে পেলাম না।
জেরিনঃ হ্যা রে। কাব্য আমার এই কদিনে ভালই উন্নতি করে দিছে।
রাফসানঃ কি উন্নতি

জেরিনঃ এখন না পরে কোনদিন বলবো।।।
জান্নাতের আজ যেনো কোন কিছুই ভালো লাগছে না। কেমন একটা কষ্ট অনুভব করছে মনে। খেতে পড়তে ঘুমাতে কোনকিছুই ভালো লাগছে না। সব কিছু যেনো উল্টে গেলো৷ তবে কি কাব্যের প্রেম পড়ে গেলাম। নাহ আমি তো কোন ছেলের প্রেমেই পড়বো না।
পরেরদিন কাব্য কলেজ গেইট এ যেতে না যেতেই
জেরিনঃ এই দাড়া গাধার বাচ্চা।
কাব্য দাড়িয়ে গেলো আর ভাবছে এই রে আজ মনে হয় রক্ষা নাই।
জেরিনঃ অনেক বড়ো হিরো হয়ে গেছিস তাই না।
কাব্যঃ হিরো হলে কি আর এখানে থাকতাম আপু।
জেরিনঃ ঠিক বলছিস৷ তবে আজ তুই হিরো ( এক তোড়া লাল গোলাপ ধরিয়ে দিয়ে)
কাব্যঃ এটা ( অবাক হয়ে)

জেরিনঃ আরে গাধা যাকে ভালোবাসিস তাকে যেয়ে প্রপোজ করবি হিরোদের মতো। আর যদি না করিস তবে তোর কপালে দুঃখ আছে
কাব্যঃ কাকে করবো
জেরিনঃ নাটক করিস কাকে করবি আমরা কিছু জানি না। কানের নিচে দুটো দিলে বুঝতে পারবি কাকে করবি
কাব্য পুরোই থ জেরিন আপু কিভাবে জানলো এক তো রাফসান জানে তাহলে। আমি যদি জান্নাতকে প্রপোজ করি তাহলে যদি জান্নাত আমাকে একসেপ্ট না করে।
জেরিনঃ কি ভাবছিস। মার দেওয়া শুরু করবো না যাবি।
কাব্যঃ যাচ্ছি

মারিয়াঃ জান্নাত বলি কি কাব্য ছেলেটা ভালোই আছে চাইলে এগোতে পারিস।
জান্নাতঃ কি বলছিস
তিশাঃ শোন আমরা মানুষ চিনতে ভূল করি না। আমরা ও তো প্রেম করি।
জান্নাতঃ তবুও কেমন যেনো ভয় কাজ করে। যদি আমাকে ঠকায়।
মারিয়াঃ ওরে শহর ছাড়া করে দিবো।
জান্নাতঃ আমি যা কষ্ট পাবো
তিশাঃ উড়িয়ে দিবি।

কাব্য পিছন ফুলের তোড়া নিয়ে হাটছে। পিছে জেরিন ও রাফসান এসে জেরিনের সাথে যোগ দিলো। কাব্যের ভেতরে কেমন একটা ভয় কাজ করছে কি হবে না হবে। সাত পাঁচ না ভেবে জান্নাতের সামনে হাটু মুড়ে বসলো ফুলের তোড়া হাত দিয়ে জান্নাতের সামনে ধরলো,,
দেখো তোমাকে প্রথম দেখাই খুব ভালোবেসে ফেলছি। এই তিনটা মাসে এতটাই ভালবেসে ফেলছি। তোমাকে ছাড়া আমার চলবে না। রোজ স্বপ্নে তোমাকে বাই সাইকেলের সামনে বসিয়ে শহর ঘুরে বেড়ায়।তোমায় নিয়ে রাতের আকাশের মিষ্টি চাদটা দেখি। তুমি কি হবে আমার বাস্তবের রাণী। কথা দিচ্ছি যতক্ষণ বাচবো তোমার হয়ে থাকবো
সবাই হা করে পড়লো কাব্যের অদ্ভুত প্রপোজ করে।।।
(এই যে পাঠকগণ আপনারা আবার এভাবে প্রপোজ করতে যেয়েন না তাহলে মার একটা ও নিচে পড়বে না)

কাব্য চোখ বন্ধ করে কথা বলে দিলো। হার্টবিট বেড়েই চলেছে এই বুঝি ব্লাস্ট হয়ে যাবে। জান্নাত বুঝি চড় মারলো মুখে। কিন্তু না জান্নাত কাব্যের হাত দুটো নিজের হাত দিয়ে মুঠো করে ধরলো
আজ পর্যন্ত অনেক স্বপ্নই দেখছি জীবনে। আমার জীবনে এমন কেউ আসুক সে সবার থেকেই ভিন্ন হোক। আমার ছোট ছোট স্বপ্নগুলো যদি পূরণ করতে পারো তাহলে আমার হাতটা ধরো। মাঝপথে এসে ছেড়ে দিয়ো না। তাহলে আমি ভেসে যাবো। আমি হবো তোমার স্বপ্ন দেখা রাণী যদি তুমি আমার রাজা হও 

কাব্যঃ হ্যা হবো অবশ্যই তোমার সকল স্বপ্নের রাজা।।।
( পাঠকগন আপনারা আবার কি চিন্তা করছেন আজকাল এই যুগে এমন নরমাল প্রপোজ হয় নাকি৷। রহস্য)
জেরিনঃ ওরে আমি ফিট হয়ে যাবো ধর কেউ আমাকে।
রাফসানঃ কি হয়েছে আপু
জেরিনঃ আমার জীবনে এমন প্রপোজ পাইনি। পেলে তো একসেপ্ট করে নিতাম।
রাফসানঃ আপু আমি তোমাকে করি তুমি একসেপ্ট করে নাও।
মারিয়াঃ কি বললি রাফসান তুই তোকে আজ
রাফসান দৌড় দিলো

কাব্য আর জান্নাত উঠে দাড়ালো লজ্জায় একে অপরের দিকে তাকাতে পাচ্ছে না।
তিশাঃ এখন আর লজ্জা পেলে হবে না। আমাদেরকে ট্রিট দিতে হবে।
জেরিনঃ তোদের সবাইকে কাব্য আর জান্নাতের পক্ষ থেকে আমি ট্রিট দিবো।
তিশাঃ তুমি কেন আপু
জেরিনঃ আমি মুগ্ধ ওদের উপর। এরাই এই কলেজের বেস্ট কাপল। এদের ভেতর আসল ভালবাসা। মিলিয়ে নিস।।।
মারিয়া রাফসানকে ধরে কয়েকটা কিল ঘুসি মেরে দিলো
রাফসানঃ আর মেরো না লাগছে
মারিয়াঃ লাগুক। তুই কখনো করছিস এমন প্রপোজ আমাকে। এসেই তো আই লাভ ইউ বলছোস। এদেরটা দেখে জেরিনকে প্রপোজ করবি। লুইচ্ছা তোরে আজ 

রাফসানঃ আরে মজা করছিলাম তো। ওগো প্রিয় আমি তো তোমারই। তোমাকে ছাড়া আমার এই মনে আর কাউকেই যে চায় না। শুধু তুমি আর তুমি। তোমার ছবি এই বুকে একে নিয়েছি
মারিয়াঃ তু তু তমি এত সুন্দর কথা কিভাবে শিখলা। 

রাফসানঃ তোমার ভালোবাসার অনুভূতিতে আমার এই মনে প্রতিনিয়ত কবিতা ফুটে উঠে।
মারিয়াঃ তোমার খুব লাগছে
রাফসানঃ না তোমার মার তো আমার ভালবাসা। তোমার রাগ অভিমান আমার অনুভূতি
মারিয়াঃ আমার সাথে আজ এত সুন্দর করে কথা বলছো আমি সত্যি খুব খুশি। i love you
রাফসানঃ i love you too 
( ভূল করে ও কেউ এভাবে নিজেদের ভালোবাসার মানুষকে বলতে যেয়েন না। যতই মনের অনুভূতি দিয়ে কবিতা লিখেন না কেন সবকিছুই আবেগ ডায়লগ। এই যুগে এসব কেউ চায় না অন্যকিছু চায় )

তিশাঃ তোদের অনেক ভালোবাসা হয়েছে এখন চল খেতে যায়।
রাফসানঃ কে খাওয়াবে।
জেরিনঃ আমি চল আজ তোরা যা খাবি তাই খাওয়াবো
রাফসানঃ কিপটা আপুর মনে দয়ার সাগর কবে হলো। ( হেসে দিয়ে)
জেরিনঃ তুই কিন্তু আমাকে
রাফসানঃ না আপু তুমি ছাড়া আর কে আছে যে বুঝবে।
জেরিনঃ রাফসান তোকে
তিশাঃ জগড়া শুরু করে দিলি।
রাফসানঃ না চল।

জেরিন সবাইকে পেট পুড়ে খাইয়ে সবাইকে বিদায় দিয়ে দিলো।
রাতে জান্নাত কাব্যের দেওয়া কাগজটা খুললো,,,
তোমার স্নিগ্ধতাই মুগ্ধ আমি
তোমাকে চায় বারে বারে মন
অফুরন্ত ভালোবাসায় রাঙ্গিয়ে দিবো তোমাকে। তুমি একেছো এই হৃদয়ে তোমার ও ছবি। মুছবে না কখনো এই মন থেকে তুমি। তোমারই ছিলাম তোমারই থাকবো।
I love you

জান্নাত কাগজটার উপর কয়েকটা চুমু দিয়ে। কাব্য আমি তোমাকে ভালোবাসি।।
পরের দিন কলেজে সবাই কলেজে আসলো। সবাই সবার সাথে কথা বলছে কিন্তু কাব্য আর জান্নাত দুজন দুজনের দিকে তাকাচ্ছে কিন্তু লজ্জায় কথা বের হচ্ছে না মুখ দিয়ে।।।
কাব্য জান্নাতকে চিঠি লিখে দেয়। ওদের ফোনে কোন কথা হতো না। কলেজে আসলেই দেখা কিন্তু কথা লজ্জায় কেউ বলতে পারছে না। শুধু মুগ্ধ হয়ে দেখে যাচ্ছে।
এভাবে কেটে গেলো দুদিন। কেউ কথা বলতে পারছে না। জেরিনের চোখ এড়ালো না
জেরিনঃ কাব্য এদিকে আয় তো
তিশাঃ জান্নাত এদিকে আয়
দুজন দুদিকে উঠে চলে গেলো

চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com