সিনিয়র বউ | পর্ব -৫
তানিয়ার কথা শুনে তামিম ওর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।।
আর তানিয়া তামিমের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি হাসছে।।
তামিমঃ আআমি এইসব পারবো না আমার মানিব্যাগ দেন বলছি।।
তানিয়াঃ না দিলে মানিব্যাগও পাবা না বলেই তানিয়া মানিব্যাগটা নিজের কোমড়ের মধ্যে গেঁথে দিল।।
তামিমঃ এ কোন বিপদে পরলাম রে ভাই (মনে মনে)।।
তামিম চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবছে এখন কি করবে।। মানিব্যাগটা যদি তানিয়ার হাতে থাকতো তাহলে কেড়ে নেওয়া যেত।। কিন্তু মানিব্যাগটা তো তানিয়া নিজের কোমড়ে গেঁথে রেখেছে।। এখন মানিব্যাগ আনতে হলে তো তানিয়ার কোমড়ে হাত দিতে হবে।। জীবনে কখনো কোনো মেয়ের শরীরেই হাত লাগাইনি তাহলে আজ কীভাবে তানিয়ার কোমড়ে হাত লাগাবো।।
তানিয়াঃ কি হলো এতো কি ভাবছ.? (তামিমকে হালকা ধাক্কা দিয়ে)
তামিমঃ হে না মানে বলছি কি প্লিজ এটা বাদে অন্যকিছু চান আমি এটা পারবো না একটু বোঝার চেষ্টা করেন।।
তানিয়াঃ কেন পারবে না শুনি, বাহিরের মেয়েদেরকে তো ভালোই টিজ করতে পার তাহলে আমায় একটা পাপ্পি দিলে প্রব্লেম কি.? আমি তো আর বাহিরের কেউ না তোমার নিজের ই বউ।।
তামিমঃ কিন্তু আমি জীবনেও কোনো মেয়েকে (তামিমকে থামিয়ে)।।
তানিয়াঃ আমি এতো কথা শুনতে চাচ্ছি না।। পাপ্পি দাও আর মানিব্যাগ নাও নাহয় আমি গেলাম আম্মুকে রান্নার কাজে হেল্প করতে।।
তামিমঃ চুপ করে ভাবছে কি এখন কি করবে।। পাপ্পি না দিলে তো তানিয়া মানিব্যাগ দিবে না, আর মানিব্যাগ ছাড়া ভার্সিটিতে কীভাবে যাব.? ভার্সিটিতে গিয়ে টাকা খরচ না করলে তো আমার হয় ই না।।
তানিয়াঃ কি হলো চুপ করে আছ কেন দিবে নাকি চলে যাব.?
তামিমঃ কোথায় দিতে হবে.? (অসহায়ের মতো)
তানিয়াঃ পাপ্পি কোথায় দেয় জান না.?
তামিমঃ আমি কি করে জানবো, আগে কখনো কাউকে দিয়েছি নাকি।।
তানিয়াঃ আচ্ছা যাও গালের মধ্যে দিয়ে দাও।।
তামিমঃ আচ্ছা গাল এদিকে আনেন।।
তানিয়াঃ হুম এবার দাও (তামিমের মুখের সামনে ওর গাল নিয়ে গিয়ে)।।
তামিমঃ চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে তানিয়ার গালের দিকে তার ঠোঁটগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো।। কিন্তু তানিয়া যে হঠাৎ এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে তা আগে জানা ছিল না।।
তামিমকে চোখ বন্ধ করে তার গালের দিকে এগুতে দেখে তানিয়া তার গালটা ঘুরিয়ে তামিমের মুখের কাছে তার মুখ নিয়ে আসলো।। তারপর তানিয়া তার দুই হাত দিয়ে আলতো করে তামিমের গালে ধরে তামিমের ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট জোড়া এক করে দিল।।
তামিম নিজের ঠোঁটের মধ্যে নরম মিষ্টি জাতীয় কোনো জিনিসের ছোঁয়া পেয়ে নিজের চোখ খুলে দেখলো তানিয়া তার ঠোঁট গুলোকে তার ঠোঁটের সাথে চেপে ধরে রেখেছে।। তামিম চোখ বড় বড় করে তানিয়ার দিকে তাকালো কিন্তু তানিয়া সেটা বুঝতে পারেনি কারণ সে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।।
তানিয়া এবার আস্তে আস্তে তামিমের ঠোঁট গুলোতে কিস করতে শুরু করলো।। তানিয়ার এমন কাজ তামিমের প্রথমে খারাপ লাগলেও এখন ঠিকই ভালো লাগছে।। তামিম এবার চোখ বন্ধ করে তানিয়ার ঠোঁটের স্পর্শ নিতে লাগলো।। তামিমের মনে এখন এক অদ্ভুত অনুভূতি সৃষ্টি হতে লাগলো।। তামিমের কাছে এই মূহুর্তটা সবচেয়ে সুখময় মূহুর্ত মনে হচ্ছে।। এই মূহুর্তটা যদি কখনো শেষ না হয়ে এইখানেই থেমে যায় তাহলে অনেক ভালো হয়।।
হঠাৎ তানিয়া তামিমের ডান হাত ধরে তার কোমড়ের মধ্যে নিয়ে লাগালো।। এতে তামিম অনেক বড় একটা শক খেল আর বিদ্যুৎ গতিতে তার হাত তানিয়ার কোমড় থেকে সরিয়ে তানিয়ার থেকে সে নিজেও কিছুটা দূরে সরে গেল।। তানিয়া তামিমের দিকে তাকিয়ে দেখলো তামিম মাথা নিচু করে তার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।।
তানিয়াঃ কি হলো তুমি এমন করলা কেন.?
তামিমঃ কেমন করলাম.?
তানিয়াঃ এইভাবে দূরে গিয়ে দাড়ালে কেন.?
তামিমঃ তো কি করবো, আর আপনি কিন্তু কাজটা ঠিক করেন নি।।
তানিয়াঃ কোন কাজ.?
তামিমঃ আপনি বলেছিলেন আপনার গালে পাপ্পি দিলেই হবে, কিন্তু আপনি কি করলেন.!
তানিয়াঃ আসলে ওইদিন তোমায় কিস করার পর থেকে এখন তোমার ঠোঁট গুলো দেখলেই কেমন যেন নেশা লেগে যায় তোমার ঠোঁটের প্রতি।।
তামিমঃ কথাটা শুনে বেশ লজ্জা পেল, আর আগের মতোই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।।
তানিয়াঃ কেন তোমার ভালো লাগেনি.?
তামিমঃ তানিয়ার কথায় এখন কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না।। এইখানে আরও কিছুক্ষণ থাকলে তাকে শুধু লজ্জার সম্মুখীন হতে হবে।। তাই সে কোনোভাবে বললো, আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে মানিব্যাগটা দেন।।
তানিয়াঃ ওহ হে এই নাও তোমার মানিব্যাগ (তামিমের হাতে দিয়ে)।।
তামিমঃ সেখানে আর ১ মিনিটও দাড়ালো না, তারাতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।।
তানিয়াঃ আরে আরে আমার কথা তো, যাহ চলেই গেল।।
রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই পরলাম আম্মুর সামনে।। আমায় দেখেই আম্মু বললেন…
আম্মুঃ কিরে কোথাও যাচ্ছিস নাকি.?
তামিমঃ হে একটু ভার্সিটিতে যাচ্ছি।।
আম্মুঃ সে কি ২দিন হলো বিয়ে করলি,
কোথায় নতুন বউকে একটু সময় দিবি তা না তুই আজ ভার্সিটিতে যাচ্ছিস.!
আর আজকেই তো মাত্র তানিয়াদের বাড়ি থেকে আসলি, আজ ভার্সিটিতে না গেলে কি.?
তামিমঃ আম্মু তুমি তো জানই আমার বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না।। তাই ভার্সিটিতে চলে যাচ্ছি।।
আম্মুঃ আচ্ছা যা তাহলে আর বেশি দেড়ি করিস না তারাতাড়ি বাসায় ফিরিস।।
তামিমঃ আচ্ছা আমি গেলাম তাহলে বলেই বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম।।
তারপর একটা রিক্সা নিয়ে সোজা ভার্সিটিতে চলে এলাম।। রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে ভার্সিটিতে ঢুকে দেখি সব বন্ধুরা ভার্সিটির বড় বটগাছের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছে, আমিও গিয়ে তাদের সাথে আড্ডায় যোগ দিলাম।।
শুভঃ কিরে এই কয়দিন কোথায় ছিলি.? ভার্সিটিতেও এলি না, দেখাও করলি না,
খুব ব্যস্ত ছিলি মনে হয়।।
তামিমঃ মাত্র একদিন ভার্সিটিতে আসলাম না আর তোর কাছে কয়দিন হয়ে গেল.!
শুভঃ না তুই তো কোনোদিন ভার্সিটি মিস দিস না তাই বললাম আর কি।। আচ্ছা এখন বল গতকাল কোথায় ছিলি।।
তামিমঃ মামাতো ভাইয়ের বিয়েতে আম্মুর সাথে মামাবাড়ি গিয়েছিলাম,
তাই গতকাল ভার্সিটিতে আসতে পারি নাই।।
শুভঃ ওহহ আচ্ছা তো এখন আড্ডা দিবি নাকি ক্লাসে চলে যাবি।।
তামিমঃ ক্লাসে আরও পরে যাব এখন একটু আড্ডা দেই।।
তারপর তাদের সাথে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম।। ক্লাসে গিয়েও ক্লাস করিনি, আমাদের আশেপাশে যারা বসা ছিল উলটা তাদেরকে আরও ডিস্টার্ব করেছি।। এরপর একটা ক্লাস বাকি থাকতেই সব বন্ধুরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে এসে ভার্সিটির গেইটের কাছে এসে দাড়ালাম, একটু মেয়েদের টিজ করার জন্য।।
রনিঃ দোস্ত এইভাবে খালি মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে না,
কিছু টাকা দে সবার জন্য সিগারেট নিয়ে আসি।।
তামিমঃ হুম ঠিক বলেছিস, এই নে টাকা আর তারাতাড়ি আসিস।।
টাকা নিয়ে রনি চলে গেল সিগারেট আনতে।। কিছুক্ষণ পর এসে সবার হাতে একটা করে সিগারেট ধরিয়ে দিল।। তারপর গ্যাসলাইট দিয়ে একে একে সবাই সিগারেটে আগুন ধরালাম।।
কিছুক্ষণ পর ভার্সিটি ছুটি হলে বন্ধুরা ২ ভাগ হয়ে গেলাম।। এক ভাগ রাস্তার এইপাশে আরেক ভাগ রাস্তার ওইপাশে।। যে মেয়েই আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছে তাদের মুখেই সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে লাগলাম।। মেয়েরা সিগারেটের ধোঁয়া নিতে না পেরে কাশতে কাশতে যাচ্ছে।। মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে আমরা হাসতে হাসতে শেষ।। সিগারেট শেষ না হওয়া পর্যন্ত এইভাবে অনেক মেয়েদেরকেই টিজ করলাম।। সবশেষে ওইদিনের মতো বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।।
বাসায় আসতেই বাধলো আরেক বিপত্তি।।
বাসার কলিং বেল চাপ দিতেই তানিয়া এসে দরজা খুলে দিল।।
তানিয়াকে দেখেই আমি ওকে পাশ কাটিয়ে রুমের দিকে হাটা ধরলাম।।
কিন্তু কয়েক কদম যেতে না যেতেই পিছন থেকে তানিয়া আমায় ডাক দিয়ে দাড়াতে বললো।।
ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও দাড়ালাম, আর তানিয়াও আমার কাছে এসে দাড়ালো।।
তারপর আমার একদম কাছে এসে তার নাক দিয়ে আমার মুখের চারপাশ শুকতে লাগলো।।
সে কি করছে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।।
হঠাৎ তানিয়া আমার দিকে তাকিয়ে রাগী কন্ঠে বলে উঠলো…
তানিয়াঃ এই তোমার শরীর থেকে সিগারেটের গন্ধ আসছে কেন.?
তুমি কি সিগারেট খেয়ে এসেছ.?
তামিমঃ হুম কেন আপনার কোনো প্রব্লেম.?
তানিয়াঃ এইসব ছাইপাঁশ কবে থেকে খাওয়া শুরু করেছ.?
তামিমঃ অনেক আগে থেকেই,
দেখি এখন সরেন সামনে থেকে আমি রুমে যাব বলেই তানিয়াকে পাশ কাটিয়ে রুমে চলে আসলাম।।
রুমে এসে বসে বসে রেস্ট নিচ্ছি এমন সময় তানিয়া এসে রুমে ঢুকলো।।
তানিয়ার সাথে আম্মুও রুমে এসে ঢুকলেন, হাতে খুন্তি নিয়ে।।
আম্মুঃ তানিয়া বললো তুই নাকি সিগারেট খেয়ে এসেছিস, কথাটা কি সত্যি.?
তামিমঃ নাহ আম্মু আমি তো সিগারেট খাইনি, বন্ধুরা খেয়েছিল তাদের শরীর থেকেই আমার শরীরে সিগারেটের গন্ধ লেগেছে (আম্মুকে সত্যিটা বললে আজ আমার রক্ষা নেই জানি)।।
আম্মুঃ কিছু না বলে আমার কাছে এসে তানিয়ার মতো করে নাক দিয়ে আমার শার্ট শুকতে লাগলেন তারপর হঠাৎ ঠাসস করে আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলেন।।
আম্মুর হাতের চড় খেয়ে আমি ভয়ে কাঁপতে শুরু করলাম।।
জানি আমার কপালে আজ অনেক দুঃখ আছে।।
কারণ এর আগেও একবার সিগারেট খাওয়াতে আম্মুর কাছে ধরা পরে সেই
লেভেলের মাইর খেয়েছিলাম (আপনারা আবার হাইসেন না)।।
আম্মুঃ তোকে না বলেছিলাম আর জীবনেও সিগারেট খাবি না তাহলে আজকে আবার কোন সাহসে সিগারেট খেলি।।
তামিমঃ নিশ্চুপ (মাথা নিচু করে বসে আছে)।।
আম্মুঃ উঠ আর বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে।।
তানিয়াঃ আম্মু সামান্য সিগারেট খাওয়ার জন্য ওকে এমন শাস্তি দিয়েন না প্লিজ।। এর চেয়ে ভালো অন্য কোনো শাস্তি দিন যাতে ও আর জীবনেও সিগারেট না খায়।।
আম্মুঃ হুম তুমি ঠিক বলেছ একে অন্য কোনো শাস্তি দিতে হবে।। কি শাস্তি দেওয়া যায়.? হে পেয়েছি, এই তুই দাড়া আর কান ধরে ১০০ বার ওঠবস কর।।
তামিমঃ কিহহ ১০০ বার.! আম্মু আমি এতবার পারবো না প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দাও।।
আম্মুঃ তোর কোনো মাফ নেই, যা করতে বলেছি কর নাহলে তোর ১মাসের হাত খরচ বন্ধ।।
তামিমঃ এখন নিজের বউয়ের সামনে কান ধরে ওঠবস করতে হবে.! (মনে মনে)
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com