Breaking News

ইসলামী আইনে ধর্ষকের শাস্তি

“ধর্ষণ বা RAPE” শব্দটিকে আরবীতে “الاغتصاب” তথা বলপ্রয়োগ যৌনাচার বলা হয়। বিবাহ পরবর্তী সময়ে বৈধ পন্থায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে জোর পূর্বক কিছু করাকে الاغتصاب তথা ধর্ষণ বলা হয়নি এবং এর জন্য কোন শাস্তি বা নিন্দাও বর্ণিত হয়নি।
পক্ষান্তরে বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ পন্থায় জোর পূর্বক যিনার কাজ সম্পাদন করাকেই ইসলামী আইনে ধর্ষণ বলা হয়েছে এবং এ কাজের শাস্তি ও তীব্র নিন্দা বর্ণিত হয়েছে। অতএব সর্বসম্মতিক্রমে ধর্ষণ একটি কবিরা গুনাহ যা যেনার অপরাধের চেয়েও গুরুতর অপরাধ।
চার ইমাম সহ অধিকাংশ আলেমের কাছেই ধর্ষণের বিষয়টি অনেক গুলো শাখাগত মাসআলা নিয়ে ডালপালায় সুদূর বিস্তৃত যে গুলোতে একাধিক মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়।
তবে ধর্ষকের দুনায়াবী শাস্তির মাসআলায় সকল আলেমের সার নির্যাস বক্তব্য প্রায় একই রকম আর তা হলো : ধর্ষকের শাস্তি নির্ধারণ হবে তার বল প্রয়োগের অবস্থার উপর বিবেচনা করে। অর্থ্যাৎ, ধর্ষক যদি প্রাণনাশের হুমকি সহ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কোন মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তাহলে এর শাস্তি হবে এক রকম।
আর অস্ত্রের ভয় না দেখিয়ে স্বাভাবিক বলপ্রয়োগ করে ধর্ষণ করলে তার শাস্তি হবে আরেক রকম। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করার অপরাধটিকে বলা হয় “المحاربة” তথা সরাসরি আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সমতুল্য অপরাধ বা “قطع الطريق” তথা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সমমানের অপরাধ।
এই অপরাধে দুজন সাক্ষীই যথেষ্ট এবং এর শাস্তি হবে চার রকমের। বিচারক উপযুক্ত মনে করে যে কোন একটি শাস্তির রায় দিতে পারেন।
এই চার রকমের শাস্তি বর্ণিত হয়েছে আল্লাহ্ তাআলার এই আয়াতে কারিমায়:(إنما جزاء الذين يحاربون الله،،،،، الأية- سورة المائدة:٣٣)এই আয়াতে চার রকমের শাস্তি হলো:
১. মৃত্যু দন্ড
২. শূলে চড়ানো
৩. বিপরীত দিক থেকে হাত পা কেটে ফেলা
৪. অথবা দেশ থেকে আজীবনের জন্য বের করে নির্বাসন দেয়া।
এই হলো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করার শাস্তি।
(সুরা মায়াদা-33)আর সাধারণ ভাবে বলপ্রয়োগ করে ধর্ষণ করলে সেটি যেনার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। তখন এই অপরাধের শাস্তি নির্ধারণের জন্য চারজন সাক্ষী লাগবে এবং ধর্ষক যদি বিবাহিত হয় তাহলে তাকে রজম তথা পাথর মেরে মেরে হত্যা করতে হবে।
আর যদি অবিবাহিত হয় তাহলে তাকে একশো বেক্রাঘাত করতে হবে এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর করতে হবে। সাথে সাথে উভয়ের কাছ থেকেই ধর্ষিতা মেয়ের জন্য মোহরানা গ্রহণ করতে হবে।
যদি মেয়েটি বিবাহিত হয় তাহলে তার বিবাহের সমপরিমাণ মোহর ধার্য হবে আর অবিবাহিত হলে তার পরিবারের অন্যান্য মহিলাদের সমপরিমাণ মোহর ধার্য হবে।
উল্লেখ্য যে, ধর্ষণের অপরাধটি যেহেতু একতরফাভাবে একপক্ষ থেকেই ঘটে সেহেতু এর সম্পূর্ণ শাস্তি ও দায়ভার ধর্ষকের উপরেই ন্যস্ত হয়।
এখানে ধর্ষিতা বা ভুক্তভোগী সম্পূর্ণ নির্দোষ থাকবে। কারণ ইসলামী শরিয়তের একটি মূল নীতি হলো, “কেউ যদি অন্যের দ্বারা বলপ্রয়োগে অনিচ্ছাকৃত ভাবে কোন হারাম কাজে জড়িত হয় বা কোন উপায় না পেয়ে জীবন রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে হারামে পতিত হলে সে ঐ পরিস্থিতিতে এই কাজের জন্য অপরাধ মুক্ত বলে সাব্যস্ত হবে, সুরা আনআম-১১৯”। (আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন)।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com