সংসার । পর্ব - ০২
আয়মন ফ্রেশ হওয়ার জন্য উঠবে এমন সময় তার ফোন টা বেজে উঠলো ফোন টা হাতে নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লো আয়মন। ফোনটা বাজতে বাজতে কেটে গেলো কিন্তু ফোনটা তাও রিসিভ করতে পারলো না তাই ফোনটা রেখে আয়মন ওয়াশরুমে চলে গেলো।
আয়মনের মা মিস সালেহা বেগম নিজের রুমে ইজিচেয়ারে বসে। কোনো বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তিত তিনি। ভেবে চলেছে তবু তিনি কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না এক দীর্ঘ নিশ্বাস চাপা ভিতর থেকে আসছে। ছোট ছোট পায়ে মিষ্টি এসে বললোদাদীমা-আমার মিষ্টি আপুনি এসেছে আয় তো আমার চোখের সামনে।
দাদীমা আমি তো সারাদিন তোমার সাথে থাকি এখন আমার মাম্মাকে দেখো তো।—কোথায় তোমার মাম্মা।-মা-ও বউমা আসো আসো আমার পাশে বসো।
ঠিক আছে মা।
মা তুমি তো জানো আমার এই সংসার এর প্রান মিষ্টি। ওকে আয়মন সেই ছোট থেকে নিজের কোলেপিঠে মানুষ করেছে এতোবড় করেছে। আজ যদি মিষ্টিকে ওর কাছ থেকে কেউও কেড়ে নেও ও বাঁচতে পারবেন না।
বলেই মিস সালেহা বেগম অঝোরে কান্না করতে লাগলো। মুনতাহা হাটু গেড়ে বসে বললো মা আমার উপর ভরসা করুন। মিষ্টিকে এই বাড়ি থেকে কেউও নিয়ে যেতে পারবে না মা। আমি তা হতে দিবো না মা আমি আপনার কাছে ওয়াদা করছি এই সংসার আমি ভাঙ্গতে দিবো না।—তুমি সত্যি বলছো মা।
হুম মা। এখন একটু হাসুন তো আসলে মা আমি না সিরিয়ালের বউমাদের মতো গুচ্ছিয়ে গুচ্ছিয়ে কথা বলতে পারি না আর সংসার এর খুঁটিনাটি কিছুই পারি না। কিন্তু আমি সিরিয়াল দেখে সব শিখে নিবো।মুনতাহা কথা শুনে সালেহা বেগম হাসি চেপে রাখতে পারলো না হেসে উঠলো।মুনতাহা অনেকটা লজ্জা পেয়ে বললো মা আমি এখন আসি। মুনতাহার পিছুই পিছুই মিষ্টি চলে গেলো।
মুনতাহা চলে যাওয়াতে সালেহা বেগম আবার ভাবতে লাগলো। মেয়েটার সাথে তিনি বড্ড অন্যায় করে ফেলেছেন। যেখানে তার স্বামীর সুখ পাওয়ার কথা সেই সুখ অন্যকেউও পাবে আর শুধু এই সংসার এর ভার কি সে সামলাতে পারবে?
মিষ্টি তুমি এখন হোমর্ওায়ক করবা আর তারপরে স্কুল এ যাবা। আর আমি রান্নাঘরে সকালের নাস্তা বানাবো —ওকে মাম্মা। —ওকে কোনো দুষ্টামি না।—মাম্মা আমি এতো কিউট একটা মেয়ে আমি কি কোনো দুষ্টামি করতে পারি।—হ্যা আমার পাখি তুমি তো আমার লক্ষী তুমি কোনো দুষ্টামি করতে পারো না।
হিহিহিহিহি।মুনতাহা রান্নাঘরে ঢুকে চারিদিকে ঘুরে ঘুরে দেখছে আসলে ও ঠিকভাবে রান্না করতে পারে না। কি করবে কিছুই মাথায় ঢুকছে না।আয়মন নিচে নেমে এসে দেখলো মিষ্টি চুপচাপ বসে নিজের হোমর্ওয়াক করছে। আয়মন অনেকটা অবাক হলো কারন মিষ্টি নিজের হোমর্ওয়াক করতে চায় না।
পরি তোমার মাম্মা কই?—পাপ্পা তুমি দেখছো না আমি ব্যস্ত নিজে খুঁজে নেও না।—ওকে পরি আমি খুঁজে নিচ্ছি।আয়মন রান্নাঘরে এসে দেখলো মুনতাহা ফোনে কিছুই দেখছে।—এইযে তুমি কি করছো?—YouTube এ সকালের নাস্তা কি কি বানাতে হয় তাই দেখছি।মুনতাহার কথা শুনে আয়মন আর হাসি চেপে রাখতে পারলো না হো হো করে হেসে উঠলো।—কি হলো আপনি হাসছেন কেনো??
তুমি YouTube দেখে নাস্তা শিখবে আর তারপর সেই নাস্তা করে আমি অফিস আর মিষ্টি স্কুলে যাবে??—হুম আসলে আমি এতো রান্নাবান্না ব্যাপারে বুঝি না হালকা পাতলা পারি কিন্তু?— আচ্ছা তোমায় এতো ভাবতে হবে না তুমি সরো আমি করছি।
কি আপনি আর রান্না??—হুম আমি আর রান্না।মুনতাহা চুপচাপ আয়মন কে দেখছে আয়মন কি সুন্দর করে নাস্তা তৈরি করছে। মুনতাহা অনেকটা অবাক হলো এতো ঘরোয়া ছেলে। আয়মন সব খাবার টেবিলে সাজিয়ে দিলোআর মুনতাহাকে বললো এখন বসুন সকালের নাস্তা করে নিন।
মুনতাহা মিষ্টিকে খাইয়ে দিচ্ছে আয়মন ও চুপচাপ খাচ্ছে। খেতে খেতে আয়মন মুনতাহাকে উদ্দেশ্য করে বললো তুমি আর মুনতাহা রেডি হয়ে নিউও আমরা মুনতাহাকে স্কুলে রেখে এক যায়গা যাবো। মুনতাহা শুধু শুনলো কিছুই বললো না।আয়মন আর মিষ্টি রেডি হয়ে গাড়ি কাছে দারিয়ে আছে।
আয়মন মনে মনে গজ গজ করে বলতে লাগলো বললাম মেয়েটাকে যে বেড়াবো আর এতক্ষন ধরে দাড়িয়ে আছি নিচে নামার কোনো নাম এ নেই।—পাপ্পা ওই দেখে মাম্মা আসছে। আয়মন দেখলো মুনতাহা লাল শাড়ি পড়েছে হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি ঝুনঝুন শব্দ করছে। কানের ঝুমকা গুলো হালকা দুলছে এক আর্কষণ কাজ করছে আয়মনের নিজেকে সামলে নিয়ে বললো।
এতোক্ষন লাগে তোমার এখন চলে তাড়াতাড়ি আয়মন মিষ্টি কে স্কুলে দিয়ে এসে। মুনতাহাকে নিয়ে এক যায়গা আসলো। মুনতাহা একজন কে দেখে।
চলবে
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com