সুখ পাখির পৃথিবী
পৃথিবীর উদাস কালেসুখপাখিরা নিজেগো কথা হুনবার চায় না!
কুড়ি দিন আগেও ,মসজিদের মাইকে রাইত-দিন মজু মুন্সী যাইতো।
কুড়ি দিন বাদে, কুড়ি মিনিট পরে পরে কারা জানি মাইকে সাধু ভাষায় কথা কয়!
আমি হুনবার পাই নাতিন। বয়স কালেও, সত্তুরের বন্যা,
একাত্তুরের যুদ্ধের ঢোল পিডানের লাহান সব বুঝি!
৭০’এর হেই বিশুদবার;রেডিও জুইড়া খালি একখানি আওয়াজ!
“হক্কলে সেন্টারে যান, নিরাপদ থান”৭১’এ ঢোল পিডায় পিডায় কয়,
“দেশবাসী, যুদ্ধর ঘোষণা হইয়াছে।আপনেরা যুদ্ধে নাইমা পরেন।
“বিশুদবার রাইত কইমা দিন নামিলো! নাড়ার চালার উপ্রে হুইয়া বাইঁচা গেলাম।
চোখ তুইল্লা দেহি; কিচ্ছু সোজা নাই। ঘর, গাছ, পশু,কোনোহানে কিচ্ছু নাই!দুই একজন মাইনষে, মরা মাইনষের বাহার লইয়া ছুঁটতাছে।যুদ্ধ!
বেবাক ঘরে, বেবাক আঘরে। গুলির শব্দ হুইনা আতঙ্কে মরচে কতজন।
লাশের গন্ধে তল পেঠের পোলাপাইন লইয়া মরচে কত মার বাছা।
কয়জন, কয়জন মিল্লা, কয়েকশো জন মরন থেইকা ফিরলাম।
আমাগোরে লইয়া গইড়া উডে নয়া এক নদীর, নয়া আরেক দেশের! তহন, নদীর ভাঙন আইলো। দেশের যুদ্ধ যাইলো।
এহন হইলো,দুনিয়ার অসুখ!৫০ বচ্ছর বাদে আবার মাইকিং।
পথে পুরুষ নাই, ঘাটে বৌঝি নাই। জানস নাতিন, আমার সাহস, শক্তি আজ ও কমেনাই! দেখ, কেমনে, গাছে ভর দেওন ছাড়াই চলি।
রাইত দিন পাল্টাইবো, মন কয়।
আমার মন কয়, দিন ফিরবো।
বৈশাখের প্রভাতে পাখির ডাকোনে, আমাগো ঘুম ভাংবো।
অযু কইরা পশ্চিমমুখী ওইবো মুসলমান।
পূজার বাসন সাজাইয়া, মন্ত্র পাঠ কোরবো দুর্গার মা।
ঘর কইন্নারা রাঁধিতে বইবো পালংক শাক।
পিঁড়িতে আলপনা আঁকবো, আমজাদ আলীর মাইয়া রাশি।
আইসমের বাজার লইয়া গঞ্জে গঞ্জে ঘুইরা বেড়াইবো, ষোল বচ্ছরের পোলাডা!
আর কি হইবো ক তো? পৃথিবীর অসুখ কইমা গেলে,
তোগে ঢাকার, ফাঁকা, পাকা পথের, লাল, নীল, বাতি জ্বইলা উঠবো।
গরম ভাতের বেলা, ভিজা গামছা বান্ধা, রিক্সাওয়ালার দুই পার জোরে; আমি আবার তোগে দেখবার যামু!
আবার, আবার যহন আকাশে মেঘ মইরা সাদা বগের মতন হইবো।
আমাগো দুঃখ পুইড়া , সুখে চারদিক ঝকঝক কোরবো।
আমরা আবার গপ্পের মেলা জমাইয়া ,
রাইত পার করমু। খালি হেইদিনের অপেক্ষা!”সুখ পাখির পৃথিবী”
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com