Breaking News

সংসার । লিখা- সাফিয়া জান্নাত মুন


মিস্টার হাজবেন্ড দেখুন আমি এতো লজ্জালতিকা হয়ে বসে থাকতে পারবো না। 

আপনি জানেন আমার একটা বিশেষ গুন আছে আমি কথা না বলে থাকতে পারি না। 

একটু কম কথা বলি বেশি কথা আবার আমি বলতে পারি না। 

আমার অনেক ছোট ছোট ইচ্ছা আছে যা আপনাকে পূরণ করতে হবে।

দেখুন আমার অনেক ঘুরাবার শখ ছোট থেকে কিন্তু বড় হয়ে এতো ফ্রিডম পাইনি তাই শখকে সিন্দুকে তালা বন্ধী করে রাখতে হয়েছে। এখন আর পাড়ছি না আমি নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে চাই। আপনি আমার ডানা হবেন??

এতক্ষণ ধরে বউ সেজে থাকা ১৯ ২০ বছর হবে এমন একটা মেয়ের কথা হাবলাকান্তের মতো শুধু শুনে যাচ্ছিলো আয়মন আসলে তাকে কথা বলার কোনো সুযোগ এ দিচ্ছিলো না সে বলবে কিভাবে এতো বক বক করে সে। আয়মন গলা ঝেড়ে বললো—-মুনতাহা আমার তোমায় কিছুই বলার ছিলো আমি তোমায় বিয়ের আগে সব জানাইতে চেয়েছিলাম যাতে তুমি আমায় ভুল না বুঝো কিন্তু বিশ্বাস করো আমার সুযোগ হয়নি আমি আমার মা জন্য বাধ্য হয়েছি।—-আয়মনের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠলো মুনতাহা আচমকা হাসির শব্দে ঘবড়ে গিয়ে আয়মন মুনতাহার দিকে তাকলো তার হাসি তাকে আর্কষণ করছে না তার হাসিতে সে মুগ্ধ হতে পারছে না বিরক্তিকর ভাব রেখা মুখে টেনে দারিয়ে আছে একটু রাগী গলায় বললো তুমি হাসছো কেনো??

আমি কি কোনো হাসির কথা বলেছি।–হুম।– আয়মন চটে গিয়ে উঁচু গলায় বললো কি হাসির কথা বলেছি শুনি? –একটু আগে বললেন না আপনি বাধ্য তাতে হাসি চলে আসলো।—এতো হাসার কি হলো আজব বুঝলাম না।—আপনি এতবড় হয়ে গেছেন ঠিকি কিন্তু আপনার বয়স মনে হয় ৫ বা ৬ এর মতো হবে। Shut up মুনতাহা তোমার বাজে কথা গুলা অনেকক্ষণ ধরে শুনছি আমি তোমাকে কিছুই প্রয়োজনীয় কথা বলছি আর তুমি তা হাসিয়ে উড়ে দিচ্ছী

আপনার প্রয়োজনীয় কথা গুলা আমার পুড়া জীবন টাকে তছনছ করে দিতে পারে তাই ভয়াবহ সত্যতের মুখামুখি হওয়ার আগে নিজেকে তৈরি করছি।—মানে তুমি??—হুম আমি সব জানি মিস্টার হাজবেন্ড।

—তো তুমি কেনো এই বিয়ে টা করলে তুমি চাইলে তো আটকে দিতে পারতে করতে না এই বিয়ে টা।—সব চাওয়া যদি পূরণ হতো তো আমার চাওয়া গুলো অপূরণ থাকতো না।। আমার চাওয়া না চাওয়ার কোনো দাম নেই আমার ফ্যামিলি কাছে। আমি ভেবেছিলাম নিজের চাওয়া গুলো বিয়ের পর নিজের স্বামী দ্বারা পূরন করে নিবো কিন্তু নিয়তি এর খেল দেখুন।—-কিন্তু মুনতাহা তুমি জানলে কিভাবে? আমি তো বলিনি তো তুমি কিভাবে কেমনে?? —সব কিছুই জানার সময় এখনো হয়নি যখন হবে তখন নিজেই জানতে পারবেন। এখন শুয়ে পড়ুন অনেক রাত হয়ে গেছে।

তুমি নিচে বিছানা কেন করছো?? আপনার সাথে থাকার কোনো অধিকার আমার মনে হয় নেই তাই–মুনতাহা আসলে আমি,,—থাক আপনাকে কিছুই বলতে হবে না।—আয়মন আর কিছুই বলতে পারলো না ঘুমিয়ে পড়লো নিজের ভিতর হাজারো যন্ত্রণা নিয়ে।——আজ নিয়তি আমায় কোথা নিয়ে দাড় করিয়ে দিয়েছে। চিরটাজীবন শুধু আমি খুঁজেছি একটু শান্তি সুখ ভালোবাসা পাইনি কিছুই পাইনি। আপনি এতো ভাববেন না মিস্টার হাজবেন্ড আমি আপনার শান্তি সুখ ভালোবাসা ফিরেয়ে দিবো। আমি মুনতাহা আজ প্রতিজ্ঞা করছি,,আপনার মিষ্টি আপনার মেয়েকে আপনার কাছ থেকে কেউও আলাদা করতে পারবে না আপনার ভালোবাসা আয়িশা কে আমি ফিরিয়ে আনবো আপনার জীবনে। আজ থেকে এই সংসার আমার।

গোল্ডেন কালারের পর্দার ফাকে রৌদ্রর এর আলোছায়া এসে আয়মন উপর পড়লো ঘুমভাঙ্গা চোখে দেখলো ভেজা চুলে আয়নার সামনে বসে চোখে কাজল দিচ্ছে মুনতাহা অপূর্ব মায়া আছে মেয়েটের মধ্য কাজল দিলে আরো বেশি মায়াবীনি লাগে তাকে। এর মধ্য হুট করে আয়মনের রুমের দরজা ঢেলে ৫ ৬ বছরের একটা সুন্দর ফুটফুটে মেয়ের আগমন ঘটলো। তার কোকিল কন্ঠে বললো পাপ্পা good morning আয়মন একগাল হেসে বললো Good morning my little princes.–মিষ্টি তুমি শুধু পাপ্পাকে বললে আমার কথা মনে নেই তোমার যাও তোমার সাথে আড়ি। হি হি হি হি । আমি রাগ করেছি আর তুমি হাসছো??

মাম্মা তোমায় রাগলে অনেক সুন্দর লাগে। ওরে আমার দুষ্ট মেয়ে আসো আমার কাছে আসো। বলেই মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো মুনতাহা। মাম্মা তুমি নিচে চলো দাদীমা তোমায় ডাকছে বলেই মিষ্টি টেনে মুনতাহাকে নিচে নিয়ে গেলো। আয়মন ফ্রেশ হওয়ার জন্য উঠবে এমন সময় তার ফোন টা বেজে উঠলো ফোন টা হাতে নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লো আয়মন।

চলবে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com