ভালোবাসার রঙ্গিন কিছু গল্প
আয়োজন করে প্রিয়জনের সাথে দেখা করা হয়
আপনি তো হলেন আগন্তুক…
তাই আপনার সাথে আয়োজন কিসের
হোক না এবারের দেখাটা প্রিয় থেকে পৃথক হওয়া
আপনার সাথেই।
কলাপাতা রঙ্গের শাড়ীতে নিজেকে জড়িয়েছি
টিপ পড়িনি, মেকাপ করিনি,
পান্চক্লিপ দিয়ে চুল গুলো আটকানোর বৃথা চেষ্টাও করিনি, সাদা মাটা আমি টাই এসেছি,
কেননা আগন্তুকের সাথে দেখা করতে আসার
কিসের এত সাজ-গোজ, সাজি তো আমরা প্রিয়জনের জন্য, সকল সৌন্দর্যের উপস্থাপনার শীর্ষেই তো সে।
এবারের আয়োজন টা একেবারেই ভিন্ন
বয়স বাড়িয়েছি নিজের দোষেই,
না সে ধরে রাখেনি, বলেও নি অপেক্ষায় থেকো
তবুও অন্ধ ভালোবাসায় বিসর্জন দিয়েছি দিন কাল কিংবা বরষ।
নাহ্ আফসোস নেই তাকে না পাওয়া,
বরং আফসোস এই তার জীবনে আসার৷
আগন্তুক আজ যে আপনি,
সেই আপনিও একদিন আপন ছিলেন,
তখন আমি তুমি করেই জানতাম,
ভীষণ ভালোবাসতেন আমায়, কাজল টিপের পাতা এসব নিয়ম করে কিনতে আপনার দেরী হতো না, সাদামাটা আমি আগে রি ছিলাম,
সাজতে তো শিখেছি আপনার জন্য…
এই আপনি যখন বলে দিলেন,
সফলতার চূড়ান্ত পর্যায় গিয়ে আপনার সাথে আমার যায় না তবে আর এত আয়োজন কিসের।
চোখের নিচের কালির কারণ যে সে তো আজ আর কাজল বাড়িয়ে বলে না, তোমার চোখে চিন্তার কালি নয় কাজলের কালিই মানায়।
আমার জন্য টিপ পড়নি কেনো, এই নাও আজও আনতে ভুলিনি, কিন্তু এসব এখন আমার কল্পনা।
দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রী পাওয়া মানুষটার যে এখন গার্ড ছাড়া ঘুরতে মানা, সুট বুট পড়ে সামান্য মার্কেটে টিপ কিনতে আর যায় নাকি যাওয়া?
বহু বছরের পরিচিত মুখটা হটাৎ ঝাপসা লাগতে শুরু করলো, তাকে এক পলক দেখেই মনে হলো
আসলেই তার পাশে, সাদা মাটা এই আমি ভীষণ বেমানান। আমার চোখের নিচের কালি, মলিন মুখ, আনস্মার্ট ভঙ্গিমায় কথা বলা, ইংরেজিতে একদম অপক্কতা, তবুও সাহস নিয়ে দাড়ালাম তার সামনে..
বহুবছর নাহ্ চারবছর পরে তাকে দেখছি,
এই তো অপেক্ষাটা মাএ পাঁচ বছরের ছিলো,
আজ শেষতম বছরে সে উপলব্ধি করে সাহস নিয়েই বলে দিলো তুমি আমাকে পাওয়ার যোগ্য না, কি করেছো একটা ভালো চাকরী ও তো করতে পারতে, আমি মুচকি হেসে উওর দিলাম,”সবাই চাকরী করলে খাবে কে”?
বয়স বাড়িয়ে ২৬ শেষ করলে, নিজেকে কী খুকিই ভেবে বসে আছো?বাচ্ছামো ছাড়, সময় নেই আমার কাজের চাপ ভীষণ। রাগী কন্ঠে বললো সে।
আমি আবারো মুচকি হাসলাম, ঝড়ো বাতাসে চুল গুলো উড়ছিলো, হাতখোঁপা করতে করতেই তাকে বললাম, ভালোবাসলে বুড়ি কেও বিয়ে করে নেয়া যেতই তবে আমি একজন ব্যক্তিত্ববান পুরুষকেই বিয়ে করবো, আপনার ব্যক্তিত্ব সে আপনি কবেই বিকিয়েছেন, আজ আপনাকে ফেরাতে আসিনি বরং এতটা পথ একলাই ফিরে যেতে এসেছি।
শুনেছি যাকে বিয়ে করবেন বলে আমাকে বুড়ি বলছেন তার বয়স সদ্য ষোল?
তবে তাকে বলবেন না, বার বছরের প্রেম বিসর্জনে ষোল বছরের তাকে পাওয়া, বাচ্ছা মানুষ তো ছলাকলা ভেবে ছেড়েও যেতে পারে, অপেক্ষা আর কয়জন জানে?
উওরের অপেক্ষা আর করিনি,
মানুষের রূপে এই প্রথম অমানুষ দেখেছি
ব্যক্তিত্ব হারিয়ে বসা কঠিন মনের এক
প্রতারকের দর্শন পেয়েছি।
সেদিন একফোঁটা কাঁদিনি,একটি বার পিছন ফিরে তাকাই নি,
আমি কেবল এই দিনের জন্য বয়স বাড়িয়েছি, বুড়ির খেতাব পাওয়া এই আমি টা হেরে গিয়েও আজ জীবনের কাছে বড় রকমের জিতে গেছি।
সংসার কার না হয় আমার ও হবে,
বড়লোক কিংবা সফলতা পাওয়া প্রতারকের চেয়ে
আমার ঢের ভালো ব্যক্তিত্ব রেখে খেটে খাওয়া সত্যিকারের মানুষটা।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com