ছয় মাসের বউ || পর্ব-২৬
আর রিপা কিছু বলার আগে আরিফ গিয়ে পানিতে লাফ দিয়ে মিতুকে উপরে তুলে আনে।
মিতুর মাথাটা আরিফের কোলে রাখে।
আরিফ: মিতু এই মিতু চোখ খুলো।
রিপা: ভাইয়া তুমি ভাবিকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে চলো।
ভাবি হয়তো সাঁতার না জানার কারণে পানি খেয়ে ফেলছে।
আরিফ আর কিছু বলে সময় নষ্ট না করে মিতুকে কোলে করে হসপিটালে নিয়ে আসে।
আর রিপা ও আরিফের সাথে যায় আর রিধি কাউকে কিছু না বলে বাসায় চলে আসে।
রিধি বাসায় এসে ভাবতে থাকে।
রিধি: কি গন্ডারের চামড়া নিয়ে জন্মিয়েছে এতো কিছু করেও কিছু করতে পারলাম না।(মনে মনে ভাবছে আর রাগে ফুলছে)
আর আরিফ খুব তাড়াতাড়ি করে গাড়ি চালিয়ে হসপিটালে নিয়ে আসে।
আর ডাক্তার মিতুকে নিয়ে যায় একটা রুমে।
আরিফ আর রিপা বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
আর ডাক্তার মিতুর পেট থেকে পানি বাহির করতে থাকে।
বেশ কিছু সময় পর ডাক্তার বাহির হয়ে আসে।
আরিফ: ডাক্তার মিতু এখন কেমন আছে?
ডাক্তার: হুম এখন অনেকটা ভালো আছে।
অনেক পানি খেয়ে ফেলেছে।
আমরা পেটে থেকে পানি বের করেলেছি।
একটু পর ওনার জ্ঞান ফিরে আসবে আপনার তাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
আরিফ: ধন্যবাদ ডাক্তার।
আমরা কি এখন ওর সাথে দেখা করতে পারি।
ডাক্তার: হুম আপনারা কেবিনে যান।
আরিফ: ওকে ডাক্তার।
আরিফ মিতুর কাছে চলে যায় আর রিপা বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকে।
আরিফ: (মনে মনে)আজ যদি ওর কিছু হয়ে যেতো।
কেমন মলিন হয়ে গেছে ওর চেহারাটা।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে মিতুর জ্ঞান ফিরে আসে।
আরিফ: মিতু এখন কেমন লাগছে তোমার।
মিতু: হুম এখন অনেকটা ভালো লাগছে।
আমার হাতে কেনো এতো বড় সুই দিয়ে রাখচে।
প্লিজ এটা খুলে দিতে বলেন।
আরিফ: না এটা খোলা যাবে না।
ঔষধ শেষ হলে এটা খুলে দিবে।
রিপা এতোহ্মন বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলো।
এখন মিতুকে দেখার জন্য ভিতরে আসে।
রিপা: ভাবি তোমার এখন কেমন লাগছে।
মিতু: হুম এখন ভালো লাগছে।
রিপা: ভাবি তুমি তো পার্ক দাড়িয়ে ছিলে।
আমার কল আসাতে আমি একটু দুরে গিয়ে দাড়াই।
আর তুমি কি করে পরে গেলে।
মিতু কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিফ বলে উঠে।
আরিফ: রিপা এখন কিছু জানতে হবে না।
আগে বাসায় যা তারপর সব জানতে পারবি।
এখন ওকে একটু রেস্ট নিতে দে।
আর আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসি।
মিতুকে বাসায় নিয়ে যাবো।
রিপা: আচ্ছা ভাইয়া তুমি যাও।
আমি ভাবির কাছে আছি।
আরিফ: মিতু তুমি এখন একদম কথা বলবে না চুপ করে শুয়ে থাকো।
আমি ডাক্তারের কাছ থেকে রিলিজ নিয়ে আসছি।
মিতু: আচ্ছা ঠিক আছে।
আরিফ ডাক্তারের কাছ এসে হসপিটালের সব কাজ শেষ করে মিতুকে নিয়ে বাসায় চলে আসে।
রিপা মিতুকে বাসার ভিতরে নিয়ে আসে।
মিতুকে এমন দেখে ফুপি অনেক প্রশ্ন করতে থাকে।
ফুপি: রিপা মিতুর এই অবস্থা কি করে হলো।
রিপা: মা ভাবি পানিতে পড়ে গিয়েছে।
ফুপি: কি বলছ এইসব আর তোরা কোথায় ছিলি?
আরিফ: ফুপি তোমাকে সব বলছি তার আগে বলো রিধি কোথায়।
ফুপি : হুম ও তো ওর রুমে আছে।
আরিফ: আচ্ছা তুমি এখানে দাড়াও আমি ওকে নিয়ে আসছি।
রিপা তুই মিতুকে নিয়ে একটু সোফায় বসিয়ে দে।
রিপা: ঠিক আছে ভাইয়া।
আরিফ রিধি ঘরে গিয়ে দেখে রিধি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।
ও কোন কথা না বলে পিছনে থেকে ওর হাত ধরে ওকে সবার সামনে নিয়ে আসে।
রিধি: কি হয়েছে তোমার তুমি কেনো আমাকে এভাবে নিয়ে এলে।
আরিফ রিধি উপর অনেকটা রেগে ছিল তাই ওর গালে থাপ্পড় মাড়ে।
আরিফের এমন কাজ সবাই অবাক হয়ে যায়।
আরিফ: কেনো তোকে এমন করে আনলাম তা কি তুই জানছ না।
ফুপি তোমরা জানতে চাইছ না কি করে মিতু পরে গেছে।
আসলে মিতু নিজে থেকে পরে যায় নাই।
তোমার মেয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিছে।
ভাগ্য ভালো যে তা আমি নিজের চোখে দেখেছি।
ফুপি: ছিঃ রিধি ছিঃ কি করে তুই এই কাজ করতে পারলি।
আমি কখনো ভাবতে পারি নাই তুই এমন কিছু করবি।
রিপা: ছিঃ আপু তুই এটা কি করে করতে পারলি।
ফুপি: মিতু মা তুমি আমাকে হ্মমা করে দিও।
মিতু: ছিঃ ফুপি তুমি এটা কি বলছো।
আর আমি তো এখন ঠিক আছি।
ফুপি: তুমি আসলেই অনেক ভালোরে মা।
আরিফ: ফুপি আমি আর মিতু একটু পরে চলে যাবো।
আমি মিতুকে নিয়ে আর কোনো কিছুর মুখে পড়তে চাই না।
ফুপি: তুই যা ভালো বুঝিস।
আমার কিছু বলার নাই আর।
আমার মেয়ে যে এমন কিছু করতে পারে তা আমার যানা ছিলো না।
আরিফ: মিতু তুমি শাড়ী চেঞ্জ করে নেও।
এমনিতেই তোমার শাড়ীটা ভিজা আর অনেক্ক্ষণ ধরে পরে আছো।
ঠান্ডা লেগে যাবে,আর তুমি গিয়ে রেডি হয়ে নেও।
মিতু: আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
আরিফ: রিপা তুই ওর সাথে যা, তোর ভাবিকে একটু হেল্প কর।
রিপা: আচ্ছা ভাইয়া আমি যাচ্ছি।
মিতুকে রিপা রুমে নিয়ে যায়, আর ওকে রেডি হতে হেল্প করে।
আর রিধিকে আরিফ থাপ্পড় দেয়ার পরে কান্না করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়।
কিছু সময় পর মিতুকে রেডি করিয়ে রিপা নিয়ে আসে।
আর ওরা বাসায় যাওয়ার জন্য সবার কাছ থেকে বিদায় নিতে যায়।
মিতু: ফুপি আমাদের জন্য দোয়া করো।
ফুপি: তা তো অবশ্যই করবো।
কিন্তু তুই আমাকে হ্মমা করে দিছ রে মা।
আমার কথায় ভাবি তোদেরকে আমার বাসায় পাড়িয়েছে।
আর আমার বাসায় আমার মেয়ে কি না তোকে মারার জন্য চেয়েছে।
নিজেকে এখন খুব অপরাধী লাগছে।
আজ আমি তোকে না আনলে আজ এই বিপদ হতো না তোর।
মিতু: ফুপি কি বলছ তুমি,যা হবার তা হয়ে গেছে।
তুমি চিন্তা করো না তুমি শুধু আমার জন্য দোয়া করি।
ফুপি: দোয়া করি তোরা দু'জন সুখ-দুঃখে হয়ে একে অপরের সাথে থাকতে পারিস।
আরিফ: আচ্ছা ফুপি আমরা এখন আসি।
তুমি আমাদের জন্য দোয়া করো।
মিতু: রিপা আসি তোমাকে খুব মিস করবো।
রিপা: ভাবি আমিও তোমাকে মিস করবো গো।
এখন তো তোমাকে আর থাকতে ও বলতে পারছি না আমার বোন যা করেছে তারপর তোমাকে থাকার জন্য জোর করতে পারছি না।
মিতু: আচ্ছা যা হবার হয়েছে।
আচ্ছা তুমি কিংবা বাসায় যাবে তখন আবার জমিয়ে আড্ডা দিবো সবাই মিলে।
রিপা: হুম ভাবি তা তো জেতে হবেই।
তোমার মতো ভাবি থাকলে তো আর না গিয়ে পারবো না।
মিতু: আচ্ছা রিধি কোথায় ওর সাথেও দেখা করে যাই।
মিতুর এই কথাটা আরিফ শুনতে পায়,তাই আরিফের রাগ উঠে যায়।
যেই মেয়ে কিনা তাকে মারতে চায় আবার কি না তার সাথে দেখা করতে চায়।
আরিফ: তোমাকে আর ওর সাথে দেখা করতে হবে না।
আসো আমার সাথে গাড়িতে। (এই বলে মিতুর হাত ধরে নিয়ে আসে)
মিতুকে গাড়িতে বসিয়ে আরিফ গাড়ি চালানো শুরু করে।
চলবে........
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com