ছয় মাসের বউ || পর্ব-৩৭ ও ৩৮
হঠাৎ করে মিতুর কাছে একটা কল আসে তার জন্যে মিতু তাড়াতাড়ি কিছু না বলেই বেড়িয়ে যায়।
মিতুর আম্মু চিন্তা করতে থাকে হঠাৎ করে কি হলো যে মিতু এমন করে বাহির হয়ে গেলো।
তার মধ্যে কিছু সময় পর আরিফ মিতুর আম্মুর কাছে কল করে।
আরিফ: আসসালামু আলাইকুম আম্মু।
মিতুর আম্মু: ওয়ালাইকুম সালাম বাবা।
আরিফ: আম্মু মিতু কোথায় ওকে অনেক বার কল দিলাম কিন্তু ধরলো না।
মিতুর আম্মু: ও তো বাসায় নাই কি যেনো একটা কল আসলো আমাকে কিছু না বলেই বেড়িয়ে গেছে আমি জানতে চাওয়ায় আমাকে কিছু বললো না।
তারজন্য তো মেয়েটার জন্য চিন্তা হচ্ছে তুমি একটু দেখো বাবা মেয়েটা কোথায়।
আরিফ: আম্মুর আপনি চিন্তা করবেন না আমি দেখছি মিতু কোথায় গেছে।
আরিফ মিতুর আম্মু কাছ থেকে কল কেটে দেয় আর মিতুর ফোনে কল করে দেখে যে মিতু এখনও ফোন ধরছে না।
তার জন্য মিতুর ফোনের লোকেশন জানার চেষ্টা করে।
আসলে মিতু যখন আরিফ কে আবিরের কথা বলে তখন আরিফ মিতুকে কিছু না বলে মিতুর ফোনের সাথে নিজের ফোনের কানেকশন দিয়ে দেয় জাতে করে মিতুর কোনো প্রবলেম হলে যাতে আরিফ বুঝতে পারে।
আরিফ মিতুর ফোনের কানেকশন চালু করে মিতু কোথায় আছে জানার চেষ্টা করে।
কিছু সময় পর আরিফ মিতুর লোকেশন খুঁজে পায় যার জন্যে আরিফ তাড়াতাড়ি করে গাড়ি নিয়ে সেখানে চলে যায়।
আসলে মিতুর কাছে যে কল আসে তা আবিরের প্লেন ছিল।
আবির নিজে কল না করে ওর লোক দের দিয়ে কল করায়।
তবে চলেন আমরা কলে কি কথা হয়েছে তাতে ফিরে আসি।
মিতু: আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?
লোক: ওয়ালাইকুম সালাম।
এখানে একটা লোক এক্সিডেন্ট করছেন তার ফোনে আপনার নাম্বারটা আগে পেলাম তাই আপনাকে কল করেছি আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন আমি আপনাকে এড্রেস পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মিতু: কি বলছেন কি আপনি আর কার কথা বলছেন আপনি।
লোক: তার একটা কার্ড পেয়েছি তাতে দেখে জানতে পারি তার নাম আরিফ।
মিতু: কি বলছেন কি আপনি এসব কি হয়েছে আরিফের ও কোথায় এখন।
লোক: ওনাকে এখন হসপিটালের আনা হয়েছে আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন আমি আপনাকে এড্রেস পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এই বলে লোকটা কল কেটে দেয়।
আর মিতুও তাড়াতাড়ি করে অস্থির হয়ে কিছু না বলে চলে আসে।
লোকটা যে এড্রেস পাঠিয়েছে মিতু সেই এড্রেস অনুযায়ী চলে আসে সেই জায়গায়।
আর ঐ হসপিটালের গিয়ে আরিফ কে খুজতে শুরু করে কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না।
নার্স: ম্যাম আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?
মিতু: হুম আমার হাসবেন্ড মোঃআরিফুল ইসলাম উনি কোথায় উনি তো এই হসপিটালে থাকার কথা।
নার্স: ওহ্! ম্যাম আপনি ওনার ওয়াইফ আচ্ছা আপনি আমার সাথে আসুন আমি আপনাকে রুমটা দেখিয়ে দিচ্ছি চলুন।
মিতুও নার্সের সাথে চলে আসে আর তখনই মিতুকে একটা রুমাল দিয়ে পিছন থেকে মুখে চেপে ধরে ধরে।
আর কিছু সময় পর মিতু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
আর পরে যেতে নেয় আর আবির এসে মিতুকে জড়িয়ে ধরে।
আবির: ওহ্! বেবি কতো দিন পর তোমাকে দেখতে পেলাম।
আজ কি করে পালাবে তুমি এখন তো তোমাকে কেউ নিয়ে যেতে পারবে না।
এরপর আবির মিতুকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।
আর নিজে গাড়ি চালিয়ে ওর ফ্লাটে নিয়ে আসে।
আর বিছানা নিয়ে মিতুকে শুইয়ে দেয়।
আর নিজে মিতুর পাশে চেয়ারে বসে মিতুকে দেখতে থাকে।
বেশ কিছু সময় পর মিতুর জ্ঞান ফিরে আসে।
জ্ঞান ফিরে আসতে মিতু নিজেকে অন্য জায়গায় আবিষ্কার করে।
মিতু: আমি এখানে কেনো এটা কোথায় আমাকে এখানে কেনো আনা হয়েছে।
আবির: বেবি তোমার জ্ঞান ফিরেছে তবে এতোক্ষণে সেই কখন থেকে তোমার জন্য বসে আছি বলো।
আমার তো তোমার সাথে রোমাঞ্চ করার জন্যে তর সইছে নাহ।
মিতু: আবির তুমি!তুমি আমাকে এখানে কেনো এনেছে আমাকে যেতে দেও।
(এই বলে উঠে যেতে নেই)
আবির: ওহ্! বেবি তুমিও না কি যে বলো এতো কিছু করে তোমাকে আনলাম আর তুমি কি না এখন চলে যতে চাইছো।
মিতু: তার মানে এই সব তোমার প্ল্যান ছিলো।
আরিফ কোথায় বলো ওকে তুমি কি করেছো?
আবির: তা আমি কি করে জানবো আমি তো ওর কাছেও যাইনি।
শুধু শুধু ওর পিছনে সময় নষ্ট করতে চাই নাই।
তারজন্য তো এতো প্ল্যান করলাম।
আর তুমিও সেই প্ল্যানে পা দিয়েছে।
মিতু: প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেও আমাকে যেতে দেও তুমি।
আবির: কি যে বলো না তুমি এতো দিন পর তোমাকে আমার কাছে আনলাম তা কি তোমাকে ছেড়ে দিবো বলে।
আর এদিকে আরিফ মিতুর ফোনের লোকেশান অনুযায়ী ঠিক জায়গায় চলে আসে আর আবিরের বাসায় চলে আসে।
আবিরের বাসায় অনেক বডিগার্ড রেখে দিয়েছে।
আর আরিফ যেই না আবিরের বাসায় ডুকে বডিগার্ডরা আরিফকে ঘিরে ধরে।
আরিফ একটা একটা করে সবাইকে মারতে থাকে।
আরিফের সাথে কেউ পরে উঠছে না আরিফ সবাইকে আধমরা করে ফেল।
এরপর আরিফ মিতুকে খুঁজেতে থাকে হঠাৎ করে একটা রুম থেকে মিতুর চিৎকার শুনতে পায়।
আর এদিকে আবির মিতুকে বিছানায় ফেলে জোর করতে থাকে আর মিতু নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
আর এদিকে আরিফ রুমের কাছে এসে দরজা জোরে জোরে ধাক্কা দিতে থাকে একসময় দরজা খুলে যায় আর আরিফ দেখে আবির মিতুর সাথে জোরাজোরি করছে আরিফ গিয়ে পিছনে থেকে আবিরের কলার ধরে মারতে শুরু করে।
আরিফ: তোর কতো বড় সাহস তুই কিনা আমার মিতুর সাথে এমন করিস।
আজতো তোকে আমি মেরেই ফেলবে।
আবিরকে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে।
মিতু: প্লিজ ওকে আর মাইরেন না আপনি ও মরে যাবে।
আরিফ: না তোকে মেরে তো আর আমি জেলে যাবো না এবার দেখি তুই জেল থেকে কি করে ছাড়া পাছ।
আরিফ পুলিশকে ফোন করে দেয়। আর কিছু সময় পর পুলিশ চলে আসে আরিফ পুলিশকে সব কিছু বলে আর মিতুও বলে কি কে ওকে এখানে আনা হয়।
এরপর পুলিশ আবিরকে নিয়ে যায়।
মিতু আরিফকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করে এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।
আরিফ: এই মিতু এখন প্লিজ কান্না করো না আমি আছি তো।
এখন আর কিছু হবে না তোমার।
মিতু: আজ যদি আপনি না আসতেন তবে আমার সব কিছু শেষ হয়ে যেতো।😭
আরিফ: আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না।
মিতু: (কান্না থামিয়ে)আচ্ছা আমি এখানে আছি আপনি কি করে জানলেন?😕
আরিফ: আমি কাল রাতে তোমার ফোনের লোকেশান আমার ফোনের এড করে দিছি যাতে তুমি কোথায় আছো তা জানতে পারি আমি যানতাম আবির এমন কিছু একটা করবে।
মিতু: আজ যদি আপনি না থাকেন তবে আমার আজকে মরে যেতে হতো😭
আরিফ: মিতু কি সব বলছো তুমি আমি আছি তো একদম কিছু হতে দিবো না তোমার।
আচ্ছা চলো বাসায় যাই আম্মু চিন্তা করছে।
আরিফ মিতুকে গাড়িতে বসিয়ে মিতুদের বাসায় নিয়ে আসে আর মিতুর আম্মু তো সব কিছু শুনে মিতুকে ধরে কান্না করতে থাকে।
পর্ব-৩৮
আরিফ মিতুকে গাড়িতে বসায় আর নিজে গাড়ি চালানো শুরু করে আবার মিতুদের বাসায় চলে আসে।
মিতুর আম্মু মিতুর চিন্তায় অস্থির হয়ে যায় তাই মিতু বাসায় আসার সাথে সাথে মিতুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
তারপর আরিফ মিতুর আম্মুকে সব কিছু খুলে বলে আর তা শুনে মিতুর আম্মু আরও কান্না শুরু করে।
মিতু: আম্মু তুমি এখন আর কেঁদো না দেখো আমি তো একদম ঠিক আছি আমার কোনো কিছু হয়নি।
মিতুর আম্মু: যদি আজ তোর কিছু হয়ে যেতো তখন আমি কি করতাম বল।
আরিফ: আম্মু আপনি একদম চিন্তা করবেন না আমি যখন আছি মিতুর কিছু হবে না।
মিতুর আম্মু: হুম বাবা তুমি আমার একমাত্র ভরসা তার জন্যে তো আমার মেয়েটাকে তোমার হাতে তুলে দিলাম।
মিতু: আম্মু এখন কান্না থামাও আমার না খুব খিদে লাগছে তুমি চলো আমাকে খেতে দেও।
মিতুর আম্মু: তোরা যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে আমি খাবার বাড়ছি।
মিতু আর আরিফ ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নেয়।
এরপর ওরা আরো একদিন থেকে মিতু শ্বশুর বাড়ি চলে আসে।
এভাবেই দেখতে দেখতে কখন যে সময় চলে যাচ্ছে কেউ বুঝতে পারে না।
বেশ ভালো সময় কাটছে তাদের দু'জন দু'জন কে ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু কেউ কাউকে বলতে পারছে না।
আজ মিতু আর আরিফের বিয়ে ছয় মাস পূর্ণ হলো।
মিতু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে আরিফ নেই মিতু ভাবলো আরিফ হয়তো বাথরুমে আছে কিন্তু পরিচয় পুরো বাড়িতে খুঁজে দেখে আরিফ কোথাও নেই।
মিতু নিজের রুমে পাশে টেবিলের উপর একটা কাগজ দেখতে পায়।
মিতু কাগজটা থাকে নিয়ে খুলে দেখে।
"" আজ আমাদের বিয়ে ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে আর তোমার জন্য আজ সারপ্রাইজ আছে ""
মিতু কাগজটা দেখে ও মনে হয় আর একমুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। সোজা মাটিতে বসে পড়ে।
অনেক সময় ধরে কান্না করতে থাকে পরে নিজেকে শক্ত করে আর কাগজটা বিছানার পাশে টেবিলের ডয়ারে রাখতে যাবে তখনই আরও একটি কাগজের খাম মিতুর চোখে পরে এরপর হাতে নিয়ে খাম খুলে দেখে ওটা মিতু আর আরিফের ডিভোর্স পেপারে ছিলো
চলবে........
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com