আমার গল্পে তুমি || পার্ট: ৪ || লেখিকা: সুলতানা তমা
ফ্লোরে বসে দুহাতে মাথা চেপে ধরে পাগলের মতো কাঁদছি, সবকিছু কেমন যেন মিথ্যে মনে হচ্ছে। অন্ধকার লাগছে চারপাশ, উলটপালট হয়ে যাচ্ছে বুকের ভিতরটা। হিমি এক নিমিষে আমার বাঁচার সব ইচ্ছে গলা টিপে মেরে ফেললো, আমি কিভাবে বাঁচবো এখন?
আরিয়ান: আরশান উঠ প্লিজ এভাবে কান্না করিস না।
সিফাত: আরে এক মেয়ে না বলেছে তো কি হয়েছে বাসায় ফিরে চল তোর পিছনে মেয়েদের লাইন লাগিয়ে দিবো।
আরিয়ান: চল না আরশান।
শান্ত: আরশান চল।
আমি: (নিশ্চুপ)
আরিয়ান: আরে ও ছাড়া দুনিয়ায় মেয়ে নেই নাকি? আমরা তোর জন্য আরেকটা মায়াবতী খুঁজে দিবো, চল এবার।
শান্ত: আরশান তারিন আর হিমি কিন্তু গাড়িতে একা আছে। (শান্তর কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম)
শান্ত: হুম হিমি গাড়িতে আছে তারিনও আছে, চল ওরা একা।
আমি: হুম।
গাড়ির গ্লাস দিয়ে হিমির দিকে এক নজর তাকালাম, আমাকে দেখে হিমি মাথা নিচু করে ফেললো। চুপচাপ সামনের সিটে এসে বসলাম। গাড়ি চলছে তার গন্তব্যে, আমি গ্লাস নামিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি আর ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করছি। হঠাৎ হিমিকে দেখতে ইচ্ছে হলো, সাহস করে পিছনে তাকালাম। হিমিও জানালা দিয়ে আনমনা হয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।
মাঝরাত, ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ফিরে এসে কারো সাথে কোনো কথা না বলে চুপচাপ শুয়ে পড়েছিলাম, শুয়া থেকে উঠে বসলাম। হিমি কি বাড়ি চলে গেছে? সকালে তো আমরা চলে যাবো হিমিকে বোধহয় আর একনজর দেখতেও পারবো না। বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। টিনের চালে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে আমি আনমনা হয়ে বৃষ্টি দেখছি, ঠান্ডা বাতাস বইছে মাঝেমাঝে বৃষ্টির ছিটা এসে আমার গায়ে পড়ছে, মন খারাপের রাতে এই ঝুম বৃষ্টি বেশ ভালো লাগছে। হঠাৎ বারান্দার অপর প্রান্তে চোখ পড়লো, হিমি দাঁড়িয়ে আছে সেটা রুম থেকে আসা আবছা আলোতে বেশ ভালোভাবে বুঝা যাচ্ছে। আশ্চর্য এতো রাতে হিমি বারান্দায় কি করছে? আর ও বাড়িতে যায়নি কেন? হিমির কাছে যাবো কি যাবো না ভাবতে ভাবতে এসেই পড়লাম, ওর পাশে এসে দাঁড়ালাম। হিমি হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি স্পর্শ করছিল আমাকে দেখে চমকে উঠে চলে যেতে চাইলো।
আমি: হিমি দাঁড়াও। (হিমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো)
আমি: ভোরের আলো ফুটলেই তো চলে যাবো, আর কেউ তোমাকে বিরক্ত করবে না। আজকেই আমাদের শেষ দেখা, আমার পাশে একটু দাঁড়াবে প্লিজ! (হিমি এসে মাথা নিচু করে আমার পাশে দাঁড়ালো)
আমি: বাড়ি ফিরে যাওনি যে?
হিমি: বৃষ্টির জন্য আটকে গেছি। (চমকে উঠে হিমির দিকে তাকালাম, হিমির কন্ঠ এমন ধরে আসছে কেন? হিমি কাঁদছে কেন?)
আমি: কাঁদছ কেন তুমি?
হিমি: নাতো।
আমি: আমি প্রপোজ করাতে কাঁদছ তুমি? আমি আর তোমাকে বিরক্ত করবো না কেঁদো না প্লিজ!
হিমি: সবসময় এতো বেশি বুঝেন কেন? (হিমি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো, চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তাড়াতাড়ি ওর হাত ধরে ফেললাম)
হিমি: হাত ছাড়ুন।
আমি: আগে বলো কাঁদছ কেন?
হিমি: আমি কাঁদলে আপনার কি? (হিমির এই কথায় প্রচন্ড রাগ হলো, জানে আমি ওকে ভালোবাসি তারপরও এমন প্রশ্ন করতে পারলো? টান দিয়ে ওকে আমার কাছে নিয়ে আসলাম, এক হাতে ওর হাত ধরে আছি আর অন্যহাতে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরলাম)
আমি: কতোটা ভালোবাসি জানোনা? নাকি বুঝেও না বুঝার ভাণ করছ?
হিমি: হাত ছাড়ুন লাগছে।
আমি: লাগুক। (রাগে ওর হাত আরো জোড়ে ছেপে ধরলাম সাথে সাথে ওর হাতের কয়েকটা কাঁচের চুড়ি ভেঙ্গে গেলো)
হিমি: আহ! ছাড়ুন বলছি।
হিমির হাত ছেড়ে দিলাম ও দৌড়ে রুমে চলে গেলো, আমিও চুপচাপ রুমের দিকে পা বাড়ালাম।
রুমে আসতেই হাতের দিকে নজর পড়লো, আমার হাতে রক্ত আসলো কিভাবে? তবে কি ভাঙ্গা চুড়িতে হিমির হাত কেটে গেছে? দৌড়ে হিমির রুমে আসলাম, হিমি বিছানায় বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে পাশে তারিন ঘুমে। দরজা লাগিয়ে দিলাম, কট করে একটা শব্দ হলো হিমি চমকে উঠে পাশ ফিরে তাকালো।
হিমি: আপনি? আবার এসেছেন? চলে যান প্লিজ কেউ দেখলে আমার গায়ে কলঙ্কের দাগ লেগে যাবে।
আমি: তোমার হাতটা দেখি। (ওর হাত আমার হাতের মুঠোয় আনলাম অনেকটা জায়গা কেটে গেছে রক্ত ঝরছে)
আমি: তোমার হাত তো কেটে গেছে, সরি হিমি আমি ইচ্ছে করে...
হিমি: এতো টুকু কাটাতে কিছু হবে না আপনি যান প্লিজ!
আমি: যাবো না। (হিমি হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তারিনকে ডাক দিলো, তারিন উঠে আমাকে দেখে চমকে উঠলো)
তারিন: আরশান ভাইয়া?
আমি: হিমির হাত কেটে গেছে ওকে এভাবে রেখে আমি অন্য রুমে শুয়ে শান্তি পাবো না, ব্যান্ডেজ করার মতো কিছু থাকলে দাও।
তারিন: দাঁড়াও দিচ্ছি।
হিমির হাতের বাকি চুড়ি গুলো খুলে বিছানায় রাখলাম, ব্যান্ডেজ করছি আর হিমি বারবার চোখমুখ কুঁচকে আমার হাত চেপে ধরছে। দু তিন জায়গায় কেটে গেছে, না বুঝে আমার মায়াবতীকে কতোটা কষ্ট দিয়ে ফেললাম।
হিমি: লাগছে, ছাড়ুন আর ব্যান্ডেজ করতে হবে না।
আমি: আর একটু।
তারিন: আরশান ভাইয়া তুমি কাঁদছ কেন?
আমি: নাতো।
তারিন: হিমি কাঁদছে বলে তুমিও কাঁদছ? তোমাকে যতো দেখছি ততোই অবাক হচ্ছি, কেউ এতোটা ভালো বাসতে পারে?
আমি: চুড়ি গুলো এভাবে ভেঙ্গে যাবে আমি বুঝতে পারিনি আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ! (কথা গুলো বলতে বলতে হিমির দিকে তাকালাম, হিমি আমার দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে)
আমি: আসছি। (দরজার কাছে আসতেই বুকটা কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগছে পিছন ফিরে তাকালাম, হিমি দাঁড়িয়ে আছে আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হিমির দুচোখে পানি ছলছল করছে, দৌড়ে এসে হিমিকে বুকের সাথে ঝাপটে ধরলাম)
আমি: ভালোবাসি মায়াবতী, তোমাকে ছাড়া থাকতে অনেক কষ্ট হবে, ভুলতে পারবো না কখনো তোমাকে।
তারিন: হিমি তুই এমন পাগলকে কি করে যে না করে দিলি বুঝতে পারছি না, এমন ভালোবাসা কেউ ইচ্ছে করে হারায়? (হিমি চুপচাপ আমার বুকের সাথে লেপ্টে দাঁড়িয়ে আছে ছুটে যাওয়ার জন্য কোনো চেষ্টা করছে না। হিমির আচরণে মনে হয় ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু...)
তারিন: তোমরা রোমান্স করো আসছি আমি।
আমি: যেও না আমি চলে যাচ্ছি। (হিমিকে ছেড়ে চলে আসার জন্য পা বাড়াতেই বিছানায় রাখা চুড়ি গুলোর উপর নজর পড়লো, চুড়ি গুলো হাতে নিয়ে হিমির সামনে আসলাম)
আমি: চুড়ি গুলো আমাকে দিবে?
হিমি: এই সস্তা চুড়ি গুলো দিয়ে আপনি কি করবেন? (হিমি বেশ অবাক হয়েই প্রশ্নটা করলো, আমি মৃদু হাসলাম)
আমি: প্রিয় মানুষটা যখন কাছে থাকবে না তখন নাহয় তার এই সস্তা চুড়ি গুলোই স্মৃতি হয়ে আমার কাছে থাকবে। (হিমি আমার উত্তর শুনে মাথা নিচু করে ফেললো, ওর গালে একটা হাত রাখলাম সাথে সাথে হিমি আমার চোখের দিকে তাকালো)
আমি: ভালো থেকো।
হিমির কপালে আলতো করে আমার ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দিলাম, হিমি দুচোখ বন্ধ করে আছে দেখে মৃদু হেসে চলে আসলাম।
সিফাত: আরশান আর কতবার ওদিকে তাকাবি?
আরিয়ান: আরে হিমি তোকে ভালোবাসে না। হিমি তো জানতো আজ সকালে আমরা চলে যাবো, যদি তোকে ভালবাসতো তাহলে তুই চলে যাচ্ছিস জেনেও কি একবারের জন্য আসতো না? (ওদের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ হিমিদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে আছি, ভেবেছিলাম যাওয়ার সময় একনজর দেখতে পারবো কিন্তু হিমি তো একবারের জন্যও বের হচ্ছে না, এই মেয়েটা কি আমার ভালোবাসা এতটুকুও বুঝে না?)
শান্ত: আরশান চল দেরি হয়ে যাচ্ছে পরে কিন্তু ট্রেন মিস করবি।
তারিন: আরশান ভাইয়া হিমি আসবে না। (তারিনের দিকে তাকালাম, মন তো কিছুতেই হিমিকে একনজর না দেখে যেতে চাচ্ছে না)
তারিন: সরি ভাইয়া তোমার জন্য কিছু করতে পারলাম না।
আমি: তুমি সরি বলছ কেন? হিমি যদি আমার ভালোবাসা না বুঝে তাতে তো অন্য কারো দোষ নেই, এইটা আমারই ব্যর্থতা।
তারিন: আমি চেষ্টা করবো তুমি মন খারাপ করো না।
শান্ত: এবার চল।
তারিনের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে চলে আসলাম।
ট্রেন চলছে তার নিজ গন্তব্যে, আমি আনমনা হয়ে বসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে বাইরের প্রকৃতি দেখছি। হঠাৎ সিফাত ডেকে উঠলো...
সিফাত: আরশান?
আমি: হুম।
সিফাত: এতো চুপচাপ থাকলে ভালো লাগে বল।
আরিয়ান: আমাদের জার্নি কখনো এতো নীরব হয়নি তোর গানের সাথে আমরা জার্নি ইনজয় করি আর আজ কিনা তুই এতো নীরব, এইটা ধর। (আরিয়ান আমার দিকে গীটার এগিয়ে দিল, মৃদু হেসে গীটারটা ওর দিকে আবার ঠেলে দিলাম)
আমি: গান গাওয়ার মতো মোড নেই।
সিফাত: ভুলে যা না সব।
আমি: এতো সহজে যদি সব ভুলা যেতো তাহলে ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণায় পৃথিবীর কোনো মানুষ কাঁদতো না।
আরিয়ান: একবার বাসায় ফিরে চল কয়েকদিন পর দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে তোর মন ভালো হয়ে যাবে।
আমি: মনটা যে গ্রামে রেখে এসেছি কি করে ভালো হবে?
সিফাত: আরশান ভালোবাসা যদি জোড় করে হতো তাহলে আমরা ঠিক হিমিকে তোর কাছে এনে দিতাম কিন্তু তাতো পসিবল নয়, বুঝার চেষ্টা কর প্লিজ!
আমি: (নিশ্চুপ)
আরিয়ান: ভুলে যা প্লিজ!
আমি: সম্ভব না।
সিফাত: তাহলে কি করবি?
আমি: অপেক্ষা।
আরিয়ান: তোর কি মনে হয় হিমি ফিরে আসবে?
আমি: হ্যাঁ, আমি ওর চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি। হিমি একদিন ঠিক আমার কাছে ফিরে আসবে।
সিফাত: তাহলে সেদিনের অপেক্ষায় বসে থাক।
আমি: হুম।
বাসায় এসে কলিংবেল চাপতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিলেন, আমাকে দেখে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।
আম্মু: আরশান।
আমি: কেমন আছ আম্মু?
আম্মু: বিয়ে বাড়িতে গিয়ে তো মা'কে ভুলেই গেছিস।
আমি: তোমাকে কখনো ভুলা যায়?
আম্মু: আরশান কি হয়েছে তোর মুখটা এমন শুকনো শুকনো লাগছে কেন?
আমি: তুমি তো সবসময় এই একই কথা বলো।
আম্মু: না আরশান আজ তোর মুখ অন্যরকম লাগছে।
রোদেলা: ভাইয়া চলে এসেছ?
আমি: হুম চাঁচি কোথায়?
রোদেলা: রুমেই আছে, আমার জন্য কি এনেছ?
আমি: তুই কি এখনো পিচ্ছি নাকি যে আসার সময় কিছু নিয়ে আসবো।
রোদেলা: চাঁচি দেখেছ কি বলে?
আম্মু: বলবেই তো আজ যে আমি অন্য আরশানকে দেখছি, যে আরশান সারাদিন পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখে ও তো সে আরশান নয়।
আমি: আম্মু তুমি অজতা ভাবছ, আপু কোথায়?
আম্মু: রুমে।
আমি: আপুর সাথে দেখা করে আসি।
আম্মু: হুম যা।
আমি: আমি যে এসেছি সে খেয়াল কি কারো আছে? (আপু বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে ফোন টিপছিল আমার কথা শুনে দরজায় তাকিয়েই এক দৌড়ে আমার কাছে ছুটে আসলো)
আপু: আমিতো ভেবেছিলাম হিমিকে ছেড়ে বুঝি আর আসবিই না।
আমি: তোদের ছাড়া থাকা সম্ভব?
আপু: এদিকে আয় তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে।
আমি: একটু রেস্ট নেই তারপর সব কথা।
আপু: তুই কিন্তু আমার কথা এড়িয়ে যাচ্ছিস।
আমি: কখন? আমাকে ফ্রেশ হওয়ার সুযোগ দিবি না?
আপু: না এখানে বস। (আপু আমাকে জোড় করে টেনে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলো, জানি তো আপু হিমিকে নিয়ে কথা বলবে। কিন্তু কি বলবো আপুকে?)
আপু: এবার বল হিমি তোর প্রপোজ একসেপ্ট করেছে? প্রপোজের জন্য এতো আয়োজন দেখে হিমি নিশ্চয় চমকে উঠেছিল? এই তোরা বিয়ে কবে করছিস?
আমি: (নিশ্চুপ)
আপু: কিরে ভাই তোর মুখটা এমন মলিন লাগছে কেন?
আমি: অনেকটা রাস্তা জার্নি করেছি তো খুব টায়ার্ড লাগছে আপু। (আমার দিকে তাকিয়ে আপু কি যেন ভাবলো)
আপু: ঠিক আছে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে আমি তোর জন্য খাবার নিয়ে আসি।
আমি: হুম।
ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম, হিমিকে বড্ড বেশি মিস করছি ইচ্ছে করছে ছুটে হিমির কাছে চলে যাই।
আপু: ভাই? (আপুর ডাক শুনে তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নিলাম)
আমি: আপু আমি বারান্দায়।
আপু: খাবার এনেছি চল খাবি। (আপু এসে আমার হাত ধরলো, আপুর হাত ছাড়িয়ে দিলাম)
আমি: এই সন্ধ্যা বেলায় কিছু খেতে ইচ্ছে করছে নারে আপু। (আপু কিছু না বলে চুপচাপ এসে আমার পাশে দাঁড়ালো)
আপু: হিমি তোকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাই না?
আমি: (নিশ্চুপ)
আপু: নাম্বার আছে হিমির? আমি কথা বলবো।
আমি: বাদ দে না আপু।
আপু: আমার ভাই কষ্ট পাবে আর আমি সেটা নীরবে সহ্য করবো?
আমি: জোড় করে কি ভালোবাসা হয়?
আপু: কিন্তু হিমি তোকে ভালোবাসে না কেন? তুই কি দেখতে খারাপ নাকি তোর টাকা পয়সার অভাব?
আমি: আপু হিমি খুব সহজ সরল মেয়ে ওর কাছে টাকা পয়সা বা সৌন্দর্যের কোনো মূল্য নেই।
আপু: তাহলে কিসের জন্য তোকে ফিরিয়ে দিলো?
আমি: মেয়েটা অল্পতেই বড্ড বেশি ভয় পায়, হয়তো পরিবারের ভয়ে।
আপু: তাহলে আমরা ওর পরিবারের সাথে কথা বলবো একেবারে বিয়ে ঠিক করে নিবো।
আমি: না আপু, হিমি আমাকে অনুরোধ করে বলেছে ওর পরিবার যেন এসব জানতে না পারে।
আপু: তাহলে আমরা করবোটা কি?
আমি: কিছু করার নেই, বাদ দাও আপু।
আপু: কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি: কিচ্ছু ঠিক হবে না হিমি আমাকে পছন্দ করে না।
আপু: এতো ভেঙ্গে পড়ছিস কেন? এমন তো অনেক হয় সম্পর্ক গড়ার আগেই ভেঙ্গে যায়, তাই বলে কি মানুষ আর স্বপ্ন দেখে না? তুই নতুন করে স্বপ্ন দেখ, হিমির চেয়ে অনেক ভালো মেয়ে পাবি।
আমি: আমিতো ভালো মেয়ে চাইনি আমার হিমি নামের মায়াবতীটাকেই চাই।
আপু: কিন্তু...
আমি: আপু প্লিজ ভালো লাগছে না।
আপু: একা থাক একটু, সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি: হুম।
আপু চলে গেলো, আমি আনমনা হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি হিমি কি কখনো ফিরে আসবে আমার কাছে আমার ভালোবাসার টানে...
চলবে😍
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com