ছয় মাসের বউ || পর্ব -৩৫ ও ৩৬
আরিফ কফি খেয়ে বারান্দায় বারান্দায় এসে দাঁড়ায় মিতুর পাশে।
এসে দেখে মিতুকে আবারও চিন্তিত মনে হচ্ছে।
আরিফ: মিতু কি হয়েছে তোমার তুমি ইদানিং কিছু একটা নিয়ে খুব বেশি চিনি করছো।
তোমার কাছে অনেকবার জানতে চাইছি কিন্তু তুমি কিছুতেই আমাকে বলতে চাচ্ছ না।
প্লিজ আমাকে বলো তুমি কিসের এতো চিন্তা তোমার প্লিজ বলো না আমাকে।
মিতু: না আমি তো কিছু নিয়েই চিন্তা করছি না আপনি না শুধু শুধু ভাবছেন।
আরিফ: মিতু তুমি আমার দিকে তাকাও।
মিতু: নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আরিফ: কি হলো তাকাও বলছি তোমাকে আমার দিকে তাকাও।
মিতু: (এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে)
আরিফ: নিজের হাত দিয়ে মিতুর মুখটা উপরে তুলে নিজের মুখোমুখি দাঁড় করাই।
দেখি যে মিতু চোখে পানি টলমল করছে।
একটু পর চোখ দিয়ে বৃষ্টি নামবে।
এই মিতু কি হয়েছে তোমার তুমি কান্না করছো কেনো।
মিতু: আর নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না কান্না করে দিলাম।
আরিফ: এই মিতু কি হয়েছে তোমার তুমি কান্না করছো কেনো তুমি কি আমার কোনো কথায় বা কোনো কাজে কি তুমি কষ্ট পাইছো।
আচ্ছা যদি কষ্ট পেয়ে থাকো আমি সত্যি সরি।
মিতু: আর কিছু বলতে পারলাম না আরিফ কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করে দেই।
আরিফ: হঠাৎ করে মিতু এমন করে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে তার কারনটা নিজে খুঁজে পাচ্ছি না।
কিন্তু মিতুর চোখের পানি দেখে নিজের মনের মধ্যে কেমন যেনো খারাপ লাগতে শুরু করে।
মনে হচ্ছে এই চোখের পানি আমি দেখতে পারবো না।
নিজের অজান্তেই মিতুকে জড়িয়ে ধরলাম।
মিতু: আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না বড্ড বেশি ভয় করছে আবির যদি এখন ওনার কিছু করে ফেলে।
আমার জন্য যদি আরিফের কিছু হয়ে যায়।
তাই হুট করে আরিফ কে জড়িয়ে ধরলাম।
আরিফ: মিতুকে নিজের কাছ থেকে একটু ছাড়িয়ে নিয়ে।
মিতু এই মিতু আমাকে বলো কি হয়েছে তোমার।
তুমি যদি না বলো তবে আমি করে আমি বুঝবো যে তোমার কি হয়েছে।
মিতু: (কান্না করতে করতে)ও আবার ফিরে এসেছে ও আবার সব কিছু শেষ করে দিবে।
আরিফ: মিতু কে ফিরে এসেছে বলবে তো আমাকে।
কে সব কিছু শেষ করে দিবে।
মিতু: কান্না করতে থাকি যার জন্যে কিছু বলতে পারছিলাম না।
আরিফ: মিতু কান্না থামাও শান্ত হও ।
শান্ত হয়ে বলো আমাকে কি হয়েছে তোমার।
মিতু: নিজেকে মানিয়ে নিয়ে আরিফ কে সব কিছু বললাম প্রথম থেকে।
আরিফ: তুমি কোন চিন্তা করো না আমি থাকতে আবির মতো কোনো কিছু করতে পারবে না।
এই আবির কে তো আমি দেখে নিচ্ছি।
তার আগে তুমি কান্না থামাও তোমাকে এমন ভাবে একদম ভালো লাগে না।
একদম পেত্নী লাগছে এখন।
মিতু: এই একদম পেত্নী বলবেন না আমাকে।
আরিফ: আচ্ছা বলবো না এখন আগে একটু কান্না থামিও।
মিতু: ওকে আচ্ছা এবার চলুন রাত হয়ে গেছে আপনি ডিনার করবেন।
আরিফ: মিতু প্লিজ আমাকে ডিনার করতে বলো না এখন একদম খেতে পারবো না এখন।
মিতু: তা তো বললে হবে না আম্মু তবে কষ্ট পাবে।
আরিফ: ওকে তবে একটু খাবো বেশি পারবো না।
প্লিজ তুমি একটু হেল্প করো না হয় আম্মু আবার এতো এতো খাওয়াবে।
মিতু: আচ্ছা আগে চলেন।
আরিফ মিতুর সাথে চলে আসে আর সবাই মিলে ডাইনিং টেবিল খেতে বসে।
আরিফ খেতে বসার পর থেকে মিতুর আম্মু এতো এতো খাবার খাওয়াতে শুরু করে।
মিতু: আম্মু তুমি কি রাক্ষস পাইছো যে এতো গুলো খাবার খাওয়াইতেছ।
মিতুর আম্মু: কি বাজে কথা বলছ জামাইকে রাক্ষস কেনো পাবো।
মিতু: এতো খাবার খাওয়াইতেছ কেনো আর খাওয়াইয়ো না বেচারার অবস্থা খারাপ।
আরিফ: আম্মু আর পারবো না খেতে।
মিতুর আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে আর জোর করবো না।
আরিফ আর মিতু খাবার খেয়ে রুমে চলে আসে আর আরিফ এতো কিছু খাবার খেয়ে বেচারা শেষ হয়ে গেছে রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পরে আর মিতু ও শুয়ে পরে।
পর্ব-৩৬
আরিফের আজকে ঘুম সকালেই ভেঙ্গে যায়।
অন্য সব দিন মিতুই আগে ঘুম থেকে উঠে আরিফ কে ডাকতো।
আরিফ ঘুম থেকে উঠে দেখে মিতু এখনো ঘুমিয়ে আছে আজ প্রথম মিতুকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখেছে।
ঘুমন্ত অবস্থায় যে মিতুকে এতোটা সুন্দর লাগছে আরিফ আজ তা দেখলো।
মিতুর কাছে থেকে চোখ চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না।
আরিফ কিছু সময় মিতুর দিকে তাকিয়ে থাকে তারপর নিজে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয় মিতু তখনও ঘুমাচ্ছে।
আরিফ ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে আর সকালের প্রকৃতি দেখতে থাকে।
মিতুর কিছু সময় পর ঘুম ভেঙ্গে যায় আর পাশে ফিরে দেখে আরিফ নেই।
তাই বিছানা থেকে উঠে আরিফ কে খুজতে শুরু করে দেখে যে আরিফ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।
মিতু: ওহ্! আপনি এখানে এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গেছেন যে।
আপনার কি ঘুমাতে অসুবিধা হয়েছে নাকি।
আরিফ: আরে না কি যে বলো না তুমি।
আর আজ ভালো হয়েছে আমার ঘুম তাড়াতাড়ি করে ভেঙ্গে গেছে না হয় তো যানতামই না যে আমার আশেপাশের এতো সুন্দর কিছু আছে যা আমার অজানা।
মিতু: মানে কি এমন দেখলেন আবার আপনি এই সাতসকালে।
আরিফ: কিছু না দেখো সকালের আবহাওয়াটা কতো সুন্দর আর কতো রোমান্টিক তাই না।
মিতু: সকালের আবহাওয়া সুন্দর হয় সব সময় আপনি তো ঘুমিয়ে থাকেন তাই দেখবেন কি করে ঘুম থেকে উঠে অফিসে চলে জান তো কি করে জানবেন।
আর সকালের আবহাওয়ার মাঝপ রোমান্টিকের কি দেখলেন আপনি।😒
আরিফ: আরে তুমিও না মিতু কিছু বুঝো না আর মাঝে মাঝে বেশি ও বুঝো।
মিতু: আমি আবার সাতসকালে কি করলাম আর কি বুঝবো।
আরিফ:(মিতুর সামনে আগাতে আগাতে)সকালের পরিবেশটা দেখো কতো ঠান্ডা আর পাশে যদি এমন সুন্দরী বউ থাকে তো পরিবেশ তো এমনিতেই রোমান্টিক হয়ে যায়।
আর তখন তো ইচ্ছে করে বউয়ের সাথে জমিয়ে রোমাঞ্চ করি।😜
মিতু: মানে আমি তো কিছু বুঝতেছি না।
আরিফ মিতুর হাত টান দিয়ে নিজে কাছে নিয়ে আসে।
এরপর মিতুর পিঠ আরিফের বুকের সাথে লাগিয়ে ফেলে।
মিতুর চুল গুলো ওর পিঠের ওপর পরে আছে।
আরিফ আস্তে করে সব গুলো চুল পিঠের ওপর থেকে সরিয়ে নেয়।
মিতু আরিফের স্পর্শ পেয়ে বার বার কেঁপে ওঠে।
মিতুর হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না আর নিজেকে সরাতেও পারছে না।
আরিফ মিতুর চুল নিজের মুখ গুঁজে দিলেন।
আর আরিফ নিজের হাত মিতুর শাড়ীর ফাঁকে নিজের হাত দিয়ে মিতুর পেটে স্লাইড করতে থাকে।
কিছু সময় পর আরিফ মিতুকে হঠাৎ করে কোলে তুলে নেয় আর কোলে করে মিতুকে বিছানায় এনে রাখে আর নিজে মিতুর উপর শুয়ে পরে আর মিতুর দিকে তাকিয়ে থাকে।
দু'জন তাকিয়ে আছে দু'জনের দিকে।
আস্তে দিও আরিফ মিতুর গলায় মুখ গুঁজে দেয় ডিপ চুমু দেয় তারপর আস্তে আস্তে কাঁধে চলে আসে।
এরপর মিতুর শাড়ীর আঁচলটা খুলতে নেয় আর তখনই মিতু আরিফ কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দৌড়ে বাথরুম চলে আসে।
আর আরিফ ও বিছানা থেকে উঠে বসে।
আরিফ: নাহ্। আর মিতুকে দুরে সরানো সম্ভব না আমার।
যা করার আমাকেই করতে হবে।
আমি মিতুকে ভালোবেসে ফেলেছি।
কিন্তু এখন কি হলো পুরো রোমাঞ্চের বারোটা বাজিয়ে দিলো কি বউ রে বাবা এমন মাঝ পথে রোমাঞ্চের বারোটা বাজায়।😟
মিতু:আল্লাহ গো এটা কি হলো আমার সাথে।
(আয়না দিকে তাকিয়ে)আল্লাহ এখন আমি কি করে যাবো আম্মু সামনে কি করছে।
মিতু বাথরুমে গিয়ে ঝর্ণার ছেড়ে গোসল করে নেয় আর জামা কাপড় নিতে গিয়ে দেখে জামা কাপড় আনা হয় নাই।
মিতু: আল্লাহ এখন কি হবে।
আমি তো জামা কাপড় নিয়ে আসি নাই।
আস্তে করে মিতু দরজা খুলে দেখে আরিফ বিছানায় শুয়ে আছ।
মিতু: এই যে একটু শাড়িটা দিবেন আমি ভুল আনতে মনে ছিল না।
আরিফ: আরে আমি তো তোমার জামাই তাই না তো তুমি আমার সামনে আসলে তো কিছু হবে না।
মিতু: প্লিজ দেন না আপনি না ভালো।
আরিফ: আচ্ছা ঠিক আছে দিতেছি।
আরিফ মিতুকে শাড়ি নিয়ে দেয় আর মিতু চেঞ্জ করে নেয়।
এরপর আরিফ আর মিতু গিয়ে নাস্তা করতে বসে।
মিতুর আম্মু তো জামাই পেয়ে কতো কি রান্না করে রেখেছে।
আরিফ আজ অফিসের জরুরি কল আসে তার জন্যে আরিফ অফিসে চলে আসে।
আর মিতু ওর মায়ের সাথে বসে গল্প করতে থাকে।
হঠাৎ করে মিতু কাছে একটা কল আসে তার জন্যে মিতু তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে যায়।
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com