ছয় মাসের বউ || পর্ব-২৫
রিপা: ভাবি ভাবি দরজা খুলো।
মিতু রিপার গলার আওয়াজ পেয়ে দরজা খুলে দেয়।
রিপা: ভাবি ডিস্টার্ব করি নাই তো তোমাদের।
মিতু: আরে না কেনো ডিস্টার্ব করবে তুমি।
রিপা: না ভাবি করতেও তো পারি নতুন বিয়ে হয়েছে এখন তো তোমার আর ভাইয়া শুধু রোমাঞ্চ চলে।
মিতু: (মনে মনে)যেই না তোমার ভাই সে আবার করতে যাবে রোমাঞ্চ।
সারাদিন তো শুধু পারে বকা দিতে আর রাগ দেখাতে।
আর রোমাঞ্চ কি করবে উনিতো বউ হিসেবে মানতেই চায় না।
রিপা: কি হলো ভাবি কি ভাবছো।
ওহ্! বুঝেছি বুঝেছি রাতে ভাইয়ার সাথে করা রোমাঞ্চ এর কথা মনে পরে গেছে বুঝি।
মিতু: (রিপার কান টেনে ধরে)খুব বেশি পেকে গেছো তুমি ফুপিকে বলে তোমারও বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
রিপা: ভাবি তা তো বললে ও হবে না আমার আগে তো রিধি আপু আছে।
আর আপু যে কবে বিয়ে করবে তার কোনো ঠিক নাই।
আর তার জন্যে আমার বিয়ে যে কবে হবে কে জানে।
মিতু: থাক তোমাকে কষ্ট পেতে হবে না।
রিধির আগে তোমাকেই বিয়ে দিয়ে দিবো।
আর জামাই সাথে জমিয়ে রোমাঞ্চ করো।
রিপা: আচ্ছা ভাবি চলো এখন, আম্মু নাস্তা করতে ডাকছে।
তুমি হেটে যেতে পারবে তো নাকি ঘরে নাস্তা নিয়ে আসবো।
মিতু: না না তার আর দরকার হবে না।
তুমি যাও আমি তোমার ভাইয়াকে ঘুম থেকে তুলে নাস্তা করতে আসছি।
রিপা: আচ্ছা ভাবি।
রিপা চলে গেলে মিতু আরিফের কাছে গিয়ে আরিফ কে ঘুম থেকে ডাকতে লাগলো।
মিতু: এই যে শুনছেন।
আরিফ:______
মিতু: এই যে উঠেন না ফুপি নাস্তা করতে ডাকছে।
আরিফ: হুম,,,আচ্ছা আমি ফ্রেশ আসছি।
মিতু: আচ্ছা আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।
আরিফ বিছানা ছেড়ে বাথরুমে চলে আসে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসে দেখে মিতু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে।
আর আজ মিতু একটা পেস্ট কালারের শাড়ী পড়েছে।
মিতুকে এই কালারের শাড়ীতে বেশ দারুণ লাগছে।
যা দেখে আরিফ চোখ সরাতে পারছে না।
আরিফের দিকে চোখ যেতেই মিতু দেখে আরিফ মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে।
মিতু: কি হলো এমন হা করে কি দেখছেন।
আরিফ: হুম তোমাকে। তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
মিতু: কি বললেন।
আরিফ: না বলছি যে সারাদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কি পেত্নী মতো সাজোম
মিতু: কি বললেন আমি পেত্নী মতো সাজি।
আরিফ: তা নয়তো কি সারাদিন তো দেখি শুধু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কি সব আটা ময়দা মাখো।
মিতু: শুনেন একদম বাজে কথা বলবেন না।
আমি একদম আটা ময়দা মাখি না।
আরিফ: (মিতুর গালে হাত দিয়ে) এ মা ছিঃ কতো আটা ময়দা মাখে পুরা আমার হাত ময়দায় পুরে গেছে।
তাই তো বলি আটা ময়দা দাম কেনো বাড়ে এতো তোমাদের জন্য জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে।
মিতু:শুনেন একদম বাজে কথা বলবেন না।
আমি এমনিতেই সুন্দর আমার কোনো আটা ময়দা মাখি না।
আরিফ: তা তো দেখতেই পারছি।
মিতু: ধুর আপনার সাথে কথা বলাই বিথা।
আসেন ফুপি বসে আছে নাস্তা করার জন্যে।
আরিফ: আচ্ছা চলো।
সবাই মিলে নাস্তা করতে বসে।
আর রিপা মিতুকে বলে।
রিপা: ভাবি তোমার আর ভাইয়ার কি রোমাঞ্চের শেষ করে আসতে মন চায় না নাকি।
আরিফ: রিপা তুই না খুব বেশি পেকে গেছিস তোকে তাড়াতাড়ি বিদায় করতে হবে।
রিপা: হুম আমাকে তো বিদায় করতে চাইবে যাতে আম্মুর কাছ থেকে আরও বেশি আদর পেতে পারো।
ফুপি: কি শুরু করে দিলি তোরা।
সারাক্ষণ সামনে আসলেই ঝগড়া করতে শুরু করে দেছ।
রিপা: আমার কি দোষ সব তো ভাইয়ার দোষ আসলেই শুধু ঝগড়া করে।
কখনো তো ওর মুখ দিয়ে কোনো ভালো কথা আসেই না।
মিতু: রিপা একদম ঠিক কথা বলছো তুমি।
ভালো কথা কি করে বলে তা ই হয়তো ভুলে গেছে সারাক্ষণ শুধু এমন করে কথা বলে।
আরিফ: ও আমি খারাপ আর তোমরা তো ধোঁয়া তুলসীপাতা তাই না।
রিপা: ভাইয়া এই প্রথম তুমি একটা ঠিক কথা বলছো।
ফুপি: রিপা তুই এইবার চুপ করবি কখন খাবার দিয়ে গেছি।
আর তোরা তো শুধু ঝগড়া করেই কাটিয়ে দিলি।
আরিফ : হুম ফুপি একদম ঠিক কথা বলছো।
মেয়েগুলো না একদম ঝগড়া না করে থাকতে পারে না।
শুধু শুধু কথায় কথায় ঝগড়া করে কাটিয়ে দেয়।
রিপা: দেখো কিন্তু আম্মু ভাইয়া কি বলতেছে।
তুমি কিন্তু ভাইয়াকে কিছু বলছো না।
ফুপি: চুপ কর তো তুই।
রিপা রিধি কোথায় ও কেনো এখনো খেতে আসছে না।
যা তো ডেকে নিয়ে আয়।
রিপা: আচ্ছা আম্মু যাচ্ছি।
ফুপি: কি হলো মিতু তুমি যে দেখি কিছুই খাচ্ছ না।
এমন করে খেলে কি হবে।
মিতু : এইতে ফুপি খাচ্ছি তো আমি।
আরিফ: ফুপি বেশি কিছু বলো না পরে দেখবে তোমার ঘরের সব কিছু খেয়ে বসে আছে।
যেই পেত্নীরে ভাবা গো ভাবা।
মিতু: এই একদম ভালো হবে না বলে দিলাম আমাকে একদমই পেত্নী মতো লাগে না।
আপনি নিজেই তো রাহ্মস আর জিরাফের মতো লম্বা আমাকে একদম পেত্নী বলতে আসবেন না।
ফুপি: আরিফ তুই মোটেও আমার বউ মা কে পেত্নী বলবি না।
কি সুন্দর একটা মিষ্টি মেয়ে আর তুই কেমন করে পেত্নী বলিস।
আরিফ: তা তো দেখতেই পাচ্ছি তোমাদের কেমন মিষ্টি বউ মা।
আর এদিকে রিধির আম্মু মিতুকে নিয়ে প্রশংসা করতে শুনে রিধি তা মোটেও সহ্য হচ্ছে না।
তাই টেবিলে বসে নিজের ইচ্ছে মতো নাস্তা করতে শুরু করে।
রিপা: ভাবি তোমাকে নিয়ে আজজ আমাদের পাশের একটা পার্কে ঘুরতে যাবো একটু পর।
তুমি কিন্তু এখন রেডি হয়ে নিও।
মিতু: আচ্ছা ঠিক আছে।
রিপা: আর ভাইয়া তুমি কিন্তু আমাদেরকে নিয়ে যাবে।
আরিফ: আমি পারবো না তোদের নিয়ে কোথাও যেতে।
রিপা: প্লিজ ভাইয়া নিয়ে যাও না আমাদের।
ফুপি: আরিফ তুই যা না ওদের নিয়ে।
আরিফ: ফুপি আমি কিন্তু শুধু তোমার কথা রাখতে নিয়ে যাবো।
আর তবে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে যযেতে হবে।
রিপা: আচ্ছা ঠিক আছে।
আরিফ রেডি হয়ে গাড়ি বাহির করে।
আর মিতু,রিপা,রিধি রেডি হয়ে গাড়ির কাছে আসে।
গাড়ির কাছে এসে রিধি আগে আগে আরিফের পাশে গিয়ে বসে পরে।
রিপা: কি রে আপু তুই কেনো এখানে বসলি।
ভাবিকে যায়গা না দিয়ে তুই কেনো বসলি।
রিধি: কেনো এখানে বসলে কি কোনো প্রবলেম আছে।
মিতু: না না কোন প্রবলেম নেই রিধি তুমি বসো।
রিপা আমি তোমার সাথে পিছনে গিয়ে বসছি।
রিপা আর কিছু না বলে গাড়ির পিছনে গিয়ে বসে।
আর মিতু ও রিপা সাথে বসে পরে।
মিতু: (মনে মনে)শাকচুন্নি কোথাকার সারাক্ষণ শুধু আমার জামাই সাথে আঠার মতো লাইগা থাকে ইচ্ছে তো করে চাইনিজ কুড়াল দিয়া কিমা বানাইতে।
তারপর তা রেস্টুরেন্টে বিক্রি করে দিতে।
এগুলো বিড়বিড় করতে করতে ওরা পার্ক চলে আসে।
আসলে পার্ক কাছে থাকাতে আর বেশি সময় লাগে নাই।
সবাই মিলে পার্ক ভিতরে হাটতে থাকে।
আর পার্ক লেক থাকায় সবাই লেকের পাশে হাটতে থাকে।
রিপা: ভাইয়া দেখো না ঝালমুড়ি প্লিজ এনে দেও না।
আরিফ: পারবো না।আর এগুলো কি বাহিরের এগুলো খেতে হবে না।
রিপা: প্লিজ এনে দেও না ভাইয়া।
ভাবি তুমি বলো না একটু।
মিতু: রিপা এতো করে যখন বলছে এনে দেন না আপনি।
আরিফ: আচ্ছা যাচ্ছি।
রিপা: হুম বউ বলছে আর তো ঠিকই শুনলি।
আরিফ: বেশি কথা বলছ তুই।
রিধি কিছু বলছে না।
চুপ চাপ ওদের সাথে হাটছে আর রাগে ফুলছে।
আরিফ চলে যায় ঝালমুড়ি কিনতে আর তার পরই রিপা কল আসে তার জন্যে একটু দুরে গিয়ে কথা বলছে।
আর রিপা কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে পিছনে ফিরে দেখে মিতু পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে।
আর রিপা কিছু বললার আগে আরিফ গিয়ে পানিতে লাফ দিয়ে মিতুকে তুলে আনে।
চলবে.......
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com