ছয় মাসের বউ । পর্ব - ১৯
তাই মিতু বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে ফজরের নামাজ পড়ে নেয়।
নামাজ পড়ে রুম থেকে বাহিরে গিয়ে দেখে আরিফের আম্মু নামাজ পড়ে রান্না ঘরে যাচ্ছে।
মিতু: আসসালামু আলাইকুম মা।
আরিফের আম্মু: ওয়ালাইকুম সালাম।
কি রে মা আজ এতো তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেলো যে তোর।
তোর কি শরীর খারাপ নাকি রে মা।
মিতু: না মা আমি একদম ঠিক আছি।
আপনি শুধু শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা করছেন।
আরিফের আম্মু: শরীর খারাপ করলে কিন্তু বলবি।
আমাকে কিন্তু নিজের মায়ের মতো সব বলতে পারবি।
আর আমি শুধু আরিফের আম্মু না তোর ও আম্মু।
যখন যা প্রয়োজন হবে আর কোনো অসুবিধা হলে তুই কিন্তু আমাকে বলবি।
মিতু : আচ্ছা মা বলবো।
আর তুমি তো আমারই মা।
আচ্ছা মা এবার বলো তুমি কোথায় যাচ্ছ এই সকাল বেলা।
আরিফের আম্মু: আর কই যাবো বল তোর শ্বশুর নামাজ পড়ে রুম এসে রং চা খাবে তাই চা বানাতে যাচ্ছিলাম আর কি।
মিতু: মা এটা কিন্তু একদম ঠিক না। (মন খারাপ করে)
আরিফের আম্মু: কেনো রে মা কি হলো তোর আবার আর আমি বা কি করলাম আবার। (অবাক হয়ে)
মিতু : মা তুমি আমাকে নিজের বউ ভাবো নিজের মেয়ে এখনো ভাবো না।
আরিফের আম্মু: কি বলে মেয়ে আমি তো তোকে আমার নিজের ছেলের বউ না মেয়ে ভাবি।
মিতু: তবে কেনো তুমি বললে যে আমার শ্বশুরের জন্যে চা বানাতে যাচ্ছ।
নিজের ছেলের বউ না মনে করলে তো আমাকে বলতে তোর বাবার জন্যে চা বানাতে যাচ্ছিলাম। (মন খারাপ করে)
আরিফের আম্মু : আচ্ছা মা আমার ভুল হয়ে গেছে আজ থেকে আর বলবো না।
আচ্ছা এই যাই তোর বাবার জন্যে চা বানাতে, না হয় চা খোঁজা শুরু করে দিবে।
মিতু : মা তোমার মেয়ে থাকতে তোমার চা বানাতে হবে না আমি যাচ্ছি গিয়ে বাবার জন্যে চা বানিয়ে নিয়ে আসছি।
আর তোমার জন্য ও চা নিয়ে আসছি তুমি রুমে যাও।
আরিফের আম্মু: তোর কাজ করতে হবে না আমি যাচ্ছি।
মিতু: একদম এটা বললে হবে মা তুমি রুমে যাও আমি তোমার জন্য আর বাবা জন্য চা নিয়ে রুমে যাচ্ছি।
আরিফের আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি যাচ্ছি।
মিতু আরিফের আম্মু কে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে রান্না ঘরে চলে আসে আর সবার জন্য নিজের হাতে চা করে নিয়ে যায়।
চা নিয়ে আরিফের আব্বু ও আম্মু রুমে চলে আসে।
মিতু: মা ভিতরে আসবো।
আরিফের আব্বু: কি রে মা তোমার কি আমাদের রুমে আসতে পারমিশন লাগে না কি।
মিতু: না লাগে না তবুও চেয়ে নিলাম।
আরিফের আব্বু : আর তুমি কেনো চা বানাতে গেলে।
আরিফের আম্মু তুমি কেনো মেয়েটাকে এখন রান্না ঘরে যেতে দিলে?
আরিফের আম্মু : তোমার মেয়ে কি আর আমার কথা শুনে বলো।
আমি যে কতো বার করে বললাম আর কথা তো শুনেই নাই।
জোর করে নিজে চা বানাতে গেলো।
মিতু: বাবা আপনি মা কে বকা দিয়েন না,মায়ের কোন দোষ নেই।
আমি নিজেই জোর করে চা বানাতে গেছি।
আর আমি থাকতে মা আর রান্না ঘরে যাবে না।
আমি সব করবো,আর আমাকে সহযোগিতা করার জন্যে তো বুয়া আছে আর কোন সমস্যা হলে মায়ের কাছে যেনে নিবো।
আরিফের আব্বু : আচ্ছা মা,বুঝতে পারছি তবুও কদিন পরেই না হয় সব কাজ বুঝে নিতে।
মিতু: বাবা আমি তো সারাদিন বাসায় আছি তো মা কেনো করবে কাজ,আমি সব করতে পারবো।
আরিফের আব্বু: আচ্ছা মা। বুঝছি তুই শুনবি না আমার কথা।
আচ্ছা তুই যা ভালো বুঝিস।
মিতু: আচ্ছা বাবা,আমি এখন যাই।
আরিফের আম্মু : আরিফের আব্বু আসলেই মেয়েটা অনেক ভালো।
দুই দিনে মেয়েটা আমাদের সবাইকে নিজের করে নিয়েছে।
আরিফের আব্বু: তার জন্যে তো মিতুকে নিজের মেয়ে করে নিয়ে এলাম।
মিতু আরিফের আম্মু ও আব্বু রুম থেকে যাবার সময় দেখে আরিফ ঘুম থেকে উঠেছে কি না।
কিন্তু আরিফ তখনও ঘুমাচ্ছে।
তাই মিতু রান্না ঘরে গিয়ে নিজের জন্য কফি করে নিয়ে রুমে আসে।
এসে দেখে তখনও আরিফ ঘুমাচ্ছে।
মিতু রুমে ভিতরে এসে কফিটা বিছানার পাশে টেবিলের উপর রাখে আর একটু বারান্দায় গেলে।
মিতুর ফুল ভালো লাগে আর আরিফ ও ফুল পছন্দ করে তাই বারান্দায় অনেক ধরনের ফুল লাগিয়েছে।
তাই একটু দেখতে থাকে ফুল গুলো।
তারপর রুমে এসে বিছানার পাশে টেবিলের উপর রাখা কফি হাতে নিয়ে যেই কফির কাপে চুমুক দিতে যায় তখন দেখে কফি নেই।
মিতু: আমার কফি কে খেলো।
আমি তো একটু আগে রেখে গেলাম।
কে খেলো তবে আমার কফি।
যেই মিতু পাশে তারায় দেখে যে আরিফ বিছানায় নেই।
আরিফ বাথরুম থেকে বাহিরে আসছে।
মিতু: (রাগী ভাবে) আমার কফি কেনো আপনি খেলেন?
আরিফ: (অবাক হয়ে) তোমার কফি আমি আবার কখন খেলাম!
মিতু : কেনো এই যে বিছানার পাশে টেবিলের উপর রেখে বারান্দায় গেলাম আর এসে দেখি কফি শেষ।
আরিফ : ও আচ্ছা ওটা তোমার ছিলো!
আমি ভাবলাম আমার তাই আমি খেয়ে ফেলছি।
মিতু: খাবার আগে জিজ্ঞেস করে নিতে পারলেন না।
আরিফ : খেয়েছি তো কি হইছে তুমি আবার বানিয়ে নিলেই পারো।
মিতু: আমার কফি খেলেন আবার আমাকেই কথা শোনাচ্ছেন আপনি।
আসলেই আপনি রাহ্মস একটা।
আরিফ : কি বললা তুমি আবার।(রাগী ভাবে)
মিতু: এই রে আবার রাহ্মস বলে ফেলছি( মনে মনে)
কই কিছু না তো।
বলেই দিলাম দৌড় রান্না ঘরে।
ভাবারে ভাবা কি ছেলেরে ভাবা।
আজ ধরতে পারলে পুরা খেয়ে নিতো আমাকে।
রান্নাঘরে এসে মিতু সবার জন্য নাস্তা তৈরি করে নিজের হাতে।
আজ আর মিতু আরিফের আম্মু কে কোনো কাজ করতে দেয় নাই।
নিজেই সব কাজ শেষ করে নিলো আর সবাইকে নিজেই নাস্তা নিয়ে টেবিলে সাজিয়ে দিলো।
আর আরিফ ও অফিসে চলে যাবে তাই রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে।
আরিফের আম্মু : আরিফ আজ তুই দুপুরে বাসায় চলে আসবি।
আরিফ: কেনো আম্মু?
আরিফের আম্মু : আজ বিকেলে তুই মিতুকে নিয়ে বাহিরে ঘুরে আসবি।
আমি যাতে কোনো অজুহাত না শুনি তোর।
আরিফ: আচ্ছা আম্মু।
আরিফ নাস্তা করে অফিসে চলে যায়।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com