ভালোবাসার অনুভূতি || পর্বঃ ৯
সাহিদা বেগমঃ হুম কি হইছে মা!
অর্নাঃ আমি বাসায় যেতে চাই। এমনিতেই বাসার সবাই চিন্তা করছে আমার জন্য। দুইদিন হয়ে গেলো এখন পর্যন্ত আমি কোথায় আছি কেউ জানেনা। যদি না যাই আব্বু ভেঙে পরবেন অনেক।
সাহিদা বেগমঃ (অর্নার চলে যাবার কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গেলো।কিন্তু অর্নাকে এ বাড়িতে রাখবে কিভাবে।কোন পরিচয়ে! ভেবেই সাহিদা বেগমের কান্না পাচ্ছে অনেক। এই দুইদিনেই মেয়েটাকে অনেক আপন ভেবেছেন।)
কয়েকদিন পরে গেলে হয়না? অর্না মা(কথা আটকে আসছিল)
অর্নাঃ উহু
(নিচের দিকে তাকিয়ে,,,কারন ওর সাহস নেই আর সাহিদা বেগমের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার।
কিভাবে থাকবো!! এ বাড়িতে,,, কিছুদিন পরে গেলে আরও কষ্ট বাড়বে। তারাথেকে আগে যাওয়াই ভালো। শুধু শুধু মায়া বাড়ানোর দরকার কি!!~~মনে মনে)
সাহিদা বেগমঃ কি হলো! কথা বল,,,,,,,।
অর্নাঃ আমার যেতে হবে( কথাগুলো আটকে আসছিল)
~এতক্ষন আফজাল সাহেব সোফায় বসে পেপার পড়ছিলেন। সাহিদা বেগমের ও অর্নার কথাগুলো শুনছিলেন।
তিনিও ভাষা হারিয়ে ফেলছেন,,,কি বলবেন ভুঝতে পারছেন।
এই দুইদিনের মধ্যেই খুব মায়ায় জরিয়েছেন মেয়েটার।
তিনিতো আরাভকে নিয়েও আকাশ-পাতাল ভেবে রেখেছেন।কিন্তু ছেলেটা তো আর মানুষ হবেনা।
তাই চুপচাপ ভাবে তাকিয়ে কথা শুনছিলেন।
সাহিদা বেগমঃ আচ্ছা তোর ইচ্ছা। যা ভালো বুঝবি তাইতো করবি। আমরা কে হই! আমাদের কথা শুনবি কেন!
অর্নাঃ( কিছু বললো না)
সাহিদা বেগমঃ যাবি কিভাবে! কিছুইতো চিনোনা। বাসার ঠিকানা ঠিকভাবে জানোতো!!?
অর্নাঃ কিছুক্ষণ চুপ থেকে~একটা টেক্সি নিয়ে কোনোরকম চলে যাবো সমস্যা হবেনা কোনো।
সাহিদা বেগমঃ আরাভকে বলছি, ও বাসা পর্যন্ত পৌছে দিবেনে।
অর্নাঃ ((এই একজনই তো সমস্যা ~তাকে দেখলেইতো একটা অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি হয়।))
না আম্মু তার দরকার নাই আমি একাই যাবো।
সাহিদা বেগমঃ দরকার নাই!! নাকি ওর সাথে যেতে চাচ্ছিস না।
আফজাল সাহেবঃ আহা! অর্পার মা তুমি এমন জেরা করছো কেন মেয়েটাকে!
ওর জরুরিভাবে যেতে হলে যাবে(একটু মন খারাপ করে)।
জানোইতো ছেলেটা কিরকম, আজকে অফিস অফ এখন যদি ঘুম থেকে উঠাই তাহলে তুমুলকান্ড বাধাবে।
তার থেকে বরং আমি নিয়ে যাই।
সাহিদা বেগমঃ হুহ! এত বুদ্ধি থাকে কই শুনি!(রেগে) আজকে ছুটির দিন যখন মনেই আছে তাহলে করিমের (ড্রাইভার) যে ছুটির দিন তাও মনে থাকার কথা।
তুমি গাড়ি চালাতে জানো!(রেগে)
~~~আসলে সাহিদা বেগম ভাবছিলেন যদি আরাভ অর্নার কাছে থাকে। তাহলে অর্নাকে যেতে বাধা দিবে আরাভ।
তাই অর্নার সাথে তিনি আরাভকে পাঠাতে চাচ্ছেন।
আফজাল সাহেবঃ আচ্ছা আরাভকে ডেকে আনো।
(কিছু একটা ভেবে)সাথে আমিও যাই,,,বুঝতেই তো পারছো মেয়ে মানুষ দুইদিন বাসার বাইরে ছিলো অন্য কথা হতেই পারে।আমি গেলে বুঝিয়ে বলতে পারবো। কিন্তু অর্নার সাথে যদি একজন ছেলে যায় তাহলে নানান ধরনের কথা হতে পারে।
সাহিদা বেগমঃ কিছুক্ষন চুপ থেকে,,,,,, আচ্ছা।
আমি আরাভকে ডাকছি তাহলে।
~~ততক্ষনে আরাভ নিচে আসলো,,,অর্পা এখনও ঘুমে বিভোর।
অর্না যখন আরাভের রুমের সামনে যায়, তার আগেই আরাভের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু রুমের কাছে কারো ছায়া দেখে আরাভও চুপচাপ শুয়ে থাকে। ওইটা যে অর্না হবে তা আরাভ ভাবতেই পারেনি।
অর্না যখন হেসে দিলো তখনই আরাভ একটু হালকাভাবে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অর্না। আরাভ তখন অবাকের চরম পর্যায়ে,,, কিন্তু তবুও চুপচাপ ছিলো।
কিন্তু অর্না তখনই চলে যায়। আরাভ যখন শুনতে পেল নিচে সাহিদা বেগম কোনো একটা বিষয় নিয়ে উত্তেজিত হচ্ছে তখনই নিচে নামলো।
আরাভঃ কার সাথে কোথায় যেতে হবে আমাকে? আম্মু!
সাহিদা বেগমঃ অর্নার সাথে। ও বাড়িতে চলে যেতে চাচ্ছে।
তোর আব্বুও যাবে সাথে। কিন্তু আজকে করিমের ছুটির দিন। তাই তুই যদি সাথে যাও একটু ভালো হয়। মেয়েটা একাএকা কোথায় না কোথায় হারিয়ে যায় ঠিক নেই। বাংলাদেশের যে অবস্থা,,,!
আরাভঃ অর্নার চলে যাওয়ার কথা শুনে আরাভের কেমন একটা কষ্ট অনুভব হলো। কিছুক্ষন স্থির থেকে অর্নার দিকে তাকালো। তাকিয়ে দেখে অর্না নিচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
~~আচ্ছা! নিয়ে যাবো রেডি হয়ে থাকতে বলো। আমি গাড়ির চাবি নিয়ে আসছি ((আরাভ সাহিদা বেগমকে বললো ~অর্নার দিকে তাকিয়ে))
~~অর্না চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়েই রইলো। হয়তো আরাভের দিকে তাকানোর সাহস নাই ওর।
~~সাহিদা বেগম ও আফজাল সাহেব আরাভের কথাবলার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা খেয়াল করলেন কিন্তু কিছুই বললোনা।
!
!
!
~আরাভ গাড়ি চালাচ্ছে, অর্না পাশে বসছে, আফজাল সাহেব পিছনে।
~আরাভ কোনো কথা বলেনি এখন পর্যন্ত।
অর্না গাড়িতে বসার পরে কোনোরকমে সীট বেল্ট লাগিয়ে আবার ড্রাইভিং করা শুরু করছে।
~~বাইরের যানজট দেখছে অর্না আর বাতাসে চুলগুলো বারবার উড়ে আরাভের মুখে পড়ছে।
আর আরাভ!!! ও বিরক্ত হচ্ছে না একটুও। বরং অর্নার চুলগুলো মুখে পরায় একটা অদ্ভুত অনুভূতি পাচ্ছে।কিন্তু অর্না নিজের চুলের জন্য নিজেই বিরক্ত হয়ে চুলগুলোকে হাত-খোপা করে বেধে নিলো।
তারপর আরাভের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখে আরাভ মুখটা লাল করে তাকিয়ে আছে। মনে হয় ওর চুল বাধাতে আরাভ খুশি হয়নি😅।
!
!পিছনে বসে আফজাল সাহেব একবার ওদের দিকে তাকিয়েছিলেন কিন্তু ওদের এভাবে চুল উড়াউড়ি দেখে উনি আর মনের ভুলেও তাকাননি। তিনিও অর্নার মতে বাইরের পরিবেশ দেখা শুরু করছেন। আর সাহিদা বেগম কেন আরাভকে অর্নার সাথে আসতে বলছিলেন। তা বুঝতে পেরে নিজে নিজেই হাসছেন।
আরাভঃ কোথায় যেতে হবে? জায়গার নামতো জানিনা(অর্নার দিকে তাকিয়ে)
অর্নাঃ যে রাস্তা থেকে আমাকে নিয়ে আসছিলেন।
আরাভঃ রাস্তায় যাবা!(হেসে)
আমি রাস্তার কথা জানতে চাইনি। বাসার ঠিকানা বলো।
অর্নাঃ মিরপুর ৮ বাসার নাম চৌধুরি ম্যানশন। কিন্তু কিভাবে যায় তাতো আমি জানিনা(মন খারাপ করে)
আরাভঃ আমরা তোমার সাথে থাকার কারন তোমাকে বাসায় ঠিকভাবে পৌছে দেয়া। তাইতো??
তাহলে তুমি রাস্তা চিনো বা না চিনো তা নিয়ে তোমার ভাবা লাগবেনা।
অর্নাঃ হু
~~~~~~~~~~~
আফরোজা বেগমঃ ওইইই রহিমা(কাজের মেয়ে,,, এতদিন কোনো কাজের মেয়ে রাখেনি অর্নার অনুপস্থিতিতে কাজের মেয়ে রাখছেন আফরোজা বেগম। ) এতক্ষন ধরে দরজায় ঠোকা দিয়ে যাচ্ছে। দরজা খুলতে এত সময় লাগে তোর (রেগে) দেখতো আজকের ছুটির দিনে কোম এমন কুটুম আসছে বাড়িতে। যে এত ঠোকাঠুকি লাগাইছে দড়জায়।
রহিমাঃ আইচ্ছা খালা
আফরোজা বেগমঃ কিরে কে আসছে? এত সকালে,,,!
রহিমাঃ একটা মাইয়ায়। লগে আর একজন আছে(আফজাল সাহেব)
~~অর্না চলে আসাতে আরাভের ভিতর একটা শুন্যতা কাজ করছিল। এটা শুধুই মায়া নাকি ভালোলাগা আরাভ নিজেই জানেনা।
অর্না গাড়ি থেকে নামার সময় আরাভ একবারও ওর দিকে তাকায়নি। মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত ছিল সে।
অর্নাও কিছু বলেনি,,, একবার আরাভের দিকে তাকিয়ে ওর গন্তব্যে চলে গেছে। আফজাল সাহেবও ছিলো অর্নার সাথে।
|
|
|
আফরোজা বেগম তাড়াতাড়ি আসলেন। আসার পরে তার চোখতো উপরে উঠার অবস্থা।
আফজাল সাহেবের সাথে ভালোভাবে কথা তো বলেইনি বরং তার কথাও শুনছেন না উল্টো অপমান করেই যাচ্ছে।
~~কেমন মেয়েরে তুই? (অর্নাকে উদ্দেশ্য করে)সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় থেকে এখন আমাদের কাছে আসছো পুনরায় মুখে চুনকালি দিতে।
একবারে যাইতে পারলিনা তুই? তখন সবাইরে বলতে পারতাম অন্তত ,,, মাইয়া নতুন কুটুম বানিয়ে চলে গেছে। এখন আসছো কেন আবার(রেগে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে) এখন কি বলবো এলাকার লোকজনরে।
বলমু যে তুই যে পোলার লগে ছিলি ওই পোলায় দুইরাত রাখার পরে,,, ওই পোলার বাপে তোরে ফেরত দিয়ে গেছে।
আচ্ছা একটা সত্যি কথা ক তো তুই কয়ডার লগে আকাম কইরা আইছো বাসায়।
!
!
আফজাল সাহেব ঃ কি বলছেন! আপনি নিজেও একজন মেয়ে মানুষ ,, তাহলে অন্য একজন মেয়েকে এভাবে বলতে আপনার লজ্জা লাগছেনা??(রেগে)
আপনি আপনার নিজের মেয়ের সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন? জানি , হয়তো অর্না বাচ্চা মেয়ে কোনো একটা ভুল করছে। তাই বলে নিজের মেয়ের সাথে কেউ এমন ব্যবহার করে??
খুবতো বড় কথা বলছিলেন এতক্ষন,, তাহলে এই মেয়েটা বাসা থেকে কেন গেছে, মেয়েটা বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে একবারো কোনো খোঁজ নিছিলেন(রেগে)কোন দায়িত্বটি পালন করছেন ওর মা হয়ে।
দুইদিন মেয়েটি আমাদের তত্ত্বাবধানে ছিলো,, একবারও তো শুনলাম না ওর মায়ের কথা, ভাইবোনের কথা, ওর বাবার কথা,, যারা ওর আপনজন ছিলেন।
আপনারা যা ভাবছেন সম্পুর্নই ভুল। ও একটা লক্ষী সাদাসিধে মেয়ে।
কিন্তু একটা কথা ভেবেই লজ্জা লাগছে ওর মতো মেয়ের মা আপনি কিভাবে হন।পুরাই আবর্জনায় পরিপূর্ণ মহিলা আপনি।
আপনি নিজেও যেরকম ধরনের মানুষ অন্যকেও তেমন ভাবতে পারেন এটাই স্বাভাবিক।
~~ আফরোজা বেগমের চেচামেচি শুনে আশরাফ সাহেব আসলেন। তিনি আফজাল সাহেবের কথাগুলোও শুনতে পায়।কিন্তু তিনি কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু বাইরের কেউ তার বউকে অপমান করবে তা মেনে নিতে পারেননি।তার বউ যত অন্যায়ই করুক না কেন। তার বউকে তিনি শাসন করবেন অন্য কেউ কেন কথা শুনাবেন। তাই আশরাফ সাহেবও মুখ খুললেন।
আশরাফ সাহেবঃ এটা ভদ্র লোকের বাড়ি। এখানে ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলবেন।
আফজাল সাহেবঃ কিসের জন্য ভদ্রতা রাখা যাচ্ছেনা তা অবশ্যই আপনার অজানা নয়।
আপনার মিসেস. ,,,,, আপনার মেয়ে অর্নাকে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে । তাতে অবশ্যই অর্নার পাশে থাকা মানুষটার জবাব দেয়া উচিত কথার।
আশরাফ সাহেবঃ আমার বউ আর আমার মেয়ের ব্যাপার আমিই ঠিক করবো। তাতে কোনো বাইরের মানুষের নাক না গলানোটাই ভালো মনে করি।
আর আফরোজা তো খারাপ কিছুই বলেনি।
(অর্নার কাছে যেয়ে~~)
তুই এমন করলি কেন মা! কি এমন অভাব ছিলো আমাদের! আমি এটা ভাবতেও পারিনি তুইও তোর মা**(আশরাফ সাহেব থেমে গেলেন বাকি কথাটুকু মুখেই থেকে গেলো)
~অর্না এতক্ষন চুপচাপ শুনছিলো আর কান্না করছিলো।
অর্নাঃ বিশ্বাস করো আব্বু,, আমি কিছুই করিনি(কান্না করে)
তোমরা যা ভাবছো সবটাই ভুল।
আফরোজা বেগমঃ দেখছো কি পাজি মেয়ে।
তুমি কথাটা সম্পুর্ন না বলে থেমে গেলে কেন। এত মহান সাজতে হবেনা। যে মেয়ে কারো কথা ভাবেনা তার প্রতি এত উদারতা দেখানো লাগবেনা (রেগে আশরাফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে)
যেমন মা তেমন মেয়েতো হবেই। এদেরতো ঘরে পোষেনা,, তাই সবার মুখে চুনকালি দিয়ে চলে যায়।
আশরাফ সাহেবঃ চুপ করবে তুমি(রেগে জোরে চিৎকার করে)
~অর্না পুরাই হতভম্ব। সাথে আফজাল সাহেবেরও বিষ্ময়ের ঘোর কাটেনা।
আফরোজা বেগমঃ কিসের চুপ করবো আমি!(রেগে চেচিয়ে)
এই কলঙ্কিনীর মা আমি নই(অর্নার দিকে তাকিয়ে)
তোর মা তোর মতোই তোর বাপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে গেছিলো অন্য বেটাছেলের হাত ধরে।
তুইতো তোর কলঙ্কিনী মায়ের মতোই কলঙ্কিনী হইলি(উপহাস করে)
~অর্নার মাথায় আকাশ ভেঙে পরার অবস্থা। কি শুনছে ও!! আফরোজা বেগম ওর মা নয়!ওর মা অন্য একজন!!
তাইলে কি এমন দোষ করছিলো অর্না!ওরে রেখে যে ওর মা চলে গেলো। যাওয়ার আগে গলা টিপে মেরে ফেললেইতো ভালো হতো৷ তাহলে আজ হয়তো কোনো কথা শুনতে হইতোনা(এগুলো ভাবছে আর চোখ থেকে অনবরত পানি ঝরাচ্ছে অর্না)
আফজাল সাহেবঃ চুপ করতে বলছিনা তোমাকে!!(রেগে)
আফরোজা বেগমঃ আজকে আমি চুপ থাকবো কেন! এই মেয়ে ঘর থেকে না যাওয়া পর্যন্ত চুপ কেন থাকবো আমি!!
হয়তো ও থাকবে,,,নয়তো আমি থাকবো।
যদি ও ঘরে থাকে তাহলে আমি রিমন-রিয়ারে নিয়ে চলে যাবো আজই😡।
অর্না কেদেই যাচ্ছে কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
আশরাফ সাহেব কি বলবেন বুঝতে পারছেননা।
~~আরাভ গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলো, অর্নাকে বাসায় দিয়ে যেতে এত সময় লাগার কথা না। কিন্তু আফজাল সাহেবের কোনো দেখা না পেয়ে আরাভও বাড়ির উদ্দেশ্যে আসলো,,,আর আফরোজা বেগমের কথাগুলো শুনলো।
~আফজাল সাহেব ঠায় দাড়িয়ে রইলেন। কি বলবেন তিনি,,,অর্নাতো তার কিছু হয়না। ওর রক্তের সম্পর্ক যার সাথে সেই বাবাই ওর বিরুদ্ধে কথা বলছে তাহলে আফজাল সাহেব তো সামান্যকিছু।
তবুও তিনি একটু মুখ খুললেন,,,
আফজাল সাহেবঃআমার কথাটা একটু শুনবেন? তারপর আপনাদের যা ইচ্ছা তাই বলবেন। আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।
আফরোজা বেগমঃ এখন নিজের ছেলের দোষ ঢাকার জন্য বানিয়ে বানিয়ে কথা বলবেন আর আমরা বিশ্বাস করবো। ভাবলেন কিভাবে?
অর্নার সাথে যে আপনার ছেলে রাত কাটায়নি এমন কোনো প্রমান আছে। কি জানি আজকালকার অবস্থা ভালোনা। আপনি যে কিছু করেননি তারই বা কি প্রমান আছে।
আচ্ছা মানছি সবকিছুই আমাদের ভুল। তাহলে বাসায় আসলিনা কেন? শপিংমলে ধেইধেই করে নাচতে নাচতে শপিং করতে ঠিক তো যেতে পারলি। বুঝছিলি কি,, আমরা কিছুই জানতে পারবোনা?
সব দেখছি আমরা(রেগে)
অর্নাঃ বিশ্বাস করো আব্বু আমি কিছু করিনি৷ তোমরা ভুল ভাবছো।(আশরাফ সাহেবের কাছে যেয়ে)কথা বলছোনা কেন? কিছুতো বলো,,,আশরাফ সাহেবের পায়ে পরে কান্না করছে অর্না।
আশরাফ সাহেবঃ আমার কিছুই বলার নাই৷ শুধু একটাই কথা আমার বিশ্বাসটা না ভাঙলেও পারতি।
কিন্তু তুই কি করলি ছিঃ
তার থেকে বরং তুই থাক বাসায় আমরা চলে যাই।
কারন তোকে তো আর তারাতে পারবোনা আমি।
~এতক্ষন আরাভ চুপ ছিলো,,কিন্তু এখন আর থাকতে পারলোনা।
আরাভঃ মুখ সামলে কথা বলুন।নিজের সম্মান নিজে না রাখতে জানলে অন্যের কিছু করার থাকেনা।
আমার বাবা অর্নার বাবার মতো। আর আপনি আমাকে কি বলছেন অর্নার সাথে রাত কাটাইছি(রেগে)। না জেনে কাউকে দোষারোপ করতে লজ্জা করেনা? আর আমি কাকেই বা বলছি কথাগুলো। আপনার লজ্জা থাকলে তো অন্যকে সম্মান দিয়ে কথাই বলতেন।
আর আপনাকেও বলছি,,, কেমন বাবা আপনি?এই নিরীহ মেয়েটা কেন বাড়ি থেকে চলে গেছিলো তা একবারো জানতে চাইছিলেন? কখনো জানতে চাইছিলেন আপনার মেয়েটা ভালো আছে কিনা? আপনি তো জানতেন অর্না অসহায়। এমন ডেঞ্জারাস মহিলার কাছে ও সুখে আছে কিনা, একবারও জানতে চাইছিলেন আপনি?? (রেগে~ একটু চেচিয়ে কথাগুলো বললো আরাভ আশরাফ সাহেবকে উদ্দেশ্যে করে)
আশরাফ সাহেবঃ তোমার সাহস তো কম নয় ~একটা বাইরের ছেলে হয়ে নাক গলাচ্ছো। (ওনি রাগে এতটাই নিচে নেমে গেছিলেন,,আরাভের শেষ কথাগুলো ওনি শুনেননি ভালোভাবে। কারন আরাভের প্রতিটি কথায় অর্নার নাম জরিয়ে ছিলো। যা এই মুহুর্তে আশরাফ সাহেবের কাছে বিষের মতো লাগছে। কারন ওইদিন শপিংমলের সামনে গাড়িতে যখন অর্নাকে দেখতে পান আরাভের সাথে। তখন থেকেই আফরোজা বেগম তাকে বানিয়ে বানিয়ে অনেককিছু বলেই যাচ্ছেম যার জন্য মেয়ের প্রতি ভালোবাসা না এসে ঘৃনা চলে আসছে)
দয়া করে তুমি এবং তোমার বাবা আসতে পারো। আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার আমরাই মিটিয়ে নিচ্ছি।
অর্না তুমিই ঠিক করো তুমি থাকবে নাকি আমরা থাকবো বাসায়(অর্নার দিকে তাকিয়ে)
অর্না ঃ আব্বুউউ,,,,কথাটাতো শুনবে(কান্না করে)
আশরাফ সাহেবঃ কি বলছি আমি কানে যাচ্ছেনা কথা? (চেচিয়ে)
আফজাল সাহেবঃ অনেক বলছেন মি.ও মিসেস.
ভদ্রতার খাতিরে চুপ ছিলাম। কিন্তু আপনারা তার যোগ্য নয়।
অর্না থাকছেনা এ বাড়িতে।
আমার ছেলের নামে যেহেতু ওর নাম জরিয়েই ফেলছেন। তাই আমার ছেলে আরাভের সাথেই অর্নার বিয়ে হবে। কিন্তু ওর সাথে আপনাদের সম্পর্কের শেষ দিন আজকেই।
অর্নার জীবনে আপনাদের কোনো অস্তিত্বই ছিলোনা থাকবেনা আজকে থেকে।
চল অর্না মা।
~আরাভ বোকাবনে গেলো।আরাভ কিছু বলবে তার আগেই আফজাল সাহেব আবারও বললেন,,,,
আমি কি বলছি শুনতে পাইছো আরাভ!!আমার কথার যেনো একটুও নড়চড় না হয়(আরাভের দিকে তাকিয়ে)
~অর্না স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ও খুসি হবে! না কি মন খারাপ করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা।
এ বাড়িতে নাকি কখনোই আসতে পারবেনা! অর্নাতো এটাই চাচ্ছিলো এ বাড়িতে না থাকতে। কিন্তু আরাভ কি মেনে নিবে অর্নাকে। আরাভতো সহ্যই করতে পারেনা।
আশরাফ সাহেব কিছু বলতে চাইলেন তার আগেই আফরোজা বেগম থামিয়ে দিলেন তাকে।
আফজাল সাহেবও আর এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে আরাভ ও অর্নাকে নিয়ে চলে আসলেন।
আরাভ এখনো বিশ্বাস করতে পারছেননা আনহার স্থানে ও অন্য কাউকে বসাবে।কিন্তু যা হচ্ছে তা কি সত্যিই নাকি সবটাই কল্পনা।
~
অর্না শেষ বারের মতো ওর বাবার দিকে তাকালেন কিন্তু কিছুই বললো না।
আশরাফ সাহেবও মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
চলবে..........
#বানান ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন❤
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com