বসন্তের ছোঁয়া | পর্ব -১৪
,
রাজ- ( ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে) হুসসস No Sound Please, I need you and your love Understand .( নেশা ধরা কন্ঠে)
চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। মাথা নিচু করে সোফায় বসে বসে নখ কামড়াচ্ছে সারা।
রেহেনা- গুড মর্নিং সারা।
সারা- চুপ।
রেহেনা- ( হালকা ধাক্কা দিয়ে) সারা কি হয়েছে তোমার??
,
সারা- ওহহ আপু তুমি। আমার কি হবে কই না তো।
,
রেহেনা- তাহলে এইভাবে মাথা নিচু করে বসে বসে নখ কামড়াচ্ছ কেন??
,
সারা- ( জোর করে হাসার চেষ্টা করে) আসলে আপু এটা আমার অভ্যাস। ছোট বেলা থেকেই এরকম করি।
,
রেহেনা- ওহহ আচ্ছা বুঝছি। তা সারা রাতে ঘুম কেমন হলো?? ( মিটিমিটি হেসে)
,
সারা- কেমন হবে মানে অনেক ভালো।
,
রেহেনা- ভালো হলেই ভালো যাকগে বাদ দাও আজকে না আমার অফিসে নতুন বস আসবে তাই দ্রুত যেতে হবে। আর বসকে হাই জানাতে হবে সো আমি পড়ে না হয় তোমার সাথে গল্প করবো।
,
সারা- হুম।
রাজ ঘুম থেকে জেগে বুঝতে পারলো শরীরে কিছু নেই। পাশে থাকা টাওয়েল টা শরীরে পেঁচিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে নিচে দাঁড়ালো। শরীরের অনেক জায়গায় ধরেছে বুঝতে আর বাকি রইলো না। কাল রাতে কি ঘটেছে।
,
রাহুল- গুড মর্নিং ভাবি।
,
সারা- মর্নিং।
,
রাহুল- মন খারাপ??
,
সারা- জি না।
,
রাহুল- ওহ্হ ( কালকে সফট ড্রিংকসের জায়গায় ওয়াইন টা রাখা ঠিক হয়নি। বেচারি একেবারে চুপ হয়ে গেছে। হাসি খুশি না থাকলে ভাবি কে একদম ভালো লাগে না)
,
রাইমা- গুড মর্নিং ভাবি( চোখ ডলতে ডলতে)
,
সারা- মর্নিং।
,
রাহুল- গুড মর্নিং ভাবি ( ব্যাঙ্গ করে)
,
রাইমা- তোমার কি আমার সাথে না লাগলে ভালো লাগে না??
,
রাহুল- না লাগে না।
,
রাইমা- অসহ্য।
,
রাহুল- কি বললি???
,
রাইমা- না মানে বললাম অসহ্য গরম পড়েছে ( ভেংচি কেটে)
,
রাহুল- অসভ্য মেয়ে।
,
রাইমা- আর ওনি ধোঁয়া তুলসীপাতা।
,
,
রাজ- সারা সারা কোথায় তুমি??
,
রাজের ফুপি- সারাকে কেন খুঁজছিস??
,
রাজ- ফুপি তুমি দেখেছো ওকে?? রাজ- মাত্রই তো রুমে গেলো দেখতো। রাজ বুঝতে পেরেছে সারা কোথায় চুপিচুপি ছাঁদে এসে পেছনে দাঁড়ালো। সিল্কী চুলগুলো খোলা বাতাসে উড়ছে নরমাল ড্রেস পড়ে দাঁড়িয়ে আছে সারা।
,
সারা- কিছু বলবে??
,
রাজ- কাল রাতে??
,
সারা- যা ভাবছো সেটাই সত্যি। অনেক চেষ্টা করেছি তোমার থেকে নিজেকে সরাতে বাট পারিনি। আই এম সো স্যরি। যদি ভেবে থাকো দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছি তাহলে ভুল। এর চাইতে বেশি কিছু বলতে চাইছি না আমি।
,
রাজ- ওহ্ শিট ( দেওয়ালে ঘুষি মেরে)
,
সারা- নিজের ক্ষতি করবে না এটা আমার রিকুয়েষ্ট।
,
রাজ কিছু না বলে না খেয়ে চলে যায় ভার্সিটি সারা যায়নি আজকে।
,
,
রেহেনা কার থেকে নামতেই ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলেই ধরে ফেলে একটা ছেলে।
,
রেহেনা- আল্লাহ গো বেঁচে গেলাম ( চোখ বন্ধ করে)
,
ছেলেটি – ( গম্ভীর ফেইস নিয়ে ) এই যে মিস চাশমিস দেখে চলতে পারেন না হ্যা।
,
রেহেনা- হোয়াট!! সাহস কি করে হয় আমায় চাশমিস বলার।
,
ছেলেটি – নেক্সট টাইম দেখে শুনে চলবেন কেমন ( তুড়ি বাজিয়ে) মনে থাকে যেন।
,
রেহেনা- এত বড় সাহস আমায় চাশ মিস বলা হ্যা বেয়াদব ছেলে। তুই তো আস্ত একটা ডেভিল রাক্ষস শয়তান ছেলে। আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম কোনো দিন বউ পাবি না। নির্ঘাত নতুন বস আসবে নয়তো দেখিয়ে দিতাম আমি কে।
,
মাটি- রেহেনা এত লেট হলো কেন তোমার আসতে??
,
রেহেনা- একটা বেয়াদব ছেলের জন্য।
আমায় বলে চাশ মিস কত বড় সাহস মন চাইছিল। ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিতে। আচ্ছা ওসব কথা বাদ স্যার কখন আসবে???
,
মাটি – আসবে না এসে গেছে। সবাই হাই হ্যালো বলেছে বাট তুমি ই মিসিং।
,
রেহেনা- কি বলছো স্যার এসে গেছে ওহ মাই গড আচ্ছা এখন কি করবো আমি??
,
মাটি – কি আবার করবে যাও হাই হ্যালো বলে আসো।
,
রেহেনা- ওকে থ্যাংক ইউ গো।
,
মাটি – হুম ওয়েলকাম।
,
রেহেনা- মে আই কাম ইন স্যার??
,
আফজাল – ইয়েস।
,
রেহেনা- আ,,পনি??
,
আফজাল – ও হ্যালো আপনি কি বলছেন শুনি। আমি আপনার বস সো অভিনন্দন জানান।( কলম ঘোরাতে ঘোরাতে)
,
রেহেনা- ( তারমানে এই বেয়াদব ছেলেটা নতুন বস আস্ত রাক্ষস একটা দেখো আবার বলছে অভিনন্দন জানাতে। মন তো চাইছে প্রতিশোধ টা নিয়ে নিতে এখনই) না মানে স্যার কংগ্রেটস।
,
আফজাল – আপনার আসতে এত লেট হলো কেন??
,
রেহেনা- স্যরি স্যার আর কখনো এমন হবে না।,
,
আফজাল – এটা কি আপনার শ্বশুর বাড়ি হ্যা যে যখন খুশি তখন আসবেন। টাইম মেন্টেন করা শিখুন। কালকে থেকে যদি এক সেকেন্ড ও লেট হয় তাহলে আমি আপনাকে অফিসে এলাউ করবো না। ক্লিয়ার মিস চাশ মিস ( রাগী গলায়)
,
রেহেনা- ইয়েস স্যার ( কাঁপা কাঁপা সুরে)
,
মাটি – রেহেনা স্যার কি বললো??
,
রেহেনা- কিছু না ( বেয়াদব ছেলে তোর কাছ থেকে আমার টাইম মেন্টেন করা শিখতে হবে হ্যা কোন খানের রাজপুত্র তুই। রাক্ষসটার কথার মানে মনে হচ্ছে অফিস টা ওনার। মনে হচ্ছে যেন আমি পেটের দায়ে প্রাইভেট কোম্পানি তে চাকরি করতে এসেছি শয়তান ছেলে একটা। আবার বলে কিনা চাশ মিস)
,
আফজাল- মিস রেহেনা আপনি আমায় চিনেন না। আমায় রাক্ষস আর বেয়াদব বলা হাড়ে হাড়ে টের পাবেন। আপনাকে সারাক্ষণ শুধু খাটাবো নয়তো আমার নামও আফজাল হোসেন না।( স্মিত হেসে)
,
,
রাতে
সারা- এতো রোমান্স পারো তুমি( রাজের কানে কানে)
,
রাজ- হোয়াট!! এ্যা।
,
সারা- এ্যা নয় হ্যা গো ( মিটিমিটি হেসে)
,
রাজ- তোমার সাথে কথা বলতে আমার একদম ভালো লাগছে না সো যাও এখান থেকে।
,
সারা এক লাফ দিয়ে রাজের কোলে বসে বসে ভয়ানক একটা মুভি দেখছে। রাজ হাসবে না কাঁদবে ওর দুষ্টুমি দেখে। মুভি দেখা অফ করে খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে ইচ্ছা মতো নিজের গাল লাগালো।
,
সারা- টুনটুনির আব্বু যেদিন আমি চলে যাবো অনেক দূরে সেদিন ঐ বক্স টা তুমি খোল কেমন তার আগে কিন্ত খুলবে না।
,
রাজ- সারা প্লিজ যাও তো এখান থেকে ভালো লাগছে না আমার।
,
সারা- কেন গো ( কানের লতিতে হাত ঘোরাতে ঘোরাতে)
,
রাজ- চুপ।
,
সারা- আই লাভ ইউ টুনটুনির আব্বু। আচ্ছা টুনটুনির আব্বু আমাদের টুনটুনি কবে আসবে বলো না গো।
,
রাজ- ( মুখের কাছে মুখ নিয়ে) টুনটুনিকে আনতে চাইছো বুঝি।
,
সারা- ( দূরে সরে গিয়ে) না মানে এমনি আরকি।
,
রাজ- ( ভাগে পেয়েছি তোমায় দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা)
,
সারা- আমি বরং যাই টুনটুনির আব্বু।
,
রাজ- এমা তোমার টুনটুনি কে আনবে না।
,
সারা- না আমার দরকার নেই।
,
সারা উঠতে নিলেই একটান দিয়ে বসিয়ে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে রাজ। মুখের কাছে মুখ নিতেই দূরে সরে যায় সে। আবারও দুইগালে হাত দিয়ে মুখের কাছে মুখ নিতেই রাজের উপরেই গড়গড় করে বমি করে দেয় সারা। ঘটনার আকস্মিকতায় দুজনেই থ।
চলবে……..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com