টিউশনি || পর্ব-২ || লেখক:-শফিক (আবি)
রিমির বাবা চলে যাওয়ার পরে, রিমি একটা হাসি দিয়ে সানির সামনে সোফায় পা উঠিয়ে বসে।
সানি তখন তার ছাত্রীর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়
-স্যার এভাবে তাকান কেনো? আজি জানি আমি সুন্দর। কেউ এভাবে চাইলে আমার ভীষণ লজ্জা লাগে বলে রিমি নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে।
-সানি রিমির মুখ থেকে এই কথা শুনে একটু নড়াচড়া করে বসে
-কি হলো স্যার, আপনি ঠিক আছেন?
-হুমমম, বই আনো
-ওয়েট আনতেছি বলে রিমি সোফা থেকে উঠে দাড়িয়ে টেবিল থেকে একটা বই নিয়ে আসে
-এই নেন স্যার, এই বলে বইটা হাত বাড়িয়ে দেয়
-এটাতো ইসলাম বই
-হ্যা
-এই বই না এনে গনিত অথবা পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে আসো
-স্যার আপনি একটা কথা জানেন না?
-কি কথা?
-প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে ইসলাম শিক্ষার প্রয়োজন আছে,তাই আমি চিন্তাভাবনা করছি আগে ইসলাম পড়বো
-ফাজলামো করতাছো নাকি?
-ফাজলামির কি হলো?
-তোমার বাবাকে ডাক দিবো?
-না না স্যার, গনিত বই আনতাছি বলে দৌড়ে টেবিল থেকে বইটা নিয়ে আসে।
কিছুক্ষণ পড়ানোর পরে সানির ভালো অনুমান হয়ে যায় যে মেয়েটা খুব চঞ্চল আর খুব বেশি শয়তান ও বটে।
পড়ানোর মাঝে
-স্যার(রিমি)
-হ্যা বলো
-আমার স্যার করে ডাকতে ভালো লাগে না
-তো?
-আপনার নাম ধরে ডাকি?
-কিহহহ?
-হুমমমম বলে সানির দিকে অপরাধী দৃষ্টি নিয়ে চোখ গুলো বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
-স্যার কে নাম ধরে ডাকার আইডিয়া কোথায় থেকে পাইছো?
-ওকে তাহলে সানি ভাইয়া বলে ডাকবো
-ওকে
দুইটা সাবজেক্ট দেখানোর পরে পড়ানো শেষ করে,
-ভাইয়া এই রুমে আসেন(রিমি)
-কেনো?
-যেভাবে প্রশ্ন করছেন যেনো খুব বেশি ভয় পেয়েছেন। বলে হাসতে থাকে
-সানি তখন রিমির গালে টোল পরা হাসির দিকে তাকিয়ে আছে
-ভয় পাওয়ার কিছু নাই,এটাতে মা-বাবা থাকে বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে অন্য রুমে চলে যায়।
সানি তখন রিমির বাবার সামনে যায়
-পড়ানো হয়ছে?
-জ্বি আংকেল
-ছাত্রী হিসাবে কেমন?
-খারাপ না তবে ভালো গার্ড দিলে ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে
-আর তিনমাস পরেই কিন্তু ওর পরীক্ষা
-আপনারা বাসায় ভালো করে চাপ দিয়েন,তাহলে ঠিক হয়ে যাবে
-ওকে,এই নাও এখানে দশ হাজার আছে
-আংকেল আমাকে এক মাসের টাকা এডভান্স দিলেই হবে
-এক মাসের ই তো দিলাম
-কিহহহ?
-হুমম আরো দিতে হবে?
-না আংকেল
-ওকে এখন আমি আর তোমার আন্টি একজায়গায় যাবো
-ওকে তাহলে এখন আসি
- সাবধানে যাইয়ো
-ওকে আসসলামু আলাইকুম
বলে রিমিদের রুম থেকে বেড় হয়ে সিরিতে সানি চারদিকে চেয়ে মনের খুশিতে দুইটা নাচ দিয়ে রুমের উদ্দেশ্যে হাটতে থাকে রুমে যাওয়ার সময় সানি
ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে টাকা রিচার্জ করে রুমে আসে।
রুমে আসার পরে রাত ৮ টার দিকে সানি মোবাইল টা হাতে নিয়ে সালমার মোবাইলে ফোন দেয়।
ফোন রিসিভ করার পরে
-কেমন আছিস?(সালমা)
-হুমম ভালো,তুই?
-হুম ভালো
-কি করিস?
-এইতো বই নিয়া বসে আছি,তুই?
-খোলা আকাশের নিয়ে দাড়িয়ে আছি
-ওহহহ
-হুমমম,মা কোথায়?
-একটু লাইনে থাক ফোন নিয়ে যাচ্ছি বলে সালমা বিছানা থেকে উঠে সানির ঘরের দিকে যায়।
-চাচী আম্মা,ও চাচী আম্মা
-কিরে কি হয়ছে?
-নেও তোমার ছেলে ফোন করছে
-কই দেখি বলে সালমার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে
-বাবা কেমন আছিস রে?(সানির মা,কান্নাখেকো কন্ঠে)
-ভালো তোমরা সবাই কেমন আছো?
-হ্যা আমরা ভালা আছি
-কান্না করো কেনো?
-না বাবা কিছু না
-খায়ছো?
-হ্যা
-কাল একটা বিকাশ নাম্বার দিও
-কেনো বাবা, তোর বুঝি টাকা লাগবে? তোর বাবা তো বাপ টাকা দিতে পারবেনা,বলে তার মা কান্না করে দেয়
-আরে কান্না করো কেনো?
-তোর খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না রে বাবা? কি করবো বল? তোর কপাল ই খারাপ, আমাদের মতো ছোটলোকের পরিবারে জন্ম নিয়ে
-মা এখন কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে,আমি কি কখনো এমন কিছু বলছি?
আমার জীবনে তোমরা দুইজন ই শ্রেষ্ট ছিলা আর সেটা থাকবা ও
-তখন ও তার মা মেয়েলী স্বভাব নিয়ে কান্না করতে থাকে
-বাবারে বলবা কালকে সকালে একটা বিকাশ নাম্বার দিতে,সাত হাজার টাকা পাঠাবো
-কিহহহহ?
-হ্যা
-এত টাকা?
-তোমার ছেলে এখন থেকে এমন টাকা প্রতিমাসেই দিতে পারবে
-তখন তার মা তার বাবাকে উদ্দেশ্যে করে, এই সানির বাবা শুনছো? আমার সানি নাকি সাত হাজার টাকা পাঠাবে
-সানির বাবা তখন সানির মা থেকে মোবাইল টা হাতে নিয়ে,
বাবা আমাদের এখন টাকা লাগবেনা।এই টাকা দিয়ে প্রতিদিন ভালো ভালো খাবার খেয়ে শরীরটা ঠিক করবি,যাতে গ্রামে আসার পরে সবাই বলে এটা ফারুক মিয়ার ছেলে
-বাবা দোয়া কইরো,একদিন এমন একটা হবেই
-হ্যা
-কাল মনে কইরা একটা নাম্বার দিও
-আমাদের লাগবে না তো
-বেশি কথা বলবানা তো, নাম্বারটা দিও
-আচ্ছা
সানি তখন সানির বাবার সাথল আরেকটু কথা বলে ফোন রেখে দেয়।।
পরেরদিন রাতে টিউশনিতে যাওয়ার পরে
-কাজ গুলো করছো?(সানি)
-সবগুলো করি নাই
-কেনো?
-কয়েকটা আছে পারি না
-কোনগুলো পারো না
-এগুলো, খাতাটা বাড়িয়ে
সানি তখন খাতাটা নিয়ে লিখতে থাকে তখন রিমি টেবিলের নিচ দিয়ে.
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com