ভাগ্য
-আবির ছাড়েন প্লিজ ব্যাথা পাচ্ছি ছাড়েন আর কখনো এমন করব না,,খালুকে ডাকব কিন্তু প্লিজ ছাড়েন,,,
-সাওনের সাথে তোর কি হুমম,
-কিচ্ছু না বিশ্বাস করেন,, (তার হাতটা চুলের মুঠো থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টায়)
-তোর কি আমাকে ছাড়া আরও কাস্টমার আছে নাকি
-ছ্বি ও খালামনি দেখ না তোমার ছেলে আমাকে মারছে,,
আমি নিলা বয়স ১৯।
শারীরিক সম্পর্কের জন্য পার্ফেক্ট তাই না হা হা হা তা আমি বলিনি বলেছে আমার আদুরের খালাতো ভাই আবির।
ছেলেটার জন্য রুমে শান্তি মত কাপড়ও চেইঞ্জ করতে পারি না হুট করে রুমে ঢুকে বিছানায় শুয়ে পরে।
কখনো তো আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার কাপড় চেইঞ্জ করা দেখেন।
। আমার শরীরের প্রতিটি অংশ হয়তো উনার চেনা শেষ।। উউফ কবে যে দিনগুলো শেষ। সবাই বলে উনি নাকি তার অফিসের সুন্দরী কোনো এমপ্লয়িরের দিকে ফিরেও তাকান না।
কিন্তু জানি না আমার মধ্যে কি খুজে পান আমার প্রতিই কেন জুলুম করেন।
গল্পটার শুরু হয়েছিল আমাদের ছোটকাল থেকে।
আবির আমার খালাতো ভাই আমাদের একসাথে খেলা আনন্দ হাসি ঠাট্টা কিন্তু
আমার আব্বু খালামনিকে পছন্দ করত না কারন খালামনি সবার বিপক্ষে গিয়ে লাভ ম্যারেজ করেছিলেন।
আর আমার বাবা হলেন ভালোবাসার বিরুদ্ধে।
খালামনি যখনই বেড়াতে আসতেন বাবা মাকে আড়ালে নিয়ে খুব কথা
শুনাতেন কিন্তু নিজের বোনকে তো আর ফেলে দেয়া যায় না,।।
সময়ের একপর্যায়ে খালামনি ভবিষ্যতে আমার আর আবিরের বিয়ের কথা বললে বাবা খুব রেগে যায় সাথে খালামনিকে কষে থাপ্পড় মারে বলতে থাকেন,,
-তোর সাহস হয়ে কিভাবে আমার মেয়েকে নিয়ে তোর এসব বলার নোংরা মেয়ে একটা পরপুরুষদের সাথে মেলামেশা করিস কে জানে তোর ছেলে আবির এটা কি বিয়ের পরে হয়েছে নাকি বিয়ের আগে,,, কে জানে বিয়ের আগে কয়েটা বাচ্চা ফালাইছিস ব্যা** কোথাকার,,
-প্লিজ থামো ,, (আম্মু)
-তুমি চুপ কর এই শুন তোই একটা বাজারের মেয়ে আর তোর ছেলের সাথে বিয়ে দিব আমার মেয়ের,,,বেরিয়ে যা,,
আম্মু শত চেষ্টার পরেও আব্বুকে থামাতে পারেন নি ঐ দিন খালামনি খুব কান্না করেছিলেন ছোট আবির রক্ত মাখা চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।। সেই দিনের পর থেকে খালামনি আর আমাদের বাসায় আসেননি কোনো কন্টেক্টও করেননি।।
১৬ বছর পেরিয়ে গেছে আমি তো ইতিমধ্যে ভুলেই গেছি আমার কোনো খালামনি আছে।
তার মধ্যে আবার আম্মুকে হারিয়ে আব্বু একদম নিরব হয়ে গেছে কারো কাছে
কোনো রাগ নেই কোনো অভিমান নেই।
আব্বুর শেয়ারের বিজনেস ৩ বার ড্রপ খেয়েছে সংসার একদম অচল তাই আর
পড়াশোনাটাও করা হয়নি সংসার আর আব্বুর অসুখের খরচ চালাতে দু একটা টিউশনি করি এই যা।
ডাক্তার বলেছে আব্বুর অপারেশনের জন্য অনেক অনেক টাকা লাগবে কিন্তু
তা ম্যানেজ করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব।
এমই একদিন টিউশনি শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়।
রাস্তায় কোনো গাড়ির চিহ্ন নেই হঠাৎ একটা নীল কালারের প্রাইভেট কার দেখতে পেলে
আমি সিগন্যাল দেই রাস্তার একটু দূরে গিয়ে গাড়িটা থামে আমি দৌড়ে গিয়ে ড্রাইভাইকে
একটু লিভ দিতে বললে সে একটু পেছনে ফিরে মালিকের কাছ থেকে অনুমতি
নিয়ে আমাকে আসতে বলে আমি গাড়িতে উঠে পেছনে তাকিয়ে দেখলাম একটা
হ্যান্ডসাম ছেলে দেখতে আমার পছন্দের নায়ক রানবির কাপুরের মত নিচের দিকে তাকিয়ে
মোবাইলে ব্যাস্ত,,,
ড্রাইভার আমার চাহনি দেখে হয়তো বুঝে গেছেন উনার মালিকের ওপর আমি অলরেডি
ক্রাশ খাইছি তাই মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করছেন,,
-কোথায় যাবেন,,
আমি ঠিকানা বললে ছেলেটা আতংক হয়ে আমার সম্পর্কে সব কিছু জানতে চাইলে আমি তাকে সব বলি।। তারপর উনি আমাকে একটা কার্ড এগিয়ে বলে কোনো দরকার হলে উনার অফিসে যেতে আমি একটু ভেবাচেকা খেয়ে রাজি হলাম।। এমন একটা ছেলে যাকে তাকে কার্ড দেয়ার মত না ব্যাপারটা কি,,,
বাড়ি ফিরে দেখি বাবার হার্টের ব্যথা অনেক বেড়ে গেছে নিশ্বাস নিতে পারছেন না তারাহুরা করে হসপিটাল নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান ইমার্জেন্সি অপারেশন করতে হবে তানা হলে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন মোটা অংকের টাকা।। রাতভর ভাবতে ভাবতে সকালে আমি কার্ডের ডিটেইলস অনুযায়ী তার অফিসে যাই।। উনি নাকি এই অফিসের ম্যানেজার ডিরেক্টর।। আমাকে দেখে তো উনি রীতিমতো হেসে বলতে লাগলেন,,
-রাতে কার্ড দিয়েছি আর সকালেই হাযির বাহ,,
-জ্বি মানে আমার ইমারজেন্সি একটা কাজ লাগবে,,
-কেন,,
-আমার বাবা অসুস্থ ইমারজেন্সি অপারেশন লাগবে তাই অনেক টাকার দরকার ,,
-ও হুমম তা শিক্ষাগত যোগ্যতা?
-মাধ্যমিক,,
-হা হা হা হা হা হা বাবা অনেক শিক্ষিত তুমি,,
-আমার সত্যিই টাকাটা লাগবে,,
-তুমি এসব বাদ দাও আচ্ছা তুমি জানো আমি কে,,
-না
-আমি তোমার আফরোজ খালামনির ছেলে আবির,,
-কিইই,,, (অবাক হয়ে) প্লিজ আমাকে হেল্প করেন আব্বুর শরীর অনেক খারাপ আবির
-দিব সব টাকা দিব কিন্তু তোমাকে আমার সাথে আমার বাড়িতে ৬ মাস থাকতে হবে যতক্ষন না তোমার বাবা ঠিক হয়ে যায়,,
-মানে,,
-মানে খুব সোজা তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে ফ্রিতে না যখন ইচ্ছা টাকা পেয়ে যাবে,,
রেগে আবিরকে একটা থাপ্পড় দিয়ে,
-কি ভাবছেন আমাকে,,, লজ্জা করে না ছ্বি আপনে এমন হয়ে গেছেন,,
-উউফফ ন্যাকামি বন্ধ কর বাবাকে বাচাতে চাইলে এটা তোমাকে করতেই হবে তানা হলে কিচ্ছু করার নেই আসতে পার ,,
-আমি খালামনির সাথে কথা বলব উনি নিশ্চয়ই আমাকে বুঝবেন,,,
-সেট আপ এন্ড গেট লষ্ট,,
রাস্তায় হাটতে হাটতে কথাগুলো ভেবে আর কোনো উপায় না পেয়ে তার সব শর্তে আমি রাজি হয়ে যাই।।আমার বাবার জন্য এটা আমাকে করতেই হবে।। বাবাকে কোনো রকমে বুঝিয়ে বললাম আমার একটা জব হয়েছে ওখানে থেকে আমাকে কাজ করতে হবে প্রায় ৬ মাস অনেক ভালো বেতন দিবে ।। বাবা রাজি হচ্ছিল না আমি এক প্রকার জোর করে চলে এলাম খুব কষ্ট হচ্ছে।।
ভেবেছি ওখানে খালামনি আছে ৬ মাস তা তেমন কি আর চোখের পলকে পেরিয়ে যাবে কিন্তু এখানের পরিবেশটা ছিল একদম ভিন্ন বিশাল এক বাড়ি ৬-৭ জন ইস্টার্ফ আবিরের একটা বোনও আছে আমি খালামনিকে হাজার বার নিজের পরিচয় দেয়ারপরেও উনি আমাকে চিন্তেই পারলেন না হয়তো না চিনার ভান করছেন উল্টো আবিরকে আড়ালে নিয়ে বিরবির করে বলতে লাগলেন,,,
-এই মেয়ে এখানে কেন তাড়াতাড়ি বিদায় কর
চলবে……….,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com