রূপার রোমান্টিক বাসর | পর্ব- ০৪
কলেজে রূপার অনেক বন্ধু-বান্ধব সব কিছু মিলিয়ে রূপার দিনগুলো ভালই যাচ্ছে! রূপার এক ফ্রেন্ড ওর নাম ছিলো আকাশ । খুব ভাল ছেলে আকাশ রূপাকে সব সময় হাসি খুশিতে রাখত। একদিন রূপার মন খারাপ তখন আকাশ রূপাকে বলে,
” এই রূপা তোমার কি মন খারাপ?
” না মন তো ভালই!
” তাহলে একা একা এখানে বসে কি ভাবতেছ?
” না এম্নিতে কিছু হয়নি?
” আমাকে বলতে পারো কোন প্রবলেম নেই!
আকাশ আসলে রূপাকে ভালবেসে ফেলেছে রূপার যে বিয়ে হয়ে গেছে সেটা জানেনা আকাশ! ভেবেছি আজ রূপাকে মনের কথা বলবে কিন্তু রূপার মন খারাপ দেখে আকাশ কিছু বলেনি!
আকাশ ভেবে নিয়েছিলো মনের কথা কোন এক রোমান্টিক দিনে বলবে! এভাবে চলে যায় প্রায় অনেক দিন আকাশ এবং রূপার বন্ধুত্ব আরও গভীর হতে থাকে, হঠাৎ কোন এক রোমান্টিক দিনে আকাশ বলে দেয় ওর মনের কথা,
” রূপা একটা কথা বলার ছিলো এখন কি বলবো?
” হ্যাঁ বলো কোন সমস্যা নেই।
ভয়ে ভয়ে আকাশ বলে দিলো,
” রূপা আমি তোমাকে ভালবাসি।
রূপা অভাক হয়ে বলে,
” কত দিন হলো আমাকে ভালবাস?
” এই হবে ৬/৭ মাস।
” কিন্তু আকাশ এই মুহূর্তে আমি তোমার প্রপোজাল এচেপ্ট করতে পারছিনা সরি।
” এখন এচেপ্ট করতে হবেনা তুমি ভেবে চিন্তে আমাকে উত্তর দিয়ো।
” কোন দিন পসিবল না আকাশ, সারাজীবন ভাবলেও আমি তোমাকে ভালবাসতে পারবো না!
” কিন্তু কেন? কাউকে কি ভালবাস?
” আকাশ আমি বিবাহিত।
” আমার সাথে মজা করছ, রূপা এসব ফান আমার কাছে একদম ভাল লাগে না।
” আকাশ আমি ফান করছিনা সত্যি সত্যি আমি বিবাহিত।
” ওহ সরি আমি জানতাম না।
” আমরা শুধু ফ্রেন্ড এবং ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে চাই।
” আচ্ছা তোমার বরের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবে না।
” যদি কোন দিন বর ফিরে আসে তাহলে না হয় পরিচয় করিয়ে দিব।
” মানে?
” কিছুনা সব কথা বলতে নেই!
পরে এক সময় আকাশ সব কিছু জানতে পারে, জানার পর রূপাকে বলেছিলো আকাশ,
” রূপা আমি সব কিছু জানতে পেরেছি যদি কোন সময় কোন হেল্প লাগে তাহলে আমকে প্লিজ সরণ করবে!
” আচ্ছা ঠিক আছে।
রূপার ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরিক্ষা চলে আসে, আর মাত্র কিছু দিন বাকি রূপার ভিতর এক ধরনের ভয় কাজ করছিল, যদি পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট না করতে পারি তাহলে মেডিকেল চান্স পাবেনা।
তাই সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে রূপা পড়াশোনার প্রতি মনযোগী হয়ে উঠে।
এক এক করে সব পরিক্ষা শেষ শুধু রেজাল্ট এর অপেক্ষায় আছে রূপা, রূপার ইচ্ছে ভাল রেজাল্ট করবে মেডিকেল ভর্তি হবে বড় ডাক্তার হবে।
রূপার এক বান্ধবী ফোন দিয়ে বললো,
” রূপা আজ নাকি রেজাল্ট দিয়েছে?
” আচ্ছা আমি দেখছি!
রেজাল্ট জানার জন্যে রূপা যায় কলেজে, খুব ভয়ে ভয়ে রূপা কলেজে যাচ্ছিলো যদি ভাল রেজাল্ট না আসে তাহলে মেডিকেল ভর্তি ডাক্তার হওয়া সব শেষ।
কলেজে ডুকতেই সবাই বলছে রূপা কংগ্রেস.
রূপা একটু হেসে হেসে মিতুকে বলছে,
” কিরে সবাই আমাকে কংগ্রেস জানাচ্ছে কেন?
” দুস্ত মিস্টি নিয়ে এসো আর ট্রিট দাও তুমি পাস করছ!
রূপা একটু আনন্দে বলছে,
” তাই নাকি আমার কত পয়েন্ট?
” কত পয়েন্ট সেটা নিজেই দেখে এসো।
রুপা রেজাল্ট দেখার জন্যে এগুচ্ছে, রোল নাম্বার বের করে দেখে পাশে দেওয়া জিপিএ।
রূপার বিশ্বাসই হচ্ছেনা সে এ প্লাস পেয়েছে! কে দেখে রূপার লাফালাফি, সব শেষ এই দিনটি রূপা রূপার মতো করে সেলিব্রিট করে!
রূপার এতদিনের ইচ্ছে, সপ্ন আজ সত্যি হতে চলছে! ভর্তি হবে মেডিকেল দেখিয়ে দিবে নীলয় এবং শ্বাশুড়িকে।
রূপার একটাই সপ্ন একদিন নীলয় রূপার কাছে এসে মাথা নত করে বলবে সরি রূপা আমাকে ক্ষমা দাও সাথে থাকবে শ্বাশুড়ি মা।
রূপা আজ মেডিকেল ভর্তি হবার জন্যে পরিক্ষা দেয়, পরিক্ষা শেষে ভাল রেজাল্ট আসে। ভর্তি হয়ে যায় মেডিকেল, মেডিকেল ভর্তি হয়ে আরো অনেক বন্ধু-বান্ধব পেয়ে রূপা একদম ভুলে যায় তার শ্বশুর বাড়ির কথা!
রোজ ক্লাস করা নতুন কিছু শিখা এসব নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত রূপা, মাঝে মাঝে মন খারাপ হয়, কারন রূপা থাকে হোস্টেলেই মা বাবা সবাইকে ছাড়া। মাঝে মাঝে মা বাবার কথা মনে পড়ে তাই মন কারাপ হয়। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বুঝতে দেয়নি রূপা, সে কষ্টে আছে। কষ্টের আড়ালে রূপা হাসি খুশি থাকতে শিখে গেছে!
এভাবেই চলে যায় রূপার আরো বছর খানেক। এখন রূপা টুকটাক নার্সিং এর কাজ করে……..!!
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com