Breaking News

জীবন || তিতিশ্মা মুসাররাত কুহু

বাসর রাতেই স্ত্রী বুঝতে পারলো তার স্বামী যে আর ৫ টা পুরুষের মত স্বাভাবিক না।
তার স্বামীর মাথায় একটু সমস্যা আছে।
পরের দিন এ ও জানতে পারলো এলাকার সবাই তার নামের সাথে পাগলা শব্দটা যোগ করে দিয়েছে অনেক আগেই।

মেয়ের পরিবার সত্যি টা জানার পর মেয়েকে সাথে করে নিয়ে যেতে চাইলো।
মেয়ে গেলোনা,মেয়ের একই কথা আমি এই সংসারই করবো।
স্বামীকে ভালবেসে মেয়েটা সংসার করতে লাগলো।আর স্বামীর সাথে খুব ভালো ব্যবহার করতে লাগলো।এই আশায়,যদি স্বামী আদর যত্নে,সেবা ভালবাসায় ধীরেধীরে সুস্থ হয়ে যায়।

একে একে কয়েক জন বাচ্চা হলো তাদের।
স্বামী আরো মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে দিন দিন।
মেয়েটা সন্তান গুলোকে,স্বামীকে,শশুড় শাশুড়িকে সেবা যত্ন করে সংসার টাকে আগলে রাখলো।
ছেলে মেয়েদের তাড়াতাড়ি করেই বিয়ে দিয়ে দিলো।কারণ সে জানতো,বাবা মরে গেলে সন্তানদের কেউ দাম দেয়না।

হোক না বাবা আধ পাগল,তবুও বট গাছ একটা পরিবারের।
স্বামীকে নিয়ে জীবন কাটাতে লাগলো।
স্বামী মাঝে মাঝেই মারধোর করে।
তবুও সে সব কিছু সহ্য করে স্বামীকে ভালবেসে যায়।কারণ মেয়েটা জানে তার স্বামী আর সবার মত জ্ঞানী না।আর সবার মত সুস্থ্য না।
সে হঠাৎ ভালো হঠাৎ মন্দ।মানে অস্বাভাবিক।
মাঝে মাঝে স্ত্রী তার স্বামীকে বলতো,
-তুমি যে এত পাগলামি করো,আমি যখন না থাকবো তখন তোমাকে কে দেখবে?
সে সামলাবে?
স্বামী বলতো,আগেই যাওনি আমায় ছেড়ে আর এখন যাবা বুড়া বয়সে?
-যদি মরে যাই?
-তোমার আগে তো আমি মরবো।আমি তোমার থেকে কত্ত বড়।১৫ বছরের বড় আমি তোমার।
আজ হঠাৎ স্ত্রী টা স্ট্রোক করে মারা গেলো।
আধ-পাগল স্বামীটা চিৎকার করে বাড়ীঘর অন্ধকার করে ফেলছে।চারিদিক জুড়ে কি করুণ চিৎকার।লোক টার জীবন টাই যেন থেমে গেলো।
-বউরে,আমি আর তোরে মারুম না।আর বকুম না,তুই ফিরা আয় বউ ফিরা আয়।কে আমারে দেখবো তুই ছাড়া?
তুই ছাড়া আমার যে কেউ নাই,কেউ নাই।
(গল্পটা বাস্তব,আর স্ত্রী টা আজই মারা গেছেন)
কাউকে ভালবেসে সারাজীবন তার সাথে এক ছাদের নিচে কাটিয়ে দেয়া যায়।
হোক না সে পাগল কিংবা প্রতিবন্ধী।
তবে ভালবাসা টা থাকা চাই।

#মৃত্যু কারো বয়স দেখে আসেনা।তাই আগে থেকেই সবাইকে খেয়াল করতে হবে,আমি কি নিয়ে যাবো আমার সাথে, তা কি আমি জোগাড় করতে পেরেছি?
নামাজ আমি কাল পড়বো,না বলে আজই পড়ুন এখনি পড়ুন।
হতেও তো পারে আজই আপনার কিংবা আমার জীবনের শেষ দিন।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com