বুকের বাম পাশে | লেখক - কাব্য | পার্ট - ১১
আমি :- কিন্তু মেডাম আমি তো টাকার ব্যাপারে কিচ্ছু জানি না.. আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে?
ছেলেটি :- কি হইছে প্রেমা?
প্রেমা :- ভ্যানিটিব্যাগে ১০ হাজার টাকা আনছিলাম… ভুল করে ভ্যানিটিব্যাগ গাড়িতে ফেলে গেছিলাম এসে দখি ব্যাগে টাকা নেই
ছেলেটি :- [ আমার কাছে এসে সার্টের কলার ধরে ঠাসসস করে ২ টা চড় মেরে ] এই ফকিরের বাচ্চা টাকা বের কর বলছি… মালিকের টাকা চুরি করতে লজ্জা লাগলো না।……
আমাকে মারা দেখে আশেপাশে অনেক লোক জড়ো হয়ে গেলো সবাই বলতে লাগলো কি হয়েছে এখানে আর ছেলে টিকে মারছেন কেন?
তখন প্রেমার সাথে থাকা ছেলেটি আমার কলার ছেড়ে দিয়ে আর বলেন না ভাই এই ছেলেটি এই মেয়েটির ব্যাগ থেকে ১০ হাজার টাকা চুরি করছে
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই লোকেরা আমাকে মারতে শুরু করলো তারপর আর কিছু বলতে পারবো না কারন আমি সেন্স হরিয়ে ফেলি চোখ খুলে নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করি এবং পাশেই বসা বৃদ্ধা মানে দাদু
দাদু :- কি রে কাব্য এখন কেমন লাগছে
আমি :- জ্বী দাদু ভালো.. আপনি এই অসুস্থ শরিল নিয়ে এখানে না আসলেও পারতেন
দাদু :- আমি তোর কাছে খুব লজ্জিত রে কাব্য, তোর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কোন মুখ আমার নাই,,তারপরও আমি তো তোর থেকে বড় তোর দাদুর মত তুই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দে
আমি :- আরে দাদু আপনি এসব কি বলছেন, ক্ষমার কথা বলে আমাকে লজ্জা দিবেন না,, আপনি আমার দাদুর মত না আপনিই আমার দাদু…. রক্তের সম্পর্ক আমাদের নাই তাতে কি সম্পর্ক রক্ত দিয়ে হয় না ভালোবাসা দিয়ে হয়.. আর যখন আমি এই শহরে একা কেউ ছিল না আমার পাশে তখন আপনি আমার পাশে দাড়িয়ে ছিলেন তানাহলে আজ আমি হয়তো এখানে থাকতাম না
দাদু :- আমি তোকে খুব ভালো করে চিনি তুই আর যাই কর চুরি করতে পারিস না..কি করবো বল প্রেমা আমার একমাত্র নাতনি…. আতি আদর আর সঙ্গ দোষে মেয়েটার আজ এই অবস্থা.. ও যাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে ইদানিং তারা কেউ ভালো না… কাব্য তুই আমার একটা কথা রাখবি
আমি :- কি কথা বলেন?
দাদু :- প্রেমাকে ভালোর দিকে নিয়ে আয়….প্রেমা আমাদের কারো কথা শোনে না একমাত্র তুই পারবি ওকে ভাল পথে আনতে… বলে না সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস…প্লিজ কাব্য
আমি :- দাদু আমি চেষ্টা করবো?
দাদু :- হুম এখন বাসায় চল আমি ডক্টরের সাথে কথা বলছি
তারপর দাদু ডক্টরের সাথে কথা বলে আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরলো বাসায় এসে দেখি
একজন লোক দাড়িয়ে আছে দাদু আর আমি লোকটির কাছে গেলাম যেতেই
লোকটি :- মি.খান এই নেন আপনার নোটিশ ব্যাংক আপনাকে ৬ মাসের সময় দিয়েছে…
এই ৬ মাসে আপনি টাকা পরিশোধ না করলে ব্যাংক আপনার কোম্পানি নিলামে তুলবে……..
বলেই লোকটি চলে গেলো আমার মাথায় কিছুই ডুকলো না উনি এতবড় কোম্পানির মালিক
হঠাৎ এত ঋনের মধ্যে কি করে পড়লেন…
যার জন্য ব্যাংক থেকে নোটিশ পর্যন্ত পাঠিয়েছে মনের মধ্যে কৌতূহল জাগলো তাই জিগ্যেস করলাম
আমি :- দাদু এসব কি আর কিসের জন্যই বা এত ঋন,,,,
.
দাদু :- আমার প্রতিবেশি একটা কোম্পানি আছে তার জন্য সবচেয়ে বেশী আর আমার স্টাফেদের জন্য
আমি :- প্রতিবেশি কোম্পানির জন্য মানে বুঝলাম না
দাদু :- তাহলে শোন বলছি ঐ কোম্পানির মালিকের ছেলে আমার নাতনি প্রেমাকে ২ বছর আগে যখন
দেশে এসেছিল তখন দেখে পছন্দ করে তাই ঐ কোম্পানির মালিক আমার কাছে তার
ছেলের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে.. কিন্তু আমি না করে দেই কারন ছেলেটি ভালো না মদ খায় বদ রাগি
মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করে… একদম খারাপ ছেলে যাকে বলে… এমন খারাপ
ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে আমার নাতনি ফুলের মত জীবনটাকে নষ্ট কি করে করবো বল
তাই উনার প্রস্তাবে না করে দেই….
না করার অপমান উনার সহ্য হয়নি তাই আমার কোম্পানির পিছনে উঠে পড়ে লাগে
তাই অনেক লস করে কেম্পানি…. আর আমিও বৃদ্ধ হয়ে গেছি তাই দেখা
শুনা ঠিক মত করতে পারি না..
আমি অসুস্থ থাকার কারনে এই ৩ মাস তো কোম্পানিতে যেতেই পারি নি তাই স্টাফরা
যে যারমত কাজ করছে নয় ছয় হিসাব দিচ্ছে.. আমি আর কত করবো বল
আমি :- তা আপনার ছেলেকে জানানি…বা এটা থেকে বোরুনোর কোন উপায় পাননি
দাদু :- জানিয়েছি কিন্তু এত টাকা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়,,,
আর উপায়ের কথা বলছো প্রতিবেশি কোম্পানির মালিক সব টাকা পরিশেধ করতে রাজি
বিনিময়ে তার ছেলের সাথে আমার নাতনির বিয়ে,, এই বিষয়ে আমার ছেলেকেও জানিয়ে
ছিলাম সে বলছে তোমার যা ইচ্ছা করো.. আমিও আর কোম্পানিতে
আগের মত শ্রমও দিতে পারবো না,, শ্রম দিলে হয়তো রিকভার করতে পারে তাও ৬ মাসে সম্ভব না
আমি :- দাদু আমি যদি কোম্পানির হাল ধরি
দাদু :- তুই কি করে পারবি তুই তো লেখা পড়াই জানিস না
আমি :- দাদু আপনাকে এই অবস্থায় দেখে সত্যিটা বলতেই হচ্ছে…
দাদু :- কি সত্যি
আমি :- দাদু আমি আপনাকে মিথ্যা বলছিলাম যে আমি লেখাপড়া জানি না…
আমি এ বছরি অনার্স কমপ্লিট করেছি… আর আমি গরিব না আমার বাবাও একজন বিজনেসম্যান
সেই সুত্রে আমিও কোম্পানি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি
দাদু :- তাহলে মথ্যা বললি কেনো..আর তুই এখানে এভাবে পড়ে আছিস কেন? আমি :-
[ তারপর লুবনার ঘটনা সব খুলে বললাম শরু থেকে শেষ পযন্ত ] এই জন্য
দাদু :- তোকে যে কি বলবো সেই ভাষা আমার নাই
শুরু থেকে তুই শুধু আমার উপকারি করে যাচ্ছিস বিনিময়ে যে তোকে কি দিতে পারবো জানি না
আমি :- দাদু কিছুই করা লাগবে না…. ভালোবাসার বিনিময় চাইলে সেটা আর ভালবাসা থাকে না সেটা স্বার্থ হয়ে যায়
দাদু :- আমি নিশ্চিত হলাম,,, কাল তোর হাতে সমস্ত কোম্পানির দায়িত্ব তুলে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হবো আর আমার বিশ্বাস তুই পারবি
দাদু কথা বলা শেষ হতেই
প্রেমা :- [ হাতে তালি দিতে দিতে এসে ] বাহ্ চুরি করেও তোর দেখছি শখ মেটেনি..
এখন আমার দাদুকে পটিয়ে সব সম্পত্তি মালিক হতে চাস….
কেমন রে তুই যেই থালায় খাস সেই থালায় ফুটো করিস…লজ্জা করে না তোর তুই একটা বেঈমান…
আজ এত মার খেয়েও তুই মরলি না কেনো?
প্রেমা আর কিছু বলতে যাবে তাতেই দাদু ঠাসসস করে প্রেমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো………..
চলবে………….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com