গল্প:এক টুকরো বিশ্বাস || তাবাসুম শাহারিয়া
ফোনে আমার স্বামী আর আমার আপন বোনের অন্তরঙ্গের ভিডিও দেখে থ মেরে যাই ।বুকের ভিতর প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছে ।এই বুঝি কেউ আমার বুকের ভিতর বড় একটা পাথর রেখেছে ।সব কিছু অন্ধকার মনে হচ্ছে ।হঠাৎ আমার ফোনে একটা ফোন আসে ।
আমি :হ্যালো
.....: কী যা বলেছিলাম তা বিশ্বাস হচ্ছে??
আমি:আজকাল ছবি এডিট ও করা যায় ।আপনি ও এমন ই করতে পারেন ।আমার বিশ্বাস হয় না রাশেদ এমন করবে ।উনি আমাকে অনেক ভালোবাসে ।আমাকে ছাড়া আর অন্য কাউকে চিন্তা ই করতে পারে না ।আর আমার বোন এই কাজ করতে পারে না ।
ওই পাশ থেকে বিকট একটা হাসির শব্দ আসলো।
.....: আপনি এত বোকা কি করে হন বলেন তো। আচ্ছা একটা কাজ করেন আপনি আপনার বাসায় যান ।দেখেন আপনার দুই বছরের মেয়ে কে ঘুম পাড়িয়ে আপনার স্বামী আর আপনার বোন কি করছে । আর শুনুন আমি আমার কথা রেখেছি ।এখন আপনার পালা আপনি আপনার কথা রাখুন।
আর কিছু না শুনে আমি ফোন কেটে দেই ।তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছাই ।আমার কাছে বাসার চাবি ছিল আস্তে করে বাসায় ভিতরে ঢুকে দেখি আমার মেয়ে তনয়া সোফায় আর আমার রুমে আমার স্বামী আর আমার বোন জঘন্য কাজে লিপ্ত ।আমি আর কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যাই ।তাড়া তাদের কাজে এত মগ্ন ছিল যে আমি যে এসেছি তা টের ও পায় নি।পার্কে বসে আছি ।আর ভাবছি সেই দিনগুলো ।এইবার আমার পরিচয় তা দেই আমি মায়া ।আমারা দুই বোন ।আরেক জন এর নাম ছায়া ।ছোটবেলা থেকে ই আমাদের বোনের মাঝে ঝগড়া ।ছায়া মনে করত ওকে কেউ ভালোবাসে না ।আমাকে ই আব্বু আম্মু ভালোবাসে ।ছায়া আগে থেকেই পড়াশোনায় কোন মনোযোগী ছিল না আর অপর দিকে আমি সাইন্সে ভালো রেজাল্ট করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ চান্স পাই ।মাত্র এক বছর পড়ার সৌভাগ্য হয় ।কারণ মা বাবা আমাকে রাশেদ এর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় ।তখন এত রাগ আর কষ্ট হচ্ছিল যে বাবা মা কে বলেই ফেলি আমি যদি তোমাদের কাছে বোঝা হয়ে গেছি তখন আমাকে জন্মের পড়ে মেরে ফেললে না কেন ।আমার মা তখন আমাকে এই প্রথম একটা থাপ্পড় মারে ।এর পড় থেকে এখন পর্যন্ত আমি বাবা মার সাথে ঠিকমত কথা বলি নি ।বাবা মা আমার বিয়ের জন্য পাগল ছিল কারণ রাশেদ এর কাছে অনেক টাকা ।রাশেদ এর সাথে বিয়ের পর আমি নিজেকে গুছিয়ে নেই ।রাশেদ তো আর কোন দোষ করে নাই ।ওর সাথে আমি আমার পৃথিবী তৈরি করি ।নিজেকে পুরো পুরি বদলে ফেলি ।আর এক বছরের মাথায় যখন আমার মেয়ে তনয়া হয় তখন আমি নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভাগ্যবাতী মনে করি ।কিন্তু আজ সব কিছু শেষ হয়ে গেল ।রাশেদ কিভাবে পারল আমার সাথে এমন করতে ।আমার মাঝে কি কমতি ছিল ।এইসব ভাবতে ভাবতে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গেছে ।আমি বাসায় গেলাম দেখি আমার বোন আর আমার স্বামী সোফায় বসে আছে ।অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম ।
ছায়া :আপু কেমন আছো??
আমি:ভালো ।
ছায়া :একটা খুশির খবর আছে ।এই নাও আমার বিয়ের কার্ড ।
রাশেদ :দেখছ মায়া আমার শালি কত ভালো নিজে এসেছে বিয়ের দাওয়াত দিতে ।
ছায়া:বাবা মা আসতে চেয়েছিল কিন্তু আমি ই আসতে না বলেছি ।
আমি আর কোন কথা না বলে বাথরুমে ঢুকে গেলাম ।আর কল ছেড়ে কান্না করতে লাগলাম ।একটু পর বের হয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখি রাশেদ আর ছায়া লিপ কিস করছে ।আমি আর থাকতে না পেরে আবার রুমে চলে গেলাম ।আমার কাছে সব কিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে ।আমার আপন বোন আমার সাথে এমন কিভাবে করতে পারল ।আর রাশেদ কেন করল আমার সাথে এমন ।একটু পড়ে ছায়া চলে যায় ।আমি রাতের খাবার রান্না করে আমার মেয়ে কে বুকে নিয়ে শুয়ে থাকি ।আজ আমার চোখে ঘুম নেই ।কারন আমি রাশেদ এর বুকে ঘুমাতাম ।আজ কেন জানি এই মানুষ টার প্রতি প্রচন্ড ঘৃনা হচ্ছে ।আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না আর এক সপ্তাহ পর ছায়ার বিয়ে ।রাশেদ একেবারে সকালে যায় আর রাতে আসে ।আমি রাশেদ এর সাথে বেশি কথা ও বলিনা ।প্রতি রাতে চোখ দিয়ে পানি পড়ে ।কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না ।
কয়েক দিন পর ,আজ ছায়ার গায়ে হলুদ ।আমি একটা শাড়ি পড়েছি ।রাশেদ আর আমি আর আমার মেয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পৌচেছি ।সব কিছু আমার কাছে অনেক অদ্ভুত লাগছে ।মানুষ যে এত অদ্ভুত আগে জানা ছিল না ।কত রকমের মুখোস পড়ে থাকে ।আজ গায়ে হলুদ এর আনুষ্ঠান শেষ হল।
কাল সকাল,
বিয়ের জন্য কত সাজ কত কিছু এইসব দেখে আমার আর রাশেদ এর বিয়ের কথা মনে পড়ে গেল ।আমি একটা গাউন পরি আমার মেয়ে কে ও সেইম গাউন পড়াই ।পিছন থেকে রাশেদ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে ।এই কথা শুনে আমার শরীরে কাটা উঠে যায় ।আমি আর কিছু না বলে আমার মেয়ে কে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাই ।বর এসে পড়েছে ।বিয়ের কাজ ও শুরু হয়ে গেছে হঠাৎ বর মানে আবির বিয়ে টা থামিয়ে বলে
আবির :আমি আমার হবু স্ত্রী এর জন্য একটা সারপ্রাইজ রেখেছি ।এই বলেই আবির প্রজেক্ট চালু করে দিল ।আর যা দেখলাম দেখে আমার দুনিয়াটা আবার নষ্ট হয়ে গেল ।ছায়া আর রাশেদ এর অন্তরঙ্গের ভিডিও চলছে সবাই দেখছে ।ভিডিও শেষ হলে দেখি রাশেদ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে ।আর আবির ছায়া কে বলে
আবির : তোমার মত মেয়ে পতিতালয়ে যাওয়ার যোগ্য আমার ঘরে বউ হওয়ার না । এই বলে আবির চলে যায় ।আমি আমার মেয়ে কে নিয়ে রুমে চলে গেলাম ।
আশা করি গল্প টা ভালো লেগেছে ।এখন মায়ার কি করা উচিত???
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com