গল্পঃ বউয়ের প্যারা (ছোট গল্প)
নুসরাত এর সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পরে অনেক ছেলে আমাকে বলছে নুসরাত নাকি কথায় কথায় ঝগড়া করে। আমি এগুলো শুনেও বিয়ে করতে হলো নুসরাতকে কারণ পরিবারের মেম্বার সবাই যখন এ বিয়েতে রাজি
তখন আমার কথায় কিছু হবে না। তাছাড়া পরিবারের সবাই বলতেছে নুসরাত
খুব ভালো মেয়ে নামাজ, কুরআন সব পড়ে।আচ্ছা তো আর কি করা পরিবারের
খুশি মতো বিয়ে করতে হলো আমাকে।বিয়ের হয়ে গেলো আমার আর
নুসরাত এর প্রথম কয়দিন খুব ভালো ভাবে আমার জিবনটা চলতেছে।
বিয়ের কিছুদিন পরে থেকে শুরু হলো বউয়ের প্যারা।
রাত যখন ১২ টা বাজে নুসরাত প্রায় সময় বলে-
__এই শুনছেন আমি বাহিরে যাবো।
__যাও তো আমি কি করবো?
__আজব তো আমি একা কিভাবে যাবো?
__একা গেলে কি হবে এ রুমের পরেও তো বাথরুম, যাও নিজে যেতে পারবা।
__না আমি একা যাবো না আগে আপনে বাথরুম চেক করে আসেন তেলাপোকা আছে নাকি?
__হুর আমি পারবো না,তেলাপোকা কি বাঘ নাকি যে খেয়ে ফেলবে তোমাকে।
__বুঝতে পারছি আপনে আমাকে ভালোবাসেন না?
__আচ্ছা ঠিক আছে চলো?
বাহিরে থেকে আসার পরে আমি আবার ঘুমাইয় গেলে।রাত যখন ৩টা বাজে নুসরাত আবার বলে??
__এই আমার ঘুম আসতেছে না?
__তো আমি কি করবো?
__আমার সাথে ছাদে চলেন জ্যোস্না আর তারা দেখবো।
__আমি যাবো না।
__বুঝতে পারছি আপনে আমাকে ভালোবাসেন না।
__আচ্ছা ঠিক আছে চলো।
নুসরাত এর কথায় রাজি না হলে সে একটা কথা বলে তা হলো? আপনে আমাকে ভালোবাসেন না।এটা না বলার জন্য আমি তার সব কথায় রাজি না হয়ে পারি না।তাই সহ্য করে ছাদে যাইতে হয় রাত ৩ টা থাক চাঁদ, জ্যোস্না, দেখার পরে আমি বলি-
__চলো এবার রুমে চলে যাবো ঘুমাবো।
__অাজব তো এখন কিসের ঘুম কিছুক্ষণ পরে ফজরের আজান দিবে। নামাজ পড়ে নাস্তা করে কাজে যাবেন এখন আর ঘুমাতে হবে না।
>>কি আর করা নামাজ পড়ে কাজে যেতে হবে।
কিন্তু না নুসরাত প্রায় সময় এমন করে যা আমার কাছে অসহ্য লাগে।
পরিবারের কাছে বললেও লাভ হবে না কারণ নুসরাত সবার সাথে ভালো
কোনো ঝগড়াও করে না। আমি যদি বলি কোনো লাভ হবে না তাই কিছু
বলিও না।এভাবে আমি সবসময় বউয়ের প্যারা থাকি।
একদিন সকালে কাজে যাওয়ার সময় নুসরাত আমার থেকে ১ হাজার টাকা নেয়। আমিও চাওয়া মাত্র টাকা দিয়ে দিয়। আমি মনে করছি সে কিছু কেনাকাটা করবে।কিন্তু ৩দিন হয়ে গেলো ঘরে তেমন নতুন জিনিশ দেখলাম না।অথচ ছোটবোন রিতুর সাথে একসাথে বাজারে গেছে।তাহলে বাজারে গেলো কেনো এটা নিয়ে ব্রিজ এর উপরে বসে বসে চিন্তা করি নুসরাত টাকা গুলো দিয়ে কি করলো। এমন সময় রহিম চাচা ছেলে মাদ্রাসা থেকে আসতেছে। আমাকে দেখায় মাত্র বলে??
__আসসালামু_আলাইকুম ভাইয়া কেমন আছেন?
__ওয়ালাকুমসালাম হ্যাঁ ভালো আর তুমি কেমন আছো?
__হ্যাঁ ভাইয়া ভালো, পাঞ্জাবী টা আজকে গায়ে দিলাম?
__হ্যাঁ সুন্দর কে কিনে দিলো তোমাকে?
__কেনো ভাইয়া আপনে এনা কিনে দিলেন,আমাকে মা বলছে।ভাইয়া আমার পাঞ্জাবী টা অনেক পুরাতোন হয়ে গেছে আপনে আমাকে পাঞ্জাবী টা কিনে দেওয়াতে অনেক খুশি হইছি।আপনার জন্য আমি নামাজ পড়ে দোয়া করবো।
বুঝতে আর দেরি হলো না আমায় যে পাঞ্জবী টা কে কিনে দিলো রহিম চাচার ছেলেকে। আর সে কেও না সে মেয়েটা হলো আমার বউ নুসরাত। আমিযে এতোদিন প্যারা ছিলাম তা আসলে প্যারা না এটা হলো নুসরাত এর ভালোবাসা যা আমি বুঝতে পারি নাই। যে মেয়ে গরীব অসহায়কে ভালোবাসতে জানে সে মেয়েকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়? যে কোনোদিন আমার পরিবারকে সে কষ্ট দিবে না সবসময় সবাইকে ভালোবেসে যাবে। এখন নুসরাত রাতে চাঁদ,জ্যোস্না, বৃষ্টিতে ভিজা এগুলো আমার কাছে প্যারা মনে হয় না সব ভালোবাসা মনে হয়!!
__আমার লেখাটুকু কাল্পনিক তবে নুসরাত এর মতো অনেক মেয়ে আছে যারা গরীব অসহায় মানুষকে ভালোবাসে।
_সমাপ্ত_
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com