এ স্ট্রেজ ম্যান । পর্ব-০৩
আয়নায় তাকাচ্ছেনা এলেক্স। তার বিশ্বাস সেই বিভৎস চেহারার অধিকারী লোকটা এখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।
এসময় মনে হলো এলেক্সের, “এটা কি আমার ভুল হতে পারেনা? হয়তো মাথায় চোট লাগার কারণে এমন আবোল তাবোল দেখছি। হতে পারেনা কি?”
এই ভেবে আস্তে আস্তে চোখ থেকে দু’হাত সরাতে লাগলো ও। ধীরে ধীরে দৃষ্টি ফেলল আয়নায়।
স্বস্থির শ্বাস ফেলল এলেক্স। আয়নায় নেই কেউ এবার। ঠিকই ভেবেছিলো ও, ওর মনের ভুল ছিলো।
আয়নায় তাকালো ভালো করে। হুম! কারো প্রতিবিম্ব নেই,
নিশ্চিন্ত হলো এলেক্স। এবার চমকে উঠলো ও। এটা কীভাবে সম্ভব?
আয়নায় তার নিজের প্রতিবিম্বটাও দেখলোনা ও। আবার তাকালো। হ্যাঁ নিজের প্রতিবিম্বটাও নেই আয়নায়।
আয়নায় তাকিয়ে নিজের অস্তিত্ব খুঁজতে লাগলো। কিন্তু তার প্রতিবিম্ব নেই। হঠাৎ কারো প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠলো আবার। আচমকা কারো ছবি আয়নায় দেখে ভড়কে গেলো এলেক্স।
কিন্তু এবার আর তেমন ভয় পেলোনা ও। কারণ এবারের লোকটা সাধারণ মানুষের মতো দেখতে। চোখ বন্ধ করে আছে সে। এলেক্স তার সামনে হাত নাড়ালো। লোকটা চোখ খুলল, রক্তাত্ব চোখ তার। চোখগুলো আস্তে আস্তে স্বাভাবিক রূপ ধারণ করলো।
অবাক হলো এই ভেবে যে, কিছুক্ষণ আগে আসা ভৌতিক লোকটা আর এই লোককে দেখতে একই রকম। মনে হচ্ছে এই যেন মুখ ধুয়ে আসলো।
সাদা কাপড়ে জড়ানো লোকটা এলেক্স এর দিকে তাকিয়ে বলল,
— ফেব্রিয়ান এলেক্স।
ভ্রু কুঁচকে তাকালো এলেক্স,
— কে আপনি? আর আমার নাম জানলেন কীভাবে?
— কে আপনি? আর আমার নাম জানলেন কীভাবে?
আয়নার লোকটা হাসলো,
— আমার নাম জিয়ানো জিয়ান। তোমার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে আমার।
— আমার নাম জিয়ানো জিয়ান। তোমার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে আমার।
— আমায় চেনেন কি করে? আমায় আগে এটা বলুন।
— তোমার বাবা এডাম আর আমি ৩০ বছর ধরে একসাথে আছি। সেদিন তোমার বাবার মৃত্যুতে আমি অনেক শোকাহত।
চুপ রইল এলেক্স।
— তুমি তো জানো তোমার স্ট্রেঞ্জ পাওয়ার এর ব্যাপারে তাইনা?
মাথা নাড়লো এলেক্স।
— কিন্তু এটা জানোনা যে তোমার এই শক্তি কতটা শক্তিশালী।
তুমি এই শক্তি দিয়ে ডেস্ট্রয়ার ডেভিলকে হাড়াতে পারবে।
তুমি এই শক্তি দিয়ে ডেস্ট্রয়ার ডেভিলকে হাড়াতে পারবে।
মুখ কুঁচকে বলল এলেক্স,
— ডেস্ট্রয়ার ডেভিল! এটা কে?
— ডেস্ট্রয়ার ডেভিল! এটা কে?
— একজন ধ্বংসকারী শয়তান। যে ধ্বংস করেছে আমার পৃথিবীকে। আরো অনেককে ধ্বংস করেছে সে। তাকে তোমায় ধ্বংস করতে হবে।
— আপনার পৃথিবী মানে? ___বলেই হা হা করে হাসতে লাগলো এলেক্স। তার কাছে এটা রূপকথার গল্প ছাড়া আর কিছুই মনে হলোনা।
জিয়ান বিস্ময়ভাবে তাকালো এলেক্স এর দিকে। এলেক্স কি বুঝতে পারছেনা সে কী বলছে?
— এলেক্স বোঝার চেষ্টা করো তুমি একজন স্ট্রেঞ্জ বয়। আর তোমায় এসব বিশ্বাস করতে হবে।
চেঁচিয়ে উঠলো এলেক্স,
— হ্যাঁ আমি জানি আমি একজন স্ট্রেঞ্জ ম্যান। বাট কেন আমার এই স্ট্রেঞ্জ পাওয়ার? কেন আমি এই শক্তি পেয়েছি? কীভাবে পেয়েছি? বলুন তো আমাকে!
— হ্যাঁ আমি জানি আমি একজন স্ট্রেঞ্জ ম্যান। বাট কেন আমার এই স্ট্রেঞ্জ পাওয়ার? কেন আমি এই শক্তি পেয়েছি? কীভাবে পেয়েছি? বলুন তো আমাকে!
আর আমি এটা কীভাবে বিশ্বাস করবো যে আপনার পৃথিবী আলাদা। আর আপনি এই আয়নায় কী করছেন? কোন কালো জাদু নয়তো?
অহ মাই গড।
অহ মাই গড।
আমি বুঝতে দেড়ি করে ফেললাম নাকি! আপনি আবার আমার বাবাকে হত্যাকারী সেই লোকগুলোর কেউ নন তো? কারণ আপনার কিছুক্ষণ আগের চেহারা ঠিক ওই লোকগুলোর মতন ছিলো।
জিয়ান অবাক চোখে এলেক্স এর দিকে তাকালো।
এলেক্স আবার বলল,
— আপনারাই আমার বাবাকে হত্যা করেছেন, আপনাকে আমি ছাড়বোনা।
এই বলে আশেপাশে কিছু খুঁজতে লাগলো ও।
— এলেক্স পাগলামী করোনা। বোঝার চেষ্টা করো।
এলেক্স কোন কথাই শুনছেনা। কিছুটা দূরে একটা বড় ফুলদানী দেখতে পেলো।
সেটা হাতে নিয়ে এসে সোজা আয়নায় আঘাত করলো সজ্বরে।
সেটা হাতে নিয়ে এসে সোজা আয়নায় আঘাত করলো সজ্বরে।
আয়না ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেলো। কাঁচ গুলো পরে গেলো চুরচুর করে। জিয়ান মিশে গেলো আয়না থেকে।
এলেক্স বসে পরলো। বাবা এডামের হত্যাকারী একজন সে শাস্তি দিলো বলে মনে করলো ও। আরো বাকি আছে, তাদেরও সে এভাবে শাস্তি দিতে চায় সে।
গলা শুকিয়ে আছে এলেক্সের। রুম থেকে উঠে আবার কিচেনে গেলো ও। এবারও গিয়ে ফ্রিজে হাত দিলো। কোনকিছু না ভেবেই ফ্রিজ খুলে ফেলল ও।
.
ফ্রিজ খুলতেই অবাক হলো এলেক্স।
তেমন কোনকিছুই নেই সেখানে। কিন্তু পুরো ফ্রিজ ভর্তি ছোট বাটিতে করে লাল বর্ণ ধারণ করা কিছু তরল পদার্থ রাখা আছে।
তেমন কোনকিছুই নেই সেখানে। কিন্তু পুরো ফ্রিজ ভর্তি ছোট বাটিতে করে লাল বর্ণ ধারণ করা কিছু তরল পদার্থ রাখা আছে।
ভাবলো এলেক্স ‘কি ব্যাপার! মেয়েটা ফ্রিজে পানি না খাবার না রেখে এই তরল পদার্থ কেন রেখেছে? আর এসব কোন তরল।
একটা বাটি বের করল ও। ভেতরে তাকালো ভালো করে। নাহ বুঝতে পারলোনা কি তরল এগুলা। অনেকটা রক্তের মতো দেখতে। বাট একজন নারীর বাসায় রক্ত থাকবে কেন তার উত্তর পাচ্ছেনা এলেক্স।
এদিকে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে তার। কিন্তু পানি নেই, কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা এলেক্স।
বাধ্য হয়ে আবার এক বাটি তরল বের করলো ও। ভাবতে লাগলো ‘যেহেতু ফ্রিজে রাখা হয়েছে সেহেতু পান করার জন্য উপযুক্ত হবে।’
এই ভেবে বাটিতে আলতোভাবে ঠোঁট লাগিয়ে একটা চুমুক দিলো এলেক্স।
মুখ অবধি পৌঁছতেই নোনতা স্বাদ অনুভব করলো ও। আর মুখে রাখতে পারলোনা সেই তরল। সাথে সাথেই বমি করে দিলো ও।
♦ছয়♦
.
‘এ কি পান করলাম আমি! রক্ত পান করলাম আমি। এগুলো তাহলে রক্ত। পুরো ফ্রিজে রক্ত রাখা শুধু। এজন্যেই জুলি তখন আমায় ফ্রিজ খুলতে দেয়নি। কারণ ও জানতো আমি এটা খুললেই সে ধরা পরে যাবে। কিন্তু রক্ত দিয়ে কী করে ও?
♦ছয়♦
.
‘এ কি পান করলাম আমি! রক্ত পান করলাম আমি। এগুলো তাহলে রক্ত। পুরো ফ্রিজে রক্ত রাখা শুধু। এজন্যেই জুলি তখন আমায় ফ্রিজ খুলতে দেয়নি। কারণ ও জানতো আমি এটা খুললেই সে ধরা পরে যাবে। কিন্তু রক্ত দিয়ে কী করে ও?
জুলি আবার রক্তচোষা নয়তো? আর আমার রক্ত খাওয়ার জন্যেই সে আমাকে এখানে আশ্রয় দেয়নি তো? না না! এ কীভাবে সম্ভব। তারমানে জুলি এক রক্তচোষা ডাইনি। আমি ওর প্রেমেই পড়েছিলাম।’
ঘৃণা জমাট বাধলো এলেক্সের হৃদয়ে জুলির জন্য।
ভাবলো সে এখানে আর থাকবেনা। কখন ওই ডাইনি তাকেও আক্রমণ করবে কোন ধারণা নেই।
ভাবলো সে এখানে আর থাকবেনা। কখন ওই ডাইনি তাকেও আক্রমণ করবে কোন ধারণা নেই।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। বাসা থেকে বের হয়ে পালাতে লাগলো এলেক্স।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে পালিয়ে যেতে হবে। যেন জুলি তাকে আবার না দেখে ফেলে।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে পালিয়ে যেতে হবে। যেন জুলি তাকে আবার না দেখে ফেলে।
তাকে অন্য কোন জায়গায় অবস্থান করতে হবে। যেখানে তাকে কেউ এলেক্স বলে চিনবেনা।
সে তার নতুন পরিচয় নিয়ে বাঁচবে।
দৌড়তে দৌড়তে এক পার্কে গিয়ে থামলো এলেক্স।। হাপিয়ে গেছে ও। আর দৌড়ানোর শক্তিটুকু নেই ওর শরীরে।
দৌড়তে দৌড়তে এক পার্কে গিয়ে থামলো এলেক্স।। হাপিয়ে গেছে ও। আর দৌড়ানোর শক্তিটুকু নেই ওর শরীরে।
একটা গাছের নিচে হাটু ঘেরে বসলো ও। নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে ওর। হাত দুটো জ্বালা করছে ওর। নিজের দু’হাতের দিকে তাকালো এলেক্স। আবছা নীল রং সেকেন্ড দু’য়েক পরপর ঝিলিক মেরে উঠছে। আর এর কারণেই ওর হাত দু’টো তার জ্বালা করছে।
নিজের এই অদ্ভুত শক্তির প্রতি তার রাগ হচ্ছে প্রচণ্ড। যেন এই শক্তি তাকে বাচঁতে দিচ্ছেনা।
হাতগুলো ধীরেধীরে আবছা থেকে গাড়ো নীলে পরিণত হচ্ছে। এলেক্স বুঝতে পারছে ওর চোখ দু’টোও নীল হচ্ছে। কারণ চোখদুটোও ইতোমধ্যে জ্বালা করা শুরু করে দিয়েছে।
বুঝতে পারছেনা কী করবে সে এখন। তার চোখে ঘুমও আসছেনা আর তার বাবাতো আর বেচেঁ নেই। তাহলে সে এখন কীভাবে শান্ত হবে?
নিজেকে তো আর কন্ট্রোল করতে পারছেনা ও।
নিজেকে সামলাতে না পেরে নিজের দু’হাত প্রসারিত করে ধরলো সামনের দিকে। চোখ বুজলো ও। যেন এই চোখ বেড়িয়ে আসতে চাইছে তার স্থান থেকে ।
আরো বেশি জ্বালাতন শুরু হলো ওর চোখ আর হাতে। সহ্য করতে না পেরে এবার চিৎকার করলো স্বজরে। হাতের নীল আলোগুলো তরিৎ বেগে বেড়িয়ে দ্রুত এগিয়ে চলল সামনে। চোখগুলো ওর নীল আভায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
কয়েক সেকেন্ডের মাথায় এলেক্স আর কন্ট্রোল করতে পারলোনা নিজেকে। সেন্স হাড়িয়ে ফেলল নিজের।
খানিকবাদেই সেখানে উপস্থিত হলো জুলি। গাছের নিচে পরে আছে এলেক্স। জায়গাটা জুলির খুব পরিচিত। প্রায় আসে সে এখানে। কিন্তু আজ অনেক অপরিচিত লাগছে তার কাছে এই জায়গা । কারণ এলেক্স যেই গাছে হেলান দিয়ে অজ্ঞান হয়ে আছে তার সামনে সরাসরি আরো বিষটা নাগাদ মোটা গাছ ছিলো সারিবদ্ধভাবে।
খানিকবাদেই সেখানে উপস্থিত হলো জুলি। গাছের নিচে পরে আছে এলেক্স। জায়গাটা জুলির খুব পরিচিত। প্রায় আসে সে এখানে। কিন্তু আজ অনেক অপরিচিত লাগছে তার কাছে এই জায়গা । কারণ এলেক্স যেই গাছে হেলান দিয়ে অজ্ঞান হয়ে আছে তার সামনে সরাসরি আরো বিষটা নাগাদ মোটা গাছ ছিলো সারিবদ্ধভাবে।
কিন্তু এখন ওই গাছগুলোর কোন অস্তিত্বই দেখতে পাচ্ছেনা জুলি। শুধু গাছগুলোর জায়গায় ঠিক নিচে পরে আছে কালো ছাই।
মানুষজন অনেক অবাক হয়ে আছে পার্কের এই অবস্থা দেখে। এলেক্সকে কেউ সন্দেহ করার আগেই জুলি ওকে নিয়ে ফিরে আসলো নিজের বাসায়।
.
.
পরবর্তী পর্বে...
.
.
পরবর্তী পর্বে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com