Breaking News

গল্পঃ বেষ্ট ফ্রেন্ড । নিয়ান আহমেদ

গায়ে লাল টুকটুকে বেনারসি, গাঁ ভরতি গয়না, দুই হাত দিয়ে শাড়িটা উচু করে মাঝ রাস্তা দিয়ে হাটছে দিয়া(গল্পের নায়িকা)
হাটছে বললে ভুল হবে একরকম দৌড়াচ্ছে।
আশেপাশের লোকজন সবাই দিয়াকে দেখে বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করে যাচ্ছে। এমনকি কয়কেজন লোক আবার দিয়ার পিছুও ছুটছে।
দিয়ার গাঁ ভরতি সর্ণ দেখে বদ লোক গুলা লোভ সামলাতে পারল না।
হুট করে দিয়া সামনের একটা সিএনজিতে
উঠে পড়ল ।

দিয়া: মামা রেলওয়ে স্টেশন যান ।
ড্রাইভার: আপা আমি যামু না, আপনারে দেইখ্যা মনে হইতেছে বিয়ে থাইকা পালাই আইছেন ।
মাফ চাই আপা, আমি কোনো ঝামেলায় পড়তে চাই না ।
নামেন আপা আপনি ।
দিয়া: আরে বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছি তো আমি?
আপনার কি সমস্যা?
ড্রাইভার দিয়ার গাঁ ভর্তি গয়নার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে দাঁত ৩২টা বের করে একটা হাসি দিয়ে বলল,

-- আপা একশ টাকা বাড়াইয়া দিয়েন ।
দিয়া: হুম বুঝতে পারছি! তাড়াতাড়ি যান।
রেলওয়ে স্টেশন পৌঁছে দিয়া পড়ল আরেক ঝামেলায়।
দিয়া সাথে করে একটা টাকাও আনে নাই।
ড্রাইভার: কি হইল আপা? ভাড়াটা দেন আমার তাড়া আছে।
দিয়া: মামা শুনেন! আমি বাড়ি থেকে টাকা সাথে করে আনি নাই।
আপনি পিল্জ ৫টা মিনিট অপেক্ষা করেন,
আমার বর আসছে,

অ আসলে আমি আপনাকে ২শ টাকা বাড়িয়ে দিব।
ড্রাইভার: না আপা আমার তাড়া আছে।
ড্রাইভার দিয়ার গাঁয়ের সর্ণের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে বলল,
-- আপা আপনি কিছু একটা দেন। আমি চলে যাব।
দিয়া: হুম বুঝতে পারছি।
বলেই দিয়া নাক থেকে নিজের নাকফুলটা খুলে দিয়ে বলল
দিয়া: নিন, এটা আপনার ভাড়ার থেকে কয়েকগুন বেশি আছে।
সিএনজি ড্রাইভার নাকফুলটা পেয়ে আর দাঁড়াল না,
একটান দিয়ে চলে গেল ।

দিয়া প্লাটফর্মে এসে নিয়ানকে(গল্পের নায়ক) খুজতে লাগল ।
কিন্তু সারা প্লাটফর্ম খুজেও দিয়া নিয়াকে কোথাও পেল না ।
এত ভারী বেনারশি ধরে হাটতে হাটতে দিয়া একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়ল ।
প্লাটফর্মের একটা কোনায় এসে বসল দিয়া ।
চারদিকের লোকগুলা দিয়ার দিকে অবাক চোখে ঢেব ঢেব করে তাকাচ্ছে ।
দিয়ার অনেক অস্বস্তিবুধ হচ্ছে ।
দিয়া মনে মনে বলছে,
জীবনে মেয়ে মানুষ দেখে নাই নাকি?
পরক্ষণেই দিয়া আবার ভাবল,
আমি যে রকম বউ সেজে আসছি মানুষের আমার দিকে তাকানোটাই স্বাভাবিক ।
এদিকে নিয়ানের আসার কোনো নাম গন্ধই নেই ।
দিয়া মনে মনে নিয়ানের চোদ্দ গোষ্ঠী ঝারছে ।
দিয়া: কার চোদ্দ গোষ্ঠীকে গালি দিচ্ছি গুরে ফিরে তো আমার উপরই লাগে(মনে মনে)
ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে সাথে মোবাইলটাও আনে নাই দিয়া ।
দিয়া: এখন কি করি আমি?
প্লাটফর্মের একটা দোকানে গিয়ে মোবাইল চাওতেই দিয়ে দিল ।
ফ্রিতে না ! প্রতি মিনিটে ৫টাকার একটা শর্ত জুড়ে দিল দোকানদার ।
দিয়া এই পর্যন্ত তিনবার ফোন দিয়ে দিল । কিন্তু ওপাশ থেকে নিয়ান ফোন ধরছে না ।
চতুর্থ বার রিং বাজার সাথে সাথেই ফোন ধরল নিয়ান ।
দিয়া: এই কুত্তা বিলাই গন্ডার সজারো কই তুই?😡
নিয়ান: কেন? আমি বিয়ের আসরে । আর তুমি এত রেগে আছ বউ?😜
দিয়া: কুত্তা তুই বিয়ের আসরে কি করছিস?🤬
নিয়ান: তোমার জন্য অপেক্ষা করতেছি, আর খুশির ঠেলায় নাচতেছি😁
দিয়া: কুত্তা তুই যদি এখন আমার সামনে হতি তাহলে তকে
আমি কাঁচা চিবিয়ে খেতাম ।😡
তুই কার জন্য বিয়ের আসরে অপেক্ষা করে বসে আছিস
কুত্তা? আমার ভূত এসে তকে বিয়ে করবে নাকি?😡
নিয়ান: তারমানে কি রাক্ষসী তুই পালিয়ে গেছিস?
দিয়া: কুত্তা আমি একঘন্টা ধরে বসে আছি রেলওয়ে
স্টেশন ।😡
নিয়ান: কিইই?? তুই আমাকে না নিয়েই চলে গেলি?
দিয়া: তকে কি আমি খুলে করে নিয়ে আসব নাকি? তর
হাত পা নাই তুই আসতে পারলি না?
সালা নাচতে নাচতে বিয়ের আসরে চলে গেলি ।😡
এখন ওদের হাত থেকে কিভাবে ছুটে আসবি?
কি হবে এখন?😰
নিয়ান: শুন দিয়া ! তরে আমি একটা বুদ্ধি দেই । তুই বরং
চলে যা । আমি এখানেই থাকি😁
তকে না পেয়ে বিয়েটাও বন্ধ হয়ে যাবে, আর এদিকে
আমিও ফ্যামিলির বাশ থেকে বেছে যাব ।
সব দোষ তর উপর চাপিয়ে দিব😜
আমি কিছুক্ষণ বউ পালিয়ে যাওয়ার দুঃখে ন্যাকা
কান্না করে সবার চোখে ভাল মানুষ সেজে যাব
কি বলিস?

দিয়া: সালা কুত্তা আমি এদিকে মানুষের ভিড়ে মরছি
আর তুই ওদিকে মজা নিচ্ছিস
তুই যদি ৫মিনিট এর মধ্যে স্টেশন না আসিস ।
তাহলে আমি কিন্তু আবার বাড়ি ফিরে আসব ।
পরে দুজনকে ধরে বিয়ে দিবে তখন ভাল হবে ।
নিয়ান: নারে বোন এইকাম করিস না তুই ৫মিনিট দাঁড়া
আমি ২০মিনিটের মধ্যে আসতেছি ।


# চলবে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com