Breaking News

গল্প: এক টুকরো বিশ্বাস || পর্ব:০৩

হঠাৎ করে আবির আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজে দেয় আর বলে 
আবির:আজ তিনটি বছরের অপেক্ষার পর আমি তোমাকে পেয়েছি ।আমার ভালোবাসা কে ।এখন আর কোথাও যেতে পারবে না ।
আমি আবির কে ধাক্কা দিয়ে বলি 
আমি: এইসব কি?? আমার ছবি গুলো এইখানে কি করে আসল ??
আবির আমার দিকে তাকিয়ে একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে 
আবির:হুমম বলছি ।সব বলছি ।তোমাকে বিয়ে করার কারণ সব বলছি ।
আবির বলতে শুরু করল।
আবির :যখন প্রথম তোমায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখেছিলাম তোমার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম ।আমি তোমার সিনিয়র ছিলাম ।প্রেম বললে ভুল হবে তোমার ভালোবাসায় ।প্রতিদিন আমার দিন শুরু হত তোমাকে দিয়ে আর শেষ হত তোমাকে দিয়েই ।তোমার ফ্রেন্ডের কাছে জানতে পারি তোমার নাম মায়া ।জানো আমি দ্বিতীয় বার তোমার প্রেমে   কীভাবে পরি ?আমি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম তখন দেখি তুমি একটা বৃদ্ধকে নিজের হাতে খাবার খাইয়ে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসেছিলে । ঠিক তুমি তোমার নামের মতই ।এক বছর পর ঠিক করলাম তোমাকে আমার মনের কথা বলব কিন্তু  রাস্তায় তোমার কথা ভাবতে ভাবতে বেখেয়ালিতে একটা গাড়ির সাথে আমার বাইকের এক্সিডেন্ট হয় ।চার দিন পর্যন্ত হসপিটালে ছিলাম।আসার পর তোমার খোঁজ নিয়ে জানলাম তোমার বিয়ে হয়ে গেছে ।এই কথা শুনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না ।সব ধরনের নেশা করতাম ।কিন্তু সব নেশাই দিন শেষে কেটে যেত কিন্তু তোমার নেশাটাই ছিল প্রখর ।তোমাকে ভুলার জন্য অনেক মেয়ের সাথে শারিরিক সম্পর্ক ও করেছি কিন্তু দিন শেষে তোমার ই কথা মনে পড়ত ।এক ধরনের মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছিলাম ।
আমি:তাহলে কি রাশেদ আর ছায়ার কথা টাকি একটা ষড়যন্ত্র ছিল ।আমাকে পাওয়ার ?? 
আবির রাগ হয়ে আমার দুই হাত চেপে ধরে বলল 
আবির:আমি আর যাই করি তোমার এত বড় ক্ষতি কখনো করবো না ।
আমি:আবির আমার লাগছে!! 
আবির আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলে 
আবির:মায়া, i am sorry ,i am very sorry ।জানো রাগ হলে আমার কোন কিছুই মাথায় থাকে না ।আমি তোমাকে ব্যথা দিতে চাই নি।
আমি :তারপর ?? তারপর কি হলো ?? 
আবির:আমি জানতে পারি তোমারা দুই বোন ।আর দেরি না করে আমি ছায়ার জন্য প্রস্তাব পাঠাই ।কারণ ছায়া তো তোমার বোন কিছু হলে ও তোমার একটু আবাস ওর মধ্যে আছে ।আর ওর সাথে থাকলে তোমাকে ও কাছের থেকে দেখতে পারব ।কিন্তু আস্তে আস্তে জানতে পারলাম রাশেদ এর কথা ।মনে হচ্ছিল তখনই  ওকে মেরে ফেলি ।কিন্তু আমি একটা প্লান করি ।তোমার বোন ও কম কামুক ছিল না ।বিয়ের আগেই  যখন ও আমার ক্লোজ হওয়ার চেষ্টা করেছে তখনই বুঝতে পেরেছি ।খবর নিলাম রাশেদ একটা হোটেলে উঠছে ।একটা মেয়ে কে নিয়ে ।আমি ও ছায়া  কে নিয়ে ওই হোটেলে উঠি ।দ্বিগুন টাকা দিয়ে আমি রাশেদ এর সাথে আসা মেয়ে টাকে বিদায় করে দেই ।আর রাশেদ যেই পাব এ গেছে ছায়া কে ও ওইখানে ই নিয়ে যাই ।আমরা কথা বলি ।আমি এমন বাহানা করি যে আমির অনেক কাজ এখনই যেতে হবে ।ছায়া আর রাশেদ কে রেখে চলে আসি ।দুই রুমে ই হোটেল স্টাফ দিয়ে ভিডিও ক্যামেরা সেট করি ।একটাই ভয় ছিল যে ওরা যদি কিছু না করে ।কিন্তু সব কিছু আমার প্লান মত হয়েছে ।আর বাকিটা তুমি জানো ।
আবিরের কথা শুনে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।আমি মনে মনে ভাবছি আবির আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে ।এর জন্য  এটা ওর সাজানো নাটক না তো ।ও আমাকে মিথ্যা বলছে নাতো ।এমন ও তো হতে পারে মায়া আর রাশেদ কিছু করে নেই ।হে আল্লাহ্ আমি এখন কি করব ।এরই মধ্যে দেখি আবির আমার গলায় এক এক টা ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে যাচ্ছে ।আবির আমার ঠোঁটের কাছে আসলে ই আমি আবিরকে থামিয়ে দেই ।আর বলি 
আমি:আবির আমি এইসব নিতে পারছি না ।আমার কিছু সময় লাগবে ।
আবির :কিছু কেন যত সময় নেওয়ার নাও এখন তো তুমি আমার খাঁচায় বন্দী ।চাইলে ও যেতে পারবে না ।
এই কথা বলে আবির আমাকে কোলে করে নিয়ে খাটে শুয়ে দেখে ।আমার কপালে চুমু দিয়ে তনয়া কে বুকে নিয়ে আমার হাত শক্ত করে ধরে শুয়ে পড়ে ।ঘুমিয়ে পড়লে আবির কে একবারে বাচ্চা বাচ্চা লাগে ।সকালে ঘুম থেকে উঠে ওযু করে নামায পরি ।নামায পড়া শেষ হলে দেখি আবির আমার পিছনে দাড়িয়ে নামায পড়ছে ।আবিরের নামায পড়া শেষ হলে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে শুয়ে পড়ে ।আমি আবিরের এই কান্ড দেখে বরফ হয়ে দাঁড়িয়ে যাই ।কিছুক্ষণ পর নিচে নেমে নাস্তা বানাই ।আমার শাশুড়ি উঠে আমাকে রান্নাঘরে দেখে বলে এই তোমাকে কি আমি কাজের মহিলার কাজ করানোর জন্য আনসি ।তুমি শুধু আমার ছেলের খেয়াল রাখবা ।কালকে রাতেই তো ওর কাছে সব শুনছ ।
আমি :মা আপনি সব জানেন ।?? 
শাশুড়ি:আমির ছেলে আর আমি জানব না ।তাই তো আর ওকে বাধা দেই নি তোমাকে বিয়ে করতে ।বউমা আমার একটা কথা শুন ।দেখ তনয়া কে আমি আমার নিজের নাতনির মত ই দেখব ।কিন্তু আমার একটা কথা রাখতে হবে।
আমি:কি কথা মা?? 
শাশুড়ি:তনয়ার জন্ম নিবন্ধন এ বাবার  নামের জায়গায় আবিরের নাম লিখবে ।আর তোমার অতীত যেন আর না আসে ।এই টা মনে রাখবে ।
আবিরের মা মনে মনে ভাবতে থাকে মায়া কে সব বলা ঠিক হবে কি ।যদি ও চলে যায় ।না না ।মা হয়ে ছেলের ক্ষতি করতে পারব না ।মায়ার কথায় আবিরের মার ধ্যান ভাঙল ।
আমি:যি মা ।
শাশুড়ি:আমার ছেলে তোমার জন্য  কম কষ্ট করে নাই ।তাই ওকে এখন তুমি কষ্ট দিও না। 
আমি :না মা ।দিব না ।আমি আমার সব কিছু দিয়ে এই পরিবার কে আগলে রাখব ।
আমার কথা শুনে আবিরের মা খুশি হয়েছেন ।
সবাই উঠে গেছে তনয়া ও ।আমার শাশুড়িমা তনয়া কে কোনে করে খেলছেন ।আর আবির নাস্তা করছে ।
শাশুড়ি:আবির তুই মায়া কে ওর বাবা রাড়িতে আজ দিয়ে আসবি আর আসার সময় নিয়ে যাবি ।
আবির :না ।ওরা কোথাও যাবে না ।এইখানে ই থাকবে ।
শাশুড়ি :আরে বিয়ের পর মেয়েদের যেতে হয় এইটাই নিয়ম ।
আবির:আমি মানি না ।ওরা কোথা ও যাবে না ।
এই কথা বলে আবির অফিস এ চলে গেল ।আমি অবাক হয়ে আবির কথা গুলো শুনছিলাম ।আর মনে মনে বলছিলাম সাইকো একটা ।তখন ই আমির ফোনে ম্যাসেজ আসে 
হ্যাঁ আমি সাইকো শুধু তোমার ভালোবাসার ।
আবিরের ম্যাসেজ দেখে অবাক হয়ে বললাম 
উনি কীভাবে বুঝলেন ? ।

কয়েকমাস কেটে যায়, আমাদের সংসার ভালোই কাটে ।আস্তে আস্তে আমি ও আবিরের ভালোবাসার জালে আটকা পড়ছি ।তনয়া প্রথমে বাবা ডাক শিখেছে ।আবির কে আর আমার শাশুড়ি মাকে ছাড়া কিছু বোঝে না ।শুনেছি ছায়া নাকি বাবা মা কে না জানিয়ে বিয়ে করছে ।আর রাশেদ তো আমাদের ডিবোস হওয়ার পর ই তার অফিসের সেক্রেটারি কে বিয়ে করেছে ।কিন্তু উই সেক্রেটারি ভুলিয়ে ভালিয়ে সব টাকা আর সম্পত্তি নিজের নামে করে রাশেদ আর তার মা কে বেড় করে দিয়েছে ।প্রকৃতি কি আজব ।আমার কিছু বলা বা করার প্রয়োজন পড়ে নি ।নিজেই প্রতিশোধ নিয়েছে ।আমাদের সংসার ভালোই কাটে ।আমার শাশুড়ি তনয়া কে নিয়ে পার্কে গেছে আর আবির অফিসে ।হঠাৎ দরজায় কলিং বেল বেজে উঠল ।খুলে দেখলাম রাশেদ দাড়িয়ে আছে ,,,,,,,,,,,,,,,,

চলবে 

আরে আবির কে খারাপ বানাবো কেন ।সবাই যদি খারাপ হয় তাহলে ভালো হবে কে ।কিন্তু রহস্য ফাঁস হয় নি পুরো ।কেউ কোন সার্থ ছাড়া কিছু করে না।
ভাবছি sad ending দিব 
এইটা আমার প্রথম গল্প লেখা ভুল এর জন্য sorry😊

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com