Breaking News

গল্প: এক টুকরো বিশ্বাস || পর্ব:০৫

আমি আর কিছু না বলে রিপোট নিয়ে চলে আসি ।বাসায় আসার পর আমার মধ্যে নানান চিন্তা ঘুরছে ।এরই মধ্যে আমার শাশুড়ি এসে আমাকে বলে 
শাশুড়ি:সত্য কোন দিন লুকানো থাকে না এক না ।এক দিন  এই সত্য সবার সামনে চলে ই আসে ।
আমি শুধু পাথর হয়ে তার কথা শুনছি ।
আমি বললাম 
আমি :তাহলে কি সব অভিনয় ছিল ??
শাশুড়ি:না মা ।তোমার মনে আছে আবির বলেছিল যেই  দিন তোমার সাথে দেখা করতে যাবে ওই দিন আবিরের এক্সিডেন্ট হয় ।
আমি মাথা নাড়িয়ে  সম্মতি দেই ।তারপর বলে
শাশুড়ি:আবিরের যখন এক্সিডেন্ট হয় তখন ওর  ওই ক্ষতের কারণে বাবা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।
আমি:আবির কি জানত?
শাশুড়ি:না ।আবির কিছু জানে না ।ওকে জানতে দেই নি ।জানতে পারলে আমার ছেলে লাশ হয়ে যাবে।
আমি কিছুক্ষণ নিজেকে রুমে বন্দি রাখি ।আবির কে আমি আগে থেকেই ভালোবাসতাম কিন্তু আজ কেন জানি ওর প্রতি অনেক মায়া কাজ করছে ।মন করছে দুই বাহু ধরে আঁকড়ে রাখি ।রাতে আবির বাসায় আসে। বাসায় আসার পর তনয়া র সাথে খেলে ।এরপর খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে ।আমি ও যখন শুতে যাই তখন আবির রিপোট এর কথা জিজ্ঞেস করে আমি বলি 
আমি: একটু শরীর খারাপ এই আর কি ।আবির এক টা কথা বলার ছিল।
আবির :কী বল?
আমি:আবির ডাক্তারের রিপটে বলা আমি  কখনো আর মা হতে পারব না ।
আবির আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলে
আবির:অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়।
আবিরের এমন ব্যবহার দেখে আমি অবাক হয়ে যাই ।

পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আবির চলে গেছে ।ধীরে ধীরে আবির আমাকে অবহেলা করতে শুরু করল ।তনয়া কে ও আগের মত আদর করে না ।একটু কিছু হলে ই রাগা রাগি করে ।আজকে তো আবির তনয়া কে ঠাপ্পর ও মারে ।এই দেখে আমি আবিরকে বলি 
আমি:মুখ খুলে বললেই তো পারো তোমার জীবন থেকে চলে যেতে ।আমি চলে যাব ।এরকম ব্যবহার আমি সহ্য করতে পারছি না ।এখানে তনয়ার কি দোষ ।
আবির কিছু না বলে চলে যায় আর আমার শাশুড়ি মা আমাকে বুকে নিয়ে বলে কাদিস না মা ।জানতাম না মানুষ এত সার্থপর হয় ।দিন শেষে ভালোবাসার মানুষটা এমন ভাবে বদলে যায় ।

তিন দিন আবিরের কোন খোঁজ খবর নেই ।আবিরের অফিস আত্মীয় স্বজনের বাড়ি সব জায়গায় খুজেছি ।কোথাও নেই ।আমার চেহারা ফেকাসে হয়ে গেছে ।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে ।মনে মনে ভাবছি এক টুকরো বিশ্বাস করা কি আমার অপরাধ হয়ে গেল ।হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল ।আমি দৌড়ে গিলে খুলতেই দেখি আবির ।আবির কে দেখে আমার চোখে পানি চলে আসসে ।অনেকটা অভিমানের ও ।কিন্তু আবিরের সাথে মেয়ে টাকে দেখে আমার বুক টা মোচড় দিয়ে ওঠে ।আবির সোজা ঘরে ঢুকে ছায়াকে নিয়ে ।আমি আবির কে বললাম 
আমি:আবির ,ছায়া এখানে কেন ?? 
আবির:তোর কথা মত সব হবে না কি ।আমার যাকে ইচ্ছা তাকে ই বাসায় আনব।আর ছায়া এখন আমার বিয়ে করা বউ ।
আবিরের কথা শুনে মায়ার চোখ অন্ধকার হয়ে গেছে ।মাথায় কিছু ঢুকছে না ।আমি আবিরের কলার ধরে জিজ্ঞেস করি 
আমি:কেন করলে আমার সাথে এমন ?? 
আবির :আর তুই আমার সাথে কি করছত ।এক তো ডিভোর্সি তাও বাচ্চা সাথে ।আমি তোকে আপন করে নিছি ।এখন আবার জানলাম বাবা হওয়ার সুখ আমাকে দিতে পারবি না ।তাই ছায়া কে বিয়ে করেছি ।ও আমাকে বাচ্চা দিবে ।তুই তো বন্দা ।
আবিরের কথা শুনে আমার মাথা ঘুরিয়ে পড়ে ।জ্ঞান ফিরে দেখি আমির শাশুড়ি আমাকে তার কোলে করে শুয়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।আমার জ্ঞান ফিরে আসার পর আমার শাশুড়ি বলল
শাশুড়ি:মা রে ওই জানোয়ারটাকে সব সত্যি বলে দে ।তখন বুঝতে পারবে ।
আমি:না মা ।ও এইসব সহ্য করতে পারবে  না ।
শাশুড়ি:কি দিয়ে তৈরি তুই ।এভাবে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সম্ভব না ।
আমি:মা আমি একটু পড়েই চলে যাব। 
শাশুড়ি:এই তুই কী বলছ ।এখন সময় নিজের অধিকার নিয়ে লড়াই কর ।দরকার পড়লে পুলিশের কাছে যা ।আমি তোর সাথে আছি ।
আমি শাশুড়ি মাকে ধরে কেঁদে ওঠি ।
একটু বিশ্রাম করার পর বাইরে যেয়ে দেখি আবির আর ছায়া বসে চা খাচ্ছে ।আমি গিয়ে ছায়া কে একটা চড় মারি ।আবির আমাকে কিছু বলতে যাবে আবির কে ও চড় মারি ।আমার কান্ড দেখে আবির থ হয়ে গেছে ।আমি বলি
আমি:তুমি অনেক খারাপ করছ ।পরে তোমাকে পচছাতে হবে  ।
আবির :আমি যদি তোমার সাথে থাকি তাহলে এখন আমাকে পচতাতে হবে ।

আবিরের কথা শুনে আমি মনে মনে ভাবছি এ আমি কাকে ভালোবাসলাম ।দিন যত যাচ্ছে আবিরের আমার প্রতি অত্যাচার ততই বাড়ছে ।
আজ তো,আবির সীমা পার করে দিয়েছি ।মদ খেয়ে এসে মাতাল হয়ে ছায়া কে নিয়ে রুমে ঢুকে যায় ।আমি দরজা ধাক্কা দিচ্ছি ।অনেকক্ষণ পর আবির দরজা খুলে আমাকে একটা চড় বসিয়ে দিল ।আমি ছলছল চোখে আবিরকে দেখে বলি 
আমি:আবির আমি আর নিতে পারছি না ।প্লিজ এগুলো বন্ধ কর।
আবির:তাহলে চলে যা। তোর মেয়ে কে নিয়ে ।
আমি চোখের পানি মুছে নিজেকে শক্ত করে বলি 
আমি :ঠিকাছে ।আমি যাচ্ছি ।
আমি ব্যাগ গুছিয়ে চলে যেতে নেই তখনই আমার শাশুড়ি আমাকে বলে দাঁড়া আমি ত তোর সাথে যাব ।
আবির তখন বলে 
আবির:মা তুমি যদি যাও তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে ।
আমি আর কিছু না বলে তনয়া কে নিয়ে চলে যাই। 

কয়েক ঘন্টা পর ছায়া আবিরকে বলে 
ছায়া :আবির যেই বাস এ মায়া তনয়া ছিল ওই বাস একটা খাদে পড়ে গেছে ।

চলবে 

সবার মুখের মধ্যে এইটা মুখোস থাকে ।আবিরের ও ছিল ।এত পিনিক নেওয়ার দরকার নাই ।আল্লাহ্ যা করে ভালোর জন্য ই করে ।আর আমি আর গল্প লিখব না ।আপনারা শুধু next next বলেন কেন ।এমনে ও তো দিব ।একটা ভালো কমেন্ট করেন 😒😒😒😒😒😒😒😒😒😁😁

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com