বসন্তের ছোঁয়া | পর্ব -১৫
সারা উঠতে নিলেই একটান দিয়ে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে রাজ। মুখের কাছে মুখ নিতেই দূরে সরে যায় সে। আবারও দুই গালে হাত দিয়ে মুখের কাছে মুখ নিতেই গড়গড় করে বমি করে দেয় সারা। ঘটনার আকস্মিকতায় দুজনেই থ।
,
রাজ- সারা তুমি ঠিক আছো।
,
সারা কিছু না বলে মুখে হাত দিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে বমি করছে। ডান দিকের ভ্রু কুঁচকে সেটা দেখছে রাজ।
,
রাজ- সারা তুমি।
,
সারা- আমার কিছু হয়নি। গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা টা আবারও শুরু হয়ে গেছে। মেডিসিন নিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
,
রাজ- হুম।
,
রাহুল- আমার মনে হচ্ছে কাজটা একদম ঠিক করিনি। ভাবির মুখটা কি অবস্থা হয়েছে দেখেছিস??
,
রাইমা- হুম বাট এছাড়া কোনো অপশন ছিল না।
,
রাহুল- ভাবি যদি জানতে পারে না আমার যে কি অবস্থা করবে কে জানে।
,
রাইমা- আর আমার কান টা ভাইয়া ভাবি মিলে মটকে দিবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
,
সারা- তাই বুঝি তো এসব তোমাদের কাজ( রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে)
,
রাহুল-( ভূত দেখার মতো চমকে উঠে) ভাবি আ,,পনি??
,
সারা- ( কান টেনে ধরে) তো এসব তোমাদের কাজ হ্যা বেয়াদব ছেলে। ইচ্ছে করে সফট ড্রিংকসে ওয়াইন মিশিয়েছ হ্যা।
,
রাইমা- না মানে ভাবি আমরা ভালোর জন্যই করেছি। আই মিন আমি ফুপি হব।
,
সারা- থাপ্পড় মেরে তোমার সবগুলো দাঁত ফেলে দিব। আমি কতটা না কষ্ট করে সামলাতে হয়েছে রাজকে।
,
রাহুল- ব্যাথা পাচ্ছি ছেড়ে দেন না ভাবি। আর সামলানো মানে??
,
সারা- আগে বলবে তো। আর সামলানো মানে সামলানো।
,
রাইমা- কাল রাতে কিছু হয়নি??
,
সারা- কি হবে।
,
রাইমা- না মানে অন্য কিছু।
,
সারা- তোমার ভাইকে স্প্রে করেছি। আর সকালে উঠে একটিং। আমিও দেখতে চেয়েছিলাম। কে করলো এই কাজটা। নাহলে তো বুঝতেই পারতাম না। কলকাটি কে নেড়েছিল। আর কোনো দিন যাতে এইসব করতে না দেখি। মনে থাকবে???
,
রাহুল- হাজার বার মনে থাকবে ( কানে হাতাতে হাতাতে)
,
রাইমা- ( এই টা কি বললো ভাবি তারমানে কিছুই হয়নি এ্যা আমি ফুপি ডাক শুনতে পারবো না। তবে একটা প্ল্যান নষ্ট হয়েছে তাতে কি আবার প্ল্যান করবো হুম)
,
সারা চলে গেলো একটা পার্টিতে ওর বাপির অফিসের।
রাজ ও গিয়েছে ওর ফুপির সাথে তবে কেউ কাউকে পরিচয় দিচ্ছে না।
সারা এমন একটা ভান করছে যেন রাজকে চিনেই না। রাজও সেইম তবে জেলাস হচ্ছে সারা ক্লাইন্টদের সাথে হ্যান্ডসেক করছে বলে।
আর চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। আর ভেতরে ভেতরে জ্বলছে।
তবে একটা লোক বেশিই গা ঘেঁষাঘেষি করছে যেটা রাজের একদম পছন্দ হচ্ছে না।
,
একটা মেয়ে – হাই হ্যান্ডসাম ( হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
,
রাজ- হাই। ( স্মিত হেসে)
,
মেয়েটি – আমরা কি পরিচিত হতে পারি??
,
রাজ- হা সিউর কেন না ( সারাকে দেখিয়ে)
,
সারা-( এত বড় সাহস তোমার কলিজার টুকরা ঐ শাঁকচুন্নি, ময়দা সুন্দরীর সাথে তুমি গা ঢলাঢলি করে কথা বলছো আজকে তোমার খবর আছে। একবার বাড়িতে যায় তারপর দফা রফা করবো আমি তোমার )
,
রাজ- আপনি কিন্ত খুব মায়াবী এন্ড সুন্দরী আমার আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে ( মৃদু হেসে)
,
মেয়েটি – কি বলছেন সত্যি সত্যি ( খুশিতে আত্ম হারা হয়ে)
,
রাজ- জি কনফার্ম হয়েই বলছি।
,
হঠাৎ করে সারা এসে মেয়েটির গায়ে ওয়াইন ফেলে দেয়।
সারা- আম সো স্যরি আসলে।
,
মেয়েটি – ( মুচকি হেসে) ইটস ওকে।
,
সারা- আপনি আপনার ড্রেস টা প্লিজ ওয়াশরুমে গিয়ে ক্লিন করে আসুন।
,
মেয়েটি – জি। আমি আসছি আপনি একটু ওয়েট করবেন প্লিজ।
,
রাজ- হুম সিউর।
,
সারা- কলিজার টুকরা তোমার সাহস তো কম নয় হ্যা এই ময়দা সুন্দরীর সাথে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছো। জানো কি হাল করবো তোমার হ্যা।
,
রাজ- আমি কার সাথে কথা বলব সেটা আমার বিষয় তোমার না সো যেতে পারো।
,
সারা- আজকে তোমার কপালে দুঃখ আছে বলে দিলাম।
,
রাজ মেয়েটির সাথে হেসে হেসে কথা বলছে আর সারা রাগে ইচ্ছা মতো ড্রিংক করছে। কয় গ্লাস খেয়েছে ওর নিজের ও খেয়াল নেই।
রাজের চোখে হঠাৎ করে পড়লো সারাকে একটা ছেলে উপরে নিয়ে যাচ্ছে ধরে ধরে।
,
রাজ- আপনার সাথে আমি অন্য এক সময় কথা বলব কেমন এখন আসি।
,
মেয়েটি – এই যে মিস্টার হ্যান্ডসাম আপনার ফোন নাম্বার টা তো দিয়ে যান।
,
রাজ খুঁজছে সারাকে বাট কোথাও নেই। রাহুল রাজের ফুপি সারার বাবা ওরা ডিল ফাইনাল করছে। এখন জিজ্ঞেস করতে পারবে না সারাকে দেখছে কি না। অতঃপর সিকিউরিটি গার্ডসদের কে জিজ্ঞেস করলো-
,
রাজ- আচ্ছা এখানে একটা মেয়ে এসেছিল গ্রাউন পড়ে দেখেছেন আপনারা কেউ???
,
সিকিউরিটি গার্ডস- জি না স্যার আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। মেয়েটি মনে হয় অন্য দিকে গেছে আপনি অন্য দিকে খুঁজে দেখুন।
,
রাজ- এই আমায় কি বোকা পেয়েছেন হ্যা চুপচাপ বলেন একটা ছেলে ওকে ধরে ধরে কোথাও নিয়ে গেছে নয়তো সবগুলো কে আস্ত রাখবো না।
,
সিকিউরিটি গার্ডস- স্যার মেয়েটি মনে হয় বাড়ি চলে গেছে নয়তো উপরে উঠে গেছে। আর নয়তো এখানে আমরা একেক সময় একেকজন ডিউটিতে থাকি কি করে বলব স্যার। আমরা মাত্র আসসাম আমাদের আগে অন্য গার্ডসরা ছিল।
,
রাজ- That’s not my point আমার পয়েন্ট হচ্ছে একটা মেয়ে এখানে ছিল। আর আপনারা কেউ বলতে পারছেন না। লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি বলুন সারা কোথায় নয়তো সবাইকে জেলের ভাত খাইয়ে তবে ছাড়বো আমি।
,
সিকিউরিটি গার্ডসরা- স্যার উপরে নিয়ে গেছে একটা ছেলে একটা মেয়েকে।
,
রাজ শোনা মাত্র এক দৌড়ে গিয়ে দেখলো সারা বসে বসে ড্রিংক করছে একটা ছেলের সাথে আর ছেলেটা খুব বিশ্রী ভাবে দেখছে এবং সুযোগ বুঝে টাচ করছে বাজে ভাবে।
,
রাজ- সারা এখান থেকে চলো ( হাত ধরে)
,
সারা- আমি যাবো না।
,
রাজ- ( কোলে নিয়ে) যাবে না তোমার ঘাড় যাবে।
,
ছেলেটি- Oh! Hello, I need her ( পথ আটকে দাঁড়িয়ে)
,
রাজ- How dare you rubbish. She is my wife.
,
ছেলেটি- বাজে কথা রাখেন মিয়া চুপচাপ সারাকে রেখে চলে যান।
,
রাজ- ওহ রেয়লি হা??
,
ছেলেটি- ইয়েস।
,
রাজ- ( ঘুষি মেরে) আমার স্ত্রীর দিকে কেউ তাকালে তার চোখ আমি তুলে ফেলবো।
,
সারা- ছাড় বলছি আমি তোমার সাথে যাবো না। তুমি আমায় একটু ও ভালোবাসো না ( রাজকে মারতে মারতে)
,
রাজ- আরেকটা কথা বললে ঠাস করে তোমার গালে দিব বসিয়ে একটা।
,
সারা- তুমি তো আমায় একটু ও ভালোবাসো না এ্যা। ( ন্যাকা কান্না কেঁদে)
,
রাজ- ন্যাকামু বাদ দাও আর চলো আমার সাথে। আর হ্যা আপনাকে তো আমি দেখে নিব। সারার আশেপাশে দেখলে।
,
সারা- তুমি খুব পঁচা আমায় একটু ও ভালোবাসো না।
,
রাজ- তাই তা এখন কি করতে হবে শুনি।
,
সারা- উম্মাহ চুমু দিতে হবে।
,
রাজ- পারবো না।
,
সারা- তাহলে আমিও তোমার সাথে যাবো না। ঐ ছেলেটার সাথে থাকবো ও খুব ভালোবাসবে আমায়।
,
রাজ কথাটা শুনে প্রচন্ড রেগে গিয়ে সারার মুখটা নিজের মুখের কাছে এনে ♥♥♥♥♥♥♥♥
চলবে……….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com