Breaking News

পিচ্চি বউ || পর্ব -৯

আমি শুনেছি, মেয়েরা স্পেশালি বউরা জামাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সব বুঝে যায়। কিন্তু আনিকার দিক তাকিয়ে বারবার ইশারা করছি, যে কে রান্না করেছে। কিন্তু ও দেখি আমার দিক ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। কোনো উত্তর দিচ্ছে না। কি আজব!
-বল কে রান্না করেছে?
-ধুর কথা বলিস না। মজার খাবার খেতে দে।
-হুম বুঝি তো।
আমি আসলেই বুঝতে পারছি না যে কে রান্না করেছে। খাওয়া শেষ করার আগে বললাম
-বোন তোর রান্নার কোনো জবাব নেই। লা জাবাব।
বোন দেখলাম কিছু না বলে খুশি হয়ে গেলো। ওহ বেঁচে গিয়েছি, তার মানে বোন রান্না করেছে। খাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে বোনের জন্য কেনা গিফট নিয়ে আসলাম। বোন দেখে খুশিতে কেঁদেই দিলো।
-লাভ ইউ ভাইয়া
-তোর রান্নার জন্য লাভ ইউ
-আরে ওটা ভাবি রান্না করেছে।
-কিহ!
-হুম।
-কার রান্না বুঝিই নি।
-আচ্ছা আমি ড্রেস পরে আসি।
-যাহ!
অনেক্ক্ষণ ধরে আনিকা না আসায় আনিকাকে ডাক দিলামঃঃ
-আনিকাআআআ?
-হুম আসছিইইইই।
এরপর আনিকা আসলো। কি হলো তুমি দেখি আমার কাছে আসছো না।
-আমার রান্না চিনেন না, আবার কি কথা বলবো?
-আচ্ছা একটা কথা বুঝো। তোমার রান্না প্রথম খেয়েছি আবার আনিকার রান্না কখনো খাই নি।
-হুম্ম
-আচ্ছা দাড়াও, তোমার জন্য কিছু আছে।
-কি আছে?
আনিকার জন্য রাখা শাড়িটা দিলাম। আনিকা দেখলাম খুশিতে চুপ হয়ে গিয়েছে।
-কি হলো কিছু বলছো না?
আনিকা আমার উত্তর না দিয়ে কপালে একটা চুমু দিলো।
-আপনি রুম থেকে বের হোন, আমি শাড়িটা পরি
-কাল রাতে তো ঠিকই সব খুলে ফেললে।
আনিকা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো
-বের হোন তো।
আমি আম্মার জন্য কেনা শাড়িটা নিয়ে আম্মার রুমে গেলাম।
-আম্মা
-বল.
-নিন এটা আপনার জন্য।
-বউ এর জন্য এনেছিস?
-হুম।
-আচ্ছা রাখ, আমার সিরিয়াল দেখা শেষ করি
-আচ্ছা
আম্মার সাথে কথা শেষ করে পথে বোনকে দেখলাম।
-ওমাগো! এটা আমি কাকে দেখছি?
-ওসব বলিস না, আমার লজ্জা করে
-ওরে লজ্জাবতী রে, জামা পড়েছিস ভালো কথা, তবে মেকাআপ করেছিস কেনো?
-ওটা বুঝবি না, ভাবির কাছে যা তুই।
-হুম যাচ্ছি যাচ্ছি
বোনের সাথে কথা শেষ করে দরজা নক দিলাম।
-একটু পর।
-আরে খোল না।
-নাহ
না খুলায় আমি চেয়ার নিয়ে পাশে বসে ফেসবুকে ঢুকি। একটু পর আনিকা নিজেই আমাকে উকি দিয়ে আমাকে ডাক দেয়,
-একটু রুমে আসেন না।
-হুহ তাহলে রেডি হলে!
-আগে রুমে আসুন।
-আচ্ছা, ওমা তুমি এটা কি শাড়ি পরেছো?
-পড়তে পারছি না, আমার মেকাপ দেখুন।
আমি হো হো করে হাসতে লাগ্লাম।
-আপনি হাসছেন?
-পুরো সাদা ভূত দেখা যাচ্ছে
-আপুকে ডাক দিন না, আমাকে সাজিয়ে দিতো।
-আপু কেনো আমি আছি না?
-আপনি সাজাতে পারেন?
-চেষ্টা করি, পরে আরো লাগবে না?
-ওমম, আচ্ছা, একবার ট্রাই করুন, দেখি কেমন লাগে।
এরপর আনিকার শাড়িটা খুলে ফেললাম। আনিকা দেখি লজ্জায় পুরো লাল হয়ে গিয়েছে। ইউটিউব অন করে টিউটোরিয়াল দেখে দেখে শাড়ি পরাতে লাগলাম। একদম শেষের দিকে। শাড়িটা শুধু পেটের ওখান দিয়ে ঢুকিয়ে দিবো
-থাক থাক, এখন আমিই করছি।
-এতোক্ষন কষ্ট করে এখন বলছো থাক থাক!
-সমস্যা আছে, তাই বলছি।
-ওরে বাবাহ! পিচ্চির দেখি আবার সমস্যা আছে!
-হুহ! এখন মেকাপ কে করাবে?
-এলাকাতে ঘুরতে মেকাপ লাগে?
-নতুন জিনিস তাই দিতে মন চাইলো।
-আচ্ছা আমি দিয়ে দিচ্ছি।
মেকাপের টিউটোরিয়াল দেখে মাকাপ লাগাতে লাগলাম। নাহ! ভালো লাগছে না। আনিকাকে ন্যাচারালি সুন্দর দেখা যায়।
-আনিকা, তুমি মেক..
-আচ্ছা দিবো না।
-তুমি কিভাবে বুঝলে যে মেকাপ দিতে না করবো?
-আপনার মন তো আমিই বুঝবো।
-বাহ! আমার পিচ্চিটা দেখি আমাকে বুঝতে শুরু করেছে।
-হুম।
-আচ্ছা চলো এখন বের হই।
-ওমা! আপনি এই গ্যাঞ্জি পরেই বের হবেন?
-ওহ! আচ্ছা! আমার তো খেয়ালই নেই। ওয়েট আমি পাঞ্জাবি পরে আসি।
-আচ্ছা যান।
আমি আনিকার সামনেই পাঞ্জাবি পরিধান করলাম,
-ওমা!
-কি?
-আপনাকে তো পুরো আল্লু অর্জুনের মতো লাগছে।
-আল্লু আবার কে?
-আল্লু অর্জুনকে চিনেন না?
-নাহ! কখনো নামও শুনি নি।
-তামিল নায়ক। আমার ক্রাশ।
-ওও।
-হুম, আপনি খোঁচা খোঁচা দাড়ি রাখতে পারেন না।
-হা হা হা! পরে আমাকে চাকুরি থেকে বের করে দিবে।
-আপনাদের চাকুরি অনেক কঠিন, তাই না?
-হুম, সারা দেশের পরোক্ষ নিরাপত্তা যে আমরাই দেই।
-আপনারা নিরাপত্তা দিলে পুলিশ কি করে?
-তারা আইন প্রয়োগ করে, যাই হোক এসব বাদ দাও। চলো এখন বের হই
বের হওয়ার সময় দেখি বোন তার অন্য জামা আর মেকাপ ট্রায়াল দিচ্ছে। আম্মা তখনকার মতোই পাশে শাড়ি রেখে টিভিতে মগ্ন। যাই হোক আমি....


চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com