Breaking News

ভাইয়ের বন্ধু যখন বর

মা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না প্লিস তোমরা বুঝার চেস্টা করো।
-বিয়ে করতে পারবি না মানে,বিয়েতো হয়েই গেছে,আমরা কি জোর করে তোকে বিয়ে দিয়েছি, তুই নিজ ইচ্ছায় করেছোস,এখন তো আমরা সমাজের সামনে তোকে ধুমধাম করে তুলে দিচ্ছি।
-ও... মা তুমিও জানো কেন বিয়েটা করতে হইছে তার পরও বলো আমি ইচ্ছা করে করেছি।
দেখো যা হবার হয়েছে, তখন পরিস্থিতি অন্য ছিলো,তাই করতে বাধ্য হয়েছি।কিন্তু এখন আমি মন থেকে বিয়েটা কোন ভাবেই মানতে পারবো না,,না তাকে স্বামী হিসেবে চিন্তা করতে পারবো।
-দেখ তিশা আমরাও চিন্তা করেনি এমন হবে,কিন্তু ভাগ্য কেউ পাল্টাতে পারেনা।জন্ম- মৃত্যু -বিয়ে সব উপরওয়ালার হাতে, আর সে যদি তোর ভাগ্যে জিসান কে লিখে রাখে তাহলে আমরা আর কি করতে পারি।বিয়েটার কথা আত্মীয় স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশি সবার কানে চলে গেছে।এখন যদি তুই বলিস তুই ওর সাথে সংসার করবি না, তাহলে চিন্তা কর তোর বাবা সমাজে মুখ দেখাবে কি করে।
যে ব্যক্তি কারো কাছে নতো হয়নি তুই কি চাস আজ তোর বাবার সম্মান চলে যাক।সে কি বাঁচবে তার মান সম্মান হারিয়ে।।।।তুই বল---।

-টিক আছে মা তোমাদের যা খুশি করো।আমি আর কিছুই বলবো না আমার কপাল খারাপ তা না হলে আমার সাথেই বা কেন এমন হলো।(এ কথা বলে তিশা চলে গেলো)
-মা আর কিছু বললো না,কারন আজ তিশার গায়ে হলুদ,সকাল থেকেই সবাই খুব ব্যস্ত, আত্মীয় স্বজন ও আসা শুরু করলো।
-তিশার কিছু কাজিন রা তাকে গায়ে হলুূদ এর জন্য তৈরি করলো,তারা অনেক চেস্টা করেও তিশাকে পার্লারে নিতে পারলো না।
তিশাকে ওরা রুমে রেখে বাহিরে চলে গেলো,আর তিশা সে দিন গুলোর কথা চিন্তা করছে আর মনের অজান্তে চোখ থেকে পানি পরছে।
তিন মাস আগে......
অতীত....

-তিশা...তিশা এই তিশা।উফ এই মেয়েটা সবসময় পড়তে বসলে পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে যায়।(তিশার মা)
-কি হলো মা এতো চেঁচামিচি কেন করো বলতো,সব সময়।আমাকে একটু শান্তি মতো ঘুমাতেও দেয়না..(তিশা ঘুম ঘুম চোখে)
- কি আমি ঘুমাতে দিনা,দেখ তিশা তুই প্রত্যেক বার অংকে খারাপ রেজাল্ট করোস,যখনি তোকে অংক করতে বলি তুই পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে পড়স সমস্যা কি তোর।(মা তিশার কান ধরে)
-মা ও দিন দিন পড়া চোর হয়ে যাচ্ছে,পড়ালেখার প্রতি ওর একদম মন নেই।তুমি ওকে তারাতারি বিয়ে দিয়ে দেয়।ওটাই ভালো ওর জন্য।(তিশার বড়ভাই)
-কি বললি ভাইয়া তুই...(তিশা দৌড় দিয়ে ড্রয়িংরুম এ এসে)

তিশার ভাই টিভি দেখতে দেখতে কথা গুলো বলছিলো।তিশা তিশার ভাইকে খুব ভয় পায়।খুব তেরা টাইপ এর মানুষ তাই।
-কি আর বলবো যা বলেছি সত্য বলেছি।এবার খারাপ রেজাল্ট করলে বিয়ে দিয়ে দেবো,মনে রাখিস।(তিশার ভাই)
তিশা নাক মুখ ফুলিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো।কারন ভাইকে কিছু বললে সে নিজের পায়ে কুড়াল মারার সমান জানে।
-বিকেলে তিশা সুন্দর করে সেঝে নিলো,কারন নিলুর বাসায় যাবে।নিলুর ফুফাতো ভাই আবিরকে তিশার খুব পছন্দ, প্রথম যেদিন দেখেছিলো, তখন থেকেই আবির এর উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে।একদম চকলেট বয়ের মতো,তিশার তো মন চাইছিলো খেয়ে ফেলতে।এর পর আবির যখনি নিলুদের বাসায় আসে, তিশাও ওদের বাসায় চলে যায়,আবির আর ওর মাঝে খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েগিয়েছে কিন্তু সেটা ভালোবাসা কিনা তারা দুজনেই জানে না।তারা ফেসবুকে ফোনেও অনেক কথা বলে,তবে খুব লুকিয়ে।কারন ওর ভাই জানতে পারলে ওর কপালে শনি আছে তিশা খুব ভালো করেই জানে।যাই হোক নিলুর বাসায় আবিরের সাথে দেখা করতে যাবে তাই সুন্দর করে সেজে যেই ড্রয়িংরুম এ পৌছালো তিশার চোখ কপালে উঠে গেলো।
ড্রয়িংরুম এ জিসান আর রায়হান ভাই বসে আছে।

-রায়হান ওর নিজের ভাই আর জিসান হলো রায়হান ভাইয়ের বন্ধু,বলতে গেলে রায়হান জিসান কে তিশার থেকেও বেশি বিশ্বাস করে।জিসান খুব রোগচটা মানুষ, খুব জেদি।
কিন্তু খুব হেন্ডসাম,উচা লম্বা টল ফিগার। উনার জন্য কলেজে অনেক মেয়েরাই পাগল ছিলো।কিন্তু উনার জিদ আর রাগের কারনে কেউ কাছে আসার সাহস পেতো না।উনাকে দেখলে কেনো জানি আমার কলিজা শুকিয়ে যায়,ভাইকে বোকা বানাতে পারলে ও এই ব্যক্তি কে বোকা বানানো এতো সহয না,দুজনে সোফায় বসে কথা বলছে,আমি আস্থে করে তাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম,হঠাৎ পেছন থেকে ডাক পড়লো,আমার নিশ্বাস বন্ধ হবার মতো, আমি মুখে হাসি রেখে পেছনো তাকালাম,দেখলাম রায়হান ও জিসান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।একটু খেয়াল করে দেখলাম জিসান ভাই আর চোখ দিয়ে আমায় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখলো,দেখে মোবাইল টিপাতে লাগলো।
-কোথায় যাচ্ছিস এই অবেলায়।(রায়হান)
-ভাইয়া এইতো একটু নিলুর বাসায়।(তিশা)
-কেনো?

-এইতো একটু কাজ ছিলো ও কিছু নোট করেছে,ওগুলো আনতে।
-তুই আর নিলু এক কলেজে পরছ,তাই না, আর ক্লাসমেট ও(এতো ক্ষন পর জিসান ভাই প্রশ্ন মারলো আমার দিকে।)
-আমি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকালাম।মন চাইছিলো একটা লাঠি এনে উনার মাথায় মারি।
-জিসান কিছু জিগ্যেস করছে,উত্তর দিস না কেন।(রায়হান)
-জি ভাইয়া,আমরা ক্লাসমেট।
-তাহলেতো নোট কাল কলেজ থেকেও নিতে পারবি,এখন বাহিরে যাওয়ার কি দরকার তার উপর এতো সেঝে গুজে।বান্ধবীর বাসায় নোট আনতে এতো সাজার কি প্রয়োজন পরলো বলতো।
-কি আর বলবো, দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,খুব দরকার ছিলো ভাইয়া নোট গুলো তাই।আর এমনেই একটু সাজতে মন চাইলো তাই একটু সাজলাম আর কিছু না।রায়হান ভাই তাকিয়ে আমার কথা শুনতাছে।
-আমি ভয়ে আর কিছুই বলতে পারলাম না।
-টিক আছে খুব বেশি দরকার হলে আমরা নিয়ে আসছি।তুই নিলুকে বলে দে।তোর যাবার দরকার নাই।

(জিসান)
-কি বললো জিসান শুনোস নাই।যা ঘরে যা।(রায়হান)
-আমি রাগে মুখ ফুলিয়ে আবারো নিজের ঘরে চলে গেলাম,কারন একবার যেহেতু জিসান ভাই মানা করছে তাহলে আর আজ কোন ভাবেই আমার বাহিরে যাওয়া হবে না।কারন জিসান ভাইকে আমার পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে।তার কথার উপর আর কোন কথাই নাই।সে কিছু মানা করলে সেটা আমার বাবা মা ও করেনা এতোটা ভালোবাসে তাকে, আর রায়হান ভাইতো আছে তার সাথে সাথে সব কথায় সায় দিবে।তাই সে মানা করার পরও খুব জোর করলে উনার সন্দেহ বেড়ে যাবে।তখন আমার কপালে খারাপি আছে।
আমি রুমে গিয়ে তারাতারি নিলুকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম। তা না হলে ভেজালে পরে যেতাম।


To be Continue

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com