Breaking News

অচেনা সেই চোখ

বাসা থেকে বের হয়েছি ভোর ৬টা বাজে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য,
দুই ঘন্টা হলো বাসস্টপে বসে আছি কিন্তু বাস আসছে না, বসে বসে ফোনে গেম খেলছিলাম এক মনে,
হঠাৎ মনে হলো আমার ডান পাশে কেউ বসলো।
আমি অতোটা গুরুত্ব না দিয়ে আমার মতো আমি গেম খেলেই যাচ্ছি,,
একটু পরেই গাড়ির আওয়াজ পেলাম, সামনে তাকিয়ে দেখি বাস এসে গেছে,
আমি ফোনটা পকেটে রেখে আমার ব্যাগটা হাতে নেয়ার জন্য ডান দিকে তাকাতেই দেখি
একটা বোরকা পরা মেয়ে বসে আছে, এমন পর্দাশীল মেয়ে দেখাই যায় না আজকাল,
শুধু তার চোখ দুটোই দেখা যাচ্ছে কোনোভাবে, আমার কিযে হয়ে গেলো কিছুই বুঝলাম না,
শুধু তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছি,,,
মোট কথায় তার চোখ দুটোই আমাকে ঘায়েল করে ফেলছে,,,
কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম জানিনা, বাসের হর্নের আওয়াজে ঘোর ভাঙে আমার,
সামনে  তাকিয়ে দেখি মেয়েটা নেই, মনটা খারাপ হয়ে গেলো,,,,
মন খারাপ করেই বাসে উঠলাম, কিন্তু মন খারাপ আর থাকলো না  বেশিক্ষন,
কারণ আমার পাশের সীটেই মেয়েটা বসে আছে,,,
জানালা দিয়ে বাইরের দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে,
আমি আস্তে আস্তে গিয়ে তার পাশে বসলাম, মেয়েটা আমার বসা দেখে অন্য দিকে সরে বসলো একটু,,,
বার বার তাকে দেখতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ভয় আর লজ্জায়  তার দিকে তাকাতেও পারছি না,,,
বাস চলতে থাকে আর এদিকে আমার মনে তাকে দেখার জন্য আকুলতা বাড়তে থাকে,,,
আল্লাহ হয়তো সেদিন আমার প্রতি সহায় ছিলেন,
.
তাই তাকে দেখার সুযোগ এসে গেলো, হঠাৎ করেই বাসটা থেমে গেলো,,,
বাসের সুপারভাইজার বললো বাসের গ্যাস শেষ, তাই একটু সময় লাগবে,,,
কারো কোনো কিছুর প্রয়োজন থাকলে যেনো নিচে গিয়ে নিয়ে আসি,,,
একথা শুনেই আমি সাথেই সাথেই বাস থেকে নেমে গেলাম,
একটা দোকান থেকে ২ প্যাকেট চিপস আর পানি নিয়ে আবার বাসে উঠলাম,
আর তখনি আবার সেই চোখ দুটো দেখলাম মন ভরে,,
এ যেনো এক পবিত্র প্রশান্তি,,, আমি আমার সীটে গিয়ে বসলাম,,,
ভাবছি তাকে কি চিপস বা পানি খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করবো! আবার ভয়ে সাহসও হচ্ছে না,,,,
তাই আমি চুপচাপ বসে রইলাম,, এর ভেতর বাসটা ছেড়ে দিলো,,,,,,
.
হঠাৎ  শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি মেয়েটার হাতে একটা খালি পানির বোতল,
হয়তো পানি খাবে কিন্তু পানি তো নেই বোতলে,,,
আমি সাহস করে বললাম পানি খাবেন?
বলেই তার দিকে পানির বোতলটা এগিয়ে দিলাম,,
কিন্তু সে নিলো না, মাথা ঝাকিয়ে না করে দিলো,,,
আমি মন খারাপ করে দুই সীটের মাঝে পানির বোতলটা রেখে দিলাম,
কিছুক্ষন পর কি মনে করে যেনো মেয়েটা পানির বোতল হাতে নিলো,
তারপর উল্টো দিকে ঘুরে পানি খেয়ে নিলো,,,
তাকে দেখার ইচ্ছা ছিলো, কিন্তু এমন ভাবে ঘুরে পানি খেলো যে একটু দেখতেও পারলাম না,,,
যাই হোক এভাবেই সারাটা রাস্তা পার হয়ে গন্তব্যের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছি,,,
এখন মনে মনে ভাবছি মেয়েটার বাড়ি কোথায় হতে পারে,
একি বাসে যখন আসলাম তখন আমাদের গ্রামের আশেপাশেই কোথাও হতে পারে,,,
তাও সিউর হওয়ার জন্য বাস থেকে নেমে মেয়েটার পিছন পিছন যাওয়ার কথা চিন্তা করলাম,,,
বাসটা থামার সাথে সাথেই আমি নেমে গেলাম, কিন্তু একি মেয়েটা তো নামছে না,,,
তাহলে কি এর পরের স্টপেজে নামবে!!! এর পরে আর একটাই স্টপেজ আছে,,,
আমি সাথে সাথেই একটা রিকশায় উঠে বাসের পিছনে পিছনে যেতে লাগলাম,
১০ মিনিট পরেই স্টপেজে পৌছে গেলাম,
.
বাস থামার সাথে সাথেই মেয়েটি বাস থেকে নামলো, নেমেই একটা রিকশা নিলো,,,,
আমিও আরেকটা রিকশা নিয়ে ওই রিকশার  পিছনে যেতে শুরু করলাম,,,,
এভাবে প্রায় বিশ মিনিট গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পর রিকশাটা
একটা পাচিল ঘেরা বাড়ির সামনে থামলো,,,
মেয়েটা রিকশা থেকে নেমে ভাড়াটা দিয়ে ওই বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো,,,
একবার মনে মনে ভাবলাম ভেতরে যাবো কি! আবার ভাবলাম, না থাক,,,
ভেতরে গেলে যদি আবার অন্য কিছু মনে করে,,,
এই ভেবে আর গেলাম না,,,,
এখান থেকে আমাদের বাড়ি যেতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগবে,
মানে আমাদের গ্রামের এক গ্রাম পরেই এই মেয়েটার বাড়ি,,,
আর এর ভেতরেই আমার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আমি নিয়ে ফেলছি,,,
এখন শুধু বাড়িতে যাওয়ার অপেক্ষা……………….
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com