গল্পঃ আত্বীয়তা রক্ষা | পর্ব -৩
সবার সামনে কেউ একজন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। তা দেখে লিজা আর তসিবা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি তাকিয়ে দেখি ভাইয়া দাদি মা আর বাবা সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তখন আমি বুঝতে পারলাম এটা আ কেউ নয়। একমাত্র ওর দ্বাড়া এমন কাজ সম্ভব। আমি ছাড়িয়ে বলি।
সৌরভ:- তুমি এমন ভাবে এসে জড়িয়ে ধরেছো কেনো? তখনি বলে।
আমি পুরুনো হয়ে গেছি তো তাই জড়িয়ে ধরেছি ভালো লাগেনি তাইনা?
সৌরভ:- কি যে বলোনা তুমি কেনো পুরুনো হবে? তুমি তো আমার সব তখন তসিবা আর লিজা দুজনে চেহারা কালো করে নিয়েছে। তখন দাদি এসে আমার কান টেনে বলে।
দাদি:- কি রে সৌরভ আমি তো দেখছি তুই বেশ আনন্দে আছিস? তখনি তসিবা দাদিকে সালাম করতে গেছে দাদি তসিবাকে ধরে উঠিয়েছে। এর মাঝে চাচা এসে উপস্থিত হয়েছে।
তসিবা:- দাদি মা কেমন আছেন আপনি?
দাদি:- আমি অনেক ভালো আছি।
তসিবা:- দাদি মা সৌরভকে যে জড়িয়ে ধরেছে সেই মেয়েটা কে? তখন দাদি মুচকি হেসে ভাইয়াকে ডেকে আনছে। ভাইয়া এসেছে তখনি দাদি বলে।
দাদি:- এটা তোর বড় চাচার বড় ছেলে আর এই মেয়েটা ওর বউ। সৌরভের তো কোনো বোন নেই তাই সাহেদের বউকে সৌরভ বড় বোন মনে করে। যার ফলে এতদিন দেখেনি তাই আসার সময় প্লান করেছে এসে জড়িয়ে ধরবে সবার সামনে।
ভাবি:- দাদি মা আপনি তো সব বলেই দিছেন দুর ভাল্লাগেনা। ভাবি ভাইয়ার কাছে চলে গেছে। তখন চাচা এসে দাদিকে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করছে। দাদি আর চাচা কথা বলছে আমি ভাবির সাথে দুষ্টমি করছি। আমাদের সাথে লিজা সামিল হয়েছে।
লিজা:- ভাবি সৌরভ ভাইয়া তো অনেক লাকি তোমার মত বোন পেয়েছে।
ভাবি:- আসলে সৌরভ লাকি না লাকি তো আমি ওর মত একটা ভাই পায়ছি। তা সৌরভের এত প্রশংসা করা হচ্ছে কেনো?
লিজা:- আমি তো এমনিতেই বলছি। আমি চেয়ে আছি চাচার দিকে চাচা বাবার সাথে কথা বলছে না। বরং দাদি বাবাকে বলছে চাচার সাথে কথা বলতে। ফুপা ফুপি সহ সবাই এক সাথে বসে আছে। তখনি বাবা চাচাকে ডাক দিয়ে বলে।
বাবা:- রাজা কেমন আছিস?
চাচা:- ভাইজান আমি অনেক ভালো আছি বলে বাবাকে জড়িয়ে ধরেছে। ভাইজান আমি তো মনে করেছি তুমি আমার সাথে কথা বলবে না। কিন্তু তুমি কথা বলেছো?
বাবা:- তুই আমার আপন ভাই বুঝলি! বাবা চাচাকে জড়িয়ে ধরেছে। ঐ দিকে মা আর চাচি মানে খালাম্মা দুজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু। সবার এমন দৃশ্য দেখে সবার চোখে পানি চলে এসেছে। অবশেষে আবার আমাদের পরিবার এক হয়েছে। তবে তসিবার সাথে কিন্তু এখন আর আমার বিয়ে নিয়ে কোনো রকম কথাবার্তা হয়না।
ফুপা:- যাক মমিনের বিয়ে উপলক্ষে আমাদের পরিবারটা এক হয়েছে। আমাদের আত্বীয়তা রক্ষা হলো। মমিন ভাইয়া চাচা ফুপি সহ সবাই এসেছে।
ফুপি:- আচ্ছা এখন তো সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। আর আপনারা সবাই অনেক জার্নি করে এসেছেন রেস্ট নিবেন সবাই আসেন।
ফুপা:- হ্যা আপনারা সবাই রেস্ট নেন। এই লিজা ওনাদের গেস্ট রুমে নিয়ে যা।
লিজা:- হ্যা আপনারা আসেন আমার সাথে আসেন। বাবা মা ভাবি ভাইয়া এসেছে। লিজা বাবা মামে আর ভাইয়া ভাবিকে আলাদা রুম দেখিয়ে গেছে। আর দাদিকে লিজার রুমে নিয়ে গেছে। আমি মায়ের সাথে বসে গল্প করছি।
মা:- সৌরভ তসিবা কি তোর সাথে কথা বলে?
সৌরভ:- কথা তো বলতে চাই কিন্তু আমি বলি না। আর তাছাড়া তসিবার হুব বর সাথে নিয়ে এসেছে।
মা:- বুঝলাম। ঠিক আছে তুই তাহলে তসিবাকে ভুলে যা কেমন?
সৌরভ:- ভুলে তো গেছি মা। মায়ের সাথে আরো কিছুক্ষণ গল্প করে মায়ের কোলের উপর ঘুমিয়ে গেছি। যখন ঘুম ভাঙছে তখন চেয়ে দেখি চাচি ভাবি মা সবাই গল্প করছে সাথে কিন্তু দাদি আর ফুপি ছিলো।
ভাবি:- ঘুম ভাঙছে তাহলে?
সৌরভ:- হ্যা ভাঙছে। আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে গেলাম। তখন চেয়ে দেখি সাহেদ ভাইয়া মমিন ভাই সহ কিস সব আবি যাবি নিয়ে ছাদে যাচ্ছে। মমিন ভাইকে বলি ভাইয়া আমি আসবো?
মমিন:- সৌরভ তুই ছোট এক কাজ কর লিজার সাথে গিয়ে গল্প কর কেমন।
সৌরভ:- আমি ফুপাকে বলে দিবো আমাকে না নিলে?
ভাইয়া:- এই সৌরভ কি বলবি বোকা কোথাকার যা গিয়ে তোর ভাবিদের সাথে গিয়ে আড্ডা মার। আমরা সবাই বড় এখানে তুই গিয়ে কি করবি?
সৌরভ:- ঠিক আছে! মনটা খারাপ করে নিচে গেলাম দেখি সব মেয়েরা আড্ডা মারছে আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।
ভাবি:- সৌরভ তুমি এখানে কি করছো যাও এখান থেকে?
সৌরভ:- আরে আমি যাবো কোথায় ছাদে গেলে ভাইয়ারা বলে নিচে আসতাম। নিচে এসেছি তুমি বলছো এখান থেকে যেতাম তাহলে আমি যাবো কোথায়? তখন সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
ফুপি:- কেনো তোর ভাইয়রা তোকে নিচে আসতে বলছে কেনো?
সৌরভ:- আমি নাকী ছোট তাই?
তসিবা:- তোমাকে ছোট বলছে হি হি হি তুমি তো দশ বছর আগেই বিয়ে করে ফেলেছো যা ওদের থেকে দশ বছরের আগেই সব কিছু যেনে গেছো।
লিজা:- সৌরভ ভাইয়া বিয়ে করেছো তা কাকে? তসিবা কিছু বলবে তখনি চাচা বাবা আর ফুপা আঁকাশকে সাথে নিয়ে এসেছে।
চাচা:- মা তসিবা এদিকে আয়। তখন তসিবা ওদের কাছে গেছে। ভাইজান ওর সাথেই তসিবার বিয়ে দিতে চাচ্ছি। যদিও সৌরভের সাথে তসিবার বিয়েটা হয়েছে কিন্তু তসিবা তো সৌরভকে ডির্ভোস দিছে। এখন তসিবাও আঁকাশকে ভালোবাসে সামনে মাসে ১৫ তারিখ ওদের বিয়ে তোমরা সবাই কিন্তু আসবে এক সাপ্তাহ আগেই। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
বাবা:- হ্যা যাবো! সৌরভের ভাগ্যে তসিবা নেই এই জন্য তো ওদের বিয়েটা ভেঙে গেছে।
ফুপা:- সৌরভ অনেক ভালো ছেলে ওর জন্য ভালো মেয়ে অপেক্ষা করছে যে সৌরভকে অনেক ভালোবাসে।
মা:- ঠিকই বলছেন। আর তাছাড়া সৌরভ এখন তসিবাকে ভালোবাসে না। সৌরভ এখন অনেক ভালো আছে।
সৌরভ:- হ্যা মা ঠিকই বলছো। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ভাবির পাশে গিয়ে বসেছি। লিজা এসেছে এসে আমার সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছে।
লিজা:- আগামী কাল আমরা কনের বাড়ীতে যাবো সাথে কিন্তু তুমিও যাবে কেমন?
সৌরভ:- ঠিক আছে যাবো। আমি আর লিজা দুজনে গল্প করছি। তসিবা দুর থেকে চেয়ে আছে। লিজার সাথে অনেক গল্প করতেছি তখন ভাবি এসে বলে।
ভাবি:- কি সৌরভ লিজার সাথে তো ভালোই গল্প করছো? মা বাবাকে বলবো নাকি? লিজা তো দেখছি মহা খুশি তখনি তসিবা উঠে এদিকে আসছে।
লিজা:- ভাবি তুমি সত্যি বাবা মার সাথে কথাটা বলবে?
সৌরভ:- লিজা কি বলছো তুমি? তখনি ফুপি এসে সবাইকে খাবার জন্য বলছে। তবে আগে সব ছেলে মরয়েরা খাবে পরে বড় মানুষ গুলি খাবে। আমি খাবার টেবিলে গেলাম। ভাবি লিজার দুষ্টুমি গুলো ভালো লাগছে তবে তসিবা আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু বলতে পারছে না।
ভাবি:- সৌরভ তোমার তো কপাল খুলে গেছে।
সৌরভ:- হ্যা এক সাথে অনেক কিছু পেয়েছি। তসিবা আর আঁকাশ কথা বলছে আমার কাছে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। আমি খাবার খেলাম। তসিবা আর আঁকাশ চলে গেছে। আমি খাবার শেষ করে উঠে রুমের দিকে যেতে লাগলাম তখনি চেয়ে দেখি তসিবা আমার দিকে আসছে। আমি নিচের দিকে চেয়ে চেয়ে হাটছি কাছে এসে তসিবা বলে।
তসিবা:- তুমি এমন ভাব কেনো করো আমার সাথে?
সৌরভ:- মানে আমি কি করেছি?
তসিবা:- কি না করছো তুমি তো ভালো করে বুঝতে পারছো আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি কিন্তু তুমি দুরে দুরে থাকো।
সৌরভ:- তোমার বাবা আসছে তখনি তসিবা একটা কাগজ আমার হাতে ধরিয়ে দিছে। আর তসিবা চলে গেছে আমি আমার রুমে এসে কাগজটা খুলে দেখি কাগজে লিখা।
এই শুনো রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়বে তখন আমি তোমার রুমে আসবো। আর মনে করে দরজাটা খুলা লাগবে বলে দিলাম। আমি ওর কাগজটা পড়ে অবাক হলাম। আর মনে মনে মুচকি হাসি দিলাম। নিশ্চয়ই নতুন করে কোনো ফান্দে ফালাতে চাচ্ছে। আমি শুয়ে রইলাম তখনি দরজায় কন্ক। আমি উঠে দেখি ফুপি এসেছে।
ফুপি:- সৌরভ একটা কথা বলবো বাবা?
সৌরভ:- হ্যা ফুপি বলো? তখনি চেয়ে দেখি একজন মেয়ে আর ছেলে। দেখে মনে হচ্ছে ওরা নতুন বিয়ে করেছে।
ফুপি:- আসলে ওরা তো স্বামী স্ত্রী ওদের তুই এই রুমটা দিয়ে দে।
সৌরভ:- ঠিক আছে ফুপি আমি মা বাবার সাথে গিয়ে থাকি কেমন। ফুপি আমাকে বলছে যেনো কোনো কষ্ট না পায়। ফুপি আপনি কিছু মনে করিয়েন না আমি কোনো কিছু মনে করিনি। আমি আমার ব্যাগ গুচিয়ে বেড়িয়ে এসে। মা বাবার রুমে এসে ওদের মাঝে শুয়ে পড়েছি। হঠাত মনে পড়েছে আরে তসিবা তো আমার সাথে রাতে দেখা করতে চায়ছে? এখন কি করবো? আমি উঠে যাবো তখন বাবা বলে।
বাবা:- সৌরভ আবার কোথায় যাচ্ছিস?
সৌরভ:- নাহ কোথাও না। শুয়ে রইলাম আর মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি। মনে হয় আজকে গন্ডগোল হয়ে যাবে। To be continue,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com