অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২) | পর্ব - ১৫
এই মিস ঝগড়ুটে? ডু ইউ ওয়ান্ট টু কিস মি??(শয়তানী হাসি দিয়ে)
.
হোয়াট??কি সব বাজে বকছেন।(রাগী চোখে)
.
তুমি যেভাবে প্রেম প্রেম নজরে আমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছো তাতে তো তোমার মনের ভাব স্পষ্ট।।তবে তুমি চাইলে আই হেভ নো প্রবলেম বেবি(দাঁত কেলিয়ে)
.
জাস্ট শাট আপ(উঠতে উঠতে)লুচু কোথাকার।
.
হুহ,,,তুমি লুচ্চামো করলেও আমি লুচু।।আর আমি করলেও আমি লুচু?এটা কেমন কথা?
.
শাট আপপপপ(রাগী গলায়)
.
ওকে আম কোয়াইট।।
.
কথাটা বলেই কম্বলটা নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো আয়ান।অদিতি রাগে ফুঁসছে কেমন ফাজিল ছেলে,,কম্বল, বিছানা দুটোই কি সুন্দর নিজের করে নিলো।।মায়াদয়া বলতে কিচ্ছু নেই,, অমানুষ একটা!!!!অদিতি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।। কিন্তু ঘুমের টিকিটুকুরও দেখা পেলো না সে।।এদিকে ঠান্ডাও প্রচুর।এই রাতের নিস্তব্ধতায় অদিতির মনটাও ভারি হয়ে আসছে ক্রমাগত।।নিজেকে কেনো জানি অসহায় লাগছে খুব।।মনে হচ্ছে ভেতরটা বড্ড ফাঁকা।।কেউ যেনো তার খুব মূল্যবান একটা জিনিস কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে,,কিছুতেই দিচ্ছে না।।কাঁদতে মন চাইছে অদিতির।।ভীষন কাঁদতে মন চাইছে।।ধীরে নয় চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার,যে কান্নার সাথে বেরিয়ে যাবে সব কষ্ট,,অদিতি ভারি মন নিয়ে ধীর পায়ে হাঁটা দিলো ব্যালকনির দিকে।রাতের মনোমুগ্ধকর আকাশ।।আকাশে বড়সড় একটা চাঁদ।অদিতির কাছে চাঁদটাকেও খুব বিষাদময় লাগছে আজ।।এতো কষ্ট কেনো লাগছে তার??কষ্টগুলোকে কি রাতের অন্ধকারে বিলিন করে দেওয়া যায় না?এসব ভাবতে ভাবতে মনের অজান্তেই চোখ দুটো বুঝে সুর তুললো অদিতি…নিজের মনের শান্তিটা যেন ছিনিয়ে নিতে চায় সে…..
রিয়ার হোস্টেলর সামনে দাঁড়িয়ে আছে ফাহিম।কিন্তু সমস্যা হলো রিয়াকে কিভাবে দেখবে সে??বাবার পদ্ধতি অবলম্বন করতে গেলেও তাকে এটলিস্ট এটা জানতে হবে যে রিয়ার রুম কোনটি।।সে তো সেটাও জানে না।এখন উপায়??অনেক ভেবে চিন্তে রিয়াকে কল করলো ফাহিম।যদিও জানে রিয়া কল রিসিভ করবে না,,প্রথমত ফাহিম কল করছে। দ্বিতীয়ত রাত এখন প্রায় ২টো।এতো রাতে কোনো মেয়ে ফোন রিসিভ করার কথা নয়।কিন্তু ফাহিমকে অবাক করে দিয়ে দু’বারের মাথায় ফোনটা রিসিভ করলো রিয়া।।
.
হ্যালো??
.
আব..হ্যালো রিয়া?আমি ফাহিম…
.
সেটা আমি জানি…বাট এতো রাতে আমাকে কল করার কারনটা কি জানতে পারি??(রাগী গলায়)একজন বিবেকবান মানুষ কখনোই এমন কাজ করবে বলে আমার মনে হয় না।
.
এই মেয়ে এতো এটিটিউট কিসের তোমার হ্যা??
.
এটিটিউট থাকাটাই স্বাভাবিক।। দয়া করে ফোন দিয়ে বিরক্ত করবেন না।।নয়তো ব্যাপারটা ভালো হবে না।।হুহ
.
ও হ্যালো??তোমার কি মনে হয়?আমি তোমার সাথে প্রেম করার জন্য ফোন দিয়েছি??অবিয়েসলি নট।।নিজেকে এতোটাও ইম্পোর্টেন্ট মনে করো না।
.
তো কেনো ফোন দিয়েছেন শুনি???
.
আমি জাস্ট রিয়াদের অনুরোধটা রাখতে ফোন করেছি তোমায় বুঝেছো??ও বললো,,তুমি নাকি বেশ কিছুদিন ক্লাস করো নি।।। তিনমাস,,,অনেকটা সময়।।তোমার নাকি পড়ায় অনেকটায় গ্যাপ পড়ে গেছে সো আমি যেনো তোমায় একটু হেল্প করি।।এজ ইউজাল আমি সারাদিন বিজি থাকি…. এখন ফ্রী তাই ভাবলাম তোমায় পড়ায় হেল্প করি,, দেটস ইট….
.
কিহ..ভাই ফোন দিয়েছিলো??কই আমায় তো কিছু বললো না।।আর তাছাড়া আপনার কি আক্কেল ঞ্জান বলতে কিছু নেই??রাত দুটোই আপনি আমায় পড়া বুঝাবেন??লাইক সিরিয়াসলি??(রাগী গলায়)
.
হ্যা তো??আব.. বেশি কথা না বলে থার্ড চ্যাপটার বের করো…তার আগে রুমে বারান্দা বা জানালা থাকলে সেখানে গিয়ে দাঁড়াও
.
কেনো??বারান্দায় দাঁড়াতে হবে কেন??(ভ্রু কুঁচকে)
.
আব,,,কা..কারন হলো…এই চ্যাপ্টারটা পড়ার জন্য তোমাকে রাতের ইনভারোনমেন্ট টা ফিল করতে হবে।।ইউ নো এটা একটা সাইকোলজি টেস্ট,,সো কাম।।ওহ সরি গো।।
.
আপনি কি মাঝরাতে আমার সাথে ফাজলামো করছেন??(রাগী গলায়)
.
নো…অবিয়েসলি নট।তোমার কি মনে হয় আমার ইম্পোর্টেন্ট টাইমগুলো আমি তোমার পিছে ফাজলামো করে কাটাবো???চুপচাপ যা বলছি তাই করো…
.
যত্তোসব…মেন্টাল।।
.
এই কি বললা??
.
বললাম আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি,,এখন বলুন কি করা লাগবে..(বিরক্ত হয়ে)
.
রিয়ার কথাটা শুনেই এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো ফাহিম।অবশেষে দুতলার কোনোর ব্যালকনিতে রিয়াকে দেখতে পেলো ফাহিম।যদিও দূর থেকে মুখটা অস্পষ্ট তবুও ভালো লাগছে ফাহিমের….হালকা হাসির রেখা টেনে বলে উঠলো সে…
.
হুম দেখতে পেয়েছি।।ব্লু টিশার্টে অনেক কিইট লাগছে তোমায়…
.
কিহ??আপনি কিভাবে জানলেন আমি ব্লু টি-শার্ট পড়ে আছি??কোথায় আপনি?(হকচকিয়ে)
.
এইতো নিচের দিকে তাকাও…(হাত নেড়ে)
.
হোয়াট?? আপনি এখানে কি করছেন??তাও এতো রাতে??(অবাক হয়ে)
.
তোমাকে দেখতে এসেছি।।এবার ঝটপট নিচে নেমে আসো তো…তোমায় কাছ থেকে দেখবো।।
.
পাগল আপনি??আপনাকে পাগলাগারদে রেখে আসা উচিত।।যান এখান থেকে,,,জাস্ট গো…
.
চুপপপ…একটা কথা না।।আমি নিচে ম্যানেজ করে নিয়েছি দারোয়ান তোমায় আটকাবে না৷। তাড়াতাড়ি নিচে নামো।
.
কখনোই না।কিছুতেই না।
.
আসবে না তো?ওকে দেন আমি আসছি তোমার কাছে।।তারপর সারা হোস্টলে জানাজানি হলে আমার কিছু করার নেই।।আম কামিং.
.
কথাটা বলেই গেটের দিকে হাটা দিলো ফাহিম।ফাহিমকে গেটের দিকে আসতে দেখে রিয়ার চোখ চড়ক গাছ।।এই ভাইরাস সত্যি সত্যি চলে আসবে না তো??সর্বনাশ করেছে”!!!
.
এই এই আপনি সত্যি সত্যি আসছেন নাকি??(ভয়মাখা কন্ঠে)
.
হুমম আমি মিথ্যা বলি না।তুমি আসছো না তো কি আর করা??
.
এই না না,,আমি আসছি।।আসছি আমি।
.
গুডডড
রাত প্রায় ২ঃ৩০ আয়ানের ঘুমটা হঠাৎই ভেঙে গেলো।কিন্তু হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারনটা আয়ান ধরতে পারছে না।।কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে কানা খারা করলো আয়ান।।হ্যা কানে,,হালকা কিন্নর কন্ঠের গান ভেসে আসছে।কিন্তু এতো রাতে গান গায়ছে কে??রুমের মধ্যে অদিতিকে দেখতে না পেয়ে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালো আয়ান।।ব্যালকনিতে পা রেখেই থমকে গেলো সে।ব্যালকনির এক কোনায়,গুটিশুটি হয়ে বসে আছে অদিতি,,,লম্বা চুলগুলোর কিছুটা মুখে এসে পড়েছে। চাঁদের সাদা আলো এসে পড়েছে তার মুখে,,, কি ভয়ঙ্কর সুন্দর দৃশ্য।।তার সাথে অদিতির কিন্নর কন্ঠে গাওয়া গান যেনো পরিবেশটাকে মায়াবী করে তুলছে ক্রমাগত। অদিতির কন্ঠটা আয়ানের বুকে গিয়ে লাগছে যেনো,,তার কন্ঠে মিশে আছে হাজারো কষ্টের ছায়া….
“আমি রঙেরও তুলি…..
আমি.. রঙেরও তুলি,,,তুমি.. রঙেরই ভুবন…
আমি….ভাষাহারা কবিতা…..
আমি ভাষাহারা কবিতা,,,তুমি সুরেরই ভুবন।
আমি রঙেরও তুলি,, তুমি রঙেরই ভুবন
আঁখিপটে রেখা আঁকা,,, ভালোলাগা হয়ে যায়..
ভালোলাগা থেকে কবে ভালোবাসা হয়ে যায়।
আঁখিপটে রেখা আঁকা,,ভালোলাগা হয়ে যায়..
ভালোলাগা থেকে কবে ভালোবাসা হয়ে যায়।
.
আয়ান ধীর পায়ে অদিতির পাশে বসতেই বন্ধ হয়ে গেলো গান।
.
কি হলো থামলে কেনো?ভালোই তো লাগছিলো..
.
আয়ানের কথায় অদিতি মুচকি হাসলো মাত্র।এই হাসিটুকুই যে কারো হার্ট আট্যাক এর জন্য যথেষ্ঠ হতে পারে তাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই আয়ানের।।একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলে উঠলো..
.
এটা কার গান?আগে কখনো শুনি নি।।।যদিও বাংলা গান তেমন শুনা হয় না।
.
এটা তো এমনি নিজের মতো গাইলাম।কারো গান নয়।(মুচকি হেসে)
.
তারমানে এটা তোমার গান?লাইক সিরিয়াসলি?? সুরটা অনেক রিয়েল ছিলো।
.
থেংক্স,,,যদিও জানি মিথ্যা বলছেন।।তবে কিছু কিছু সময় মিথ্যা শুনতেও ভালো লাগে যেমন আমার এখন লাগছে….
.
দুজনেই হেসে উঠলো একই তালে।।আজকের রাতটা হয়তো তাদের এভাবেই কেটে যাবে খুনশুটি ঝগড়ায় মত্ত হয়ে।।হয়তো গড়বে নতুন কোনো গল্প নতুন কোনো ইতিহাত।।নতুন কিছু অনুভূতি।
আর কতো হাটবো??দেখুন তিনটা বাজতে চললো,,এক ঘন্টা যাবৎ হাঁটছি। আমার রীতিমতো পা ব্যাথা হয়ে গেছে আমি এখন হোস্টেলে ব্যাক করবো ব্যস।আপনার সাথে এই পাগলামিতে মত্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।।যথেষ্ঠ পাগলামো হয়েছে এখন অফ যান প্লিজ।।
.
রিয়ার কথায় পাত্তা না দিয়ে একটানা রিয়াকে কোলে নিয়ে আবারও হাঁটা দিলো ফাহিম।রিয়া তো চরম অবাক।কি হচ্ছে এসব??ফাহিমের দেওয়া একের পর এক শক রিয়ার হজম করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।।এই ভাইরাসের মাথায় চলছে টা কি??আর এসব রোমিওগিরি টাইপ কাজকর্মের কারনটাই বা কি?কিছুই বুঝতে পারছে না রিয়া…
.
এই এই আপনি কোলে নিলেন কেন আমায়??নামান বলছি।।নামান!!!
.
চুপপপ…বকবক বন্ধ করো।একটু আগেই তো বললে পা ব্যাথা করছে।এখন চেঁচাচ্ছো কেন??বেশি চেঁচালে ঠাস করে ছেড়ে দিবো,, মাইন্ড ইট।
.
ফাহিমের এক ধমকে চুপ হয়ে গেলো রিয়া।আরো প্রায় আধাঘন্টা হাঁটার পর থামলো ফাহিম।।প্রায় ৩ঃ৩০, চারদিকে ঘন অন্ধকার।পৃথিবীকে প্রেমময় আলোয় আলোকিত করতেই অন্ধকারের এতো আয়োজন।রিয়া চোখের উপর জোড় দিয়ে যেটুকু বুঝতে পারলো তাতে করে,,জায়গাটা ফাঁকা।চারদিকে কোনো জনবসতি আছে বলে মনে হচ্ছে না রিয়ার।কিন্তু জায়গা টা কোথায়?হঠাৎই রিয়ার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো ফাহিম…
.
এই পিচ্চি?একটু ডানদিকে তাকাও না।(মুচকি হেসে)
.
ফাহিমের কথায় কেঁপে কেঁপে উঠলো রিয়া তবুও কৌতুহলী চোখে ফিরে তাকালো ডানদিকে।রিয়া অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,,তাদের থেকে একটু দূরেই অসংখ্য প্রদীপ জ্বলছে।।প্রদীপ গুলো দিয়ে লেখা হয়েছে “মাই ভেলেন্টাইন” কি অদ্ভুত সুন্দর একটি দৃশ্য।কিন্তু রিয়া বুঝতে পারছে না ফাহিম এসব কখন করলো??তাছাড়া মাই ভেলেন্টাইন দ্বারা ও কি বুঝাচ্ছে??উনি কি ওকে খুশি করার চেষ্টা করছেন?করুণা দেখাচ্ছেন?কিন্তু রিয়ার তো করুণা চায় না।ফাহিমের করুণা তো কখনোই না।।কিন্তু প্রদীপগুলোর দিকে তাকিয়েই সব ভুলে যেতে ইচ্ছে করছে তার।ফাহিম আরেকটু এগোতেই রিয়া বুঝতে পারলো,,,প্রদীপগুলো পানিতে ভাসছে,,,আর তারা যে নদীর পাড়ে আছে সেটাই বুঝতে পারলো রিয়া।।ওর ইচ্ছে করছে প্রদীপগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখতে।খুশির ঝিলিক চোখে মুখে স্পষ্ট।রিয়ার মুখের হাসিতে ফাহিমের মুখেও ভর করলো রাজ্যের প্রশান্তি।কিন্তু হঠাৎই মুখটা গম্ভীর করে বলে উঠলো রিয়া…
.
আপনার এসব আদিক্ষেতা শেষ হলে নামান আমায়।আই ওয়ান্ট টু গো ব্যাক।
.
তোমার কাছে এসব আদিক্ষেতা লাগছে রিয়া?(অবাক হয়ে)
.
হ্যা লাগছে।শুধু আদিক্ষেতা নয় বিরক্তিকরও লাগছে।নামান বলছি।(বিরক্তি নিয়ে)
.
এই পিচ্চি?এমন কেনো করছো বলো তো?
.
কেমন করছি?আর যা করছি ঠিক করছি।।নামান আমায়,,,আপনার সাথে থাকতেও অসহ্য লাগে আমার।।কেনো বুঝতে পারছেন না?
.
ফাহিম স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।।এই মুহূর্তে ওর কি বলা উচিত জানা নেই তার।।সত্যিই কি রিয়া ওকে সহ্য করতে পারে না??এতোটাই বিরক্তিকর সে??চোখদুটো জ্বলছে তার হয়তো তারাও কষ্টের ভারটা মেনে নিতে নারাজ।।ভালোবাসাটা হলো একটা আবেগ।বর্ণহীন আবেগ।যার কোনো ক্ষরণ নেই।সে তো শুধু বৃদ্ধিতে বিশ্বাসী।রিয়ার দেওয়া প্রতিটি ব্যাথা মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করলেও দিনশেষে ভালোবাসা নামক মায়ায় আটকে যায় আরো গভীরভাবে।।
সকাল ১০ টা।অদিতি আয়ান দুজনেই তৈরি।কাজে লেগে যেতে হবে তাদের।।আদিতি আজ সাদা-গোলাপী শাড়ি পড়েছে।খুবই অস্বস্তি নিয়ে হাটঁছে সে।না তার অস্বস্তিটা শাড়ি নিয়ে নয়।পেটে বাঁধা বেল্ট নিয়ে।আয়ান সকাল এসেই ওর হাতে একটা বেল্ট ধরিয়ে দিয়েছে।।এটা পড়লে নাকি তাকে প্রেগনেন্ট মহিলাদের মতো লাগবে অনেকটাই।অদিতি হাজারো বিরক্তি নিয়ে বেল্টটা পড়েছে,,এছাড়া আর উপায়ই বা কি রেখেছে আয়ান।আয়ানও আজ সাদা শার্ট পড়েছে।।আয়ানকে দেখে অদিতি একপত্তন ক্রাশ খেলেও নিজেকে সামলে নিয়েছে সে।কিন্তু আয়ান বেচারা নিজেকে সামলে উঠতে পারছে না,,অদিতিকে এই অবস্থায় দেখে তার নাকি বউ বউ ফিলিংস আসছে।।মনে হচ্ছে অদিতি সত্যিই ওর বাচ্চার মা হতে যাচ্ছে।ড্রেসিংটেবিলের সামনে দুজন একসাথে রেডি হওয়ার সময়ও আয়ান মুগ্ধ নজরে দেখেছে তাকে।।অবশেষে দুজনই একসাথে নেমে এলো আঙিনায়।মিষ্টার খান রোদে বসে পেপার পড়ছিলেন।ওদের আসতে দেখে আনমনেই বলে উঠলেন , “মাশাআল্লাহ” অদিতি আয়ান কাছে আসতেই বলে উঠলেন..
.
বসো বসো,,,শামছুল চা দাও ওদের।
.
গুড মর্নিং মিস্টার খান(অদিতি)
.
গুড মর্নিং মামনি।মিষ্টার খান নয় মা,,চাচা ডাকো আমায়।তোমার মুখে ওটাই বেশি মানাবে।(মুচকি হেসে)
.
আচ্ছা চাচা…
.
আমি কি ডাকবো??(করুন মুখে)
.
বউয়ের চাচা তো চাচায় হবে,,নাকি জামাই?
.
মিষ্টার খানের কথায় দুজনই আড়চোখে দুজনের দিকেই তাকালো।।অদিতি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে রীতিমতো।মিষ্টার খান মুচকি হাসি নিয়ে আবারো বলে উঠলেন…
.
তোমাদের দুজনের জোড়ি মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর।মনে হয় আল্লাহ নিজ হাতে,, অশেষ রহমতে বানিয়েছে এই জোড়ি।
.
অদিতি লজ্জা মাখা হাসি টেনে নিয়ে বললো…আচ্ছা চাচা?বাচ্চারা সবাই লাল – সাদা ড্রেস কেনো পড়েছে??আর এতো গোলপই বা কেনো??(অবাক হয়ে)
.
ওহ,,আজ তো ভালোবাসা দিবস।আজকের দিনে বাচ্চারা রাস্তায় সবাইকে একটা করে গোলাপ দিয়ে উইশ করে।ভালোবাসার প্রতীক তো গোলাপ।বাচ্চারা বিষয়টিতে খুবই আনন্দ পায়।
.
বাহ,,বেশ ইন্টারেস্টিং তো(আয়ান)
.
হুম।দাঁড়াও ওদের ডাকি।।এই বাচ্চারা?এদিকে আসো এদিকে আসো…
.
খান সাহেবের ডাকে ২০/৩০ জন বাচ্চা ছুটে এলো ওদের কাছে।অদিতি আর আয়ানকে ঘিরে দাঁড়ালো ওরা।সবাই একসাথে বলে উঠলো,,”Happy Valentines Day” অদিতি আয়ানও মুচকি হেসে জবাব দিলো।তারমধ্যে থেকে একটি পিচ্চি বলে উঠলেন…
.
এই হ্যান্ডসাম ভাইয়া,,এটা কি তোমার বউ??
.
আয়ান মুচকি হেসে আড়চোখে অদিতিকে দেখে নিয়েই বলে উঠলো,,” হ্যা,ও আমার বউ”।।আয়ানের মুখে আমার বউ কথাটায় যেনো চমকে উঠলো অদিতি।।পরমুহূর্তেই লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলো সে।পরক্ষণেই বাচ্চারা বায়না ধরে বসলো,,আয়ানকে অবশ্যই তার বউকে গোলাপ দিয়ে হাঁটু ফিল্মের হিরোদের মতো প্রোপোজ করতে হবে।।ওরা টিভিতে দেখেছে হিরোরা হাঁটু গেড়ে প্রোপোজ করে।। এবার আয়ানকেও করতে হবে,,,করতেই হবে।তারা কিচ্ছু শুনবে না।।অবশেষে একরকম বাধ্য হয়েই অদিতির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো।হাতে একটি রক্তলাল গোলাপ।।অদিতি লজ্জা আর অস্বস্তিতে লাল হয়ে আছে একদম।আয়ান তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি নিয়ে বলে উঠলো…
.
ভালোবাসা কে একটা বিশ্রী আবেগছাড়া কিচ্ছু ভাবি নি কখনো।এড়িয়ে চলেছি প্রতিটি মুহূর্তে কিন্তু দেখো সেই ভালোবাসায় ফেঁসে গেলাম।।তোমার এই মায়াজাল কাটানোর ক্ষমতা আমার নেই
চলবে…………
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com