লাভ চ্যালেঞ্জ | পর্ব - ০২
নাফিজরা ক্লাস রুমে গেলেন।
এবং ক্লাসে ঢুকে সোজা পিছনের সিটে গিয়ে বসলেন।।
নাফিজ কে তো এখন প্রায় অনেক স্টুডেন্টরাই চিনে।তাই নাফিজকে এই ক্লাসে দেখে অনেক ছাত্র/ছাত্রিরা ওর সামনে এসে দাড়িয়েছেন।। মনে হচ্ছে যেন সে মঙ্গল গ্রহ থেকে আসছে তাই তাকে সকলে দেখতে আসছে।। তারপর নাফিজের সামনে দাড়িয়ে থাকা স্টুডেন্ট গুলো নাফিজকে বলল যে..
স্টুডেন্টরা:-ভাইয়া! আপনি কি আমাদের ক্লাসেই পড়েন?
নাফিজ :-হুমম।। আমি ইন্টার ফাষ্ট ইয়ারে পড়বো।এবং তোমাদের সাথেই।।
স্টুডেন্টরা:-আমরা অনেক লাকি যে আমাদের ক্লাসে একজন বীর সাহসী লোক আছে।। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।আপনার কথা শুনে আমরা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছি।। স্যালুট বস্ এগিয়ে যাও সামনের দিকে।আমরা তোমার সাথেই আছি।
রাজ:-(সালায় কলেজে এসে একদিনেই সবার বস্ হয়ে গেছে।।আর আমি এখন কোন ঘোড়ার ডিমও হতে পারলাম না)
নাফিজ:-এই যে ভাইয়েরা! আমরাতো এখানে সবাই নতুন তাইনা? আপনারাতো আমাকে অনেকেই চিনে গেছেন।কিন্তু আমিত কাউকে চিনিনা।তাই সকলে আমার সাথে পরিচিত হবেন।।আগে ফেরেন্ডসিপ তারপর পড়া লেখা।কি বলো তোমরা।
স্টুডেন্টরা:-ঠিক বলেছ বস্।
-তারপর ওরা একে অপরের সাথে পরিচিত হয়ে যার যার সিটে গিয়ে বসলেন।। নাফিজ আর রাজ পিছনের সিটে বসলে একটা ছেলে এসে নাফিজকে বললেন যে…..
ছেলে:-হাই বস্! কেমন আছেন??
নাফিজ:-এইত বস্ ভাল, তুমি কেমন আছ?
ছেলে:-হুম ভাল।। আমার নাম আবির। বাসা রাজবাড়ি।
নাফিজ:-ও তাইনাকি??
আবির:-হুমম বস্।। আচ্ছা বস্ আমরাকি ফ্রেরেন্ড হতে পারি?
নাফিজ:-অবশ্যই হতে পারি, কেন নয়।
আবির:-Thanx boss
নাফিজ:-It’s ok
আবির:-তুমি পিছনে বসেছ কেন? সামনে চলো??
আমি কখন সামনে বসিনা।
আবির:-তাই নাকি?? তাহলেতো আমি আজ থেকে তোমাদের ৪নং হারামি বন্ধু।
রাজ:-একদম কারেক্ট বলছিস।।
-নাফিজ রাজ আর আবির মিলে কথা বলতেছিলেন।
আর তার সাথে আরো দুটো মেয়ে ক্লাসে প্রবেশ করলেন।
আচ্ছা আবির!ঐ মেয়েটা কি আমাদের এই ক্লাসেই পড়বে??
আবির:-হুমম।কেন বস্।
রাজ:-আমাদের হবু ভাবিতো তাই।
আবির:-একদম পার্ফেক্ট। তবে মেয়েটা নাকি খুবই ড্যাঞ্জারাস।তবে তোমার সাথে খুবই পার্ফেক্ট হবে।
নাফিজ:-কিরে আবির! তুইকি মেয়েটাকে চিনিস নাকি??
আবির:-হুমমমম। ৮-১০ পর্যন্ত একই ক্লাসে পড়তাম।
জীবনে কোনদিন সে প্রেম করেনি।
নাফিজ:-কেন??তুই কি প্রপজ করেছিলি নাকি??
আবির:-আরেনা। আমাদের ক্লাসের একটা ছেলে ওর একটা gf ছিল।
সে পড়ত অন্য ক্লাসে নাম একই ওর নামও জান্নাত।
ছেলেটা তার gfকে নিয়ে একটা লাভ লেটার লিখেছিল।
তারপর কে যেন ঐ লাভ লেটার টা চুরি করে এই জান্নাতের বইর ভিতরে রেখে দিয়েছিলো।
তারপর জান্নাত যখন ওটা দেখেছে তখন রেগে গিয়ে ছেলেটার মূখে কইসা একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন।
তারপর বললেন যে ও এই প্রেম ভালবাসা পছন্দ করেনা।
কেউ যদি প্রপজ করে তাহলে তাকে এরকম করে অপমান করবে।
তারপর থেকে কেউ ওরে কোন প্রকার লাভ লেটার বা ঐ নামে কিছুই লেখেনা।
তারপর যখন ও জান্তে পারল যে এইটা কেউ চুরি করে ওর বইর ভিতর রেখেছে,
তখন জান্নাত গিয়ে ছেলেটাকে স্যরি বলে দিছে।তারপর সব সমাধান হয়ে গিয়েছে।
তখন থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে মেয়েটা কেরকম।
রাজ:-নাফিজ সাবধান!
এইটা কিন্তু সুবিধার না।। অপমান করলে কিন্তু খান্দা বাঁশ খাব।
নাফিজ:-জ্বি না স্যার!এটা আমি। অপমান হওয়ার মত ছেলে আমিনা।
আর আমার টার্গেটতো কখন মিস হয়না।
আবির:-বস্ একমাত্র তুমিই পারবা ওরে পটাতে।চালাই যাও বস্ আমরা আছি।
নাফিজ:-সেটা না হয় বুঝলাম।কিন্তু মেয়েটা আমাদের দিকে আসতেছে কেন?
আবির:-সামনে মনে হয় সেও বসতে পছন্দ করেনা।তাই পিছনে চলে আসছে।
রাজ:-আরেনা।সামনের কোন বেঞ্চে সিট নেই মনে হয়।তাই হয়ত সে এদিকে আসতেছে।
নাফিজ:-আরেনা!সামনেতো আরো দুটো সিট রয়েছে।ও কেন পিছনে আসতেছে।
আবির:-বস্! আমি ভাগি এখান থেকে।তা না হলে আমার তেরোটা বাজবে।
রাজ:-ঠিকআছে যা ভাগ।
আবির চলে গেল ওর সিটে। নাফিজ আর রাজ ওখানেই বসে রইল। জান্নাত যখন সিট খুজতে লাগলেন তখন নাফিজ তাকে ডাক দিয়ে বললেন যে……
নাফিজ:-এই যে LED। কি বেপার আপনি এখানে কি খুজতেছেন।
-নাফিজের কথা শুনতে পেয়ে জান্নাত মেয়েটা নাফিজের দিকে তাকালেন।তারপর সেও বলে উঠল যে….
জান্নাত:-আরে মফিজ ভাই!আ,আ,আ আপনি এখানে?
জান্নাতের মফিজ বলা শুনে সবাই ওর দিকে তাকাল।
নাফিজ:-এই যে, আমার নাম মফিজনা বুঝলেন? আমার নাম নাফিজ।
রাজ:-শুধু নাফিজনা সে হল 4G নাফিজ।
জান্নাত:- এই যে আমার নামও LED না বুঝলেন।আমার নাম জান্নাত।(যতস ফাল্তু লোক কোথাকার)
রাজ:-এইযে আপি! আপনি হলেন LED জান্নাত আর ও হলো 4G নাফিজ বুঝলেন।
নাফিজ:-আবে সালা চুপ কর।লোকে কি মনে করতেছে দেখছিস।
আচ্ছা LED তুমি তোমার সিটে গিয়ে বসো।
জান্নাত:-এই যে হ্যাঁলো! আমি সিট পেলেতো বসব তাইনা? সিট না পেলে কি করে বসবো বলেন?
নাফিজ:-ঐতো সামনে দুটো সিট খালি আছে।ওখানে গিয়ে বসলেইতো পারেন।
জান্নাত:-খেয়ে দেয়েতো কাজ নেই যে সামনে গিয়ে বসব।আপনার ইচ্ছা হলে গিয়ে বসে পড়ুন।আমি পিছনে বসবো।
Good Morning Students
নাফিজ:-কিরে এই দুপুর বেলা আবার good morning বলে কে??বেলা প্রায় ১১টা।এখনকি সকাল আছে নাকি?
রাজ:-আরে স্যার আসছে।
নাফিজ:-ওহ সিট।।এই LED আপনি ওখানে বসে পড়ুন। স্যার আসছে ক্লাসে।
জান্নাত:-ওকে বসতেছি।
-তারপর জান্নাত পিছনের একটা সিটে বসে পড়লেন।এবং ক্লাসের স্যার এসে তাদের সাথে কথা বলতে লাগলেন।
স্যার:-This student / student. Do all of you silent ??
স্টুডেন্টরা:- Ok
স্যার:-তোমরা সকলে কেমন আছ?
স্টুডেন্ট:-জ্বি স্যার! আল্লাহর রহমতে ভালো।
তারপর স্যার সবার সাথে পরিচিত হলেন।
এবং অনেক বিষয়ে নিয়ম কানুন মেনে চলার তাকিদ দিলেন।
তারপর প্রায় ১টার দিকে ওদের ক্লাস শেষ হলে সবাই ক্লাস থেকে বের হতে লাগলেন।
নাফিজ যখন ক্লাসের দরজার সামনে গেলেন
তখন কে যেন তার পিছন থেকে তাকে একটা খোচা দিয়ে ডাকদিলেন।
নাফিজ পিছনে ফিরে দেখলেন যে একটা মেয়ে ওরে ডাকতেছে।
তারপর নাফিজ মেয়েটার নিকটে গেলেন এবং তাকে বললেন যে…….
নাফিজ:-আমাকে ডেকেছেন???
মেয়ে:-হ্যাঁ! আপনাকে ডেকেছি।
নাফিজ:-জ্বি বলুন কি বলবেন।
মেয়ে:-আমি বলবনা।আমাদের আপা মনি বলবে।তাই আপনাকে ডাকতে পাঠিয়েছে।
নাফিজ:-আপনার আপা মনি কে? তাঁকে তো আমি চিনিনা।
মেয়ে:-কি বলেন চিনেন না। ঐ যে বসা দেখছেন? উনিইতো আমার আপা।
নাফিজ:-ওহহো সে কথা।LED ডাকতেছে।সেটা বললেইতো হয়।
আচ্ছা আপনার নাম কি??
মেয়ে:-আমার নাম ঐশি। আমি তাঁর বান্ধবি।
নাফিজ:-ঠিকআছে চলুন আপনার বান্ধবির কাছে।
-তারপর নাফিজ জান্নাতের কাছে গেলেন।এবং বললেন যে…..
নাফিজ:-এই যে LED হঠাৎ করে ডাকলে কেন??
জান্নাত:-ঐ আপনাকে বলছিনা আমাকে LED বলবেন না।
নাফিজ:-আমি LEDই বলব।আপনি রাগ করলে করতে পারেন।
জান্নাত:-(এত দেখছি মহা পাগল)
নাফিজ:-কিছু বললেন??
জান্নাত:-নাহ কি বলব।
নাফিজ:-কি জন্য ডেকেছেন বলেন? বাহিরে ওরা অপেক্ষা করতেছে আমার জন্য।বলার থাকলে বলুন না বলার থাকলে বলুন আমি চলে যাচ্ছি।
জান্নাত: (মনে চাচ্ছে কইসা একটা থাপ্পড় মারি।)
নাফিজ:-এই যে LED। আমার সময় নেই বায়।আপনি ভাবতে থাকুন।আমি চলি।
-এই বলে নাফিজ রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।
রাজ:-কিরে দোস্ত! কি বলল তোরে?
আবির:-কিরে বস্ কেলানি দিয়েছে নাকি??
নাফিজ:-আরেনা।বলল কি যেন বলবে।কিন্তু সালির কিছুই বললনা। তাই উঠে চলে আসছি।
আবির:-ঠিকআছে চল বাসায় যাই।
নাফিজ:-হুম চল।
ঐশি:-এই জান্নাত! সাদা চশমা পড়া ছেলেটা কেরে??
জান্নাত:-ওটাই সে ছেলে।যে আমাকে বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা করছে।
নিজে রক্ষা করে আবার উনিই আমাকে ডিস্টার্ব করতেছে।
ঐশি:-আচ্ছা তোরে LED বলতেছে কেন?
জান্নাত:-ও এরকমই বলে।ওর বন্ধু বলল যে এটা নাকি ওর ছোট বেলার অভ্যাস।সবার সাথেই মজা করে।
ঐশি:-ছেলেটা কিন্তু অনেক হ্যান্ডসাম। তোর সাথে পুরাই পার্ফেক্ট। জীবনেতো প্রেম করলি না।এইবার না হয় একটা কর।
জান্নাত:-এই দেখ একদম বাজে কথা বলবিনা।চল বাসায় যাই।
জান্নাত আর ঐশি রুম থেকে বের হয়ে বাসার পথ ধরলেন।
আবির:-এই দোস্ত! চল আজ একটু বাদাম খাই।
নাফিজ:-ঠিকআছে চল।
রাজ:-আমি খাবোনা।আমার পেট খারাপ।
নাফিজ:-তোর পেট কবে আবার ভালো হলো বল? সারা জীবনই তো একই ডায়লোগ শুনলাম।
এবার না হয় একটু নতুন ডায়লোগ দে।
আবির-এই মামা! ৩০টাকার বাদাম দাওতো?
বাদাম ওয়ালা:– ঠিকআছে মামা দিচ্ছি।
নাফিজ:-মামা তোমার নামকি??
বা:ওয়ালা:–আমার নাম সাঈফ।
এই নিন আপনাদের বাদাম।
আবির:-ধন্যবাদ।এই নাও তোমার টাকা।
সাঈফ:-ধন্যবাদ মামা।
আবির:-এই দোস্ত!চল বাসায় যাই আর বাদাম খাই।
রাজ:-হুম চল?
তারপর নাফিজরা বাদাম খেতে খেতে বাসার দিকে রওয়ানা হলেন।
চলবে..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com