গল্পঃ বোবা বউ | পর্ব-০৪
মাহি ইশারায় বুঝাতে চাইলো আপনি সিগেরট খান??
– হুম!! মাঝে-মাঝে!! ( রাজ)
– ইশারায় বুঝালো ছেড়ে দিতে!!
– ওকে!! ট্রাই করবো!! ( রাজ)
– তারপর মুচকি হেসে মাহি চলে গেলো!!
– রাতে খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে গেলাম!! সকালে মাহির ধাক্কানো তে ঘুৃম ভাঙ্গলো!!
– কি হলো এত সকালে ডকতেছো কেনো!! ( রাজ)
– ইশারা করলো নামাজ পড়ার জন্য!!
– আচ্ছা তুমি যাও আমি আসতেছি!! ( বলে উঠে চলে গেলাম নামাজ পড়ার জন্য।!!
– নামাজ পড়ে আবার শুয়ে গেলাম!! তখনই লক্ষ করলাম মাহি কোরআন পড়তে বসেছে!!
– আওয়াজ ছাড়া অনেক সুন্দর করে তাকিয়ে আছে মাহি!! আর প্রতিটা লাইনে হাত বুলাচ্ছে!!
– আমি চোখগুলো হালকা করে খুলে এসব দেখতে লাগলাম!! এভাবে দেখতে-দেখতে আবার ঘুমিয়ে গেলাম!!
– সকাল নয়টায় মাহি ধাক্কায় আবার ঘুম ভাঙ্গলো!!
– কি হলো আবার ধাক্কাচ্ছো কেনো!! ( একটু বিরক্তি নিয়ে বললাম)
– ইশারায় বুঝালো খাওয়ার জন্য!!
– মাহি আমি সকালে খাই না!! তাই সকাল – সকাল ডেকো না আমাকে!! ( রাজ)
– ইশারায় বুঝালো না খেলে শরীল খারাপ হবে!!
– আচ্ছা তুমি যাও আমি আসতেছি??( বলেই উঠে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার)
– ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করে নিলাম!! তারপরে রুমে এসে বসে বসে মোবাইল টিপতে লাগলাম!!
– কিছুক্ষন পর মাহি রুমে আসলো!! এসেই আমার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিলো??
– খুলে দেখি ভিতরে লেখা!! এখন কি করবেন??
– আমিও তাই ভাবতেছি এত তাড়াতাড়ি যে উঠিয়ে দিলে এখন কি করবো?? ( রাজ)
– আরেকটা চিরকুট ধরিয়ে দিলো!! খুলে দেখি লেখা??
– আব্বুর সাথে অফিসে যান!! গিয়ে বিজনেস টা একটু-একটু শিখলেও তো পারেন!!! এখন যেহেতু ফ্রি!!
– ওর দিলে হা করে তাকালাম!! আসলেই মেয়েটার বুদ্ধি আছে বলতে হবে!!
– আজকে তো আপনাকে নিয়ে আপনাদের বাসায় যাবো এসে তখন নাহয় সব করবো!! এখন খুশি!! ( রাজ)
– একটা হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে হ্যা বলে চলে গেলো!!
– আজকে নিজের বাড়িতে যাবে কথাটা শুনে চোখে-মুখে মাহির মুখে একটা খুশির ঢেউ দেখলাম!! আসলেই দু-দিন অচেনা জায়গা থেকে বাড়ি ফিরার ফিলিংসটাই হয়তো আলাদা!!
– বিকেলে মাহিকে নিয়ে আবার আসলাম ওদের বাসায়!!
গাড়ি থেকেই বাড়িটাকে ভালো করে দেখতে লাগলো!!এক মনে অনেক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছে ওও আর চোখের কোণে পানির বিন্দু জমেছে!!
– মাহি নামবে না!! ( রাজ)
– আমার কথায় হুশ ফিরলো এবং মাথা নেড়ে হ্যা বলে উঠলো!!তারপর নামলো!!
– সবার সাথে কৌশল বিনিময় করে আমাকে নিয়ে মাহির রুমে বসানো হলো!!
– আমি বসে বসে রুমটা দেখতে লাগলাম!! অনেক সুন্দর করে সাজানো!! আর দেয়ালে কিছু ছবি টাঙ্গানো মাহির!! আমি সেগুলোই দেখতে লাগলাম!!
– কিছুক্ষন পর মাহি কিছু নাস্তা নিয়ে আসলো!! এসে টেবিলে সেগুলো রাখলো!!
– তারপর আমাকে ইশারায় বুঝালো হাত-পা ধুয়ার জন্য!!
– আমি টিউবওয়েল এ গিয়ে হাত – পা ধুয়ে আসলাম!! রুমে এসে দেখি মাহি নেই!! তাই বসে বসে মোবাইল টিপতে লাগলাম!!
– কিছুক্ষন পর মাহি আসলো হাতে পানির গ্লাস নিয়ে!! তারপর আমাকে নাস্তাগুলো খেতে বললো!!!
– মাহি এখন খিদে নেই আমার!! তার চেয়ে ভালো তুৃমি হালকা কিছু খেয়ে নাও!! ( রাজ)
– মাহি জুড় করে হালকা কিছু খায়িয়ে দিলো!! তারপর সবকিছু রেখে আমাকে নামাজের জন্য বললো!!!
– আমি রেডি হয়ে নামাজ আদায় করে নিলাম!! মাহি নামাজ পড়ে উঠে চলে গেলো!! আমি নামাজ শেষ কর বসে বসে মোবাইল টিপতে লাগলাম!!
– মাহি কিছুক্ষন পর এসে খাওয়া-দাওয়া জন্য নিয়ে গেলো!! খাওয়া-দাওয়া করে এসে আবার মোবাইল টিপতে লাগলাম!!
– কিছুক্ষন পর মাহি রুমে আসলো!! এসেই বিছানা রেডি করতে লাগলো!!
– এই বাসায় মাদুর আছে??( রাজ)
– হাতের ইশারায় বুঝালো কেনো??
– এখানে তো সোফাও নেই যে গুমাবো!! তাই মাদুর হলে ভালো হতো গুমানোর জন্য!!( রাজ)
– মাহি আমার কথাগুলো ওর টেবিল থেকে খাতাটা নিয়ে কি যেনো লেখলো!! তারপর সেগুলো আমাকে দেখালো??
– মাদুর লাগবে না!! দুজনে এক খাটেই শুতে পারবো।!! আর আমার কাছে মাদুর ওও নেই!! সমস্যা নেই আমাদের মাঝে কোলবালিশ থাকবে??
– ওকে!! ( রাজ)
– মাহি একটা হাসি দিয়ে বিছানা রেডি করে ফেললো!! মাঝখানে বড় একটা কোলবালিশ রেখে দিলো!!
– কিছু করার নেই তাই চুপচাপ শুয়ে পড়লাম!! কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে গেলাম!!
– সকালে আবার সেই মাহির ধাক্কায় ঘুম ভাঙ্গলো?? উঠে নামাজ আদায় করে আবার ঘুৃমিয়ে!! সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে রুমে এসে বসে রইলাম!!
– কিছুক্ষন পর মাহি রুমে আসলো!! আমার দিকে এলবার তাকিয়ে নিজের রুম গুছাতে শুরু করলো!!
– থুর গ্রামে এবার গ্রামে আসাটা ভুল হয়েছে!! ( রাজ)
– মাহি ঘাড় বাকা করে আমার দিকে তাকালো!! আর ইশারায় জিঙ্গেস করলো!!
– তোমাদের গ্রামটা এখনো আমাকে ঘুড়িয়ে দেখালে না।
– মাহি হেসে হাতের ইশারায় বুঝালো বিকেলে গ্রামটা ঘুড়িয়ে দেখাবে!!
– ওর কথা শুনে একটু আনন্দিত হলাম!! কারণ আগের বার তো দেখা হয় নি এবার দেখে নিবো!!
– বিকেলে ওর সাথে গ্রামটা ঘুড়ে দেখলাম!! মনটাও ভালো হয়ে গেলো!!
– রাতে আবার ওর সাথে এক খাটে থাকতে হলো!! দুদিন গ্রামে থেকে তারপর বাসায় চলে আসলাম!!
– বিকেলে বাসায় এসে চলে গেলাম বন্ধুদের সাথে দেখা করতে!!
– কিরে রাজ তুই সিনথিকে বলেছিলি গ্রামে যাওয়ার কথা?? (সুমন)
– না!! কেনো?? ( রাজ)
– তোর নাম্বারে কল দিয়েছিলো তুই নাকি ফোন তুলিস নি!! তাই ওও আমার কাছে এসে তোর খুজ নিয়ে গেছে!! ( সুমন)
– আর বলিস না!! ঐ যখন ফোন দিয়েছিলো তখন মোবাইল ছিলো চার্জে আর আমি একটু বাহিরে গিয়েছিলাম!! তাই ফোনটা ধরতে পারি নি!!
– ওকে আমিও বলিনি তুই গ্রামে!! মিথ্যা বলে দিয়েছি!! ( সুমন)
– তুই কি বলেছিস!! ( রাজ)
– বলেছি হানিমুনে গিয়েছিস!! ( সুমন)
– আরে সালা কি করলি এটা তুই আর বাশ পেলি না আমাকে দেওয়ার জন্য??( রাজ)
– কেনো কি হয়েছে!! ( সুমন)
– কিছু হয় নাই তুই থাক আমি গেলাম!! ( বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
– আসার সময় কল দিয়ে সিনথিয়া কে দেখা করতে বললাম!! কিছুক্ষন লেকের পাড়ে অপেক্ষা করার পর সিনথিয়া আসলো??
– তা কেমন লাগলো হানিমুন!! ( সিনথি)
– সিনথি সুমন তোমাকে মিথ্যা কথা বলেছে!! আমি গিয়েছিলাম মাহিদের গ্রামে বিয়ের নিয়ম পালন করার জন্য!! ( রাজ)
– বিয়ের নিয়ম এমন ভাবে পালন করেছিলে যে আমার ফোনটাও ধরার সময় পেলে না!! (সিনথি)
– সিনথি তখন আমি বাহিরে ছিলাম তাই ফোনটা ধরতে পারি নি!! ( রাজ)
– ওও তা দেখার পর বেক কল করলেও তো পারতে!! তা না তুমি তো ছিলে বিয়ের নিয়মে ব্যাস্ত তাইনা!! ( সিনথি)
– অনেক্ষণ বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মানিয়ে তারপর বাসায় আসলাম!!
– বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে গেলাম সেই সোফায়!!
– সকালে মাহির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো!! তারপর নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম!! তারপর নয়টায় উঠে নাস্তা করে নিলাম!!
– তারপর মাহি আবার ঐ দিনের কথা অনুযায়ী আমাকে অফিসে যাওয়ার জন্য বললো!! বাসায় সারাদিন বসে থেকে লাভ নেই তাই আমিও চলে গেলাম অফিসে!!
– এভাবে দিন কয়েকদিন কাটে গেলো!! আর মাহিও কেমন যেনো পরিবারটাকে সামলে নিতে লাগলো!!
– আর এদিকে সিনথি মেয়েটাকে সামলানোও কঠিন হয়ে যাচ্ছে!! দিন দিন ওর পাগলামি বাড়তেছে!!
– এদিকে আমি কি করবো বুঝতেছি না!! মাথায় সবসময় টেনশান কাজ করে!! এভাবে কয়েকদিন যাওয়ার পর,,
– রাতে অফিস থেকে বাসায় আসতেই মাহি আমাকে মিষ্টি খাওয়ালো!!
– মাহি মিষ্টি কিসের জন্য!! ( রাজ)
– মাহি ইশারা করে বুঝালো সে…………..
( চলবে…………!!)
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com