নিস্তব্ধ প্রেমাবেগ | পর্ব-২১ | লিখা-স্বর্ণালিআক্তার
কিন্তু ভেতরে যেয়ে জুঁইয়ের ধারনা পাল্টে গেলো!ঝর্ণা বেগম সানন্দে তাকে বরণ করে নিলো!পাশে ছিলো শ্রেয়া…
আজ বিকেলে জুঁই জানতে পারলো একটা বড় সত্যি! আর সেটা জিসান নিজে বলেছে…বিয়ের ১৬-১৭ দিনে আজ জুঁইয়ের সাথে ঠিকভাবে কথা বলেছে জিসান!
জিসানের ভালোবাসার মানুষটা আর কেউ না শ্রেয়াই..
সাথেও এটা জানতে পারলো শ্রেয়া জয়কে ভালোবাসে যার কারনে জয়ের সাথে বিয়েতে দ্বিমত করে নি…আর এখন তো নিজেই দেখে তারা একে অপরকে কতোটা ভালোবাসে…
সবটাই জানতে পেরে গেছে জুঁই!স্বাভাবিক ভাবে নেওয়ার চেষ্টা ও করছে!কিন্তু তবুও মনের কোথাও একটা খুঁত খুঁত রয়েছে গেছে!
শ্রেয়ার লম্বা লম্বা খোলা চুলে ধীরে ধীরে বিনুনি করার চেষ্টা করছে জয়!শ্রেয়ার কাছে তা নিছক হাস্যকর মনে হলেও বউয়ের চুল বেঁধে দেওয়ার ব্যপারটা বেশ এনজয় করছে জয়!
“ক্রমশ এ গল্পে আরো পাতা জুড়ে দিচ্ছি
দু মুঠো বিকেল যদি চাও ছুঁড়ে দিচ্ছি
আরো কিছুক্ষন যোগাযোগ ধরে রাখছি
আঙুলে আঙুল যেন ভুল করে ডাকছি
এ ছেলে মানুষী তুলে দিয়ে আঁকছি”
জয়ের কন্ঠে গান শুনে চমকে উঠলো শ্রেয়া!জয় মুচকি হাসলো!শ্রেয়ার ঠোঁটে চুমু খেয়ে চুলে মুখ ডুবালো!
জিসানের রুমের পাশের রুমটাই জয়ের!জুঁই আনমনে ভাবছিলো আর ধীর পায়ে হেঁটে আসছিলো ঘরের দিকে!গানের গলা পেয়ে থেমে যায়!বাকি দৃশ্য টা চোখ এড়ায় নি জুঁইয়ের! মাথা নিচু করে সরে আসলো জুঁই!
পুরে ঘর জুড়ে জিসানের ছবি!ঘরটা অনেকটাই এলোমেলো ছিলো একয়েকদিনে কিছুটা গুছিয়েছে জুঁই!
পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে বারান্দায় গেলো!বারান্দা থেকে বাগানটা পুরোটা দেখা যায়!বেশ মনোরম পরিবেশে বাড়িটা রয়েছে! মন খারাপ লাগতে শুরু করলো জুঁইয়ের বাবার জন্য!আকাশের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেললো সে!
আসরের আযান হতেই জুঁই ওয়াশরুমে চলে গেলো!
ওযু করে নামায আদায় করে নিলো!জায়নামাজটা ঘুছিয়ে রেখে বেতের চেয়ারে বসলো এসে!
ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফিরলো জিসান!আজ কয়েকদিন যাবৎ অফিস জয়েন করছে সে!উপায়ন্তর তো নেই!জীবনের মোড় ঘুরে গেছে যে..!
বিছানায় গা এলিয়ে দিলো জিসান!জুঁই এক গ্লাস পানি দিতে পারবে?গলা উঁচিয়ে ডাকলো জিসান!
জুঁই জিসানের কন্ঠ পেয়ে লাফিয়ে উঠলো!
ঘরে এসে বলল কখন এলে তুমি?
এই তো মাত্র!
আমি টেরই পেলাম না!
পানি দিবে?
হ্যা দিচ্ছি! বলেই তাড়াতাড়ি করে পানি এনে দিলো জুঁই!
জিসান পানি খেয়ে গ্লাস রাখতেই জুঁই কিছুটা শাসনের সুরে বলল যাও ফ্রেশ হয়ে আসো!খেয়ে একবারে রেস্ট নিও! আজ এত লেইট হলো যে!
জিসান দায়সারা ভাবে বলল কাজ ছিলো!
জুঁই কিছু বলতে চাইলেও জিসান তাকে পাশ কাটিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো!
.
ওয়াশরুমের দরজায় বারবার জোড়ে বাড়ি পরতে থাকায় ভেজা শরীরে দরজা খুলে দিলো জিসান!
মুখে হাত দিয়ে ঢাকা অবস্থায় জিসানকে সরিয়ে বেসিংয়ে গরগর করে বমি করে দিলো জুঁই!
জিসান দ্রুত এগিয়ে গেলো।ভেজা হাতেই জুঁইয়ের মাথা চেপে ধরলো!
ফ্রেশ হয়ে বিছনায় এসে বসলো জুঁই!
জিসান কোনো রকম টাওয়াল পেঁচিয়ে রুমে এলো!মাথা চেপে ধরে বসে থাকতে দেখে জুঁইয়ের পাশে বসলো জিসান!
কি হয়েছে জুঁই?কোনো সমস্যা?
হঠাৎ গা গুলিয়ে এলো! আর…
ফুড পয়জেনিং এর জন্য হয়ত…!
একটা প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এনে দেবে?
মান্থলি মিস হয়েছে?
মাথা নিচু করে ফেললো জুঁই!
জিসান ভ্রু কুঁচকে তাকালো জুঁইয়ের দিকে!
জুঁই!আমি তোমার হাসবেন্ড..
জুঁই কিছু বলছি…
হু মহয়েছে..
সিরিয়াসলি জুঁই!
জুঁই একদম চুপ করে রইলো!জিসান মুচকি হাসলো শুধু!জুঁই সে হাসি দেখলেও তার অর্থ বুঝে উঠতে পারলো না..!
এনে দিবো!এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই!এটা স্বাভাবিক ব্যাপার!আমাদের ফিজেক্যাল হয়েছে যেহেতু!
মুখ নুয়িয়ে নিলো জুঁই।একটা শব্দ ও করলো না!জিসান নিচে চলে গেলো!জুঁই কেঁদে ফেললো নিঃশব্দে।
সন্ধ্যার পর রহমত মিয়া কিছু ফল মিষ্টি নিয়ে। এসেই খুব উদ্বিগ্ন হয়ে শ্রেয়াকে ডাকলো সে..
শ্রেয়া খুব তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতে নিলে হোঁচট খেলো! জিসান এসে ধরে ফেললো! এরকম একটা কান্ড ঘটলো জুঁই জয় ঝর্ণা বেগম রহমত মিয়া আমজাদ সাহেব সবার সামনে!
লজ্জায় দ্রুত সরে গেলো শ্রেয়া!জুঁই উপরে দাঁড়িয়েছিলো।সে ও ঘরে চলে গেলো!ব্যাপারটা চোখ জিসানের এড়ালো না!
জয় হেসে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে নিলো!
জিসান চলে গেলো উপরে!
রহমত মিয়া একটা কাগজ হাতে দিলো শ্রেয়ার!কাগজটা খুলে তাতে চোখ বুলিয়ে একদম হতবাক হয়ে গেলো শ্রেয়া….!
চলবে_
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com