Breaking News

গল্পঃ লাভ চ্যালেঞ্জ | পর্ব-০৩



কিরে নাফিজ! ক্লাস শেষ হয়েছে?? নাকি ক্লাস শেষ না করেই পালিয়ে চলে আসছিস।(মা)

-কি বলো তুমি?? আমি কেন পালিয়ে আসতে যাব বলো? এটাতো কলেজ তাইনা? এখানেতো আর সেই হাইস্কুলের মত সকাল ১০-৪ টা পর্যন্ত ক্লাস করতে হবে।এখানে অল্প ক্লাসেই সমাপ্ত হয়ে যায়।।

-তাই?? আচ্ছা তাহলে বল কেমন লাগব কলেজের প্রথম দিন।।

-অনেক ভালো।। (নাফিজ)
-কিরে ভাইয়া? আমার আইসক্রিম কই?? (লাবিবা)
লাবিবা আমার পিচ্চি বোন।।
সব সময় ঘুষ দিতে হয়, তা না হলে মিডিয়ায় ‘মানে’ আমার বাবা মার কাছে,আমার নামে মামলা করে।।ঘুষ দিলে সব ঠান্ডা।।
-কিরে আনিস নি তাইনা?? (লাবিবা)

-আমি একটা সত্যি কথা বলব??(নাফিজ)

-ঠিকআছে বল??(লাবিবা)

-আনিনাই।মনে ছিলোনা আপু!রাগ করিস না।(আমি)

-জানো মা! একটা কথা কি?? (বলে দিলাম??)

-(এইরে কাম সেরছে তো।এখন যদি মামলা করে তাহলেতো খান্দা বাশ খাব।)

মা:-কি কথা বল??

নাফিজ:-এই কি কি কি কথা বলবি হ্যাঁ!।

লাবিবা:-জানো মা আমার ভা ই য়া না।

নাফিজ:-একটু পরে দুটো কিনে দিব আইসক্রিম।তাও বলিস না।(কানেকানে)

লাবিবা:-হবেনা আরো দিতে হবে (আস্তে করে বলল)

নাফিজ:-৩ টা।

লাবিবা:-হবেনা।

নাফিজ:-৪টা হবে?

লাবিবা:-হবেনা।।আরো?

নাফিজ:-ধ্যাত! একটাও দিবোনা কিনে।

লাবি:- তাহলে বলে দেই?

নাফিজ:-না না না ৬টা হবে?

লাবিবা:- এইত ঠিকআছে।

মা:-কিরে বলিস না কেন??তোরা আবার ফিসফিস করে কি বলতেছিস হ্যাঁ!

নাফিজ:-এই লাবিবা! তুইওনা কেমন যেন হয়ে গেছিস।। আমি তোকে না বললাম মা কে একটা সারপ্রাইজ দিব, আর তুই আগেই বলে দিচ্ছিস?

মা:-কি হইছে বলত? সারপ্রাইজ না কি যেন বললি কি সে গুলো??

লাবিবা:-তোমার ছেলেনা মা! অনেক ভালো।আমাকে প্রতিদিন আইসক্রিম কিনে দেয়।

নাফিজ:-(আল্লাহগো! বাঁচলাম। যদিও ৬টা আইসক্রিম ঘুষ দিতে হবে)

মা:-হাহাহা সে কথা।। আমিতো জানিই আমার ছেলে অনেক ভালো।
আচ্ছা তাহলে তোরা যা,ফ্রেশ হয়ে নে,আমি খাবার দিতেছি।

নাফিজ:-ঠিকআছে যাচ্ছি।
-তারপর আমি আমার রুমে চলে আসলাম।এসে জামা কাপড় খুলে পাখার নিচে একটু বসলাম।প্রচন্ড গরম, গরমে গা দিয়ে ঘাম ঝড়ছে।
ইস! এখন যদি LED টা থাকতোনা তাহলে যে কি মজাটাই না হত।আমাকে পাখা দিয়ে বাতাস করত, আমার হাতে হাত রেখে কথা বলত।
ইস! কতই না মজা হত।

কিরে হাদারাম কি ভাবতেছিস?
(লাবিবা এসে বলল।)

নাফিজ :-ঐ তুই কখন আসলি?

লাবিবা’-এইতো আসলাম।।

নাফিজ’-ঐ তুই তখন আম্মুর কাছে কি বলতে চেয়েছিলি?

লাবিবা:-কিছুইনা।এমনি তোরে একটু ভয় দিলাম।আর এক ভয়ে দেখিয়ে ৬টা আইসক্রিম পাব।হিহিহি কি মজা।
যাহ যাহ এখনই আইসক্রিম নিয়ে আয়।। গুনে গুনে ৬টা আনবি বুঝলি?একটাও যেন বেশি হয়না।

নাফিজ :- হায়রে কপাল। আমি মানুষ কে বোকা বানাই,আর আজ আমাকে বোকা বানায় আমার বোন।।
তোর সাথেই শুধু পারিনা আমি।আর সবার সাথেই পারি।

লাবিবা:-হিহিহি তাতো পারবিনা।একটা হাদারাম ভাই আমার।।

নাফিজ:-বুঝছি।তোরে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে, খুব দ্রুত।তাহলে আমি সব সময় জিতে যাব।কেউ আমাকে বোকা বানাতে পারবেনা।

লাবিবা:-আমি বিয়ের পরেও তোরে জালাবো বুঝলি??
এখন যা ভদ্র ছেলের মত আইসক্রিম নিয়ে আয়।

নাফিজ:-ঠিকআছে যাচ্ছি।।
কি আর করার,ছোট বোনের আবদার, তাই বাধ্য হয়ে আমার মত ভদ্র ছেলে দোকানে গিয়ে আইসক্রিম আনতে হলো।৬ টা আইসক্রিম আর কিছু চকলেট নিয়ে আসলাম।তারপর সে গুলো ওর হাতে তুলে দিলাম।।।

নাফিজ:-এই নে ধর তোর আইসক্রিম।

লাবিবা:- ৬টাই আনছিস? এতগুলো আনলি কেন?

নাফিজ:-তোর ঘুষ।ঘুষ না দিলেতো আমার নামে মামলা দিস।

লাবিবা:-হাহাহা তুমিনা ভাইয়া সারাটা জিবনই বোকা হয়ে থাকবা।।
আমিতো দুষ্টামি করে ৬টার কথা বলছি আর তুমি সেটাকে সিরিয়াস মনে করে ৬টাই এনেছ??দুটো আনলেইতো পারতে।তুমি একটা খেতে আর আমি একটা খেতাম।

নাফিজ:-এই যা তো। আম্মুকে আর আব্বুকে দিস।।আর যে গুলো থাকে সেগুলো ফ্রিজে রেখে দিস।
তারপর পেট ভরে খাবি সারাটা দিন।
আর হ্যাঁ! এই নে ধর এই চকলেট গুলো রাখ।যখন মন চাইবে খাবি।।

লাবিবা:-আবার এগুলো এনেছ কেন।?

নাফিজ:-তুমিনা এই চকলেট গুলো খুক পছন্দ করো।তাই আনলাম।আমার একমাত্র কলিজার জন্যই তো আনবো তাইনা?

লাবিবা:-হইছে হইছে আর বলতে হবেনা।।আমি যখন থাকবোনা তখন কারে এনে দিবি এরকম করে??

নাফিজ:-তুই থাকবিনা মানে??
তুই সারাটা জিবন আমার তাছে থাকবি। তোরে আমি এখানেই রেখে দিব বিয়ের পরেও।
আমার পাসে বসে বসে সারাটা জিবন আমাকে জ্বালাবি।তোর জ্বালানি টা যেন কখন স্তব্ধ না হয় বুঝলি??
তোর ছোট ছোট আবদার গুলো আমি পুরন করার চেষ্টা করবো।।

-আমার কথা শুনে দেখি ওর চোখে পানি চলে আসছে।তারপর আমি বললাম যে..
ঐ কাঁদিস কেন??

লাবিবা:-আমার ভাইয়াটা অনেক ভালো।পৃথিবীর একমাত্র স্রেষ্ট ভাইয়া টা হলি তুই।।তোকে ছাড়া আমি কি করে থাকি বল?? তুই আমার আদরের ভাইয়া।তোর কাছেইতো আমি থাকতে চাই সারাটা জিবন।
এরো কম কলিজার টুকরা ভাইকে ছেড়ে আমি কোথাও যেতে পারবোনা।।

নাফিজ:-আচ্ছা শোন কাঁদিস না।।তোর চোখে কান্না মানায় না।একটু হাসনা পাখি।

লাবিবা:-চাইলেই কি হাসা জায়??

নাফিজ:-তাহলে??

লাবিবা:-একটা ভাবি এনেদিবি তাহলেই হাসবো।

নাফিজ:-একটা ভাবির চাইতে একটা দুলাভাই এনে দিলে ভাল হতোনা বল??তুইও হাসবি আর আমিও হাসবো।

লাবিবা:-এই শয়তান একদম মেরে ফেলবো কিন্তু।।বেশি কথা বলিস কেন।

এই তোরা কি করতেছিস? দ্রুত খেতে আয়??(মা)

-মা ডাকতেছে।চল খানা খাব।

-নাফিজ:-ঠিকআছে চল??

-তারপর খানা খেতে গেলাম।
খানা পিনা করে একটা আরামছে ঘুম দিলাম।ঘুম থেকে উঠে আছরের নামাজ পড়ে চলে গেলাম মাঠে খেলা ধুলা করতে।
খেলা ধুলা করে নামাজ পড়ে বাসায় এসে পড়তে বসে গেলাম।রাতে ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়লাম।।সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ কালাম পড়ে নাস্তা পানি করে কলেজে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।যখন ঘর থেকে বের হব তখনই লাবিবা বলে উঠল যে,…..

লাবিবা:-এই ভাইয়া! আমাকে একটু স্কুলে দিয়ে আসবি? প্রতিদিনতো একাই যেতে হয়।আজ তোর সাথে কি একটু নিয়ে যাবি??

নাফিজ :-ঠিকআছে আয় তাহলে আমার সাথে।।
তারপর ওরে নিয়ে হাটতে লাগলাম।ওর স্কুল আর আমার কলেজ প্রায় পাসাপাসি।
ও পড়ে হলো ৭এ গার্লস্কুলে।।প্রতিদিন এতাই আসা যাওয়া করে।আজ আবদার করল তাই আমি সাথে করেই নিয়ে আসলাম।।
রাজের জন্য ওর বাড়ির পাসে দাড়ালে লাবিবা বলে উঠল যে…..

লাবিবা:-কিরে ভাইয়া! এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন?নিশ্চয় ভাবিদের বাসা এটা তাইনা?

নাফিজ:-আরে না।এটা রাজদের বাসা।অলসটা ঘর থেকেই বের হতে চায়না।

লাবিবা:-ওহ। ঐতো বের হইছে।

তারপর রাজ এসে বলল যে…..
রাজ:-স্যরি দোস্ত! দেরি হয়ে গেলো।

নাফিজ:-তোর তারাতারি হলো কবে বলতো? সেই ক্লাস ১-১০ পর্যন্ত তো একই ডায়লোগ দিয়ে গেলি।এবার না হয় ডাইলোগটা একটু কমা।

লাবিবা:-ঐ ভাইয়া চলত? অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।

রাজ:-ঠিকআছে দোস্ত! চল।
আর রাগ করিস না।

নাফিজ:-ওকে চল।।
-তারপর আমরা কলেজে চলে গেলাম।আর লাবিবারে স্কুলে দিয়ে গেলাম।কলেজে ঢুকে দেখি যে,একটা গাছের তলে জান্নাত আর তার দুটো বান্ধবি ঐশি এবয তানিসা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
আমি ওদের কে দেখে রাজকে ক্লাসে পাঠিয়ে দিলাম।
তারপর আমি ওদের নিকটে গেলাম এবং বললাম যে….

নাফিজ:-Hi LED! কেমন আছ?
-আমার ডাক শুনে ঐশি বলল যে……

ঐশি:-ভাইয়া ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?

নাফিজ:-দেখেন আন্টি! আমি আপনাকে বলিনি।আমি আমার হবু বৌ কে বলেছি।আপনিতো আর LED না। LED তো হলো সে।

-এই যে LED কথা বলোনা কেন?

ঐশি:(কি?আমি আন্টি?? আমাকে কি আন্টির মত লাগে??)

জান্নাত:-এই যে হ্যাঁলো! হবু বৌ টা আসল কোথা থেকে?

নাফিজ:-কোথা থেকে আবার। বাংলা বই থেকে আসছে বৌ।
এই যে LED! আমাকে এত প্রশ্ন করোনা বুঝলে? উওর একদম সব জানি। কোন প্রশ্নের কি উওর দিতে হবে।

তানিসা:-(জান্নাতের বান্ধবি) এই যে নাফিজ ভাই।। আপনি আমাদের আপিকে কেন LED.বলেন??

নাফিজ:-সেটা পরে বলব।।
এই যে LED! এখানে বসে থাকলে কি হবে বলো?

জান্নাত:-তাহলে কি করব? এখানে বসে বসে কত সুন্দর মজার গল্প করতেছি আর আপনি এসে ডিস্টার্ব করতেছেন।

নাফিজ:- এই যে LED, চলো বাদাম খাই?

ঐশি :-এই যে LED আমি তাহলে আসি হ্যাঁ! তোরা কথা বল।

তানিসা :-এই যে,LED আমিও যাই। তোরা বাদাম খা।

নাফিজ:-ঐ তোমরা কেন আমার বৌ রে LED বলো হ্যাঁ! এটা শুধু আমিই বলব।

ওরা:-ঠিকআছে ভাইয়া।।আর বলবো না।

ওরা ওদের কাজে চলে গেলো।আর রাজতো আগেই চলে গেছে।এখন এখানে শুধু আমি আর LED বসা রইছি।আস পাস দিয়ে আরো অনেক জোড়া বসে বসে গল্পে মেতে রইছে।
তারপর আমি জান্নাতকে বললাম যে………….

NEXT…….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com