গল্পঃ সংসার জীবন পর্বঃ ০২ ও শেষ
বাসর ঘরে এমন কান্ড দেখে সিমি কিছুটা না অনেকটা ভয় পেয়ে গেছে কি করবে আর কি বলবে কিছু বুঝে উঠার আগেই সৌরভ বলে।
সৌরভ:- সিমি তুমি তোমার বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করো কি হলো তাকিয়ে আছো কেনো ফোন করো।
সিমি:- আপনি কি পাগল নাকী মাথা খারাপ হাঁ এমন করছেন কেনো? তখন লাঠিটা আরো জোড়ে জোড়ে মালিশ করতেছে। তখন সিমি কোনো দিশা না পেয়ে ওর বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করছে। রিং হতেই রিসিভ করছে এবার ছোঁ মেরে মোবাইলটা সৌরভ নিয়ে গেছে। ওপাশ থেকে ছেলেটা কান্না করে বলছে।
ছেলে:- সিমি তুমি ভয় পেয়ো না আজকের রাতটা কোনো মতে কষ্ট করে কাটাও আগামী কাল তোমাদের বাড়ীতে আসলেই আমরা দুজনে পালিয়ে যাবো। তখনি সৌরভ বলে।
সৌরভ:- ও আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমি কি করবো? বসে বসে বিড়াল মারবো? আমার সাথে এত বড় প্রতারনা আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। তখনি ছেলেটা ফোন কেটে দিছে। আমি সিমির দিকে তাকিয়ে আছি।
সিমি:- কি হলো এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো?
সৌরভ:- তুমি যে প্রেম করতে সেই কথাটা বাড়িতে জানাতে। তানা করে আমার জীবনটা নষ্ট করার মানে কি?
সিমি:- আপনাকে বলতে চাইছি কিন্তু আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।
সৌরভ:- আমাকে বলার কি দরকার তুমি তোমার বাবা মা কে বলবে। যাদের বললে কাজ হবে। এখন তুমি কি চাও সেটা বলো?
সিমি:- আমি যা চাই তা আপনি দিবেন?
সৌরভ:- দেখো আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে। আমি বুঝি ভালোবাসার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো সিদ্যান্ত নেওয়াটা অনেকটা কষ্টের। তবে ভুগে সুখ নয় ত্যাগে সুখ এখন বলেন কি চান?
সিমি:- যদি আমি আপনাকে ছেড়ে যেতে চাই তাহলে যেতে দিবেন?
সৌরভ:- ঠিক আছে যেতে দিবো। কারণ যদি কেউ আমাকে ভালোবাসতে না চাই তাকে তো জোর করে ভালোবাসতে বলা যাবে না। আর সংসার জীবনে বিশ্বাস আর ভালোবাসাটা থাকাটা বেশী জুরুরী। আর যদি ভালোবাসাটা না থাকে সেখানে সংসার জীবন তো সুখের দেখা আশা করাটা একদমি ঠিক না।
সিমি:- বুঝতে পারছি তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সৌরভ:- আচ্ছা ঘুমিয়ে থাকেন আর হাঁ এতক্ষন আপনার সাথে দুষ্টমি করেছি বিড়াল মারা নিয়ে। আসলে আমার বন্ধু বলছে আপনি নাকী কাওকে ভালোবাসেন কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনি তাই আপনার সাথে বিড়াল মারার অভিনয়টা করেছি।
সিমি:- ঠিক আছে। আচ্ছা আপনি চাইলে আমার সাথে খাঠের ঐপাশে শুয়ে পড়তে পারেন।
সৌরভ:- নাহ থাক অন্যের গ্রালফ্রেন্ডের সাথে আমার ঘুমানোর কোনো ইচ্ছে নেই।
সিমি:- বু্ঝতে পারছি আপনার গ্রালফ্রেন্ড বারণ করছে।
সৌরভ:- একদম ঠিক মনে করছেন আসলে আমারো গ্রালফ্রেন্ড আছে। কিন্তু আপনাকে আমি বুঝতে দেয়নি। আপনি কি মনে করছেন আমি আপনাকে বিয়ে করতে চেয়েছি? বাবা মা এক প্রকার জোর করে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে।
সিমি:- মানে কি বলছেন আপনি?
সৌরভ:- হ্যা ঠিকই বলছি। তখনি সিমি আমার ক্লার টেনে ধরে বলে।
সিমি:- ঐ এতক্ষন ধরে আমি চুপচাপ ছিলাম আর আপনি নিজের আসল রূপে ফিরে এসেছেন? আমি তো দুষ্টমি করে আমার বান্ধবীর সাথে কথা বলেছি। আর আপনার সাথে যে কথা বলছে সে আমার বান্ধবীর স্বামী।
সৌরভ:- মানে?
সিমি:- হ্যা। আমি আপনার মত না যে আমি কাওকে ভালোবাসলে তাকে ছাড়া অন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করতে যাবো। তখন সিমি আবার ফোন করে লাওড স্পিকার দিছে। তখন চেয়ে দেখি একটা মেয়ে বলছে।
মেয়ে:- সিমি তোরা কি শুরু করেছিস? তোদের আজকে বাসর আর তোরা কিনা আমাদের ডিসট্রাভ করছিস?
সিমি:- তুলি তোর স্বামীকে ফোনটা দিয়ে লাওড দে তো। মেয়েটা তাই করছে। আর দেখে ঐ কান্না ভেজা কন্ঠটার ছেলেটা হাসতেছে।
ছেলে:- সিমি তোমার স্বামী কোথায় ঘরে আছে না বেরিয়ে গেছে। কেমন বোকা ছেলে বাসর ঘরে বিড়াল মারার জন্য পাগল। ওকে জড়িয়ে ধরো তারপর দেখবে কিছুটা বুঝবে। কেমন বোকা ছেলেকে বিয়ে করেছো তুমি? তখন সিমি ফোনটা কেটে দিছে।
সৌরভ:- তুমি আমার সাথে মজা করেছো?
সিমি:- আপনি সত্যি একটা বোকা রাত শেষ হতে চলছে এখুনো একটা জিনিস নিয়ে পড়ে আছেন।
সৌরভ:- সিমির দিকে তাকিয়ে সোজা গিয়ে শুয়ে পড়ছে। সিমি ওর পাশে শুয়ে পড়েছে। সিমির মন ভিষন খারাপ কান্না করছে তখনি সৌরভ সিমিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে। সিমি তো অবাক আরে এই না বলছে অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসে। সিমি কিছু বলছে না কিন্তু সৌরভ ছোট ছোট কিস করছে সিমির পিঠে।
সিমি:- কি করছেন?
সৌরভ:- বউকে আদর করছি তাতে কি তোমার সমস্যা?
সিমি:- সমস্যা না আমারো আদর করতে ইচ্ছে করছে।
সৌরভ:- তাহলে বারণ করছে কে? তখনি সিমি ঘুরে সোজা সৌরভের ঠোঁটে কিস করে দিছে। সৌরভ এবার কিছুটা অবাক। সারারাত ঝগড়ার পর এবার কিছুটা ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়েছি। সিমিও কিছুটা হাসি খুশি মুখে রাতটা পার করছে। সকালে ভাবির ডাকে ঘুম ভাঙছে।
ভাবি:- সৌরভ উঠো সবাই নাস্তা টেবিলে অপেক্ষা করছে।
সিমি:- এই যে শুনছেন ভাবি ডাকতেছে উঠেন?
সৌরভ:- থাক ডাকুক আরেকটু শুয়ে থাকি কেমন। সিমি এবার সৌরভের কপালে কিস করছে। আর সৌরভ তো নাছুর বান্ধা জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। ঘন্টা খানেক পরে ওরা দুজনে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেছে। এতক্ষনে সবার নাস্তা শেষ।
দুলাভাই:- কি শালা বাবু বিড়াল কি ঠিক ঠাক মারতে পারছো?
সৌরভ:- হ্যা তা খুব ভালো করেই মারতে পারছি। দুলাভাই আর কোনো কথা বলেনি। তবে ভাবির সাথে সিমির একটা ভাব জমে গেছে যার কারণে। সিমিকে বেশ হাসি খুশি দেখা যাচ্ছে।
মা:- ছোট বউ এদিকে আসো। সিমি গেছে সবাই সিমিকে নানা রকম জিনিস দিতেছে। সিমি তো অনেক খুশি। বাবা বড় ভাইয়া সবাই মিলে সিমিকে আপন করে নিছে।
সিমি:- আচ্ছা ভাবি আপনি নাকী আপনার ছোট বোনের সাথে সৌরভের বিয়ে দিতে চাচ্ছিলেন?
ভাবি:- কে বলছে তোমাকে?
সিমি:- সৌরভ নিজেই বলছে।
ভাবি:- আরে বোকা আমার তো কোনো বোন নেই যদি থাকতো তাহলে তো ওর সাথে বিয়ে দিতাম। তখন চেয়ে দেখি সিমি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আজকে আর সিমির কাছে যাইনি সারাক্ষণ দুরে দুরে আছি।
দুপরে সিমিকে নিয়ে ওদের বাড়ীতে গেলাম। সিমির বাবা মা সবাই মিলে আমাদের বরণ করে নিছে।
আমাকে সিমি ওর রুমে নিয়ে গেছে। সিমি আমাকে বলে।
সিমি:- কি হলো আপনার ভাবির বোনের বিয়ে কি হলো?
সৌরভ:- তুমি যেমন আমাকে পরীক্ষা করেছো ঠিক আমিও করেছি। আচ্ছা স্যরি তখনি সিমি সোজা আমার মুখে হাত দিয়ে বলে।
সিমি:- আমাদের ভালোবাসাটা একদম মুজবুত থাকবে আর বিশ্বাস থাকবে অটল। সুতুরাং যতদিন বেচে থাকবো ততদিন আপনার বুকে মাথা রেখে আর আপনার সাথে সংসার করে যাবো।
সৌরভ:- ঠিক আছে! বলেই সিমিকে জড়িয়ে ধরেছি আমাদের সংসার জীবন তো শুরু হয়ে গেছে। আর আমাদের বুঝাপড়াটা দিন দিন খুব ভালো ভাবে এগোচ্ছে। শুরু হইছে তাদের সংসার জীবন নিজেদের মত করে গুচিয়ে নিচ্ছে তাদের সংসার।
।সমাপ্তি।
।সমাপ্তি।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com