Breaking News

গল্প: সংসার জীবন

বাসর ঘরে ঢুকেই একটা লাঠি হাতে নিলাম। আর লাঠি হাতে নিয়ে এদিক সেদিক তাকাচ্ছি। নতুন বউ আমার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকাচ্ছে! লাঠি হাতে খাঠের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এক পা দুই পা করে যখনি বউ কিছু বলতে যাবে তখনি আমি লাঠি হাতে ফ্লোরে বসে খাঠের নিচে তাকাচ্ছি। অনেকক্ষণ হয়ে যাচ্ছে খাঠের নিচে তাকিয়ে আছি। বউ আমার অধৈর্য্য হয়ে বলে!
বউ:- খাঠের নিচে আপনি কি খুঁজতেছেন? অনেকক্ষণ হইছে ঘরের ভিতরে আসলেন আর এদিক সেদিক তাকাচ্ছেন! অথচ ঘরে ঢুকে প্রথমে আমার ঘোমটা উঠিয়ে আমার মুখটা দেখার দরকার ছিলো! কিন্তু আপনি করছেন সব ওল্টা পাল্টা কাজ!
আমি:- আপনাকে কে বলছে আমি ওল্টা পাল্টা কাজ করছি? আমি সঠিক কাজটা করছি আপনি বসে থাকেন! আর যদি বসে থাকতে কষ্ট হয় তাহলে শুয়ে পড়েন!
বউ:- আজব ছেলে তো আপনি আজকে আমাদের বাসর রাত! এই রাতটা সবার জীবনে একবারই আসে। আর আজকের রাতটা আমাদের জন্য প্রথম রাত। এই রাত্রে আমরা বাকী জীবনে কি করে সংসরার করবো সব কিছুর প্লানিং করবো! আর আপনি কিনা বলছেন শুয়ে পড়তে? আচ্ছা খাঠের নিচে আপনি কি এমন খুঁজেতেছেন জানতে পারি?
আমি:- যেনে কি করবেন?
বউ:- কিছুনা। তবে কি জন্য খাঠের নিচে এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন সেইটা তো বুঝতে পারবো! এবার বলেন কেনো এমন ভাবে খাঠের নিচে তাকিয়ে আছেন?
আমি:- একজনকে খুঁজতেছি।
বউ:- এর মানে কি! খাঠের নিচে কি কেউ লুকিয়ে আছে নাকী?
আমি:- মানুষ নয় অন্য কিছু।
বউ:- ঠিক বুঝলাম না অন্য কি লুকিয়ে আছে?
আমি:- বিড়াল লুকিয়ে আছে!
বউ:- বিড়াল লুকিয়ে আছে মানে?
আমি:- হ্যা বিড়ালটাকে মারবো কিন্তু বিড়ালটা খুঁজে পাচ্ছি না!
বউ:- কি মারবেন বিড়াল?
আমি:- হ্যা! দুলাভাই তো বলছে বাসর ঘরে ঢুকেই আগে বিড়ালটা মারতে হবে। যদি বিড়াল মারতে না পারি তাহলে নাকি আমাদের সংসারে সারা জীবন অশান্তি লেগে থাকবে। আচ্ছা আপনি একটু নিচে নেমে ঐদিকে গিয়ে দেখেন তো বিড়ালটা ঐদিকে আছে কিনা?
বউ:- ঘরে বিড়াল থাকবে কি করে? আপনি বোকা নাকী?
আমি:- এই একদম আমাকে বোকা বলবেন না বলে দিলাম। দুলাভাইকে জিজ্ঞেস করেছি আমার রুমে বিড়াল আসবে কি করে? তখন দুলাভাই বলছে ভাবি রুমে এনে খাঠের উপর রেখে গেছে। আমি রুমে ঢুকে দেখি আপনি খাঠের উপর বসে আছেন। তাহলে নিশ্চয়ই বিড়ালটা আপনাকে দেখে খাঠের নিচে লুকিয়ে আছে।
বউ:- বোকাকে বোকা বলবো না তো কি চালাক বলবো? ভাবি আমাকে এনে খাঠের উপর বসিয়ে দিয়ে গেছে। আমি তো ঘরে কোনো বিড়াল দেখিনি।
আমি:- কি আপনাকে ভাবি খাঠের উপর বসিয়ে দিয়ে গেছে? কিন্তু দুলাভাই যে বলছে ভাবি বিড়াল রেখে গেছে।
বউ:- ভাবি কেনো আপনার রুমে বিড়াল রাখতে যাবে?
আমি:- কারণ আমি ভাবির বোনকে বিয়ে করিনি তাই। দেখি আপনি ঐদিকে গিয়ে একটু নিচে দেখেন বিড়ালটা মনে হয় ঐদিকে লুকিয়ে আছে।
বউ:- বলছি তো দুলাভাই আপনাকে বোকা বানিয়েছে।
আমি:- দেখুন দুলাভাই আমাকে কেনো বোকা বানাবে? নিশ্চয়ই বিড়ালটা ভাবি রেখে গেছে তাই দুলাভাই বলছে। আর তাছাড়া দুলাভাই আমার সাথে কখনো মিথ্যা কথা বলে না।
বউ:- হ্যা মনে পড়েছে ভাবি যখন আমাকে ঘরে নিয়ে আসছে তখন একটা বিড়ালকে বেড়িয়ে যেতে দেখিছি।
আমি:- সত্যি বলছেন বিড়ালটা বেড়িয়ে গেছে?
বউ:- হ্যা। দুলাভাই আপনার সাথে দুষ্টমি করে বিড়াল মারার কথা বলছে। দেখি আপনি বের হোন বলে বউ আমাকে পেছন থেকে টেনে খাঠের নিচ থেকে বের করেছে।
আমি:- বিড়ালটা যে মারতে পারিনি এখন তো আমাদের সংসার জীবন অনেক অশান্তিতে যাবে। আমার মন খারাপ করে দরজার দিকে যাচ্ছি তখনি বউ আমার টেনে ধরেছে পেছন থেকে। কি হলো টেনে ধরছেন কেনো?
বউ:- দরজার দিকে কোথায় যাচ্ছেন?
আমি:- বিড়াল মারতে। তখনি আমাকে নিয়ে খাঠের উপর বসিয়েছে আর বলে।
বউ:- বিড়াল মারতে যাবেন মানে? বিড়াল পরে মারবেন এখন আমার ঘোমটা উঠিয়ে বলেন আমাকে দেখতে কেমন লাগছে?
আমি:- এখুনি বলতে হবে একটু অপেক্ষা করুন আগে বিড়ালটা মেরে আসছি!
বউ:- তবেরে বিড়াল মারাচ্ছি বলে ওর ঘোমটা নিজেই উঠিয়েছে! আমি চেয়ে দেখি বউ আমার অনেক সুন্দর। বলেন কেমন লাগছে আমাকে?
আমি:- মাশাল্লাহ, সু্বাহানআল্লাহ, আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
বউ:- আপনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে। আচ্ছা আপনার নাম কি?
আমি:- আমার নাম আল মোহাম্মদ সৌরভ। আপনার নাম কি?
বউ:- মাশাল্লাহ আপনার নামটা অনেক সুন্দর! আমার নাম সিমি রহমান।
আমি:- মাশাল্লাহ আপনার নামটাও অনেক সুন্দর! আচ্ছা আপনি শুয়ে পড়েন আমি বিড়ালটা দেখি কোথায় গেছে।
সিমি:- কি আমি ঘুমাবো আর আপনি বিড়াল মারবেন? বোকা কোথাকার মারাচ্ছি তোকে বিড়াল।
আমি:- আরে আপনি আমাকে তুই করে বলছেন কেনো? আর বলছিনা আমাকে বোকা না বলতে বোকা বললে আমার মাথা গরম হয়ে যায়।
সিমি:- আপনার মাথা গরম হয় আর আমার তো এখন মাথা ফাটাতে ইচ্ছে করছে। আপনার মত একটা বোকা আর গাধার সাথে আমি সংসার করবোনা। এই আপনি যেখানে যাওয়ার সেখানে যান। আচ্ছা এখন আমার চোখের সামনে থেকে যান কি হলো যান বলছি।
আমি:- দুলাভাইয়ের কথা সত্যি হলো। বিড়ালটা মারতে পারিনি বলে আপনি আমার সাথে খারাপ আচরন করছেন।
সিমি:- তবেরে বলে আমার মুখ চেপে ধরে আমার বুকের উপর বসেছে! আরেক বার যদি বিড়াল মারার কথা মুখে আনিস তাহলে তোকে গলা টিপে খুন করবো। এই বোকা বাসর ঘরে বিড়াল আসবে কোথা থেকে কখন থেকে একিই কথা বলে যাচ্ছিস? তখন আমার মুখটা ছেরে দিয়েছে!
আমি:- আব্বাকে বলে দিবো আপনি আমার বুকের উপর বসে আমার মুখ চেপে ধরছেন? আর বলছেন আমাকে খুন করে ফেলবেন।
সিমি:- কাকে বলবি আব্বাকে! বলাচ্ছি তোকে বলে আমার গলা টিপে ধরেছে। গাধা শুন আমাদের মধ্যে যা হবে তার বিন্দু পরিমান যদি কাওকে বলিস তাহলে তোকে গলা টিপে মেরে ফেলবো। এই নিজের বুদ্ধি বলতে কিছু নেই। তোর মত বোকার সাথে সংসার করবো না। সংসার করার কোনো দরকার নেই আমি আগামী কাল বাড়িতে গেলে আর আসবোনা।
আমি:- বুঝতে পারছি সব দোষ আমার কারণ আমি বিড়ালটা মারতে পারিনি তাই আপনি এমন করছেন। আপনি বসেন আমি বিড়ালটা মেরে আসি তখন আপনার মাথা ঠান্ডা হয়ে যাবে। তখন আপনি আমার সাথে সংসার করতে রাজি হবেন। আর আমাদের সংসার জীবন শান্তিতে কাটবে। আমি কথা গুলি বলে বিড়াল মারার জন্য লাঠি হাতে নিয়ে বাহিরে আসার সময় সিমিকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতেছি। ভাবি এমন একটা কাজ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। ভাবির বোনকে বিয়ে করিনি তাই ভাবি ইচ্ছে করে আজকের বাসর রাতটা মাটি করে দিয়েছে। সিমিকে শুনিয়ে কথা গুলি বলে বেরিয়ে এসে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকলাম। কিছুক্ষণ পর রুমের ভিতর থেকে ফিস ফিস কথার শব্দ ভেসে আসছে তখনি রুমে ঢুকে দেখি সিমি মোবাইলে কথা বলছে। এই তুমি এত রাতে কার সাথে মোবাইলে কথা বলছো? সিমি কি বলবে কিছু ভেবে না পেয়ে বলে!
সিমি:- আমার বান্ধবীর সাথে। তখনি আমি লাঠিটা আবার হাতে নিলাম। আর সিমির সামনে লাঠিটা রেখেছি এবার সিমি বলে। লাঠি সামনে রাখছেন কেনো?
সৌরভ:- বিড়ালটা সামনে বসা তাই লাঠিটা সামনে রাখছি। এবার সত্যি করে বলো এত রাতে কার সাথে কথা বলছো? সৌরভের কথার বঙ্গিমা দেখে বুঝা যাচ্ছে এতক্ষন তাহলে দুষ্টুমি করছে। এবার সিমি কিছুটা ভয় পেয়ে কাপা কাপা সুরে বলে।
সিমি:- আমার বান্ধবীর সাথে বলছি আর তখনি সৌরভ লাঠিটা আবার হাতে নিয়ে মালিশ করতে আরম্ভ করছে। সৌরভের এমন কান্ড দেখে সিমি বলে। আপনি এমন করছেন কেনো?
সৌরভ:- কারণ এখানে বিড়ালের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তাই লাঠিটা ভালো করে মালিশ করছি যাতে করে একটা বাড়ি দিলেই মারা যাই। তখনি সিমি বলে।

সিমি:- আসলে আমি আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম। তখনি সৌরভ লাঠিটা আরো জোরে মালিশ করতে আরম্ভ করছে। 





To be continue,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com