Breaking News

নিস্তব্ধ প্রেমাবেগ |পর্ব - ২৬

সকাল থেকে বেশ আয়োজন মাহমুদ ভিলায়! আকাশ সাহেব এসেছে পরেছে গতকাল রাতেই!
বাড়ির একমাত্র মেয়ের আকদ আজ!কিন্তু আমজাদ সাহেব আসতে পারেন নি!রাঙামাটি থেকে আসতে পারে নি!

আজই আসবেন রোদের বাবা মা আদিবাকে দেখতে!রোদের দাদীর অবস্থা বেশি ভালো না! তাই আজই আকদ সারতে চায়!পরে তিনি সুস্থ হলে একটা রিসেপশন পার্টি দেয়া যাবে!

সকাল থেকেই ব্যস্ত শ্রেয়া!বাড়ির বড় বউ হিসেবে তারে ঘাড়ে দায়িত্বের বোঝা বেশ বড়সড়!এদিক অদিক ছুটোছুটি করছে!কাজের বুশা এসেছেন চারজন!তাদের সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন!
তাছাড়া জুঁইয়ের প্রেগন্যান্সি সিমটমগুলো বেশি হচ্ছে! বমি করেছে বেশ কয়েকবার! জুঁইকে দেখতে যাচ্ছে!স্যালাইন বানিয়ে দিয়ে এসেছে!

বাবুর্চি দিয়ে বাগানের পশ্চিমে রান্না হচ্ছে!জয় সেখানে ব্যস্ত!
জিসান বাড়িটাকে মোটামুটি সাজানোর দায়িত্ব নিয়েছে!তাছাড়া জুঁইয়ের শরীরও ঠিক নেই! কিছুক্ষণ পর পর দেখছে ঘরে গিয়ে!

সব কাজ শেষ করে আদিবাকে সাজাতে ওর ঘরে গেলো শ্রেয়া!গিয়ে কিছুটা নয় বেশ অনেকটা অবাক হয়ে গেলো!
লাল শাড়ির সাথে গোল্ডেন অর্নামেন্টস পড়ে সম্পূর্ণ বউ সাজে সেজে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আদিবা!

গালে হাত দিয়ে মুচকি হেসে আদিবাকে দেখছে শ্রেয়া!
কোমড়ে হাত দিয়ে শ্রেয়ার দিকে ফিরে তাকালো আদিবা!ভাবী দেখো তো ঠিকঠাক?

একাএকা সেজে নিলে?

আসলে তুমি আসছো না!আর আমি আগে থেকেই ভাবতাম বিয়েতে আমিই সাজবো! তাই আর কি..এখন ঠিকঠাক তো?বলো না..

নাহ কিছু একটা মিসিং..

তাই নাকি?কি বলোতো?

উমমম লাল লিপস্টিক দাও নি?

নেই তো..

আচ্ছা দাড়াও আমি আনছি..দ্রুত পায় ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো শ্রেয়া!
নিজের ঘরে যেয়ে লাল লিপস্টিক টা এনে বেরোতেই শাড়িতে পা পেঁচিয়ে পড়ে গেলো শ্রেয়া!
চাপা আর্তনাদ করে উঠলো শ্রেয়া!
খুব চেষ্টা করে উঠলো!উঠে দাঁড়িয়ে মনে হলো ব্যাথাটা ভ্যানিশ হয়ে গেলো!

শ্রেয়া মনে মনে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলো!কিন্তু ব্যাথা অনুভব না হওয়ায় দিব্বি হেঁটে গেলো আদিবার ঘরে!মনে মনে আল্লাহর শোকর আদায় করলো!
লিপস্টিক টা আদিবার হাতে দিয়ে বেশ কিছুক্ষন গল্প করলো!
তারপর চিনচিনে ব্যথা অনুভব হওয়ায় ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো!

জিসান নিচ থেকে এসে জুঁইকে বললো শাড়ি বদলে নিতে!নিস্তেজ হয়ে পড়েছে জুঁই!কথাই বেরুচ্ছে না মুখ থেকে!

শার্ট পাল্টাতে পাল্টাতে জিসান কিছুটা জোড়ে বলল কি হলো?বেশি শরীর খারাপ লাগছে?

হ্যা!অস্ফুট স্বরে উত্তর দিলো জুঁই!

কিন্তু যেতে তো হবেই!বাড়ির বউ তুমি!

জিসানের মুখে বউ কথাটা শুনে বেশ ভালো লাগলো জুঁইয়ের!নেতিয়ে যাওয়া কন্ঠে বলল যেমনি আছি ওমনিই যাই?

তা কি করে হয়?আচ্ছা বসো!
আলমারি থেকে একটা হালকা নীল কালার শাড়ি বের করে জুঁইয়ের সামনে রাখলো!
আস্তে আস্তে ধরে দাঁড় করালো!
জুঁই কেবল অবাকের পর অবাক হচ্ছে!নতুন শাড়িটা পড়তে হেল্প করলো!বসিয়ে চুল আঁচড়ে দিলো!নিজে হাতে খোঁপা করলো জুঁই!
মাথায় ঘোমটা টেনে দিলো জিসান!চোখে কাজল দিতে কাজল এগিয়ে দিলো!তারপর আলতো করে কপালে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দিয়ে হাত ধরে ধীর পায়ে এগুলো সামনের দিকে…

সকাল সাড়ে ১১ টায় কাজী এলো বিয়ে পড়াতে!তারঠিক ২৫ মিনিট আগেই রোদ তার মা বাবা ফুপি ফুপা মামা মামী আর মামা তো বোন এসেছে!

আদিবা রোদকে পাশাপাশি বসালো!
জিসান জুঁই ঝর্ণা বেগম আকাশ মাহমুদ সবাই বসে আছে!

জয় শ্রেয়াকে নামতে না দেখে নিজেই রুমে গেলো!
সোফায় পা মেলে বসেছিলো শ্রেয়া!
জয় পাশে যেয়ে বসতেই বললো কি হয়েছে তোমার?শরীর খারাপ করছে?

নাহ তেমন না!মৃদু ব্যাথা হচ্ছে!

কি বলছো?ডক্টর ডাকবো?নাকি হসপিটালে নিয়ে যাবো সরাসরি..

এত ব্যস্ত হবেন না প্লিজ!আদিবার বিয়েটা শেষ হোক তারপর না হয়…আর তাছাড়া ফুড পয়জনিং ও হতে পারে!

নিচে থেকে ডাক এলো জয়ের!

আপনি যান!আমি আসছি পরে…

একা থাকবে?আমি থাকি না…

না না!সেটা কেমন দেখায়!আপনি যান আমি আসছি..

আচ্ছা যাই তবে?

আচ্ছা!
জয় দ্রুত পায় নিচে হাঁটা ধরলো!

বিয়ের সব কাজ সম্পাদন করে কবুল দোয়া পরিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হলো আদিবা-রোদের!সবাই মিষ্টি মুখ করে খাবার খেতে বসল!

মায়ের জোরাজুরিতে শ্রেয়াকে রেখেই খেতে বসল জয়!ভাতে হাত দিতেই…

চলবে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com