Breaking News

গল্পঃ ছাত্রী এখন বউ | লেখা:- পলাশ ইসলাম | পার্ট- ৭

আমি গিয়ে কলিং বাজাতেই মিতু এসে দরজা খুলে দিলো,
'
=> কি চাই এখানে, আপনার প্রেমিকাতো ছাদে অপেক্ষা করছে ওখানে যান।
=> মিতু তুমি আমায় ভুল ভাবছো। দেখো তুবার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমিতো শুধু তোমাকেই,,,
'
কোনো কথা নেই দরজা বন্ধ করে দিলো। আমি আর কি করবো আমি আমার রুমে চলে গেলাম। বিকেলে রিহানকে পড়াতে গেলাম।
'
=> কিরে তোর আপু কই?
=> জানিনা, রুমে মনে হয়।
=> কিছু বলেছে নাকি?
=> না শুধু কান্না করতেছে।
=> আচ্ছা ঠিক আছে তুই পড় আমি আসতেছি।
=> আচ্ছা ঠিক আছে।
'
রিহানকে পড়তে দিয়ে আমি মিতুর রুমে গেলাম।
'
=> মিতু,
=> আপনি? কি চান এখানে চলে যান এখান থেকে।
=> দেখো মিতু তুমি আমায় ভুল বুঝতেছো।
=> আমি কোনো ভুল বুঝতেছিনা। আপনারা সব ছেলেরাই এক চরিত্রহীন।
=> মিতু তুমি আমায় ভুল বোঝোনা প্লিজ।
=> আমি কোনো ভুল বুঝতেছিনা আপনাদের মতো ছোটলোকদের চরিত্রই এরকম খারাপ হয়। চলে যান এখান থেকে।
'
আমি কি বলবো, সামান্য একটু ব্যাপার নিয়ে মিতু আমায় এতোবড় কথা বললো। আমি আর কিছু না বলেই চলে গেলাম। আমি রুমে শুয়ে আছি কিন্তু কিছুই ভালো লাগছেনা,এই আমার ভালোবাসার মূল্য দিল মিতু। এভাবে আমাকে ছোট করলো। কিছুই ভাবতে পারছিনা, না চাইতেও চোখ দিয়ে পানি পড়তেছে। রাতে রিহান আমাকে ডাকতে আসলো,
'
=> ভাইয়া আম্মু খেতে ডাকছে।
=> আন্টিকে বলিশ যে আজ আমি বাইরে খেয়ে এসেছি।
=> আচ্ছা ঠিক আছে।
=> আর শোন।
=> হ্যা বলো?
=> তোর আপু খেয়েছে?
=> না,
=> ওকে খেতে বলিস, বলবি যে ভাইয়া বলেছে তুই নাকি আজ ভাইয়ার জন্য খাবিনা রাতে, বলবি যে ভাইয়া এভাবে বলেছে।
=> আচ্ছা ঠিক আছে।
'
আমি জানি মিতুর অনেক জেদ আর রাগ, এখন যদি শোনে যে আমি বলেছি যে আমার জন্য ও রাতে খাবেনা তাহলে ও জেদ দেখিয়ে রাতে খাবে। আমি চাই ও ভালো থাকুক। রাতটা আমার ঘুমহীনতায় কেটে গেলো। আমি ডিসিশন নিয়েছি আমি আর এখানে থাকবোনা, এখানে থাকলে হয়তো আমি ছোট হয়েই থাকবো। মিতু ভালো থাকুক,আমি বাইরে গিয়ে একটা ম্যাস ঠিক করে আসলাম। আসার সময় ছাদে লক্ষ করলাম তুবা বসে আছে। আমি বাসায় ধুকতেই দেখলাম মিতু বসে আছে, আমি ওকে নিয়ে সোজা ছাদে চলে গেলাম, ও যেতে না চাইলেও আমি জোর করে নিয়ে গেলাম তুবার সামনে।
'
=> আমাকে কি এখানে তোমাদের প্রেম দেখার জন্য নিয়ে এসেছো??
=> কিছুক্ষনের জন্য চুপ থাকো। আচ্ছা তুবা আমি কি তোমায় কোনোদিন বলেছি যে আমি তোমায় ভালোবাসি?
=> নাতো?
=> সেদিন কি হয়েছিলো বলোতো?
=> সেদিন তুমি এখানে বসেছিলে আর আমি তোমায় বলেছিলাম আমি তোমায় ভালোবাসি,
=> এবার আমি বলি, আমি সেদিন তোমাকে বলতে যাবো যে আমি তোমায় নয় মিতুকে ভালোবাসি এমন সময় পাশে দেখি মিতু কান্না করতেছে আর আমাদের দেখে চলে গেলো। আমার তখন মনে হয়েছিলো যে আমার এখন তোমাকে কথাগুলো বলার চেয়ে মিতুর কাছে গিয়ে সত্যিটা বলা বেশি প্রয়োজন কিন্তু মিতু তুমি?? ও সরি আপনি, আপনি আমায়তো কিছু বলতেই দিলেননা উল্টো আমায় কথা শোনালেন। এখন কি বিশ্বাস হলো যে আমি কাউকে ভালোবাসিনি শুধু আপনাকে ছাড়া?
=> আমি সরি।
=> এখানে সরির কোনো প্রশ্নই আসেনা।
=> ধন্যবাদ তুবা, আর হ্যা তুবা আমি তোমায় কোনোদিন ভালোবাসিনি আর বাসতেও পারবোনা, আমায় ক্ষমা করো।
'
আমি আর কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম। রুমে গিয়ে আমি সব গুছিয়ে নিলাম। জানি এখন মিতু এখানে আসবে আমি এখন ওর সামনে যেতে চাইনা তাই বাইরে চলে গেলাম। বাইরে থেকে আসার সময় আমার একটা ফ্রেন্ডকে সাথে নিয়ে আসলাম। বিকেলে আমি তুবাদের বাসায় গেলাম। রিহান পড়তে আসলো।
'
=> এই আন্টি কোথায়রে?
=> আম্মু রুমে।
=> একটু ডাকতো।
'
আমরা সোফায় বসলাম একটু পর আন্টি আসলো।আন্টির সাথে মিতুও আসলো। একবার ওর দিকে তাকালাম, করুনভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
'
=> আসসালামু আলাইকুম আন্টি
=> ওয়ালাইকুম সালাম।কি ব্যাবার বাবা, হঠাৎ ডাকলে যে।
=> জ্বি আন্টি, আন্টি ও আমার ফ্রেন্ড রিয়াদ, ও এখন থেকে রিহানকে পড়াবে।
=> হঠাৎ করেই, কেনো বাবা কিছু কি হয়েছে?
=> না আন্টি,আমি আপনাকে বলছি, আর ও আজ থেকেই রিহানকে পড়াবে।
=> আচ্ছা ঠিক আছে,
=> রিহান এই ভাইয়া এখন থেকে তোমাকে পড়াবে, এই ভাইয়াকে নিয়ে যাও পড়ার রুমে আর দুস্টামো করবানা কিন্তু।
=> আচ্ছা ঠিক আছে।
'
রিহান আর রিয়াদ চলে গেলো।
'
=> বাবা বলোতো কি হয়েছে যে তুমি রিহানকে আর পড়াবা না?
=> আন্টি কিছুই হয়নি, আসলে আমার পড়ার চাপটা অনেক বেড়ে গেছে তাই আর কি,
=> ও আচ্ছা ঠিক আছে।
=> আর আন্টি, আমি কাল চলে যাচ্ছি।
=> কোথায় যাবা তুমি?
=> আমি একটা ম্যাস ঠিক করেছি ওখানেই যাবো।
=> কিন্তু,,,,,
=> প্লিজ আন্টি এবার আর আমাকে মানা করবেন না। আমার মতো একটা গরিব ঘরের সন্তানকে আপনাদের বাসায় জায়গা দিয়েছেন এটাই অনেক। সারাজীবন মনে রাখবো আমি আপনাদের কথা।
=> আচ্ছা ঠিক আছে তোমার যদি ম্যাসে থেকেই ভালো হয় তাহলে তুমি তাই করো আমি বাধা দেবোনা, তবে সপ্তাহে একবার হলেও এই মায়ের কাছে আসতে হবে। তোমাকে আমি আমার নিজের ছেলের চেয়ে কম দেখিনা।
=> অবশ্যই আমি চেষ্টা করবো আন্টি। এই কয়েকদিনে আমিও আপনাদের অনেক নিজের করে ফেলেছি।
'
পাশেই দেখলাম মিতুর চোখ দিয়ে শুধু পানি পরতেছে।
'
=> আমি এখন আসি আন্টি।
=> আচ্ছা ঠিক আছে। রাতে খেতে এসো।
=> আন্টি আমরা বন্ধুরা সবাই আজকে বাইরে একসাথে খেয়েছি তাই আর রাতে খেতে পারবোনা।
=> আচ্ছা ঠিক আছে।
'
আমি চলে গেলাম রুমে। খুব খারাপ লাগতেছে বিশেষ করে মিতুর জন্য অনেক ভালোবেসে ফেলেছি মেয়েটাকে। রাতে ঘুম আসছেনা। কিছুই ভালো লাগছেনা। তাই ছাদে গেলাম। ছাদের কোনে দারিয়ে আছি। পেছন থেকে কে যেনো এসে জড়িয়ে ধরলো।
'
=> কে?
=> প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা, থাকতে পারবোনা আমি তোমায় ছাড়া।
=> ও তুমি, চাইলেও যে আমি আর থাকতে পারবোনা, অনেকতো তোমাদের খেলাম এবার নিজেই কিছু করাতে চাই ।
=> প্লিজ।
=> এখন এখানে থাকলে ছোটলোকের যে চরম শেকড়ে আমি আটকে আছে সেটুকিও থাকবে না। আমাকে এখানে থাকতে বলে আর ছোট করিওনা।
=> আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ, আর কক্ষনো তোমায় ভুল বুঝবোনা।
=> আরে পাগলি আমি তোমায় সেদিনেই ক্ষমা করে দিয়েছি।
=> তাহলে আমায় ছেড়ে যাচ্ছো কেনো।
=> দেখো মিতু আমাকে পেছনে ফিরিওনা,আমার পথে আমাকে যেতেই হবে। তুমি ভালো থেকো সবসময় আমি শুধু এটাই চাই।
'
আমি ওখান থেকে চলে আসলাম আমি আর কিছুক্ষন থাকলে হয়তো ওর মায়ায় জরিয়ে পরতাম কিন্তু এখন যে আমার সময় সামনে এগোবার। আমার প্রতি তোমার এতটুকু ভালোবাসা থাকলে আমি তোমাকে অবশ্যই পাবো। মিতু ওখানে কান্না করতেছে, আমি রুমে চলে আসলাম। ভোরে কে যেনো দরজায় নক করতেছে। আমি উঠে দরজা খুলে দিয়েতো পুরাই অবাক,,,,,,,,,,,,
*
*
চলবে............

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com