Breaking News

কাজিনের সাথে প্রেম - কুরিয়ে পাওয়া

আপুর বাসা থেকে বেড়িয়ে রাজশাহী থেকে ফিরছিলাম আমি আর আমার কাজিন রাব্বি।ঈদের সিজন চলছিলো তখন,বাসে বেজায় রকমের ভীড়।কোন রকমে ভীড় ঠেলে আমি আর রাব্বি বাসের পিছনের দিকে এসে দেখি এক মহিলা তিন সিট একা দখল করে বসে আছে জিনিসপত্র মেলিয়ে।মহিলাটি চোখ বন্ধ করে আছে হয়ত ঘুমাচ্ছে।মহিলাটির গায়ে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে ধাক্কা দিয়ে বললাম খালা একটু সাইড হন আমরা বসি।খালা ঘুম চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, কি? বসবে মানে কই বসবে সিট তো খালি নাই!আমি চোখ বড় করে বললাম বসে আছেন তো এক সিটে আর দুই সিট ব্যাগ দিয়ে বোঝাই করে রেখেছেন। ব্যাগ গুলো পায়ের নিচে দিয়ে আমাদের বসতে দেন সামনেই নেমে যাব।মহিলাটি আমার চোখ বড় করা দেখে ভয় পেলো নাকি কে জানে!আচ্ছা সামনে নেমে যাবে যখন তখন বসো আমার আবার পা লেগে যায় বলে সিটের উপর ব্যাগ রেখে পা টান করে ঘুমাচ্ছিলাম। কথাগুলো শেষ করে খালা আমাদের দুজনের জন্য দুটো সিট ফাকা করে দিলো।রাব্বি বমি করে বলে ওকে জানালার পাশে দিলাম,তা না হলে জানালার পাশের সিট আমি কখনো মিস করি না। মাঝখানে আমি বসার পর খালাকে একটা মিথ্যা কথা বলে ফেলছিলাম বলে খারাপ লাগছিলো বলে স্বীকার করলাম খালা আমরা সামনে নামবো না, পাবনা গিয়ে নামব। খালার তো মাথায় হাত,এত খানি রাস্তা আমি এই ব্যাগ ট্যাগ পায়ের নিচে জড়ো করে রেখে পার করবো নাকি? উঠো তো উঠো তুমি তো সেই শেয়ানা মেয়ে দেখছি৷ আমি খালার কথায় কান দিলাম না, কানের গোড়ে উঠতে বলছে তো বলছেই থামার নাম নিচ্ছে না।বাসের সব প্যাসেঞ্জার তাকিয়ে আছে তাতে আমার কি আমি তো সিট পাইছি এই মেলা।
 
ঘন্টা খানেক পড়, চোখে ঘুম ঘুম ভাব রাব্বি অলরেডি ঘুমিয়ে পড়েছে।খালা আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে দেখেই ভয়ে চোখ বন্ধ করলাম।পাবনা পৌঁছাতে ঘন্টা খানেক বাকি আর, ড্রাইভার হঠাৎ ব্রেক কষলো সামনে একটা বাস কি কারণে দাড়িয়ে আছে তার জন্য।বাস থামায় বাসে বাদাম ওয়ালা উঠে আমার দিকে বাদাম এগিয়ে দিয়ে বলছে আপা নেবেন? দশটা প্যাকেট!আমি সাতপাঁচ না ভেবে দশটাকার বাদাম কিনে খাওয়া শুরু করলাম।বাস চলতে শুরু করলে খালার দিকে আদুরে চোখে তাকিয়ে আলাপ করার জন্য বললাম "খালা" বাদাম খাবেন? আমার খাওয়ার দরকার নাই নিজেও কম গেলো,পরে আবার বমি করবেনে।
রাগের সাথেই খালা কথাগুলো আমাকে শুনালো।খালার কথা শুনেও আমি বাদাম খাওয়া থামালাম না, ইচ্ছে করে থামালাম না আমার খাওয়া দেখে খালা রাগছে সেটা বুঝতে পেরে ইচ্ছে করেই খালাকে আরো রাগাচ্ছি।পৈশাচিক এক আনন্দ হচ্ছে খালার রাগ দেখে হা হা হা।
 
বাদাম খাওয়া শেষ করে ঘুম দিছিলাম,হঠাৎ পেটের মোচড়ে উঠে আশপাশ করতে লাগলাম।গা ঘামছে,গালের মধ্যে তেতো তেতো ভাব,মনে হচ্ছে বমি হবে।খালার দিকে তাকিয়ে বললাম খালা বমি করবো,কথা টা শেষ করতে না করতেই গলগল করে খালার কোল বোঝাই করে পেটের সমস্ত বমি ঢেলে দিলাম।খালার কোল বেয়ে বমি গুলো খালার পেয়ের নিচের সমস্ত ব্যাগ ভিজিয়ে দিলো।বমি করে একটু হালকা লাগছে,খালার দিকে তাকানোর মত সাহস পাচ্ছিনা।খালা চিল্লায়া সারা বাস মাথায় তুলে ফেললো এক মুহুর্তে, বাসে যেন ডাকাত পড়েছে এমন অবস্থা।এই মেয়েকে কত বার করে বললাম বাদাম খেয়ো না,বাদাম খেয়ো না জোর করে এসে ঘাড়ের উপর বসে আমার সমস্ত শরীল বমি দিয়ে মাখিয়ে দিলো ছ্যা ছ্যা ছ্যা।খালার চিল্লানির চোটে বাসের সমস্ত মানুষ আমার দিকে এমন লুক দিলো যেন আমি মানুষ খুন করে ফেলেছি। খালা তো থামার নামই নিচ্ছে না।
আমি কোন কথা বলছিনা ভয়ে সিটের এক কোনে চেপে বসে রইলাম।রাব্বি তো এ ঘটনার কিছু জানেনা,সে বেভোর ঘুম দিয়েই যাচ্ছে।
 
খালার চিল্লানোর চোটে থাকতে না পেরে জোর করেই চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর ভান করে পড়ে রইলাম।
খানিকপর খালা বমি টমি সাফ করে, একটু ঠান্ডা হলো। এমন সময় রাব্বি ঘুম থেকে উঠে পায়ের নিচে বমি দেখে বললো এসব কি?
আমি রাব্বির মুখ চেপে ধরে বললাম চুপ কর ব্যাডা,মাত্র খালা থামছে আর চ্যাতাইস না বিডিরে।
 
লেখা:মোমো আক্তার

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com