Breaking News

'রিফাত হত্যা'প্রসঙ্গ ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা


এক.
রিফাতকে নয়ন বন্ড প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানো হোক। রিফাত হত্যাসহ প্রকাশ্যে ও গোপনে যেসব হত্যার ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর সুষ্ঠু বিচার হওয়া চাই- আমাদের মূল প্রতিবাদ এমনটি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ আমরা অনেকেই প্রতিবাদ করছি অন্যকিছু নিয়ে।

দুই.
অনেককেই দেখছি শুধুমাত্র মেয়েটির দোষ নিয়েই কথা বলছেন। মেয়েটি নয়নকে আগে বিয়ে করেছে, পরকীয়া করেছে, কমেন্টে জান লিখেছে, জন্মদিনে উপস্থিত হয়েছে, নয়নের সাথে ফটো তুলেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোর হয়তো সবই সত্য। কিন্তু যতটুকু মনে হয়েছে আমার এও সত্য যে- নয়ন ছিল সন্ত্রাসী, সে জোর করে অস্রের মুখে কাবিননামায় সাইন করিয়ে নিয়েছে, জোর করে জন্মদিনে মেয়েটিকে এনেছে, জোর করে ফটো তুলেছেসহ যা-ই করেছে সব হুমকি-ধামকি ও অস্রের ভয় দেখিয়ে করেছে। যেহেতু নয়ন মেয়েটিকে পছন্দ করতো। বিবেকহীনদের ভেতরে জোর করে ভালোবাসা আদায়ের প্রবণতা স্বভাবতই থাকে। নয়নের বেলায়ও ছিল। অনেকের মতে, মেয়েটি কেন জখম হয়নি ঘটনাস্থলে? সোজা উত্তর- নয়ন মেয়েটিকে ভালোবাসত, তাই জখম হয়নি, হয়তো। যাহোক, আমার কথা হচ্ছে- মানলাম, মেয়েটিরও দোষ আছে। সে যদি অস্ত্রের মুখে পড়ে এসব না করে নিজ ইচ্ছাতেই করে থাকে তাহলে সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্ত তাই বলে শুধুমাত্র মেয়েটির বিচার চাই, তার কারণেই সব হয়েছে বলে বলে আপনি একজন প্রমাণিত খুনিকে বাঁচিয়ে দিতে পারেন না। কেননা, ধর্মীয় দৃষ্টিতে একজন মানুষকে হত্যা করা মানে গোটা জাতিকে হত্যা করা। অন্যের দোষ আছে বলে আপনি পরোক্ষভাবে খুনির পক্ষ কোনো অবস্থানেই নিতে পারেন না।

তিন.
প্রতিটি ঘটনায় কিছু-না-কিছু গুজব রটেই। যেসব গুজবের কারণে মূল ঘটনা মলিন হয়ে যায়। এর জন্য দায়ী কিছু অনলাইন পত্রিকা। তারা ভিউ পাবার লোভে একটি সংবাদকে মুখরোচকভাবে প্রকাশ করে। আকর্ষণীয় শিরোনাম ব্যাবহার করে। যা দেখেই মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে এবং শেয়ার করে। অথচ নিউজের ভেতরটা পড়লে দেখা যায় ভিন্ন কথা। কিছুকিছু অনলাইন তো অচেনা, অজানা, নির্ভরযোগ্য না- এমন মানুষদের স্টেটাসকেও নিউজ বানিয়ে প্রচার করে। যাচাইবাছাই তো তাদের ধারেকাছেও নেই। এগুলাই হচ্ছে সমাজের আসল কালপ্রিট। বিচারের আওতায় এদেরকেও আনা উচিৎ।

চার.
খুনি নয়ন এখনও ধরা পড়ছে না। এর আগেও অনেকবার মাদক ও কোপাকুপিমামলায় জেল খাটলেও দাপুটের সাথে প্রতিবারই বেরিয়ে গেছে। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, এর পেছনে পুলিশ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিকৃষ্ট ভূমিকা রয়েছে। একটা নিউজে একজনকে বলতে শুনেছি- নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো। নয়নরা কারো না কারো পৃষ্ঠপোষকতায় দিনকে দিন এমন ভয়ানক হয়ে ওঠে। বিচারের আওতায় এদেরকেও আনা উচিৎ।

পাঁচ.
অনেককেই দেখছি যেকোনো ঘটনায় ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাকে দুষছেন। এমনটি বলছেন- বাঙালরা তো খেলার মগ্ন, প্রতিবাদ করবে কী! অথচ যারা খেলা নিয়ে আনন্দ করেছিলেন তারাই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সুন্দর ও যুক্তিযুক্ত প্রতিবাদ করেছেন। আর যারা খেলাকে দুষছেন তাদের অধিকাংশই শুধুমাত্র মেয়েটিকে দোষ দিয়ে পরোক্ষভাবে খুনিকে আড়াল করছেন! আমার কথা হচ্ছে- খেলার সময় খেলা, পড়ার সময় পড়া, প্রতিবাদের সময় প্রতিবাদ। যখন যেটা করার প্রয়োজন তখন সেটাই করা উচিৎ। তাই নয় কি?

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com