সন্দেহ বড় ভায়ানক
“অফিসে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী” কথা’কে দেখলাম একটা ছেলের সাথে, আবাসিক হোটেলে ঢুকল। ছেলেটা তার কোমড়ের আপত্তিকর জায়গায় হাত রেখে হেঁটে গেল হোটেলে ” আমি কিছু ভাবতে পারছিনা শরীরটা ঘামছে।পাঁচ বছর রিলেশন করে বিয়ে করেছি, এটা কী তার প্রতিদান? গাড়ি থেকে নেমে গেটের দাঁড়োয়ানকে বললাম” ভাইয়া এই মাএ একটা ছেলে আর মেয়ে যে হোটেল এ ঢুকল তাদের চিনেন?”
“স্যার আমি চিনিনা তাঁদের, তবে প্রায় প্রায়ই তাদের এখানে আসতে দেখা যায়। ” দাড়োয়ানের কথায় মাথায় বাঁজ পড়ল।
হোটেল এ ঢুকতে গিয়েও ঢুকলাম না। বাসায় ফিরতে লেট হলো।বাসায় এসে দেখি কথা বাসায় নেই! সন্ধ্যার পর কথা বাসায় ফিরল। হাতে শপিং ব্যাগ।
কোথায় গিয়েছিলে তুমি?
সরি, তোমাকে বলে যাওয়া উচিত ছিল। এইতো একটা বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম।সেখান থেকে বান্ধবীকে সাথে নিয়ে কেনা-কাটা করতে লেট হয়ে গেল। আচ্ছা তুমি কিছু খেয়েছ কী?
হ্যাঁ বাহির থেকে খেয়ে এসেছি!
আমার কথা শুনে কথা ভ্রু কুচঁকে আমার দিকে তাকালো! কারণ কথা জানে তাকে ছাড়া ২বছরের সংসার জীবনে একদিন বাহিরে খায়নি।
আচ্ছা বাবা সরি! আর কোথাও না বলে যাব না। তুমি বস আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি,।আজকে অনেক টার্য়াড লাগছে।
শীতের বেলায় সন্ধ্যা বেলা শাওয়ার নেওয়ার জন্য বার্থরুমে ঢুকল কথা। রাগে শরীরটা গজগজ করছে। মনে চাচ্ছে কথাটা দু’টা থাপ্পর দিয়ে দিনের বেলা ঘটে যাওয়া বিষয়টা বলি। কিন্তু না এটা করা ঠিক হবে না। সমস্ত প্রমাণ নিয়ে এই বিষয়ে কথা বলব। আর সে যদি এত ভালবাসা পাওয়ার পরও পরকীয়া করে তাহলে এই শাস্তি সে অবশ্যই পাবে।
রাতে শুয়ে আছি, হঠাৎ বুকটা ভারী ভারী লাগছে। চেয়েই দেখি কথা বাচ্চা মেয়ের মত গুটিশুটি মেরে আমার বুকে শুয়ে । বুক থেকে সরাতে গিয়েও সরাতে পারলাম না। সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি, ভোরের আলো জানালার কাঁচ ভেদ করে কথার মুখে পড়ছে। খুব মায়াবী লাগছে কথার মুখখানা। মনেই হচ্ছে না এই মেয়েটাই কাল স্বামীর অজান্তে অন্য পুরুষের সাথে আবাসিক হোটেল এ সময় কাটিয়ে সন্ধ্যায় শপিং করে বাড়ি ফিরে।
প্রতিদিন সকালের মত আজও কথা যত্ন সহকারে টাই বেঁধে দিল। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কথার কপালে ভালবাসার স্পর্শ এঁকে দিলাম।খুব কষ্ট হচ্ছিল আজ কথারর কপালে চুমু দিতে।
এদিকে অফিসে এসে বসে আছি। হঠাৎ ক্রিং ক্রিং করে ফোনটা বাজতে লাগল।
ফোনটা তুলে নাম্বার’টা দেখেই অবাক হলাম। তোবা ফোন দিয়েছে।
“হ্যালো তোবা কিসের জন্য ফোন দিয়েছ?”
“মিঃরাজের সাথে প্রেম করব! “?
ওহ্ তাই নাকি?
“হুম তাই।আচ্ছা! তুমি চেম্বারে আস এখনই তোমার রির্পোট টা হাতে পেয়েছি। তুমি আসলে খুলে দেখব। ( তোবা)
আচ্ছা! তুমি থাক আমি আসতেছি।
ফোনটা কেটে দিয়ে, অফিসে বলে রওয়ানা দিলাম হাসপাতালে। তোবা হচ্ছে যৌন বিশেষজ্ঞ। বাংলাদের সবচেয়ে বড় ডাক্তার।
দুপুর দু’টায় হসপিটালে গিয়ে পৌঁছালাম। তোবাকে দেখে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।
আমার উপস্হিতিতে কেমন যেন নড়েচড়ে ওঠলো। তোবা কেমন যেন ঘেমে যাচ্ছে এসি রুমের মাঝেও।
এই যে মিসেস ডাক্তারনি ঘামছেন কেন? প্রেম করবেন না?
রাজ কথাটা যে তোমাকে কীভাবে বলি,বুঝে উঠতে পারছি না। তোমার রির্পোট আমি সাতবার পরীক্ষা করে দেখলাম।ভাবলাম রির্পোট’টা যদি ভুল হয়ে থাকে। কিন্তু প্রতিবারই একি উওর পেলাম।
এই তোবা কি এমন রির্পোট বল আমাকে, আমার কী ক্যান্সার। আমি কি মরে যাব? । আমি কিছুতেই চিন্তিত না বল কী রির্পোট এসেছে?
রাজ তুমি কোনদিন বাবা হতে পারবে না। আমি প্রথম রির্পোট’টা দেখে ৭ বার ল্যাবে পাঠিয়েছি। প্রতিবারই একই উওর তুমি কোনদিন বাবা হতে পারবে না।
তোবার মুখে এমন কথা শুনে দুনিয়াটা উলট- পালট হয়ে গেল। আমি কি সত্যিই কোনদিন বাবা হতে পারব না! ভাবতেই কান্না পাচ্ছে। তোবাকে কিছু না বলে রির্পোট’টা নিয়ে বের হয়ে এসে পড়লাম।
মনে মনে ভাবলাম কথা ঠিক কাজই করেছে। আমার সাথে থাকলে কোনদিন মা হতে পারবে না। চোখের পানি শার্টের হাতা দিয়ে মুছে গাড়িতে ওঠে ভাবতে লাগলাম; কথাকে তাঁর ভালবাসার মানুষের সাথে মিলিয়ে দিব। কথাকে ডির্ভোস দিয়ে নিজের সব সম্পর্দ ওকে লিখে দিয়ে বিদেশ এ চলে যাব। কি করব আর নিজের ভালবাসার মানুষটা এভাবে ঠকালো আমাকে। পাঁচ বছরের সম্পর্ক করে বিয়ে করার পরও কথা অন্যের সাথে নোংরামী করে।
বাসায় এসে গেট খুলতেই কথা জড়িয়ে ধরল আমাকে। কিছু বুঝতে পারলাম না আজ হঠাৎ কি হলো তাঁর জন্য এমন করে জড়িয়ে ধরলে। কথাকে ছাড়িয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম” কি হয়েছে আজ হঠাৎ, এত ভালবাসা?”
“আমার লজ্জা করছে, আগে মিষ্টি মুখ কর। তারপর বলছি কেন তোমাকে জড়িয়ে ধরলাম।
কথার কার্যকলাপ গুলো আজ আমার কাছে পাগলের মত লাগছে।
“এই নাও মিষ্টি খাও”কথাটা বলে ফ্রিজ থেকে আনা একটি মিষ্টি মুখে ভরে দিল। হঠাৎ আমার চোখ গেল জানালা দিকে জানালার গ্রিল খোলা। বিষয়টা রহস্যময় লাগছে। কথাকে পানি আনতে বলে দৌঁড়ে জানালার কাছে যেতেই দেখি একটা ছেলে দৌঁড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ভাল করে খেয়াল করে দেখলাম ছেলেটা সেদিনকার আবাসিক হোটেলে কথাকে নিয়ে যে যেয়েছিল। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না বিষয়টা অনেক দূর গড়িয়েছে।
কথা পানি নিয়ে এসে দেখে, আমি জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছি। কথা জানালার গ্রিল খুলা দেখে এমন ভাব করল মনে হচ্ছে ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না।
ওহ্ তুমি কি যেন বলতে চেয়েছিলে?
” জানো রাজ তুমি বাবা হতে চলছো। আর আমি মা হতে চলছি। ”
.কথাটা বলেই রুমে চলে গেল। এদিকে কথার মুখে অন্তঃসন্তা হওয়ার কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। শরীরটা ঘামছে, মানুষ এতটা খারাপ কেমনে হতে পারে?আমি জীবনে বাবা হতে পারব না। তাহলে কথার গর্ভে এটা কার সন্তান? বুঝতে বাকি রইল না এটা কথার পাপের ফসল।
মনে মনে স্থির করে নিলাম আজ রাতে আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার শাস্তি স্বরূপ কথাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলব।
রাতে নেশা করে সব প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। আজ রাতে চরিএহীন মেয়েটাকে তাঁর পাপের শাস্তি দিব।
বাসায় এসে দরজা’টা ধাক্কা দিতেই খুলে যায়। দরজাটা খুলতেই যা দেখলাম তা দেখবার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। রুমটা রক্তে ভেঁসে যাচ্ছে ”
চলবে “””
পরবর্তী পর্ব পেতে অবশ্যই লাইক কমেন্ট করতে হবে।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com