গল্পটা শুধু তোমার আমার । পর্ব-৮ম
নিলান্তি লজ্জায় রুমে ডুকে যায়।।তারপর Change করে রুম থেকে বের হতেই দেখে নিখিল এখনো দরজার সামনেই দাড়িয়ে আছে।।
নিলান্তি: আপনি এখনো এখানেই দাড়িয়ে আছেন যে??
নিলান্তিকে দেখে নিখিল পুরোই থহ…..হা করে এক পলকে তাকিয়ে আছে।।চোখের পলক পড়ছে না।।মনে হচ্ছে একটা নীল পরি দাঁড়িয়ে আছে।।তার উপর খোলা চুল,,চোখ দু’টো কাজল মাখা,,আর কপালে ছোট্ট একটা কালো টিপ।।যা লাগছে না মেয়েটাকে।।
নিলান্তি: হা করে আছেন কেন?? মশা ডুকে যাবে তো।।চলুন ব্রেকফাস্ট করে নি।।
নিখিল: আমার আর ব্রেকফাস্ট করা লাগবে না।।এমনিতেই ফেট ভরে গেছে।।(মনে মনে)
নিলান্তি: কি হলো,,,চলুন।।
নিখিল: হুমম এবার ভালো দেখাচ্ছে।।চলো নিচে যাই এবার।।
আবির ভাই: সকালের নাস্তায় কি খাবে সবায়??
নিখিল: ভাইয়া আমরা সবায় আজকে খিঁচুরি ডিম খাবো।।শুনেছি খিঁচুরি ডিম নাকি এই দিকের মানুষদের সকালের নাস্তায় খাওয়া হয়।।যে জায়গায় এসেছি সে জায়গার খাবার খাবো না তা কি হয়!! যদিও সবায় যদি খেতে চায় তাহলে এই খাবারই অর্ডার দিতে পারো।।
সবায় জোড় গলায় সায় দেয় আজকের ব্রেকফাস্ট খিঁচুরি ডিমই খাবে।।
নিলান্তি একটার পর একটা কাঁচা মরিচ ভেঙ্গে ভেঙ্গে খিঁচুরির সাথে খাচ্ছে।।নিখিলের তা দেখে নিজের চোখ নাক দিয়ে পানি বের হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।।
নিখিল: এই মেয়ে,,তুমি এতো মরিচ খাচ্ছো কেন?? আর এতো ঝাঁল খাওয়া তোমাকে কে শিখিয়েছে বলোতো?? তোমার মরিচ খাওয়া দেখে তো আমার নিজেরই ঝাঁল লাগছে।।
নিলান্তি একটা হাসি দিয়ে খাবেন নাকি একটা।।কাঁচা মরিচের টেষ্ট অনেক মজা।।
নিখিল: এতো ঝাঁল আমি খেতে পারিনা।।আমার নাক ঠোঁট সব লাল লাল হয়ে যায় ঝাঁলে।।খাওয়া শেষ তোমার?? চলো এবার উঠতে হবে।।না হয় দেরি হয়ে যাবে।।আজকে তোমায় নিয়ে পুরো সেন্টমার্টিন ঘুড়বো।।
নিলান্তি পানি খেতে খেতে হুম চলুন আমার খাওয়া হয়ে গেছে।।
নিখিল: পানিটা আস্তে খাও।।গলায় আটকে যাবে।।
অতঃপর দু’জনই বেরিয়ে পড়লো।।একদম পাশাপাশি হেঁচে চলছে দু’জন।।আর চারপাশটা দেখছে।।
চারপাশের বেশির ভাগ জমি জুড়ে রয়েছে কৃষিজাত পন্য।।(নারিকেল,,পেঁয়াজ,,টমেটো,,ধান এসব)।।বেশির ভাগ মানুষ এখানে মৎস্য শিকারী।।
নিখিল: নিলান্তি কোথায় যাবে??
নিলান্তি: আসলে আমার আগে কখনো সেন্টমার্টিন আসা হয় নি।।যার জন্য জায়গাটা আমার কাছে একদমই অপরিচিত।।এখন আপনি যেখানে নিয়ে যাবেন সেখানেই যাবো।।
নিখিল: ও আচ্ছা।।আমি একবার এসেছিলাম।।চলো তাহলে আগে আমরা “নারিকেল জিনজিরা” এই জায়গায় যাবো।।তারপর “ছেরাদিয়া” দ্বিপে যাবো।।ভালো লাগবে তোমার।। হেঁটে যাবে নাকি সাইকেলে যাবে?? একটু দূর আছে।।সাইকেলেই যেতে হবে।।এখানে কিন্তু সাইকেল ছাড়া আর কোনো যানবাহন নেই।।
নিলান্তি: কিন্তু আমি তো সাইকেল চালাতে পারি না।।
নিখিল: তো কোলে তুলে নিবো আমি??
নিলান্তি: ইমা না না।।আমি হেঁটেই যাবো তাহলে।।
নিখিল: হেঁটে যেতে পারবে না।।দূর আছে কিছুটা।।
নিলান্তি: তাহলে………….
নিখিল একটা সাইকেল ভাড়া করলো।।
নিখিল: এসো,,উঠে বসো সাইকেলে।।
নিলান্তি: আমি তো চালাতে পারি না,,,আর সাইকেল একটা কেন ভাড়া করেছেন??
নিখিল: তুমি তো চালাতে পারোনা।।তাহলে দু’টো সাইকেল এনে কি করবো বলো।।আমি তোমাকে চালিয়ে নিবো।।এসো এসো,,,,,,,,,
নিলান্তি ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে।।
নিখিল নিলান্তির হাত ধরে টেনে এনে সাইকেলের সামনে বসতে বসলো।।
নিলান্তি এক পাও নড়ছে না।।সাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।।
নিখিল: উঠো।।আমি কোলো তুলে বসিয়ে দিবো
নিলান্তি: না লাগবে না।।আমি পারবো।।
নিলান্তি সামনে আর নিখিল পেছনে বসলো।।
নিখিল: ঠিক করে বসো।।আর ওড়নাটা গলার সাথে পেঁচিয়ে না রেখে ঠিক করে পড়ো।।আমার জিনিস আমি দেখবো।।লোক দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই।।
নিলান্তি: আপনার জিনিস মানে??
নিখিল: তুমি তো আমারই তাই না।।আমার বউ করবো তো তোমাকে(দুষ্টু হাসি দিয়ে )
নিলান্তি: আমার বয়েই গেছে আপনার বউ হওয়ার।।(ভেঙ্গচি কেটে)
নিখিল: তুমি আমার বউ না হলে আমি তোমাকে আর কারোর বউ হতে দিবো না।।মনে রাখবা।।
নিলান্তি: আমি আর সাইকেলে বসতে পারছি না।।আমি হেঁটে যাবো।।
নিখিল: সামান্য কক্সবাজার বিচের কাছে যেতে মহারানীর কষ্ট হয়ে যায়,,আর এখন বলে হেঁটে যাবে।।(হেসে) আর একটু,, এইতো আমরা চলে এসেছি।।
নিলান্তি: না আমি হেঁটে যাবো বলেছি যাবো।।
নিখিল: হেঁটেই যখন যাবে, তাহলে সাইকেলে উঠে বসলে কেনো??(দুষ্টু হেসে)
নিলান্তি: আপনিই তো আমাকে জোড় করে উঠিয়েছেন।।এখন আবার জিঙ্গেস করছেন আমি কেন উঠলাম।।থামুন আমি নেমে যাবো।।
নিখিল সাইকেল থামিয়ে নিলান্তির কাছে গিয়ে বলছে,,,খুব কষ্ট হচ্ছে বুজি বসতে??(হেসে)
নিলান্তি: হুম অনেক কষ্ট হচ্ছে।।(একটু ধমকের সুরে)
নিখিল: আর একটু কাছে গিয়ে ঘাড়ের উপর মাথা রেখে, তাই বুজি?? অনেক কষ্ট হচ্ছে না??
নিলান্তি: হ…হুম হচ্ছেই তো।।অনেক কষ্ট হচ্ছে।।
নিখিল: আমার দিকে ফিরে আমার গলা জড়িয়ে বসো।।তাহলে আর কষ্ট হবে না।।
নালান্তি: আ……আমি পারবো না।।আ…আমি হেঁটেই যেতে পারবো।।
নিলিল: তাই না,,আমার দিকে ফেরে বসো।।আর শক্ত করে গলা জড়িয়ে রাখো।।আর কষ্ট হবে না তাহলে।।
নিলান্তি নেমে যেতে নিলেই নিখিল পেছন থেকে হাত ধরে নেয়।।
নিখিল: কোথায় যাচ্ছ?? আর একটু পথ।।আমি যেভাবে বলেছি সেভাবে বসো।।আর কষ্ট হবে না বসতে।।
নিলান্তি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।।
নিখিল হাত টান দিয়ে নিলান্তিকে তার কাছে নিয়ে আসে।।
নিখিল: যেও না প্লিজ,,,বসো না।।আর একটু পথ বাকি।।(করুণ সুরে)
নিলান্তি নিখিলের সামনে তাকিয়ে বসলো।।
নিখিল: গলা জড়িয়ে ধরো।।না হলে পড়ে যাবে কিন্তু।।
নিলান্তি বাধ্য মেয়ের মতো জড়িয়ে ধরে বসে।।
কিছুক্ষণ পর তারা “নারিকেল জিনজিরা” জায়গায় চলে এসেছে।।
চারপাশে অসংখ্য নারকেল গাছে ভরা।।তার সামনেই একটা সমুদ্র আছে।।নিলান্তির সমুদ্র খুব পছন্দ।।তাই তো দৌঁড়ে গিয়ে সমুদ্রের বুকে ছুঁটতে লাগলো।। হুঁট করে নিখিল পেছন থেকে নিলান্তির হাত ধরে বলে,,,
সমুদ্রে এখন নামলেই হয় না?? আগে পুরো জায়গাটা একটু ঘুরে দেখবো।।তারপর যাওয়ার সময় সমুদ্রে নেমো।।এখন সমুদ্রে গেলে পুরো ড্রেস ভিজে যাবে।।ভেজা কাপড় নিয়ে ঘুড়তেও পারবে না।।তার চেয়ে পরে নামলে ভালো হয় না??
নিলান্তি: তাই তো।।এতো কিছু ভেবে দেখিনি তো।।(মনে মনে) মাথা নিচু করে আচ্ছা বলে সায় দেয়।।
দু’জনই দু’পাশে চুপ-চাপ হাঁটছে।।
নিখিল হাঁটছে আর ভাবছে,,ইচ্ছে করছে মেয়েটার হাত ধরে হেঁটে যাই।।আলতো করে কোমড় জড়িয়ে ধরবো,,আর তার মাথাটা আমার কাঁধের উপর দিয়ে আমার হাত আলতো করে ধরে হেঁটে যাবে বহুদুর,,যে পথের কোনো শেষ নেই,,নেই কোনো শুরু।।
নিলান্তি: এই যে…. এই যে শুনতে পাচ্ছেন।।
নিখিল: হ..হ্যা…কিছু বলেছো??
নিলান্তি: কি এতো ভাবছেন,,সেই কখন থেকে ডেকে ডেকে গলা ফাটিয়ে দিচ্ছি।।
নিখিল: না তেমন কিছু না।।আচ্ছা ডাব খাবে??দেখো কত ডাব গাছে ঝুলে আছে।।
নিলান্তি: হুম খাওয়া যায়।।কিন্তু পারবে কে??
নিখিল: কে পারবে তোমার ভাবতে হবে না।।তুমি খাবে কিনা সেটা বলো??
নিলান্তি: হ্যা খাবো।।
নিখিল গাছে উঠে ডাব পেড়ে নিয়ে এলো।।
নিলান্তি: আপনি গাছে চড়তে পারেন?
নিখিল একটা হেসে বললো,,না পারার কি আছে।।ছোট বেলায় যখন বাড়িতো ছিলাম,,তখন গাছে চড়ে ডাব পেড়ে পেড়ে কত খেয়েছি।।আচ্ছা বাদ দাও।।এই জায়গায় বসে পড়ো।।আমি ডাব ছিলে দিচ্ছি তোমাকে।।
নিখিল: এই নাও।।দেখে মনে হচ্ছে অনেক মিষ্টি হবে পানি।।খেয়ে নাও।।
নিলান্তি: খাবো কিভাবে??
নিখিল আলতো করে হেসে দিয়ে বললো,,এখানে তো গ্লাস বা খাওয়ার মতো কিছুই পাওয়া যাবে না মহারাণী।।হাা করেই খেতে হবে।।আমি দেখিয়ে দিচ্ছি দেখো,,এভাবে হা করে খাও।।
নিলান্তি নিখিলের মতো করে খেতে গিয়ে ডাবের পানি মুখে না গিয়ে সব গাঁয়ের উপর পড়ে।।
নিখিল: হাহাহাহাহাহা।।এই সামান্য পানি খেতে পারো না।।পুরো ডাব উপর করে কেউ খায়।।কখনো দেখেছো কাউকে।।হাসতে হাসতে খিল ধরে যাওয়ার মতো নিখিলের।।
নিলান্তি: মজা নিচ্ছেন না?? আমি এর আগে কখনো খাই নি এভাবে।।
নিখিল: তোমার ডাবের পানি তো শেষ।।নাও আমারটা খাও।।(হাসতে হাসতে)
নিলান্তি: আমি খাবো না।।আপনি খেয়ে নিন।।
নিখিল: তাহলে শেয়ার করে এসো।।
নিলান্তি: সেই তো হা করে খাওয়া লাগবে।।আমি পারবো না এমন করে খেতে।।
তারপর নিখিল তার মুখ ভর্তি পানি নিয়ে নিলান্তির কাছে গিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে নিলান্তির ঠোঁট দু’টো আলতো করে ঘষে দেয়।।নিলান্তির একদম কাছে গিয়ে আলতো করে কোমড় জড়িয়ে ধরে,, কপালের সাথে কপাল,,ঠোঁটের সাথে ঠোঁট দিয়ে নিলান্তির ঠোঁট জোড়া আলতো করে খুলে নিখিলের মুখের পানি গুলো নিলান্তির মুখের ভেতর অল্প অল্প করে দিচ্ছে,,আর নিলান্তি একটু একটু করে মুখ থেকে নিয়ে খাচ্ছে।।
দু’জন যেনো কোনো এক অজানা সুখে ডুবে গেছে।।
নিখিল: তাকিয়ে আছো কেনো এমন করে?? আরো খাবে নাকি?? পেট ভরে নি??
নিলান্তির হুশ এলো।।আর সরে গিয়ে বসলো।।মনে মনে ভাবতে লাগলো,মানুষটা অনেক অদ্ভুত।।যেসবের সাথে আমি আগে কখনো পরিচিত ছিলাম না সেসব আমাকে দেখাচ্ছে এই মানুষটা।।আচ্ছা আমি কেন এতো কিছুর পরও এখনো চুপ করে বসে আছি,,আমি কেনো কিছু বলছিনা,,আমি কি তাহলে ভালোবেসে ফেলেছি মানুষটাকে,,কিন্তু দু’দিনের পরিচয় এই ছেলেটার সাথে,,এর মধ্যেই কি কাউকে ভালোবাসা যায়,,না না এটা আমার ভালোবাসা না,,এটা আমার শুধুই ভালোলাগা।।শুধুই একটা মোহ যেটা এই বয়সে হয়।।এখন থেকে ছেলেটাকে ইগনোর করবো।।আমার আগেই ইগনোর করা উচিত ছিলো।।তাহলে আজ এতো সাহস পেতো না ছেলেটা।।
নিখিল: এই নিলান্তি,,কি হয়েছে? তখন থেকে ডেকে যাচ্ছি।।কি চিন্তা করছো এতো?
নিলান্তি: কিছু না।।আমি এবার উঠবো।।রিসোর্টে যাবো।।
নিখিল: তোমার জামা তো ভিজে গিয়েছে একদম।।ধরো আমার শার্টটা পড়ে নাও।।
নিলান্তি: না আমার লাগবে না।।আমি এভাবেই যেতে পারবো।।
নিখিল: এভাবে গেলে তোমার দিকে সবায় বাজে নজরে তাকাবে।।
নিলান্তি: বাজে ভাবে দেখুক,,বাজে কথা বলুক,,তাতে আপনার সমস্যা কোথায়,,আপনায় কি যায় আসে তাতে?(রেগে রেগে)
নিখিল: রেগে আছো কেনো এমন?? আমার কিছু এসে না আসলে আমি তোমায় বারন করতাম বলো??
নিলান্তি: কিছু এসে যাবে না আপনার।।কোথাকার কোন ছেলে আমার আমাকে বোঝাচ্ছে,,আমার ব্যাপরে নাক গলাচ্ছে।।শুনুন আমাকে আমার মতো করে চলতে দিল।।সরুন,,আমি যাবো।।
নিখিল পেছন থেকে নিলান্তির হাত ধরে বলে, একা যেতে হবে না।।আমি দিয়ে আসি চলো।।
নিলান্তি এক ঝাটকায় নিখিলের হাত ছেড়ে দিয়ে বলে,,Just shut-up & don’t touch me..। আপনি কোন অধিকারে আমার হাত ধরেছেন,,আর কোন অধিকারেই বা আমায় আদর করেছেন।।এতো দিন চুপ ছিলাম,,বাট আর চুপ থাকতে পারছিনা।।আমার পেছনে নিজের অধিকার খাটাতে আসবেন না।।মেয়ে দেখলেই আপনাদের মতো ছেলের আর তর সয় না তাই না?? আমার আশেপাশে যেন আপনাকে আর কখনো না দেখি,মাথায় ডুকিয়ে নিন কথা গুলো।।
নিখিলের দু’চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে।।কিন্তু একটা কথাও বললো না নিলান্তিকে।।কথা গুলো যেনো সূচের মতো লেগেছে নিখিলের গাঁয়ে।।
নিলান্তি হেঁটে যাচ্ছে হোটেলের উদ্দ্যেশে।।আজ আর নিখিল নিলান্তিকে পিঁছু ডাকলো না।।পুরো দুনিয়াটা যেন জাপসা হয়ে ঘোলা হয়ে যাচ্ছে নিখিলের।।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর নিলান্তি রিসোর্টে পৌঁছালো।।পুরো রিসোর্ট ফাঁকা।।সবায় যে বেরিয়েছে এখনো আসে নাই।।নিলান্তি ধপাস করে বেডের উপর পড়লো।।অনেকটা পথ হেঁটে এসেছে।।মেয়েটা অনেক ট্রায়াড।।শুয়ে শুয়ে নিলান্তি চিন্তা করছে,,যা করেছে ভালোই করেছে,, ছেলেটা আর কখনো নিলান্তির পাশে ঘেঁষবে না।।দু’দিনের ছেলেটার আমি একটু বেশি মিশে গিয়েছি তাই ছেলেটা সুযোগ পেয়েছে অনেক।।
যাই হোক,,এসব না ভাবি,,যাই ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দি,,অনেক ট্রায়াড লাগছে।।
এক ঘুমে বিকাল ৫টায় ঘুম ভেঙ্গে যায় নিলান্তির।।ঘুম ভেঙ্গে যায় মূলত বাইরের চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে।।নিলান্তি বিরক্ত হয়ে দু’হাত দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাইরে এসে দাড়ায়।।বাইরে চোখ যেতেই দেখে সব ফ্রেন্ডরা সাউন্ড বক্স এনে হৈইহুল্লো করে মজা করছে।।নিলান্তিকে ডেকে সবায় ইশারায় তাদের কাছে যেতে বলে।।নিলান্তি হাত দিয়ে ইশারায় না করে দেয়।।পরে রুমে চলে আসে।।
নিলান্তি: কি ব্যপার বাইরে সবায়কে দেখলাম কিন্তু নিখিলকে দেখলাম না যে,,,সবায় মজা করছে,,কিন্তু ছেলেটা কই।।দুরর আমি কেনো এই ছেলের কথা ভাবছি।।ছেলেটা থাকুক বা না থাকুক আমার কি।।
এই বলে জানালার দিকে মুখ করে আকাশের চাঁদটা দেখছে।।জানালার ফাঁক দিয়ে চাঁদটা নিলান্তির মুখে এসে পড়লো।।হঠাৎ নিলান্তির গত কালের কথা মনে পড়ে গেলো।।নিখিলের সাথে এক সাথে বসে চাঁদ দেখার মূহুর্তটা।।
ইতি: কিরে ঘড়ের আলো নিভিয়ে বসে আছিস কেনো?? আর নিখিল ভাইয়া কোথায়?? তুই রুমে কিন্তু উনাকে তো কেউ খুঁজে পাচ্ছে না।।
নিলান্তির বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো।।সে কি উনি এখনো রিসোর্টে ফেরেন নি????
ইতি: তুই জানিস উনি কোথায়??
নিলান্তি: না মানে……….না জানি না।।তুই যা এখন।।
ইতি চলে গেলো রুম থেকে।।
নিলান্তি কেমন যেনো করছে।।এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে মেয়েটার মনে।।নিলান্তি নিখিলের কথা ভাবতে চায় না।।তবুও কেনো যেনো এক অজানা ভাবনা নিলান্তির মনের ভেতর এসে বাঁসা বাঁধছে।।
এভাবে চলে গেলো একরাত একদিন।।
পরদিন রাত ৮টা বাজে।।নিখিলকে এখনো কেউ খুঁজে পায়নি।।
নিলান্তি অস্থিরতায় রুমে পায়চারি করছে।।এদিক ওদিক যাচ্ছে,,কিন্তু মেয়েটা স্থির হতে পারছেনা।।না জানি কি হয়ে গেলো ছেলেটার।।
সবায় নিখিলকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।।
নিলান্তির মনে এক অজানা ভয়,,অজানা কাজ করছে।।আর মনে মনে ভারছে কেনো এতো খারাপ লাগছে নিখিলের জন্য,,কেনো এতো ছটফটে করছে মনটা,,কেন এতো একা লাগছে আমার ওকে ছাড়া।।এসব চিন্তা করতে করতে নিলান্তি এক গ্লাস পানি ঢক ঢক করে খেয়ে নিলো।।
না মেয়েটার ভালোই লাগছে না।।অনেক টেনশন হচ্ছে।।নিলান্তি শুয়ে গেলো ঘুমানোর জন্য।।না কিছুতেই ঘুম আসছে না।।এপাশ-ওপাশ করছে শুধু,,কিন্তু ঘুম আসছেনা।।শুধু নিখিলের কথাই মনে পড়ছে বার বার।।ছেলেটা কথায় আছে,,কেনো ফিরে আসছে না,, ওই ছেলের জন্য কেনো ঘুম আসছেনা।।বার বার কেনো আমার চোখের কোনে পানি জমছে?? এসব চিন্তা করতে করতেই নিলান্তির চোখ লেগে এলো।।
সকালে সূর্যের আলো চোখে পড়ায় নিলান্তির ঘুম ভেঙ্গে গেলো।।ঘুম ঘুম চোখেই নিলান্তি রুমের বাইরে গেলো।।
সবায় বাইরে এদিক-ওদিক করে এলো-মেলো ভাবে বসে আছে।।সবার মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে।।নিখিল এসেছে তো?? ওর কিছু হয় নি এসব ভাবতে অন্তরকে জিঙ্গেস করেই ফেললো??
নিখিল কি ফিরেছে??
কেউ কোনো কথা বলছেনা।।সবায় চুপ।।
নিলান্তি চিৎকার করে কাঁদো কাঁদো গলায় বলছে,,কি হলো আমি কিছু জানতে চেয়েছি তো।।কথা বলছনা কেনো সবায়।।বলো না নিখিল ফিরেছে কিনা।।
অন্তর: নিলান্তি নিখিল মারা গেছে।। ওই দেখো তার লাশ।।
নিলান্তির যেনো কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে একদম।।কিছুই বলছেনা।।কিছুক্ষণ পর
নিলান্তি হাউমাউ করে কেঁদে দিলো।।না এটা হতে পারে না।।এটা কিছুতেই হতে পারে না।।নিখিল এভাবে চলে যেতে পারে না আমায় একা করে।।।
to be continue…………
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com