গল্পঃ স্বপ্ন কন্যা । পর্ব-৮ম

আকাশ এখন ঠিকমতো পড়তে চায় না।
‎সে এখন দিন দিন ভিন্ন ভিন্ন বায়না করে,
‎কখনো তাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া,
‎কখনো একসাথে খাওয়া দাওয়া করা,
‎কিন্তু কিছুদিন যাবত আশিক খেয়াল করলো যে,
‎বাড়িওয়ালির মেয়েটি মনে হয় তাকে ফলো করছে!!!!
‎সে যখন আকাশ কে পড়াতে আসে,
‎তখন মেয়েটি তাকে পর্দার আড়ালে থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে।
‎আশিক মনে মনে ভাবলো,মিম তাকে ফলো করে কেন?
‎অন্যদিকে নিলার দিন গুলো যেন স্বপ্নের মতো কাটতে ছিলো,
‎সারাটা দিন আশিক কে ফলো করা,
‎আশিক কে মন ভরে দেখা,
‎আজকে প্রাইভেট পড়ানোর সময়,
‎নিলার আম্মু আশিককে ঢেকে বলে,
‎বাবা আশিক তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো,
‎জ্বি আন্টি বলেন,
‎আসলে আশিক আমরা একটু গ্রামের বাড়ি যাবো,
‎কিন্তু আকাশ আর মিম(নিলা) এর পরিক্ষার কারনে,ওদের নিয়ে যেতে পারবো না।
‎তাই তুমি যদি এই কয়েকটা দিন একটু ওদের দেখাশুনা করো তাহলে,
‎আমি নিশ্চিত থাকতে পারি।
‎আচ্ছা আন্টি!!!!
‎পরের দিন নিলার আব্বু-আম্মু গ্রামের বাড়ি চলে যায়।
‎আশিক পরের দিন সকালে হোটেল থেকে খাবার এনে আকাশ কে বলে, এই যে খাবার,
‎খেয়ে নেও।
‎তোমার আপু কি করে?
‎ভাইয়া আমি স্কুলে যাবো,আপু রুমে শুয়ে আছে।
‎আচ্ছা তুমি স্কুলে যাও!
‎আশিক মনে মনে ভাবে,মিমের রুমে গিয়ে ওর সাথে দেখা করবো কি”””””””
‎আশিক কিছু একটা ভেবে মিমের রুমে গিয়ে নক করলো।
‎নিলা রুমের দরজাটা খুলে যেন শক খেল!!!!
‎আশিকও অবাক হয়ে গেছে!!!!
‎নিলাকে কে এখানে দেখবে কখনো ভাবেনি!
‎তার মানে সে এতোদিন বোরকায় মুখ থাকা যে মেয়েকে দেখেছে সেই নিলা!!!!!
‎আশিক কিছু একটা বলতে যাবে,
‎তখনই সে তার ঠোঁটে গরম উষ্ণতা পেলো,,,,,
আশিক যেন থেমে গেছে।
সে আর কিছুই বলতে পারছে না,
নিলা আশিক কে জোরে একটা থাপ্পর দিলো,
নিজেকে কি ভাবো!
মহাপুরুষ!!!!!
শুধু নিজে নিজেই ভালোবেসে যাবে।
কথাগুলো বলতে গিয়ে নিলার চোখ দিয়ে পানি
পড়ছিল।
আই লাভ ইউ আশিক,
আমি তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি,
আমি তোমাকে ছাড়া বাচবো না,,,,,,,
আশিক কি বলবে,
এতো দিনের জমানো অভিমানের পাহাড় সমান অভিমান, নিলার চোখের জ্বলের সামনে যেন ভেঙ্গে চুড়মার হয়ে যাচ্ছে!!!!
আশিক তখন নিলাকে বললো,
আমার জিবনে যে নিলা ছিলো,
সে মারা গেছে অনেক আগেই,
এ জিবন তার স্মৃতি নিয়েই বেচে থাকবে!!!!!
নতুন করে তার ভালোবাসার কোনো ধরকার নাই,
কথাগুলো বলতে গিয়েও,
আশিকের চোখেও জ্বল চলে আসছে,,,,,,,,
সে নিলাকে বললো,
খাবার টা খেয়ে নাও!!
আমার ক্ষুধা নাই,আমি এখন খাবো না।
আশিক বললো খেয়ে নাও,
নিলা বললো আমি খাব না,
খাও বলছি,
না!!!!!!!!
ঠাসসসসসসস!!!!!!!
থাপ্পরটা দেওয়ার পর নিলার চেহেরাটা দেখে,
আশিকের খুব মায়া হয়,
তারপর আশিক হাতটা ধুয়ে এসে,
নিলাকে খাবার হাতে নিয়ে,নিলাকে বলে হা করো।
নিলা আশিকের নিজ হাতে খাওয়িয়ে দেওয়া মিস করতে চায় না।
তাই নিলাও আস্তে আস্তে খেতে থাকে,,,,,
খাওয়া শেষ করে নিলা বলে,
আমাকে আজকে একটু ঘুরতে নিয়ে যাবে,
আশিক কিছুক্ষন চুপ থেকে,
নিলাকে বললো, বিকালে রেডি হয়ে থেকো,
আর আকাশ কেও সাথে নিয়ে যাবো,,,,,,,,,,,
পরে আশিক নিলা আর আকাশ কে নিয়ে পার্কে গিয়ে অনেক মজা করলো,
অনেক দিন পর আশিক যেনো আমার তার স্বপ্নকন্যাকে দেখছে,,,,,
নিলাকে আজকে পরির মতো লাগছে!!!!!
আশিক আবার নতুন করে তার স্বপ্ন কন্যার প্রেমে পড়ে যায়।
সারাদিন অনেক মজা করে,রাতে বাসায় ফিরে আসে।
এমন সময় আশিকের বাসা থেকে ফোন আসে,
তার আম্মু ফোন দিয়ে বলে,
আশিক বলে কেন আম্মু এতো তারা কিসের?
তার আম্মু বলে তারাতারি বাসায় আসবি,
বাসায় এসেই সব জানতে পারবি?
ফোন রেখে আশিক,আশিক নিলাকে বলে,আমার এখনি বাসায় যাওয়া লাগবো,
‎বাসা থেকে আম্মু ফোন করেছিলো,
‎আমার এখনি বাসায় যাওয়া লাগবে।
‎নিলা একটা মুচকি হাসি দিয়ো বললো,
‎আচ্ছা যাও!!!!!
‎রাতের ট্রেনেই আশিক বাসায় চলে আসে।
‎সে বাসায় এসে কিছুই বুঝতে পারে না।
‎বাসায় অনেক আত্বীয় এসেছে,
‎কি হচ্ছে এসব।
‎এমন সময় আশিকের আব্বু আশিক কে ডাক দিলো,সে আশিক কে একটা রমে নিয়ে গেল,
‎আর বললো আজকে তোর বিয়ে।
‎কি বলো তুমি আব্বু,আমি তো কেবল মাত্র পড়াশোনা করছি,এতো তারাতারি বিয়ে কেনো?
‎আর তাছাড়া আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি।
‎আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না।
‎মুখে মুখে কথা!!!!
‎আমি বলছি এটাই ফাইনাল।
‎এইযে পান্জাবি টা পড়ে নাও।
‎আশিক তার আব্বুকে দেখে খুব ভয় পায়,
‎আর সে খুব ভালো করেই জানে,
‎তার আব্বু যেহেতু বলেছে,
‎তাহলে বিয়ে করতেই হবে।
‎তাই আশিক পান্জাবি টা পড়ে রেডি হয়ে নেয়।
‎এখন তারা একটা গাড়িতে করে তারা মেয়ের বাড়ির দিকে যাইতাছে,,,,
‎খুব অল্প সময়েই তারা মেয়ের বাড়িতে পৌছে যায়।
‎বিয়ে বাড়িতে অনেক লোকজন,
‎সবাই অনেক হাসি খুশি,
‎শুধু আশিক বাদে!আশিক নিলাকে খুব মিস করছে,,,,,,,
‎সে ভাবছে নিলাকে সে কি বলবে,
‎আর নিলাকে কখনো তার মন থেকে মুছতে পারবে না,,,,,
‎আর যাকে সে বিয়ে করছে,তাকে এখন পর্যন্ত দেখেই নাই।
‎না দেখেই বিয়ে করছে,
‎যার সাথে সারা জিবন কাটাতে হবে,,,,,,
‎বিয়েটা হয়ে গেল,,,
‎আশিক এখন তার বাসার বেলকুনিতে দাড়িয়ে রয়েছে,,,,আর মনে মনে ভাবছে আজ তার বাসর রাত।
‎ছোটো কাল থেকে কতো স্বপ্ন ছিলো এই বাসর রাত নিয়ে!!!!!
‎এমন সময় আশিকের আম্মু এসে বলে,
‎কিরে তুই বৌমাকে রেখে এখনো বাহিরে কেনো?
‎যা রুমে যা তারাতারি।
‎আশিক মনে অনেক কষ্ট নিয়ে রমে যায়।
‎রুমে গিয়ে দেখে তার বউ বিছানায় বসে আছে।
‎সে অনেকক্ষন ভাবার পর বললো,
‎আমি আপনাকে কিছু বলার আছে,
‎আমি আসলে একজনকে ভালোবাসি!
‎আর আমি আপনাকে আমার বউ হিসেবে মেনে নিতে পারবো না।
‎কি বললি তুই!!!!
‎তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস””””””””
‎(কন্ঠটা যেন চেনা চেনা লাগছে)
‎কে আপনি?
‎আমি তর বউ!!!!!
‎এই বলে ঘোমটা টা সরালো মেয়েটি!!!!
‎একি এ আমি কাকে দেখছি”””””
‎তুমি এখানে,তারমানে এইসব কিছু আপনার প্লান!!!!!
‎হুম আমার প্লান।
‎কি ভাবছিলা তুমি আমায় রেখে অন্য কাউকে বিয়া করবা।
‎আরে না।
‎নিলা বললো,
‎আমায় ছাদে নিয়া চলো,,,
‎আজকে সারারাত গল্প করবো,
‎কি বললা তুমি, আজকে তো আমাদের বাসর রাত!!!!!
‎তো কি হয়েছে,আমার ছোটকাল থেকেই ইচ্ছা আমি আমার বাসর রাতটা আমার স্বামির সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিবো!!!!
‎ওকে আচ্ছা চলো,আমি হেটে যেতে পারব না।
‎তো কেমনে যাবা?
‎তুমি আমায় কোলো করে নিয়া যাবা।
‎আচ্ছা।
‎আমি আমার স্বপ্নকন্যাকে কোলো তুলে নিলাম।
‎আমি তখন নিলার নিশ্বাস এর শদ্ব শুনতে পাচ্ছিলাম,,,,,,,,
‎আমি আমার স্বপ্নকন্যার কপালে একটা চুমো খেলাম,,,,,,,,,,,,
‎অবশেষে আমার স্বপ্ন কন্যাকে আমি আপন করে পেলাম!!!!!!!!!!

আজকের গল্প এখানেই শেষ