Breaking News

ছোট বেলার প্রেম এখন বড় হয়ে

অরিনঃ কোথায় তুই…?
অভিঃ বাসর রুমে বউর সাথে গল্প করছি..!
অরিনঃ কি (কিছুটা রাগি সুরে)
ভার্সিটিতে আসিস নাই কেন…?
অভিঃ আমি ভার্সিটিতে যাই না সকালে..!
দুপুর গেলো বিকেল গেলো এখন
রাত ১১.৪৫ এখন তুই আমার খোজ নিলি…?
অরিনঃ ফোনে ব্যালেন্স ছিলো না সে জন্য
ফোন করতে পারি নাই…!
কেন তুই তো একবারও ফোন দিলি না…!
নিজে দেয় না আবার অন্যকে বলে…!
অভিঃ কোটিপতি বাবার মেয়ে যদি বলে
তার ফোনে ব্যালেন্স নেই তাইলে
আমার মতো মধ্যবিত্ত ঘরের
ছেলের ফোনে কি ভাবে থাকবে….???
অরিনঃ এ তুই না একটু বেশি কথা বলিস…!
রাতে খাইছস…??

অভিঃ হুম…! আচ্ছা ফোনটা রাখ
আমার একটু কাজ করতে হবে…!
বলেই ফোনটা কেটে দিলো অভি তার কোন
কাজ নেই ঘুমাবে সে অভি ঘুম পাগল মানুষ…!
অভি গ্রামের মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান ঢাকা এসে
পড়াশোনা করে হিঃবিঃ তে অনার্স করে…!
অরিন বোড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে…!
ভার্সিটিতে পরিচয় হয় দুজনের তারপর বন্ধুত্ব
অরিন অভিকে অসিম ভালবাসে কিন্তু বলে না…!
অরিন চায় অভি বলবে…!
অরিনঃ আজকে ক্লাস করবি অভি…?
অভিঃ কেন আজ কি তোর দাদার মৃত্যু দিবস নাকি
যে ক্লাস করবো না…!
অরিনঃ চুপ কর (ধমকের সুরে)
তুই বেশি কথা বলা বন্ধ কর
না হয় ভবিষ্যৎ অন্ধকার…!
অভিঃ (চুপ)

অরিনঃ আজকে আমার ভালো লাগে না,
তাই ভাবলাম ক্লাশ না করে আজকে ঘুরবো…!
চলনা দুজনে ঘুরি আজকে সারাদিন ঘুরবো…!
অভিঃ তাইলে সে জন্য এতো তাড়াতাড়ি তলব করলি…!
অরিনঃ হেসে দিয়ে হুম চল…!
অভি একটা গান শুরু করলো
বন্ধু যখন বউ লইয়া আমার বাড়িড় সামনে দিয়া রঙ্গ
কইরা হাইট্টা যায় ফাইট্টা যায় বুকটা ফাইট্ট যায়…!
অরিন হটাৎ দাড়িয়ে গেলো রেগে
তাকিয়ে আছে অভির দিকে…!
অরিনের দাড়িয়ে থাকা দেখে
অভি গানটা বন্ধ করে দিলো…!
মুচকি একটা হাসি দিলো…!
অরিনঃ এইটা কি গান গাইলি..?
এটা কোন গানের মধ্যে পরে…!
এই গানের চল আছে কোন লোক শুনে এই গান..?
অভিঃ হাগল নি কোন…!
এর চাইতে সুন্দর কোন গান হয়,
এটি বেশি শোনে কারা জানস..!
এটা বেশি শুনে যারা পড়াশোনা শেষ করে
চাকরিও পায় না বউও পায় না…!
অথছ তার পাশের বন্ধুরা বিয়ে করে
তার বাড়ির সামনে দিয়ে বউ নিয়ে যায়….! হিহিহিহি
অরিনঃ তোরতো কোনটাই এখন প্রয়োজন নেই…!
তো তুই কেন গাইলি…?

অভিঃএইতো আর ৪বছর তারপর তো শেষ
তখন তো জানি আমার চাকরিও হবে না
ঠিক সময়ে বউও পাবো না,আমি…!
তো আর মোটা অংকের ঘুস দিতে পারবো না…!
বর্তমানে তো ঘুস ছাড়া চাকরি হয় না…!
অরিনঃ আগে তো পড়াশোনা শেষ কর…!
তারপর এই চিন্তা…!
চল আমরা ওই জায়গাতে বসি…!
অভি সারাসময় অরিনের সাথে দুস্টামি করেই থাকে..!
অভিঃ অরিন…!
অরিনঃ হুম…!
অভিঃ চল আমারা পালিয়ে বিয়ে করি…!
অরিনঃ দেশে কি ছেলের অভাব পরছে
যে তোকে বিয়ে করতে যাবো…!
অভিঃ এএএ আমার মতো ছেলে পাওয়া
তোর ভাগ্যের.ব্যাপার…!
তুই জানিস আমাদের বাসার পাশের
কত মেয়ের বাবা মা তাদের মেয়ে সাথে
আমার বিয়ে দিতে পাগল…!
কিন্তু আমি করি না…!(কিছুটা বুক ফুলিয়ে)
অরিনঃ করে ফেল তাড়াতাড়ি না হয় পরে
মেয়ে নাও পেতে পারিস…হিহিহি
হিহিহিহিহি….!

অভিঃ না তোকে করবো…!
এবং আমি ৮০০ সন্তানের বাবা হবো
তুই মা হবি বলেই হেসে আবার বলে আমারা বিশ্ব
রেকর্ড করবো চারদিকে আমাদের নাম ছড়িয়ে যাবে…!
অরিনঃ মনের অজান্তেই হেসে দিয়ে বললো
তোর মতো বানরকে আমি বিয়ে করবো মাথা নস্ট…!
অভিঃ আমাকে বাংলা ছবির পরিচালক
মনতাজুর রহমান আকবর একবার বলছিলো
যে তোমার চেহারা তো অনেক সুন্দর
তুমি নায়ক হতে পারবা…!
আমি বলছি না আমি নায়ক হবো না
তাহলে বাংলার হিরোরা ফকির হয়ে যাবে…!
অরিনঃ হাহাহাাহাহাহাহা, হাহাহাহাাহাহোহো
হোহোহোহোহোহোহোহো
হো এই চেহারায়
আয়নায় কখনো নিজেকে দেখেছিস…?
তোকে তো বিলেন হিসেবেও নিবে না…!
অভিঃ দেত তোর সাথে কথাই বলবো না…!
অরিনঃ হাহাহাহাহাহাহা অভি প্রচুর ক্ষুদা লাগছেরে
কিছু নিয়ে আয়…!
অভিঃ টাকা নাই তোকে খাওয়ানোর কোন ইচ্ছা নাই…!
অরিনঃ কোন দিন তোর টাকা ছিলো…!
আর কোনদিটায় আমাকে তুই খাওয়ালি…?
হুম আজ পর্যন্ত অভি অরিনকে
দশটাকার বাদাম ছাড়া কিছুই খাওয়ানি….!
যাই হোক না কেন প্রতিদিন অরিনই বিলটা দেয়…! তারপরেও তার মাঝে কোন বিরক্তির ছাপ নেই কোন হিংসার ছাপ নেই…!

হয়তো এটাই ভালবাসার রুপ…!
অরিনঃ এই নে টাকা ভালো দেখে বার্গার ছুমুছা
আর স্পিড নিয়ে আয়…!
অতপর অভি নিয়ে আসলো…!
অরিন খাচ্ছে কিন্তু অভি মুখ ফুলিয়ে বসে আছে…!
অরিন সেটা কিছুসময় পর সেটা খেয়াল করলো…!
অরিনঃ কি ব্যাপার নায়ক সাহেব
আপনি খাচ্ছেন না কেন…?
অভিঃ খাবো না…!
অরিনঃ কেনো রাগ করছেন..!
নাকি খাইয়ে দিতে হবে..?
বলেই অরিন তার হাতের ছমুছা টা
অভির মুখের ভিতর দিয়ে দিলো…!
অভিঃ আচ্ছা অরিন তুইকি আমাকে সত্যি ভালবাসিস..?
অরিনঃ কেনো…? হটাৎ এই প্রশ্ন কেনো…!
অভিঃ না এমনি জানতে ইচ্ছে হলো…!
অরিনঃ না…!(মিথ্যা)
অভিঃ আমারো তাই মনে হইছিলো…!
আচ্ছা আমি যদি কখনো দূরে কোথাও চলে যাই
তুই কি কস্ট পাবি…?
যেখান থেকে আসার আর কোন সুযোগ নেই….!
অরিনঃ তুই চলে গেলে আমি কস্ট পাবো কেন…?
(ফান করে)
অভিঃ হুম সেটাই তো…!
জানিস আমি একদিন চলে যাবো…!
বহুদূর আর আসবো না তুই শত চেস্টা করেও
আনতে পারবি না আমাকে এবং
সেই দিনটা বেশি দূরে নারে…!
(আকাশের দিকে তাকিয়ে)
অরিনঃ তোকে কোথাও যেতে হবে না
সারাজীবন আমার কাছে রেখে দিবো…!
এখন চল বাসায় যাবো ১.০০ বাজে…!
তারপর দুজন চলে আসে…!
বিকালে অরিনের কেন জানি বারবার অভিকে
ফোন দিতে ইচ্ছে করে একটু কথা বলবে তার সাথে…!
অভিকে কেন জানি বলতে ইচ্ছে করছে
তোকে অনেক ভালবাসি অভি…!
অরিন ফোন দিলো
কিন্তু অভি ফোন তুলছে না…!
প্রায় ২০ মিনিট পর রিসিভ হলো…!
অরিনঃ ওই কুত্তা হারামি বান্দর শয়তান
ফোন রিসিভ করস না কেন…??
ওপাশঃ সরি আমি অভি না তার বন্ধু..!
দুপুরে হটাৎ অভির কি যানো হইছে..!
দুপুরে কোই থেকে যেনো এসে হটাৎ বিছানায়
পরে যায় আর প্রচুর রক্ত ভুমি হয়…!
আমরা এখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি…!
অরিনঃ কি…? আপনি কি বলছেন এসব…?
ওপাশঃ হুমম ঠিকই বলছি..!
আপনি হাসপাতালে চলে আসেন…!
(বলেই ফোনটা কেটে দিলো)
অরিনের চোখ দিয়ে পানি পরছে
বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো…!
একটা সিএনজি নিয়ে চলে গেলো হাসপাতালে…!
বারবার চোখের পানি মুছে
অভির কিছু হয়ে গেলে আমি বাঁচবো না…!
কি নিয়ে বাঁচবো কাকে নিয়ে বাচবো
কি করেরে বাঁচবো…!
কিন্তু এতক্ষনে অভি নেই চলেগেছে না ফেরার দেশে…!
অভির এই রোগটা সেই ছোট বেলা থেকেই,
কোন সমাধান দিতেপারে না ডাক্তার…!
এবং আজও বাচিয়ে রাখতে পারলো না অভিকে…!
তার বন্ধুরা তার বেডের পাশে দাড়িয়ে আছে,
কারো মুখে কোন কথা নেই…!
সবার চোখ দিয়ে পানি পরছে…!
অরিন দৌড়ে এলো রুমে…!
অরিনঃ অভি কোথায়…??
বন্ধুঃ চুপ….!!!!

অরিনঃ কি ব্যাপার চুপ করে আছেন কেন,
অভি কোথায়….?? (চিতকার করে)
একজন হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে দেখিয়ে দিলো…!
অরিন দেখলো সাদা কাপড় দিয়ে ডাকা একটা লাশ…!
অরিনের বুজতে বাকি রইলো না কি হইছে…!
সাদা কাপড়টা উঠিয়ে চিৎকার করে কেদে দিলো,
কি হইছে তোর অভি এইতো আমি দেখ আমি এসেছি,
তোর কিচ্ছু হবে না…!
তুই উঠ অভি আমার সাথে ঝগড়া করবি না…!
আমাকে রাগাবি না…?
এই আমি দুপুরে যাওয়ার পথে তোর জন্য
একটা শার্ট কিনছি…!
তুই জানতে চেয়েছিলা না..
আমি তোকে ভলবাসি কিনা….???
আমি তোকে প্রচুর ভালবাসিরে অভি…!
তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখিরে R তুই
রাগ করে আছিস….!
অভি রাগ করিস না উঠে আয় অভি…!
আমরা গল্প করবো…!
তুই ৮০০ সন্তানের বাবা হবি না…?
আমি রাজিরে রে তোর বউ হতে…!
আমি তোকে আর রাগাবো না…!
অভিকে ধরে চিৎকার দিয়ে বলে যাচ্ছে অরিন…!
জোরে জোরে নারছে অভিকে…!
অভির বন্ধুদের চোখে বৃষ্টির মতো পানি যাচ্ছে…!
অরিনের এই অবস্থা দেখে নার্স এসে
অরিনকে টেনে আনতে চেস্টা করলো…!
কিন্তু অভিকে ছাড়ছে না অরিন…!
শুধু চিৎকার করে করে বলে…
কিরে অভি তুই এতো বেইমান হয়ে গেলি,
আমার কথা তুই শুনছিস না….!
অরিনের চিৎকারে মানুষের ভির জমে গেলো…!
অরিন হাসছে শুধু হাসছে…!
চারদিক অন্ধকার নেমে আসছে..!
৩ দিন পর অরিনকে এখন শিকল দিয়ে
বেধে রাখতে হয় রুমের ভিতর…!
শুধু হাসে আর বলে অভি আমি তোর বউ হবো রে….!!!

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com